Skip to main content

Posts

Showing posts from October, 2020

লক্ষ্মী

- কে? বিমল? - হ্যাঁ ভজাদা। - বাইরে দাঁড়িয়ে কেন। ভেতরে আয়। - না, মানে..ঠিক বলেকয়ে আসার সুযোগ পাইনি তো।  তুমি মক্কেলদের নিয়ে ব্যস্ত আছ কিনা এই ভেবে একটু হেসিটেট করছিলাম আর কী। - কাতলা আর ওয়াসাবি দিয়েএকটা এক্সপেরিমেন্টাল রেসিপি ফ্রেম করছিলাম।  সে'দিক থেকে বলতে গেলে ব্যস্ত তো বটেই। আয়, বস। এ, কী। ভিজে কাক অবস্থা যে। - অসময়ের বৃষ্টি। আর এমন ঝমঝমিয়ে নামল। ট্যাক্সি থেকে নেমে গিয়ে গলির ভিতর দৌড়ে আসতে গিয়েই..। - উকিলের চেম্বারে ব্যাকআপ শার্ট  এক্সপেক্ট করিস না, গামছাও নেই। তুই বরং শার্টটা খুলে টেবিল ফ্যানের সামনের ওই চেয়ারটায় মেলে দিয়ে বস। আর আমি কফি বানাই গিয়ে। ফ্লাস্কের নয়, টাটকা। সে'সরঞ্জাম আজকাল অফিসেই রাখছি। তবে ব্ল্যাককফি। - না না। অত ব্যস্ত হয়ো না। আমি এখুনি বেরোব। গলির মুখে ট্যাক্সিটাকে দাঁড় করিয়ে এসেছি। - সে কী৷ এমন শশব্যস্ত হয়ে এ'খানে এলি? আমি ভাবলাম ওই ইউসুয়াল তাস আর আড্ডার টানে এসেছিস। তা, কোনও আইনি ফাঁপরে পড়লি নাকি? - না ভজাদা।  - তবে? - ব্যাপারটা খুবই পাতি..। - বলেই ফেল না বিমল। ভেজা গায়ে অত ভূমিকা ফাঁদার কোনও দরকার নেই। - আজ সন্ধ্যেবেলা একবার আমার ফ্ল্যাটে

সেতু কার

- কে? বিমল? - হ্যাঁ ভজাদা। - বাইরে দাঁড়িয়ে কেন। ভেতরে আয়। - না, মানে..ঠিক বলেকয়ে আসার সুযোগ পাইনি তো।  তুমি মক্কেলদের নিয়ে ব্যস্ত আছ কিনা এই ভেবে একটু হেসিটেট করছিলাম আর কী। - কাতলা আর ওয়াসাবি দিয়েএকটা এক্সপেরিমেন্টাল রেসিপি ফ্রেম করছিলাম।  সে'দিক থেকে বলতে গেলে ব্যস্ত তো বটেই। আয়, বস। এ, কী। ভিজে কাক অবস্থা যে। - অসময়ের বৃষ্টি। আর এমন ঝমঝমিয়ে নামল। ট্যাক্সি থেকে নেমে গিয়ে গলির ভিতর দৌড়ে আসতে গিয়েই..। - উকিলের চেম্বারে ব্যাকআপ শার্ট  এক্সপেক্ট করিস না, গামছাও নেই। তুই বরং শার্টটা খুলে টেবিল ফ্যানের সামনের ওই চেয়ারটায় মেলে দিয়ে বস। আর আমি কফি বানাই গিয়ে। ফ্লাস্কের নয়, টাটকা। সে'সরঞ্জাম আজকাল অফিসেই রাখছি। তবে ব্ল্যাককফি। - না না। অত ব্যস্ত হয়ো না। আমি এখুনি বেরোব। গলির মুখে ট্যাক্সিটাকে দাঁড় করিয়ে এসেছি। - সে কী৷ এমন শশব্যস্ত হয়ে এ'খানে এলি? আমি ভাবলাম ওই ইউসুয়াল তাস আর আড্ডার টানে এসেছিস। তা, কোনও আইনি ফাঁপরে পড়লি নাকি? - না ভজাদা।  - তবে? - ব্যাপারটা খুবই পাতি..। - বলেই ফেল না বিমল। ভেজা গায়ে অত ভূমিকা ফাঁদার কোনও দরকার নেই। - আজ সন্ধ্যেবেলা একবার আমার ফ্ল্যাটে ঢুঁ মেরে যে

অরুর গান

- একবার গান গাইতে বসলে অরুর আর সময় জ্ঞান থাকেনা। - তাই নাকি? - একদম৷ এই দেখ। বিকেল পাঁচটা বেজে গেছে। সেই তিনটে নাগাদ গলা সাধতে বসেছে।  - বটে। - জানিস মন্টু, অরুর সুরে বড় মায়া আছে৷ অনেকটা ব্যথাও মিশে আছে অবিশ্যি। এমনিতে হাসিখুশি ছটফটে হলে কী হবে, ছেলেবয়সে মাকে হারানোর যন্ত্রণাটা কি সহজে ভোলা যায়? মিনুর না থাকার ব্যথাটা ও সর্বক্ষণ বয়ে বেড়ায়। হ্যাঁ রে মন্টু, তুই এলেই মিনু কতরকমের পদ রান্না করতে বসত..মনে আছে? - বৌদির হাতের রান্না ভোলা অসম্ভব।  - না হয় সে চলেই গেছে। মানছি, আমার হেঁসেল বিদ্যেয়  ডাল ডিমের অমলেটের বেশি রেঁধে খাওয়ানো সম্ভব নয়৷ তাই বলে দাদা ভাইপোর খবর নিতে মাঝেমধ্যে আসবি না? বছর দুয়েক পর তুই এ বাড়িতে এলি মন্টু। - ফোন তো নিয়মিত করি রে দাদা। - তা করিস। নাহ্, খোঁজখবর তুই রাখিস বটে। আমিও অরুকে তাই তো বলি, রক্তের টান ব্যাপারটা উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। আর তাছাড়া..। ওহ্। আহা৷ এই যে। - কী হল রে দাদা? - অরু এ'বার একটা নজরুলগীতি ধরেছে৷ শুকনো পাতার নুপুর পায়ে৷ আহা। মিনু খুব গাইত।  - দাদা, অরু গান করছে না। - তুই শুনতে পারছিস না হয়ত। কিন্তু অরু গান গাইছে মন্টু৷ ওই যা না পাশের ঘরে, দেখ কেমন

সুবিনয়বাবু আর মনু

- আরে। মনু না? - মনু?  - তুই মনুই তো? প্রেসিডেন্সি? বারুইপুর বুলেটসের সেন্টার ফরওয়ার্ড? ফুচকা চ্যাম্পিয়ন?  - জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। ছেলেবেলা থেকে ক্রনিক হাঁপানি, তাই ফুটবল জীবনে খেলিনি।  বারুইপুরের ছোটপিসি থাকে বটে তবে ও'দিকে  বড় একটা যাওয়া হয়না। আর ক্লাস সেভেন থেকে গ্যাস্ট্রিক আলসারে জেরবার, একবারে ম্যাক্সিমাম তিনটে ফুচকা খেতে পারি, আলু আর টক জল ছাড়া। - তা'হলে তো মনুর সঙ্গে মিলছে না। কিন্তু চেহারায় কোথায় যেন একটা স্ট্রাইকিং ইয়ে আছে।  - স্ট্রেঞ্জ ব্যাপার হল,আপনকে দেখেও আমার ঠিক তেমনই একটা ইয়ে বোধ হয়েছিল। চেহারায় ঠিক কোথায় যেন..। - আপনি শিওর আপনি মনু নন? - সেন্ট পার্সেন্ট৷ মানিব্যাগে আধার কার্ড আছে৷ চাইলে দেখতে পারেন।  আমি সুবিনয় দত্ত৷। কিন্তু ব্যাপারটা খুব ইন্ট্রিগিং, এই আপনার চেহারা দেখেও আমার এমন এই ইয়ে হওয়াটা৷ চেনা চেনা যেন। যাক গে, ভেরি সরি ভায়া৷ আমি মনু নই। খুব আশা করেছিলেন নিশ্চয়ই..পুরনো চেনামুখের সঙ্গে দেখা হল ভেবে।  - কী আর করা যাবে বলুন। - তা আপনার নামটা তো জানা হল না। - আমার নাম? মনু।  - এক্সকিউজ মি? - মনু। - আপনিই মনু?  - প্রেসিডেন্সি। বারুইপুর বুল

দ্য গ্র‍্যান্ড তুকতাক

- কী চাই? - হুঁ? - কী চাই? চাকরীতে টপাটপ প্রমোশন বাগানোর মাদুলি? শুগার কন্ট্রোলে রাখার তাবিজ? হাড়বজ্জাত মানুষজনের বদনজর এড়িয়ে চলার জন্য কবচ? - কই, না তো। - তা'হলে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসা কেন? - দ্যাখ বুড়ো..। - আমার সঙ্গে যারাই দেখা করতে আসে তারা আমায় চমৎকারিবাবা বলে ডাকে। আপনি-আজ্ঞে করে নুয়ে পড়ে।  - তাঁরা তো আর তোর বাপ নয় বুড়ো। - উফ। আদত তন্ত্রসাধকের বাপ-ঠাকুরদা থাকতে নেই। - প্রায় এক বছর হতে চলল বাড়ি ছেড়ে এইসব ফোরটুয়েন্টিগিরি শুরু করেছিস।  আর কতদিন! - ফোরট্যুয়েন্টিগিরি?  আমি রেগে গেলে একটা যাচ্ছেতাই কাণ্ড ঘটে যাবে কিন্তু।  - মানছি আমি একসময় তোর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছি৷ পারিবারিক ব্যবসায় ফাঁকি দিচ্ছিস দেখে মেজাজ খিঁচড়ে গেছিল, না হয় ভালোমন্দ চারটে কথা বলেই দিয়েছি। কিন্তু তাই বলে তুই তারাপীঠে এসে পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙার ব্যবসা শুরু করলি রে বুড়ো?  - আর একটাও আজেবাজে কথা শুনলে এমন বাণ মারব..। - বাড়ি ফিরে চল বুড়ো। আমি না হয় মায়াদয়াহীন স্ক্র‍্যাপের দালাল। মায়ের কথা ভেবে অন্তত বাড়ি ফের। - তন্ত্রসাধকের আবার বাড়ি। তন্ত্রসাধকের আবার মা। - তুই না হয় বাড়িতে গিয়েই একটা এই হোকাসপোকাস

মামা ও বিরিয়ানি রহস্য

- কী হল মামা! বিরিয়ানিতে কবজি না ডুবিয়ে অমন গুম মেরে বসে রইলে যে? - ক্যালামিটি! - সে কী। - ক্যাটাক্লিজম। - আরে হয়েছেটা কী? - রাহাজানি।  - উফ! বিরিয়ানির খুশবুতে গড়বড়?  - না। পার্ফেক্ট সৌরভ নাকে বুকে কভারড্রাইভ চালাচ্ছে৷ সমস্যা অন্য জায়গায়৷  - কোথায়? - আমি নিজে দু'প্লেট বিরিয়ানি প্যাক করিয়ে এনেছি ভাগ্নে। নিজের হাতে করে বয়ে এনেছি সেই দু'প্যাকেট। - তবে? - তোর প্লেটে পরিমাণ ঠিক আছে৷ কিন্তু আমার প্লেটে..। - কম?  - কম। - কিন্তু আমার চোখে তো..। - শুধু চোখ দিয়ে বিরিয়ানির তল পাবি নাকি রে রাস্কেল? - স্পষ্ট দেখছি তো, সেম কোয়ান্টিটি।  - কাঁচকলা। আমার প্লেটে কম। - কতটা কম? - এককণা চাল কম।  - তুমি আমার সঙ্গে ইয়ার্কি করছ মামা? - ডেড সিরিয়াস। বিরিয়ানি নিয়ে ফচকেমো আমি বরদাস্ত করতে পারিনা।   - তোমার সামনেই তো প্যাকেট থেকে প্লেটে ঢাললাম। এই দেখো বাক্স। এক কণাও চাল এখানে পড়ে আছে কি? নেই। শেষ কণাটুকু  প্যাকেট থেকে থালায় ট্রান্সফার করেছি। আর টেবিলেও ভালো করে দেখো। এক কণাও কোথাও পড়ে নেই। উফ, আমি এই আজগুবি অভিযোগের উত্তরই বা কেন দিচ্ছি কে জানে। - একসময় পৃথিবীর রোটেশন আর রিভোলউশন ব্যাপারটাও

অমলকান্তির অফিসে

সকাল সকাল বসের তলব।  অমলকান্তি তড়িঘড়ি ছুট দিলেন বসের ঘরের দিকে। পৌঁছে দরজায় একটা মোলায়েম টোকা। তারপর গুলকন্দ মেশানো গলায় শুধোলেন "স্যার, আসব"? উত্তর এলো টিনের ওপর ইটপাটকেল পড়া বাজখাঁই সুরে। "আপনাকে নিশ্চয়ই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নজরুলগীতি গাওয়ার জন্য ডাকিনি। ভিতরে এসে উদ্ধার করুন"। অমলকান্তি বুঝলেন হাওয়া সুবিধের নয়। নিজের গোবেচারা না-ঘরকা-না-ঘাটকা হাসিখানা মুখে সেঁটে ঘরের মধ্যে পা রাখলেন। "আচ্ছা অমলকান্তিবাবু, আপনি কি আমায় বোকা ভাবেন? ডু ইউ থিঙ্ক আই অ্যাম আ ড্যাম ফুল"? ভেবড়ে গেলেন অমলকান্তি। এই ধরণের প্রশ্নের সামনে অধোমুখ নেকুসম্রাট হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কোনও উপায় থাকেনা৷ কিন্তু সকাল সকাল এই রাফায়েল-বোফর্স মেশানো আক্রমণের কারণটা ধরতে পারলেন না৷  শর্মা অ্যান্ড শর্মার ফাইলটা জমা হয়ে গেছে৷  গতকাল সন্ধ্যেয় ঘণ্টা দুই বাড়তি বসে গতমাসের স্টেটমেন্টখানাও রিকনসাইল করা হয়ে গেছে।  তবে?  সেই 'তবে'র তল আর পেলেন অমলকান্তি। কী একটা অতি-খুচরো প্রসঙ্গ তুলে উত্তমমধ্যম শুরু করলেন বস। মিউমিউ করে দু'চারটে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন বটে কিন্তু সেই মিউমিউ বসের

চাউমিনার

রাস্তা ঘেঁষা চাউমিনের স্টলগুলোর সবচেয়ে বড় 'প্লাস পয়েন্ট' হলো চাউমিন রান্নাটা আগাগোড়া দেখা যায় এবং উপভোগ করা যায়। বড় রেস্তোরাঁর (বা জোম্যাটোর মাধ্যমে আনানো) চাউমিন প্রথমেই দেখা যায় প্লেটে। চাউমিনের গায়ে কী'ভাবে রং ধরল, সে'টুকু 'অবজার্ভ' করতে না পারলে তৃপ্তি হয়না৷  সামান্য পেঁয়াজকুচি আর অনেকটা কুচনো বাঁধাকপি (কিছু ক্ষেত্রে সামান্য রুখাশুখা গাজর কুচিও থাকে) ফায়্যার হবে চাটুর গরম তেলে। মনে রাখা দরকার- 'রাস্তার' চাউমিনে বিনস, বেলপেপার গোছের বাড়তি শখ-শৌখিনতা অদরকারি,সে'খানে চাই মারকাটারি অ্যাকশন ।  চাউমিনের চাটুর ওপর খনখনাখন্ খুন্তি নাড়ার শব্দ, আহা; এর তুলনা শুধু অমলেট বানানোর আগে স্টিলের গেলাসে চামচ দিয়ে ডিম ফেটানোর খটখটর মিঠে শব্দের তুলনা চলতে পারে৷ যা হোক৷ কথা হচ্ছিল চাউমিন নিয়ে। ভাজা পেঁয়াজ আর বাঁধাকপির মধ্যে পড়বে চাউমিন, বাড়বে চাউমিন-ভাজিয়ের ব্যস্ততা৷ পড়বে নুন, মশলা আর (যতই খুঁতখুঁত করুন না কেন) আজিনামোটোর গুঁড়ো। বাতাসে ভেসে বেড়াবে সুবাস। আর সে সুবাসে চড়চড়ে বিদ্যুৎ যোগ হবে ভিনিগার ছড়িয়ে দেওয়া মাত্র। জিভের মধ্যে সুড়ুৎ খেলে যাবে জল। এরপর যেই

টপ ১০ মহালয়া এলিমেন্টস ফ্রম দ্য নাইনটিজ

১। ঢাউস একখানা অ্যালার্ম ঘড়ি। যে ঘড়ির দিকে তাকালেই ঘুমটুম উড়ে যায়। যে ঘড়ি মাথার কাছে রেখে চোখ বুজলেই বুকে ঢিপঢিপ; এই বুঝি বোমা ফাটল। যে ঘড়ির অ্যালার্ম শ্যামবাজারে বাজলে গোলপার্কের ঝিমোনো মানুষজন চমকে ওঠে।  ২। ব্যাকআপ অ্যালার্ম; "দিদা, বাই চান্স অ্যালার্মটা ফেলে করলে একটু ডেকে দিও"। কম্যুনিস্ট দাদারাও এ'দিনটায় মার্ক্স ত্যাগ করে কালচারের তাড়নায় দিদিমাদের দিকে ঘেঁষতেন। ৩। রেডিও। বোনাসঃ আগের দিন সন্ধ্যেয় কাটলেট সহযোগে ফ্রিকুয়েন্সি টেস্টিং।   ৪। ব্যাকআপ ট্রানজিস্টার। ব্যারাকপুরের মেসো বারবার বলতেন, পলিটিশিয়ান আর যন্ত্রপাতিদের চোখ বুজে ভরসা করতে নেই। ৫। চানাচুর। ভোরবেলা ঝাল চানাচুর হল চাউমিনে পোস্তর সমান। দরকার হল টকমিষ্টি চানাচুর। বাটি অপ্রোয়জন,  বয়াম থেকে ডাইরেক্ট মুঠো করে তুলে নেওয়াটাই ট্র‍্যাডিশন।  তারপর দুলে দুলে বীরেন্দেবাবুর সুরে তাল দিয়ে চেবানো।  ৬। চা। কাপে হবে না। সাপ্লাইলাইন দাঁত খিঁচোবে৷ ফ্লাস্কে ভরে নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে বসাটাই যুক্তিযুক্ত।  ৭। প্রথম দু'মিনিট শোনার পর। গলায় উত্তেজনা! "ভদ্রবাবুর ভয়েসে যে কী ম্যাজিক! দ্যাখ দ্যাখ। এই দ্যাখ। গায়ে কাঁট

পুরানি দিল্লী

২০০৭। দিল্লী। একটা প্রেম দাঁড় করানোর কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রোজকার ক্লাস শেষ হতেই ছুট; সোজা গিয়ে ছ'শো একুশ নম্বর বাস ধরে কনট প্লেস। দেখাসাক্ষাতের ব্যাপারটা বেশিরভাগ দিন ও'খানেই সারা হত। তারপর ইনার সার্কেল আর আউটার সার্কেল জুড়ে মাইলের পর মাইল হাঁটা।  একটানা অকারণ হাঁটা, অর্ধেক দুপুর আর পুরোটা বিকেল জুড়ে। অকারণ; কারণ ওই বয়সের প্রেম-প্রেম হাহুতাশকে লজিকের ফ্রেমে ধরতে যাওয়াটা বাড়াবাড়ি।  কনট প্লেসের বেশিরভাগ দোকানপাট আর রেস্তোরাঁই কলেজপড়ুয়াদের পকেটের পক্ষে অস্বাস্থ্যকর৷ সে বয়সে কেএফসির মত রেস্তোরাঁতে ঢুঁ মারার কনফিডেন্সও ছিলনা৷ ওয়েঙ্গার্সের স্যান্ডউইচ বা কেভেন্টার্সের শেকও বড্ড দামী মনে হত। আমাদের ভরসা ছিল মূলত ফুটপাতের খাবার বিক্রেতারা৷  শিঙাড়া, বাদামভাজা, আলুচাট, চিপস, 'স্লাশ', বরফগোলা; এই'সব।  বুকে 'অষ্টমীতে প্রথম দেখা' মার্কা হুহু থাকলে আলুচাটের থেকেও চিকেনরোলের সুবাস পাওয়া যায়। দিব্যি উতরে যেত সেই দুপুর আর বিকেলগুলো। শুধু কোনও কোনও দিন হাঁটাহাঁটির মধ্যে পেত প্রবল খিদে। প্রবল। সুতীব্র। সে বয়সে খিদেপেটে মনে হত; পারলে মরিচ ছড়িয়ে, মাখন মাখিয়ে

আই লাভ ইউ

- তুমি আমায় আই লাভ ইউ টাভ ইউ বিশেষ বলো না কিন্তু। - ন্যাকাপনা।  - শেষ যখন বলেছিলে তখন কেন্দ্রে কংগ্রেস,  রাজ্যে সিপিএম।  - গা জ্বলে যায়। - ডাইভার্ট করে দিও না সুমি। ডাইভার্ট করে দিও না।  - হঠাৎ এ'সবের শখ হলো কেন? - শখ? রাইট বলো। অধিকার অফ আ স্পাউস। - গাম্বাটদের অধিকার থাকতে নেই। - আমি গাম্বাট? - আলবাত। - আই লাভ ইউ দাবী করেছি বলে আমি গাম্বাট?  - আই লাভ ইউতে আই লাভ ইউ খুঁজে হদ্দ হচ্ছ বলে। - এই এক ঝামেলা। যে কোনও তর্কে দিব্যি কেমন ঘুরপাক খাইয়ে গুলিয়ে পেঁচিয়ে দাও। - সাধে কি বলি? গাম্বাট। উইথ আ ক্যাপিটাল জি। - আই লাভ ইউতে আই লাভ ইউ খুঁজে হদ্দ হওয়ার কেসটা কী সুমি? - আই লাভ ইউ বলতে গেলে "আই লাভ ইউ"ই বলতে হবে, এ'সব গোদা আইডিয়াগুলো এ'বার ত্যাগ করো। মনে রেখো, গদা দিয়ে ইয়ারবাডের কাজ চালানো যায়না। - তুমি আমায় বলো কখনও? আই লাভ ইউ?  - বলি। তবে হাইক্লাস ট্রান্সলেশনে। - কী'রকম? - এই যেমন গতকাল দুপুরে যে বললাম। "তোমার বানানো বিরিয়ানি আরসালানকে টক্কর দেবে"।  - ও'টা আই লাভ ইউ? - টপমোস্ট ক্যাটগরির। রীতিমত ব্লাইন্ড। - আই সী। তা'ছাড়া? - গত হপ্তায় আদতে

দ্য পুজো পুজো রোব্বারস

দিব্যি কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে খটরখটর কী-বোর্ড চালিয়ে যাচ্ছিল অনিন্দ্য৷ দিব্যি। সাতটা এক্সেল শিট আর আর তিনটে ওয়ার্ড ফাইল চোখের সামনে খোলা। কনসেন্ট্রেশন তুঙ্গে, কাপের কফি আধঘণ্টা আগেই ফুরিয়েছে অথচ মাঝেমধ্যে সেই খালি কাপেই চুমুক দিচ্ছিল সে।  এমন সময় হল কী...কম্পিউটারটা আপনা থেকেই রিস্টার্ট হল৷ সমস্ত খোলা ফাইলকে না পাত্তা না দিয়ে সে ব্যাটার স্ক্রিন দুম করে বন্ধ হয়ে আবার জ্বলে উঠলো৷ অনিন্দ্যর মেজাজটাও গেল বিগড়ে। আচমকা সে টের পেল কফির কাপটা ফাঁকা। তারপর খেয়াল হল আশেপাশের কিউবিকেলগুলোও ফাঁকা। কেউ কোত্থাও নেই। অনিন্দ্যর মনে পড়ল আজ রোব্বার। অন্য কারুর অফিসে আসার কথা নয়৷ কিন্তু তাকে প্রায়ই ছুটির দিনে আসতে হয়৷ প্রায়ই তাকে রোব্বারি-তলব পাঠান বড়সাহেব৷ বড়সাহেবের রোব্বারি ডাক সবাই এগিয়ে গেলেও অনিন্দ্য পাশ কাটাতে পারেনা। সে জন্য অবিশ্যি বড়সাহেব তাকে বিশেষ পছন্দ করেন।  যা হোক। কম্পিউটার রিস্টার্ট হওয়ার সময় কনসেন্ট্রেশনটা গেল গুলিয়ে। আর সে'টাই হল কাল। মুহূর্তের অসাবধানতায় অনিন্দ্যর চোখ গিয়ে পড়ল জানালার ও'পাশে, আকাশের দিকে। এক্সেল, ওয়ার্ড ডক, আউটলুক ইনবক্স সব কেমন ঝাপসা হয়ে প

সেল্ফ হেল্প

যে সেলফ হেল্প বইগুলো আমি পড়তে চাই -   ১। দ্য সেভেন হ্যাবিটস অফ হাইলি এফেক্টিভ ল্যাদিস্টস। ২। হাউ টু উইন এক্ট্রা ফাউস অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স ফুচকাদাদাস। ৩। দ্য পাওয়ার অফ "ভাল্লাগছেনা"। ৪। দ্য সাটল আর্ট অফ "সোফা ছেড়ে উঠব না"।  ৫। দ্য ম্যাজিক অফ থিঙ্কিং বিরিয়ানি।

নেশা ও সলিউশন

- এই যে অনির্বাণ। ও'দিকে কোথায় ছুটে যাচ্ছ। এ'দিকে এসো।  - বড়সাহেবের চেম্বারে দিকে যাচ্ছিলাম। জরুরী তলব। - ব্রাদার। হিউম্যান রিসোর্সে থেকে অমন তাড়াহুড়ো করতে নেই।  - বস তাড়া দিলেও নয়? - তা'হলে তো একেবারেই নয়। সিনিয়রদের লাই দিয়ে মাথায় না তোলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। - সান্যালদা, কী যে বলেন আপনি মাঝেমধ্যে।  - বাইশ বছর এই কোম্পানিতে আছি হে। আজ পর্যন্ত একটা প্রমোশনও মিস করিনি। কাজেই আমি যখন যাই বলি, জানবে সে'গুলো আদতে বাণী।  - একটু বুঝিয়ে বললে সুবিধে হয় সান্যালদা। - বড়সাহেব কেন ডেকেছেন। সে'টা জানা আছে? - কোম্পানির অবস্থা তো সবই জানেন। গতমাস থেকে ফ্যাক্টরির সমস্ত লেবারদের সবার মাইনেকড়ি আটকে আছে। সামনের হপ্তায় কিছু টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু ফিনান্স থেকে আজ জানালে আগামী মাসখানেক তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। এ'দিকে আজ বিকেলে খেপচুরিয়াস ইউনিয়নের নেতারা আসছেন বড়সাহেবের সঙ্গে মিটিং করতে। তাঁদের কী ভাবে শান্ত করা যায়..সে'সব নিয়ে আলোচনা করতেই আমায় ডেকেছিলেন বড়সাহেব। - আই সী। তা, কী ভাবে তাঁদের শান্ত করবে? মিটিংয়ে শিঙাড়া জিলিপি আর সল্টেড কাজুবাদাম খাইয়ে?  - সান্যা

প্রজাপতি

কলকাতা সরগরম। ফুটপাত জমজমাট। সন্ধ্যের হইহট্টগোল, ট্রামের ঘরঘর,  বাসের হর্ন আর অটোর হুড়মুড়।  ভীড়। ঠেলাঠিল।  "আরে দাদা, একটু দেখে পা ফেলবেন তো" গোছের খোঁটা। ব্যস্ততার স্রোত বয়ে যায়, সন্ধ্যের এই সময়টা শ্বাস ফেলার ফুরসৎটুকু পায় না কলকাতা। আহা, মানুষের দল বাড়ি ফিরছে। শহরের গায়ে যে কী অবিশ্বাস্য গতি লেগে থাকে এই সময়। সেও ছুটছিল।  অবিশ্বাস্য গতিতে।  তবে কলকাতার উল্টো দিকে।  কলকাতা ডাইনে ছুটলে, সে এগোচ্ছে বাঁয়ে।  কলকাতা ছড়া কাটলে, সে ধরছে খোলতাই টপ্পা। কলকাতা ধুরন্ধর চালে কিস্তিমাত করতে চাইলে, সে চালছে দু'ছক্কা পাঁচ। কলকাতার কভার ড্রাইভের জবাবে তার বাইসাইকেল কিক। কলকাতা উত্তম হাসি হাসলে, সে ভাসিয়ে দিচ্ছে তুলসী চক্কোত্তি মার্কা 'বাপ রে বাপ রে বাপ'। মোদ্দা কথা হল কলকাতার বয়ে চলা অগ্রাহ্য করে সম্পূর্ণ উল্টো খাতে বইছিল সে। গোটা শহরটাকে এক অন্য ডাইমেনশনে ফেলে রেখে অন্য জগতে এসে পড়েছিল সে। সে ছুটছিল।  একহাতে কাগজের ঠোঙায় ডিমপাউরুটি৷ পাউরুটি, ডিম আর সর্ষের তেলে ভেজা কাগজের গন্ধ মিলেমিশে তার নাকেবুকে নহবত বসিয়েছিল যেন। অন্য হাতে একজোড়া প্রজাপতি বিস্কুট।  ডিমরুটির নরম