Skip to main content

Posts

Showing posts from 2019

অনমিত্রবাবুর প্রত্যাবর্তন

১ কফি হাউসের দেওয়ালে টাঙানো ফ্রেমের ওপার থেকে রবীন্দ্রনাথ গাইছিলেন।  “আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাইনি তোমায়”।  টোস্টটা বিস্বাদ। দুপুরটার মতই। অনমিত্র নিজের অস্বস্তি চেপেচুপে কোনোক্রমে বসেছিলেন। কিন্তু সুরটা ক্রমশ তাঁর গায়ে আঁচড় কাটছিল যেন। ওয়েটারকে বিল দিতে বলে নোটবুকটা বন্ধ করে সাইডব্যাগে ঢুকিয়ে রাখলেন তিনি।  এ’বারে কফি হাউস আসাটা বন্ধ করতে হবে। এতদিন কেটে গেল অথচ একদিনের জন্যেও মিতার দেখা পাওয়া গেল না। কিন্তু একসময় এ’দিকে মিতার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। সে সবই ওর সাহিত্যিক বন্ধুদের হাত ধরে অবশ্য। মিতা নিজেও একসময় লেখালিখি করত। গত বছর দশেকে রিসার্চের কাজে এত ব্যস্ত হয়ে পড়লো মেয়েটা। তবু সময় সুযোগ করে মাঝেমধ্যেই চলে আসত কফি হাউস।  অথচ কতদিন হয়ে গেল মিতার দেখা নেই। ধুস্‌।  কফিহাউস থেকে বেরোতে বেরোতে বিকেল চারটে বেজে গেল। অনমিত্র রোজকার মত হাঁটতে হাঁটতে মেডিক্যাল কলেজের পিছনের দিকটায় চলে গেল। এখন ভাঁটার সময়, ঢেউ কম। আকাশ আর সমুদ্রের ফ্যাঁকাসে রঙ মিলেমিশে একটা অদ্ভুত গা ছমছম তৈরি করে; সে’টা দিব্যি লাগে অনমিত্রর। কলেজ স্কোয়্যারের দিক থেকে ঘটিগরমওলারা

হরিহর সামন্তের আবেদন

- নাম? - হরিহর সামন্ত। - হরিহর। ও লেখেন না এ? - আজ্ঞে? - নামের ইংরেজি বানানে, দুটোই ও না দুটোই এ না কম্বিনেশন? - মার্কশিটে দুটোই এ। সামন্ততেও দুটোই এ। - বয়স? - একশো বত্রিশ। - একশো বত্রিশ? অনলি? - অনলি বলবেন না স্যর। মনের দিক থেকে কিন্তু আমি জেনুইনলি বুড়িয়ে গেছি। বিশ্বাস করুন। - দেখুন, আপনার মৃত্যুর আবেদন নাকচ হবেই। গোটা শহরে মাত্র দুটো সরকারি ডেথ মেশিন। অন্তত আড়াই হাজার মানুষ ওয়েটলিস্টে আছেন। আর যারা ওয়েটলিস্টে আছেন তাঁদের প্রত্যেকের বয়সই অন্তত দেড়শো। কাজেরই আপনার আবেদন…নাহ, চান্সই নেই। - অমন বলবেন না স্যর। আমার বড় ইচ্ছে আমি মারা যাব। তাছাড়া একশো বত্রিশ নেহাত কম কিসে। আমার পিসতুতো দাদা একশো চল্লিশে ভলেন্টারি রিটায়ারমেন্টের জন্য আবেদন করেছিল, দিব্যি মঞ্জুর হয়ে গেছিল। তাছাড়া ভাবুন, এককালে তো মানুষ আশিতেই বুড়িয়ে যেত। যেত না কি? - ও মা। সে তো কয়েকশো বছর আগে মানুষের জ্বরও হত। ক্যান্সারট্যান্সার গোছের কিছু হলেই দিব্যি টক্‌ করে মরে যেত। সেসময় তো দেশে দেশে ইলেকশনও হত শুনেছি। আর তার কিছুদিন আগে মানুষ গুহার দেওয়ালে ছবি আঁক

ট্যাক্সের হিসেব

- দাঁড়িয়ে কেন? বসো। - গুড মর্নিং স্যর। ইয়ে…সোফায় বসব? আপনার পাশে? নাকি উল্টো দিকের চেয়ারটায়? - যেখানে খুশি। মেঝেতেও বসতে পারো। - নভেম্বর…একটু শীত শীত ভাব পড়ে গেছে কিন্তু, মার্বেলের মেঝে তো…পায়ের তলেই কেমন ছ্যাঁত ছ্যাঁত…। আমি বরং ওই চেয়ারেই…। থ্যাঙ্ক ইউ। - শশাঙ্ক সাহা, তাই তো? - আজ্ঞে হ্যাঁ, ফ্রম রসুলপুর। কাল আপনার সেক্রেটারির ফোন পেয়েছিলাম তাই…তাই আজ সিধে ভোর সোয়া পাঁচটার ট্রেনে…। - দ্যাখো শশাঙ্ক, আমার হাতে সময় বড় কম। - সময় বাড়তি থাকা মোটেও কাজের কথা নয় দাসগুপ্ত স্যর। হাতে অঢেল সময় থাকলেই চোদ্দ গণ্ডা আজেবাজে চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খায়; ঘুম কমে আসে, হজমে গোলমাল…। - আর বাড়তি কথাও ভারী অপছন্দ। - বাড়তি ব্যাপারটা অবশ্য রিলেটিভ বুঝলেন স্যার। আমার মেজকাকা “অল্প ভাত” বলতে যে পরিমাণ বোঝাতেন তা দিয়ে তিনজনকে নেমন্তন্ন করে খাওয়ানো যায়। আবার কাটোয়ার পিসেমশায়ের কবজি ডুবিয়ে খাওয়ার মানে অনলি চারটে লুচি আর হাফবাটি ছোলার ডাল। ভাবতে পারেন? - হুহ্‌। - অবিশ্বাস করছেন? চলুন না একদিন কাটোয়া। দেখবেন পিসেমশাই কেমন...। - শশাঙ্ক…বুড