Skip to main content

Posts

Showing posts from December, 2015

নয়া সাল মোবারক

-           নয়া সাল। মুবারক্‌। -           মোবারোক হোক। -           এমন স্যাড ফেসে বসে স্যার? -           এটা ন্যাচারাল ডিসপোজিশন। ইম্যাজিন মি অ্যাজ আ জলভরা। বাইরে খসখসে। ভিতরে সুইমিং কস্টিউম ছাড়া অ্যালাউড নয়। -           আই লাইক স্যুইমিং কস্টিউম। -           আমি জলভরা এক্সপ্লেইন করলাম। আপনি মনে রাখলেন স্যুইমিং কস্টিউম। -           স্যুইমিং কস্টিউম। বিকিনি। রীতিমত পছন্দ। -           ট্র্যাক ধরে ফেলেছেন দেখছি। কিনতে চেয়েছিল কেউ, আমি বিকিনি। -           বিকিনির ব্যাপারে কিছু বললেন নাকি? -           মুখ পানসে করবেন না প্লীজ। সবার সব কিছু বুঝে কাজ নেই। তবে বিকিনির আমেজের কথাই যখন বললেন তখন জিজ্ঞেস করি। ঘাসের গন্ধ আর আঁচলের ফসফস মিশে যেতে অনুভব করেছেন? -           গন্ধ আর শব্দ? মিশেল? ওমা! -           ওবামা বলেননি ভাগ্যি। -           ডিউড, হোয়াট আর ইউ স্মোকিং? -           পুরনো ব্যালকনির গন্ধ। ব্যালকনির এক কোণে বেঁটে মোড়া, আরেক কোনে তুলসীর টব। মোড়ায় আমি, হাতে মুড়ি চানাচুরের বাটি। আনন্দবাজার ফরফর করে উড়ছে মেঝেময়। বাতাসে আশু জানুয়ারি। বুকে চোখের জল; স্কুলের প্রেম ম

শাসমলবাবুর নিউ ইয়ার্স পার্টি

-    টু থাউজ্যান্ড ফিফটিন ইউসেন বোল্টের স্পীডে বেরিয়ে গেল। -    গতবার ফোর্টিনকে সুপারসনিক জেটের সাথে তুলনা করেছিলেন। -    করেছিলাম না কি? -    আসুন। -    সিগারেট? -    কেন, গোল্ডফ্লেক চলে না? -    না মানে। সামনের বছর থেকে একটু ইয়ের কথা ভাবছিলাম। -    ছেড়ে দেওয়ার কথা? -    না। রিস্ট্রেইন। মেয়ে বলছিল। -    তা আজ তো তিরিশ। এখনও দেড় দিন আছে। -    দিন একটা। -    আসুন। -    বছর শেষের বাজার। অফিসে আর কতক্ষণ? -    বিকেলের রিপোর্টটা পাঠিয়েই ভাবছি বেরোব...আপনি? -    বড়সাহেব যতক্ষণ আছেন, ততক্ষণ গতি নেই। -    নিউ ইয়ারের প্ল্যান? -    মা সাত দিন ধরে হসপিটালে। ছেলের জ্বর। মেয়ের বয়ফ্রেণ্ড। বৌয়ের মেজাজ সপ্তমে। মাই লিট্‌ল ক্লাউড নাইন। আমি প্ল্যান করি না। আমায় প্ল্যান অফার করা হয়, আমি এক্সেকিউশনে থাকে। হাফ ইঞ্চি হাঁটতে বললে হাফ ইঞ্চি হাঁটব, কাশতে বারণ করে কাশব না।  আপনার বুঝি একটু ইয়ে টিয়ের প্ল্যান আছে? -    ইয়ে বলতে মদ্যপানের কথা বলছেন নাকি? -    জানুয়ারির ওয়েদার। মাঝরাত, আপনি শাসমলবাবু ব্যাচেলর মানুষ। শৌখিন বলা চলে। অ্যান্টিক বা পেইন্টিং জমানোর শখ এ যুগে ক’জন ম্যা

মামা ও খিচুড়ি

- মামা, খিচুড়ি শীতে বেটার হোল্ড করে না বর্ষায়? - ঝোলা বর্ষায়। ভুনা শীতে। - ঘি ব্যাপারটা কমন, তাই তো? - ওয়েল। ঝোলায় আলাদা করে দু'চামচ। ভুনায় পুরো ঘিটাই ইন-বিল্ট। - বর্ষায় অবশ্যি ইলিশ থাকে। সেটা একটা মেজর অ্যাডভান্টেজ। - ইলিশ ইন্ডিপেনডেন্ট ব্যাপার। খিচুড়ির অ্যাক্সেসরি হিসেবে রেফার করিস না। ডিম ভাজা, লম্বা করে কাটা বেগুন ভাজা, গোল করে কাটা আলু ভাজা; এই হচ্ছে ষ্ট্যাণ্ডার্ড হিসেব। - সে'সব তো বর্ষার খিচুড়ি আর শীতের খিচুড়ি দু'টোতেই কমন। - অলমোস্ট। তবে শীতের ডিমভাজাটা হাঁসের ডিমে হলে ব্যাপারটা দাঁড়ায় ভালো। বর্ষায় মুর্গি ইজ ফাইন। - অ। - তবে আর একটা ডিফারেন্স আছে বাবু। - কীরকম? - বর্ষার যখন খিচুড়ি খাবি, তখন ব্যাকগ্রাউণ্ডে ধীরেন বোসে নজরুলে আবহ তৈরি করবে। কিন্তু শীতে ইউ নিড দ্য ওয়ার্মথ অফ হেমন্ত-সলিল। - সত্যি মামা, তোমার ইনপুট ছাড়া খাওয়াদাওয়া জমে না। - আই নো বাবু। - আই মিস ইউ মামা। - আই মিস ইউ টু বাবু। দিদি আজ খিচুড়ি রেঁধেছে? - হুঁ। তবে শীতের মধ্যে ঝোলা। - জামাইবাবুর ইনফ্লুয়েন্সে দিদি রান্নার কন্সেপ্টে ঝোল মিশিয়ে ফেলছে। - এখানেও তো শুনেছি মামা খিচুড়ি সার্ভ করে। - করে। তবে সে'সব ঝ

ব্যালকনির ও মোড়া

ব্যালকনি। ব্যালকনির মোড়া। ব্যালকনির মোড়ার ওপর লাল শাড়ি বড় টিপ। ব্যালকনির মোড়ার ওপর লাল শাড়ি বড় টিপ আর মোড়ার নিচে ল্যাদকুমার। ব্যালকনির মোড়ার ওপর লাল শাড়ি বড় টিপ আর মোড়ার নিচে ল্যাদকুমার আর এক বাটি চানাচুর মোড়া বেয়ে উঠছে আর নামছে। তবে লাল-টিপ চানাচুরের বাটি ল্যাদকুমারকে রিলে করতে পারে না। ল্যাদকুমার ড্যাবা-টিপের প্রতি চানাচুর বাটি ফিরিয়ে দিতে পারে না। পপকর্ন-বিলাসী ঈশ্বর দু'টো ব্যালকনি বানিয়েছেন।

মাঠ ও ঘুড়ি

মেয়েটা বড় ভালো। মাঠের মত। মাঠের উত্তর কোণে সাদা একটা ছোট্ট বাড়ি, লাল টালির। মাঠের দক্ষিণে কৃষ্ণচুড়া গাছ।   মেয়েটা সেই মাঠের মত ভালো। ছেলেটা বড় বোকা। ঘুড়ির মত। অল্প হাওয়ায় ছটফট, সুতোয় নাচানাচি। হুজুগে নীল। ঘুড়ির লাটাই মাঠে গড়াগড়ি। ছেলেটা সেই ঘুড়ির মত বোকা। ঘুড়ির ফিক হাসি। মাঠের সবুজ গন্ধ। ঘুড়ির বেমক্কা ঘুরঘুর, মাঠের ঝমঝমে লাল শাড়ি। মাঠের "তোর মন খারাপ বাবু?" আর ঘুড়ির "তুই বড্ড ডেঁপো"। ভালো আর বোকা মিলে এগরোল খেয়ে হদ্দ হয় আর ফুচকায় ভেসে যায়। তাদের মাসকাবারি নেই, তাদের বিছানার এ পাশ ও পাশ নেই, তাদের একসাথে বাড়ি ফেরা নেই। এর বুকে ওর ম্যাদা মেরে শুয়ে পড়া নেই। মাঠের চোখ ঝাপসা। ঘুড়ির ছটফট। মাঠ আর ঘুড়ি বিকেলের সাথে ফুরিয়ে যায়।

নিমন্ত্রণ

বুক পকেটে মোবাইল বেজে ওঠায় সমরবাবুর বাসঘুমটা ভেঙে গেল। মোবাইল বের দেখেন লিপির কল। - "কী ব্যাপার?", ঘুম জড়ানো গলায় জানতে চাইলেন সমরবাবু। - "তোমার ব্যাগে এক্সট্রা কার্ড আছে?। - "আছে। কেন?"। - "পুলুমামারাও তো এখন কেষ্টপুরেই শিফট করেছে, ওদিকে যাচ্ছই যখন ওদের ওখানেও নেমন্তন্নটাটা সেরে এসো"। - "এগজ্যাক্ট ঠিকানাটা জান?"। - "হানাপাড়ার শ্রীকৃষ্ণ অ্যাপার্টমেন্ট বোধ হয়। ওখানে গিয়ে ফ্ল্যাট নম্বরটা জেনে নিও"। - "আচ্ছা বেশ"। ফোন কেটে ব্যাগের ভিতর দেখে নিলেন সমরবাবু। যাক, এক্সট্রা নিমন্ত্রণ কার্ড রয়েছে খান দুয়েক। শুধু মৃদু অস্বস্তি রয়ে গেল লিপির ফোনটা নিয়ে। নিজের শ্রাদ্ধের নিমন্ত্রণের খোঁজখবর নিজে নেওয়াটা বাড়াবাড়িই বলা চলে।

সবার জন্য কেক্‌

"হে যীশু, দেশের মানুষের নেংটি জুটছে না। বড়দিনের কেক পাবে কোথায় তারা?", কাতর কণ্ঠে জানতে চাইলেন বৃদ্ধ। পরমপিতারর চোখ ছলছলিয়ে উঠল। তিনি বললেন; "দেশের দশের এত দুঃখ গো? দেব সে নতুন দিগন্ত। সকলের জন্য রেখে যাব অমরত্বের স্বাদ। সবার জন্য বড়দিনের কেকের কামড় রইবে। এমনকি, আমার এ আশীর্বাদী কেকে বছরের আর পাঁচটা দিনেও রাম-শ্যাম-যদু-মধু সবার জন্যে রইবে কেকের আশ্বাস।" বৃদ্ধের মুখ আশ্বাসে উজ্জ্বল হয়ে উঠল। যীশুর সামনে নতজানু হয়ে হাত পাতলেন; দেশের হয়ে, অভাগা দশের হয়ে। রঙিন ভালোবাসার কাগজে মোড়া এক খণ্ড অমৃতসমান কেক বৃদ্ধের হাতে তুলে দিলেন যীশু। যীশুর আশীর্বাদে ধন্য হলে বৃদ্ধ। যীশু বলে দিলেন; " দশের জন্য তোমার প্রাণে এত ব্যথা। এ কেকের নাম হোক তোমারই নামে, কেমন?"। বৃদ্ধ হেসে কইলেন, "নামে কেন? নাম আজ আছে কাল গায়েব। ভালোবাসার ডাকটুকু বরং এ কেকের সঙ্গে লেগে থাক"। যীশু বাপুজীর মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দিলেন।

বড়দিনের মোলাকাত

দেবভূমি আর্সালান। বড়দিন। চার চেয়ারের এক চেয়ার আলো করে বসে দেবতা, তার সামনে অর্ঘ্যপাত্রে পাঁঠা বিরিয়ানি। তাতে বাড়তি ডিম ও বড়দিনের খোশবু। উলটো দিকে চেয়ারে ঝকঝকে দেবী; একবাটি মুর্গীর চাপ আর খান দুই রুমালি আঁকড়ে। দেবীর পাশে দেবশিশু চুমুকুমার, ফির্নির বাটিতে ডুবে যার চুমুল্যাতপ্যাতে শ্রীমুখ।   বিরিয়ানিতে সোয়াদ নেই, চাপে চাপ। স্বাদ থাকবে কী করে? হাওয়ায় রিটার্ন টিকিটের বদগন্ধ, গলায় থার্মোকলের ড্যালা, মুখের কথা এ দেওয়াল ও দেওয়ালে বেমক্কা গোঁত্তা খেয়ে ফেরে। স্টেনলেস স্টিলের থালায় পাথরকুচি গড়িয়ে দেওয়ার শব্দে ইতিউতি "ভালো থাকিস"রা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে। পরকীয়াতে ছোটবেলা থাকে না, বিরিয়ানির বিস্বাদ থাকে না। "তুই খাচ্ছিস কেন বাবু?" থাকে না। "অমন করে না" থাকে না। পুত্রস্নেহ থাকে না। ফির্নি মাখা শিশুমুখের ভ্যানিশ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। *** - বিরিয়ানি খাবি না বাবু? - স্বাদ নেই। - কথা বলবি না? - কথা নেই। - আমার ছেলে বড় হলে, দেখা করবি আবার ওর সাথে? - এমন বলিস কেন? - করবি দেখা? ওর সাথে?  যখন ও কথা বলতে পারবে? কথা বলবি না ওর সাথে তখন? দ্যাখ। তুইও বাবু। এও বাব

ওঁদের কথা

এ বয়সে আর হুড়মুড় সহ্য হয় না। ধড়াচূড়া খুলে কোন রকমে শরীরটা চেয়ার পর্যন্ত হেঁচড়ে নিয়ে গিয়ে বসতে হল তাকে।  একে এই পশমের ভারী কোট, তাতে কাঁধে বস্তাভরা এই প্যাকেট, সেই প্যাকেটের বোঝা । শখের বসে কী কাজই যে নিয়ে বসে আছেন! আবার স্লেজে না গেলেও নয়, কেতায় বাঁধবে। কিন্তু এদিকে বয়স তো কম হচ্ছে না।  আয়নায় নিজেকে দেখে রীতিমত ঘাবড়ে যেতে হল, একদিনের ধকলেই চোখ বসে গেছে। পৃথিবী জুড়ে টইটই করে বেরানো কি মামুলি ব্যাপার? তাও আবার একদিনের মধ্যে। উফ!  এর চেয়ে হেডমাস্টারি করা অনেক সহজ!  - কিন্তু সহজ বললেই বা ছাড়ান পাওয়া যাচ্ছে কোথায় ডাম্বলডোর?   - এই তোমার এক বাতিক হয়েছে বিবেক। যখন তখন হুট করে উদয় হয়ে পিলে চমকে দেওয়া।  - বলি থকে গেলে চলবে কেন? ফি বছরে একবারটি বেরোও আনন্দধারা বইয়ে আসতে, তা নিয়েও এত টালবাহানা? না না। এ চলে না।  - বলি বয়স হচ্ছে তো। আর কদ্দিন? আর কয়েকশো বছর না হয়ে মুখে রক্ত তুলে টেনেও দেব। কিন্তু তারপর? তারপর কী হবে? ক'হাজার বছর ধরে তো জোয়াল টানলাম। আর দেহ দিচ্ছে না।  - একটা কাজও তো করলে পার।  - কী কাজ? - এই যে আনন্দ বিলি করার কাজ, কয়েক হাজার বছরের আনন্দ সমস্তটাই

নাড়ুর রেসিপি

- এ নাড়ু। তোর বানানো রে? - কেমন? - পাশ করেছিস। - পাশ? ভাগ। যা মর তুই। - আরে শোন। শোন না। লেটার। - খাস না। - আরে। শোন না। আরও আছে?  - পাবি না। যা পাশ লেটার গিলে খা। - এত স্মুদ যে কী করে...! জিভে ফ্লোট করছে রে। - হাত ছাড়। - আমি ভাবতাম তোর যত তেজ শুধু এগজ্যামিনেশনের খাতায়। গাদা গাদা মার্ক্সে! ..এমন নাড়ু যে বানিয়েছিস...হাউ? - ছাড়। - রেসিপি বল। - মরে গেলেও বলব না। নাড়ুর স্মুদনেসটাই তো কি-এলিমেন্ট। সে'টা সিক্রেট। - রেসিপি। বল। ক্যুইক। - নেভার।  - হয় রেসিপি বল...। - নয়তো? হাত ছাড়...। - নয়তো কী? - নয়ত নাড়ুর সোর্সকে ছাড়ব না। - ছাড়বি না? - নেভার। - নেভার?  - নেভার। - পরীক্ষায় গাদা গাদা নম্বর পাওয়া আর পৃথিবীর সেরা নাড়ু বানানো ছাড়া আরও একটা ব্যাপারে আমার জুড়ি নেই রে।  - কী ব্যাপারে? - এই দ্যাখ। তোর জন্য ব্লু বেল্টেই যথেষ্ট। *** - দীপুকুমার! - আহ মামা! সাবধানে। লাগছে। - এমন খতরনাক ভাবে কবজি মুচড়ে গেল কী করে? - সাইকেল থেকে হঠাৎ...। - ক্রেপে চুনে হলুদে হপ্তাখানেক। আর শোন। - কী..? - অমন স্মুদ নাড়ুজোড়া কে পকেটে রেখে ঘুরতে নেই। ব্যাড ফর দ্য পকেট। ওয়ার্স ফর দ্য না

