Wednesday, December 31, 2025

শাসমলবাবু ও বম্বের আমেজ


- হ্যালো, শাসমলদা!
- আরে দত্ত যে। কদ্দিন পর ফোন করলে। তা তোমরা আছ কেমন সব কলকাতায়?
- এই চলে যাচ্ছে দাদা। আমাদের আবার থাকা আর না থাকা। আপনি বরং বম্বের খবরটবর বলুন..।
- বম্বে মানেই তো হাইভোল্টেজ অ্যাকশনের জায়গা ভায়া। ওই, হ্যাপেনিং যাকে বলে। এ তো আর ক্যালক্যাটা পাওনি যে সময় থমকে থাকবে। এ'খানে সময়ের দাম আছে।
- সে তো বটেই৷ তা ও'দিকে এখন ওয়েদার কেমন শাসমলদা? শীতটীত পড়েছে কি?
- শ..শী..শীত...ইয়ে মানে। বাতাসে একটা প্লেজ্যান্ট ইয়ে আছে কিন্তু। রাতে ফ্যানের স্পীড কমিয়ে দিতে হচ্ছে।
- বাহ্‌। বিউটিফুল। ওটাই আইডিয়াল বুঝলেন। এ'বার আবার কলকাতায় বেশ ঠাণ্ডা পড়েছে। এই দেখুন না এখনও শালমুড়ি দিয়ে বসে। এ'সব আবার বাড়াবাড়ি। বম্বের টেম্পারেচার ব্যালেন্সটা বেশ ঈর্ষনীয়।
- যাকেগ বাদ দাও সে'সব কথা। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের যুগে আবার শীত কীসে।
- এটা একদম মোক্ষম কথা বলেছেন। এ শীত আজ আছে কাল নেই। এর আবার কী ভ্যালু। ফালতু যত জয়নগরের মোয়া বিক্রির মার্কেটিং গিমিক আর কী।
- অ। মোয়া উঠেছে বাজারে?
- আরে বেশিরভাগই ফ্রড। তবে বাধ্য হয়ে খুঁজেপেতে দু'এক বাক্স মাঝেমধ্যে আনছি। ওই, হুজুগ আর কী। তবে কলকাতার আর কিছু হওয়ার নয় কিন্তু বুঝলেন। ও'দিকে বম্বের যে একটা আমেজ..।
- ঠিক। ঠিক বলেছো দত্ত। আমেজ। একবারে আসো দেখি এ'দিকে। দেখে যাও আরবসাগরের চার্ম কাকে বলে।
- যাবো। নিশ্চয়ই যাবো। শুধু নলেনের সিজনটা কেটে যাক। বোঝেনই তো, আজকাল জেনুইন নলেনের উইন্ডো এত শর্ট। কলকাতা জাস্ট গোল্লায় গেছে। মাস দেড়েকের বেশ হাইকোয়ালিটি গুড়ের সন্দেশ আর রসগোল্লা পাওয়ার উপায় নেই। জাস্ট ফালতু জায়গা।
- নলেন৷ রসগোল্লা। হুম৷
- ও কী। কিছু ভাবতে বসলেন নাকি?
- না না। আমার আজকাল মিষ্টি তেমন পোষায় না বুঝলে। হেলথের ব্যাপারে একটু নজর দিচ্ছি কিনা।
- হক কথা। মিষ্টি তো নয়। বিষ বিষ। আমার গিন্নীর আবার এই এক রোগ বুঝলেন শাসমলদা। সোয়েটার ট্রাঙ্ক থেকে বেরোতে না বেরোতেই পিঠেপুলির বাই। আরে বাবা ঠাণ্ডা পড়েছে আর গুড়ের সাপ্লাই আছে মানেই কি সাপের পাঁচ পা দেখতে হবে নাকি? ডায়াবেটিস হলে কে দেখবে?
- দত্ত। তোমার সঙ্গে বাজে গল্পের সময় আমার নেই। কাজকর্ম নেই নাকি তোমার? অত খেজুরের সময় পাও কী করে? ফোন রাখো তো। যত সময় নষ্ট। এ'টা আমার এখন বড়াপাও খাওয়ার সময়। তুমি ফোন রাখো।
- ওহ। বড্ড হিংসে হচ্ছে শাসমলদা। কোথায় আপনার সেই ফ্যান্টাস্টিক বড়াপাও। আর কোথায় আমার সামনের এই বাটিতে রাখা সমরদার মিষ্টির দোকানের একজোড়া ফুলকপির শিঙাড়া। নাহ, মুখটা বিস্বাদ হয়ে গেলো।
- ব্যাটাচ্ছেলে দত্ত! তোমায় আমি জুতোপেটা করবো!

No comments: