Skip to main content

Posts

Showing posts from January, 2012

থাপ্পড়ের খপ্পরে

থাপ্পড় ব্যাপারটা ছেলেবেলায় নেহাত মামুলি ছিল । ভাত খেতে না চাওয়া ; মা ’ য়ের থাপ্পড় , জানলার ভাঙ্গা কাঁচ ; পাড়াতুতো জ্যেঠুর থাপ্পড় ; অঙ্কে উনিশ ; হেডস্যারের থাপ্পড় , ইস্কাপণ-তীর আঁকা বেহাত প্রেম-পত্তর ; Could - Have-Been প্রেমিকার পিতার থাপ্পড়। একটা বয়েসে ক্রমশ মনে হতে থাকে , বড় হওয়ার ইনসেনটিভ একটাই ; চড়-থাপ্পড়হীন জীবনযাপন । কিন্তু বড় হয়ে দেখলাম উল্টো বুঝলি রাম। থাপ্পড়ের শরীরিকতা গায়েব হয়ে গ্যালো ব্যটে , অশরীরী থাপ্পড়ের ঝড় নেমে এলো জীবনে । মার্কেট শেয়ার কচু-কাটা ; বস - কতৃক Performance Evaluation ঘটিত থাপ্পড় । বিবাহবার্ষিকী বেমালুম ভুলে গুল ; বউ ’ য়ের দৃষ্টি থাপ্পড় । হাতে প্রাগৈতিহাসিক মডেলের মোবাইল ; সমাজের স্টেটাস মুখী-থাপ্পড় । প্রতি দুই খানি ফুচকায় এক খানি জেলুসিল থাপ্পড় , প্রতিটি তেলেভাজার সাথে বুক জুড়ে কোলেস্টেরল-থাপ্পড়।

আকাশ ভরা সূর্য-তারা

রবীন্দ্রনাথেও Value-Add সম্ভব ? সম্ভব। দেবব্রত বিশ্বাসে। আর দেবব্রত বিশ্বাসে value-add? সম্ভব। মুহূর্তে , অভিব্যক্তিতে , সুন্দরে , পাগলামিতে। ছবি : কোমল গান্ধার । রসদ : ঋত্বিক ঘটক - অনিল চ্যাটার্জী - দেবব্রত বিশ্বাস -কার্সিয়াঙ । এক খাম খেয়ালী থিয়েটার কর্মীর পাহাড়ে আসা , এবং এই গানে পাহাড়ময় নিজেকে ছড়িয়ে দেওয়া। ঋত্বিক-অনিল-দেবব্রত ছাড়া রবীন্দ্রনাথকে এতো ভীষণভাবে প্রকৃতিতে মিশে যেতে পারতেন ? প্রশ্নটা ধৃষ্টতা হয়ে কানে ঠেকছে কী ? স্বপক্ষের যুক্তি তে শুধু এই Expression গুলো বিকট ভাবে আলাদা করে সাজিয়ে দেওয়ার একটা হাস্যকর চেষ্টা করা যেতে পারে: " জাগে আমার গান" - এমন ভাবে ছাড়া জেগে ওঠা যায় ?

কলকাতা বইমেলা : যা করবেন এবং যা করবেন না

কলকাতা বইমেলা । বাঙালি দুর্গাপুজো করে ফুর্তির জন্যে , বই মেলা ঘোরে আধ্যাত্মিক মালিশের জন্যে। অনিচ্ছুক ভিডিও-গেমবাজ বাচ্চাদের ঘাড় ধরে পিতারা বই চড়ান , প্রেমিক-প্রেমিকারা ছাতা-হীন প্রেম সারেন , মেয়েরা বই দ্যাখে-ছেলেরা মেয়ে , উদ্যোগী মানুষে বই চুরি করেন , কবিরা তীর্থ করেন , গিটার-শখিয়েরা থেবড়ে বসে গান করেন , হুল্লাট ব্যাপার এক্কেবারে। এ ব্লগের পক্ষ থেকে বই মেলায় কী করণীয় , কী নয় , তার ওপর একটা মৃদু রিসার্চ করে ফেলা হয়েছে। জনদরদী উদ্দেশ্যে তা সাজিয়ে দেওয়া হলো: বইমেলায় কি করবেন ? - বই মেলার ম্যাপ জোগাড় । কাঁধে ওয়াটার-বটল ঝুলিয়ে , চোখে গগল্স চাপিয়ে , পিঠে রুক-স্যাক চাপিয়ে লিভিঙ্গস্টোনের মত বলবেন , “ এই আমি আছি ১৩২ নম্বর স্টলের সামনে , নাক বরাবর হেঁটে গিয়ে , ১৯২ নম্বর থেকে বাঁ দিকে টার্ণ , অত : পর কয়েক পা এগিয়ে মিলবে ফোয়ারা এবং ফ্রম দেয়ার ঈশান কোনের দিকে মুভমেন্ট করতে করতে ৬ খানা স্টল ছাড়ালেই পাওয়া যাবে ডেষ্টিনেশন , স্টল ৩১৭” , তবেই না তৃপ্তি । যদি কেউ ফোড়ন কাটে “আরে ওই তো দ্যাখা যাচ্ছে স্টল ৩১৭” , দমে যাবেন না , বইমেলায় এসে ম্যাপ ছাড়া ঘোরা নেহা

ফ্রিডম অফ স্পিচ ঘটিত

[ আচমকা রাস্তায়; এক জনৈকের একটি জনৈক মতামত ] “ হে হে স্যার , ফ্রিডম অফ স্পিচ ? জয়পুর লিট-ফেস্টে রুসদি-সাহেবের ঝাড় খাওয়ার প্রয়োজন হলো আপনাদের ভারতীয় ফ্রিডম অফ স্পিচের কাছা খুলতে ? শুনে রাখুন , ফ্রিডম অফ স্পিচ কোনওদিনই ছিল না । ওসব কনস্টিটিউশনাল-বুলি সব প্যাডেড ব্রা । আপনি কি মনে করেন ? ধর্মীয় মৌলবাদ ’ য়েই বাক-স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ? নন-সেন্স। ধর্ম কখন ধরমেন্দ্র হয়ে ডেমক্রেসির মুণ্ডু খায় জানেন ? যখন রাজনৈতিক মৌলবাদের মেরুদণ্ড শক্ত হতে থাকে । রাজনৈতিক মৌলবাদ কোথা থেকে ক্যালরি অর্জন করে ? করে তোষনবাদ থেকে ; ধর্ম-তোষন , ব্যক্তি-তোষন , দল-তোষন এট সেটেরা , এট সেটেরা! সব কটা রাজনৈতিক দলের নিজেস্ব খুনে মৌলবাদ আছে । সমস্ত দলের । নিজের বাক-স্বাধীনতার দৌড় চেখে দেখতে চান ? দু একটা পাতি সহজ অভিযোগ চালাতে গিয়ে দেখুন , সত্য-বিচার পরে হবে , জাষ্ট অভিযোগ প্লেস করতে গিয়ে দেখুন কি রাম-ক্যালানি খেতে হয় আপনাকে

মাসলোর উইকেণ্ড ফর্মুলা

উইকএন্ড কাকা । টাইম টু আনওয়াইণ্ড । হপ্তা ধরে ইস্তিরি হওয়ার পরে এই মওকা , শরীর-মনে একটু চেকনাই আনবার । শনিবার দুপুর থেকেই একনিষ্ঠ ফোকাস , ফুর্তির মিটারে কোনও ফ্লাকচুয়েশন চলবে না । আগামী গোটা সপ্তাহের অক্সিজেন জোগাড় করে রাখতে হবে । রবিবার রাত এসে সোমবারি-নার্ভাসনেস কলজে গ্রাস করবার আগে , Self-Actualize করতে হবে । সপ্তহান্তিক ফুর্তি কে তুরীয় করে তুলতে দরকার প্ল্যানিং । প্ল্যানিং ’ য়ে দরকার যুক্তিপূর্ণ কাঠামো । কী ভাবে ধাপে ধাপে সাপ্তাহিক স্বর্গলাভ ঘটানো যাবে তার জন্যে দরকার Maslow- ভিত্ত্বিক পর্যালোচনা এবং Check- লিস্ট। জাতির স্বার্থে , দেশের স্বার্থে Maslow’s Hierarchy ভিত্ত্বিক Weekend Planning টা আমাকেই সারতে হলো

ট্রেন বিহার

আমার বিহারি সহকর্মীটি বেশ রসিক মানুষ । চাকরির খাতিরে বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে বেড়াতে হয় । একবার এরকমই এক ‘ ট্যুর ’ য়ে পৌছেছিলাম বনমঙ্খি নামের এক ছোট্ট স্টেশনে । মিটার গেজের লাইন চলে গ্যাছে আর লোকাল রুটে ট্রেন চলে থাকে সেখান দিয়ে। আমার সহকর্মীটি বললেন “ চলুন আপনাকে দেহাতী মাল্টি-জিম দ্যাখাচ্ছি”! “মাল্টি জিম ?” অবাক হয়ে চাইলাম ভদ্রলোকের প্রতি । আমাকে প্ল্যাটফর্মের ওপর নিয়ে এসে , অপেক্ষারত একটা লোকাল ট্রেন দেখিয়ে ভদ্রলোক বললেন , “ এই হলো আমাদের গ্রাম-দেহাতের মাল্টি-জিম । দৈনিক এক ঘন্টার এই ট্রেন সফরে যা ক্যালরি ঝড়ে , তা কোনও শহুরে জিমের বাপের দ্বারাও হবে না”

গোলাপদাদুর চমক

সন্ধ্যেবেলা সবে বাড়ি ঢুকেছি এমন সময় পাড়ার গোলাপ-দাদুর ফোন । গোলাপ-দাদু পাড়ার বারোয়ারী দাদু , গোলাপ-চাষে এক্সপার্ট বলে এহেন নাম । আমাদের বয়েসি ছেলে-মেয়েদের ভারী খাতির করেন । ভদ্রলোকের ভূ-ভারতে কেউ নেই , এক জোড়া চাকর ছাড়া । ছেলে-পুলে কেউ নেই , দিদিমা বহু আগেই সরে পড়েছেন । মাঝে-সঝে আমাদের মিষ্টি-সিঙ্গারা-আম-জামরুল খাইয়ে থাকেন । সে হিসেবে আমারও একটু দহরম আছে গোলাপ-দাদুর সাথে । ফোন ধরতেই গোলাপদাদু বললে “ পচারাম , কাম টু মাই প্লেস , সুন” বিশেষ কোনও কাজ-কর্ম ছিল না হাতে , মিষ্টি-সিঙ্গারার লোভে চলে গেলাম। গোলাপদাদুর বাড়ি যেতেই চমক । দেখি গোটা ঘর অন্ধকার । গোলাপদাদু বলে হাঁক দিতেই চিলেকোঠার ঘর থেকে আওয়াজ এলো “ওপরে , এই দিকে পচা , চলে এসো

মর্নিং ওয়াক

মর্নিং ওয়াক ইস নেসেসারী । ইয়েস স্যার , ফিটনেস ছাড়া বাঙালি এগোতে পারবে না । রিয়েল পরিবর্তন চাইলে রাইটার্স ’ এর আগে নিজের ভূড়িটাকে কন্ট্রোল করতে শিখতে হবে । আর শরীরটাকে চাবুক-চনমনে করতে হলে সবার আগে কী চাই ? না , ইসবগুল নয় , গুলবাজ বাঙালির দিন শেষ । সবার আগে দরকার মর্নিং ওয়াক । নেকু হাঁটা নয় , দ্রুত গতির মিলিটারি হাঁটা । ভোর ছটা থেকে সোয়া-সাতটা , নন-স্টপ । ইকনমিক এবং এফেকটিভ জিম । ২০১২ থেকে আমি পাল্টে যাব , আমার ঘুম ভাঙ্গা পাল্টে যাবে , ভূড়ি-বাদ নীতিতে নিজেকে আমূল বদলে স্মার্ট বাঙালি করে ফেলবো । প্ল্যান-মাফিক কাজ শুরু । মর্নিং ওয়াক হলো গিয়ে সায়েবি ব্যাপার , হাভাতের মত পায়জমা গলিয়ে তো আর মেদ-বিরোধী হণ্টনে নাম যায় না