সমাদ্দারের ছিপি

দু'চামচ ছাতু। হাফ চামচ নুন। অল্প পেঁয়াজ কুচি। একটা লঙ্কা কুচোনো। এক গেলাস জলে ফেলে ঘটঘট করে গুলে নেন অরূপ সমাদ্দার। ছাতু ব্যাপারটা পেটে লাস্ট করে, চোঁয়া ঢেকুরের চান্স থাকেনা। পেটাই চেহারার পালোয়ানরা লিটার লিটার ছাতুর সরবত খেয়ে থাকেন। অরূপ সমাদ্দার অবশ্য পালোয়ান নন। তার দেখনাই বাইসেপ নেই। অভাব আছে। ছাতু ডিনারটা হেল্‌থ চয়েস নয়, অনলি অপশন। মাসে পাঁচ কিলো ছাতু আনেন সমাদ্দার। মাসের ষাটখানা মেজর মিল; তার মধ্যে তিরিশবার ছাতু, তিরিশবার ভাত। ভাতে অনেক হ্যাপা। ডাল চাই রে, আলু সেদ্ধ চাই রে। হিসেবের বাইরে দাঁড়িয়ে যায়। তিরিশ দিনের ডাল আলু সেদ্ধ ভাত কে কাটছাঁট করে নিয়ে সমস্ত ডিনার ছাতুতে কনভার্ট করেছেন অরূপ সমাদ্দার আর সমস্ত লাঞ্চকে আপগ্রেড করেছেন ভাত ডাল অমলেটে। এক মনে ঘটঘট করে ছাতু গুলতে গুলতে অরূপ সমাদ্দার প্ল্যান করছিলেন বড়দিনের লাঞ্চে স্রেফ পোল্ট্রির মুর্গির ডিম না খেয়ে হাঁসের ডিমের অমলেট বানাবেন। ছুটির মেজাজ আর কী। এমন সময় ডাক এলো। মাথা কিনে নিয়েছে যেন - বিরক্ত হয়ে ভাবলে অরূপ সমাদ্দার। একটানে ছাদ সরিয়ে তক্ষুনি ঝুপঝাপ করে বেরিয়ে আসতে হল তাকে - ছাতুর সরবতের গেলাস একলা পড়ে

মাউথ ফ্রেশনার

- এটা মাউথ ফ্রেশনার?  - হ্যাঁ।   - কেন? - কেন মানে? কেমন ছেলে তুই? এত রাত্রে ছাদে ডেকে মাউথ ফ্রেশনার কেন দিচ্ছি বুঝছিস না? - না।   - রিয়েলি বুঝছিস না? - না। - চুমুতে ভয় পাস? - না।   - সবেতে না। উফ! ভয় পাস না তো ভ্যাবলার মত দাঁড়িয়ে আছিস কেন? - না মানে...।   - না মানে কী? - চুমুতে ভয় নেই।   - তবে কীসে ভয়? - এই মাত্র খেলাম। জয়নগরের মোয়া। চার পিস্‌। চুমুঠুমুতে সে স্বাদের রেশ মুখ থেকে ডায়লুট না হয়ে যায়; দ্যাট ইজ দ্য অনলি ভয়।

জয় গোস্বামী, জ্যামিতির বাক্স আর ঝাল।

- আমায় শাড়ীতে জবরজং লাগে? - হুঁ? - শাড়ীতে মানায়? - হুঁ? কাকে? - আমায়!! শাড়ীতে মানায়? না কি...ওই সেই জীন্‌সেই ঠিক আছি!  - তোকে? - হে ভগবান! কীসে মানায় আমায়? - তোকে? - হ্যাঁ! কীসে মানায়? - জয় গোস্বামীতে। *** - কখন ফিরবি? - আটটার মধ্যে।  - যেতেই হবে? - যেতেই হবে।  - রাত আটটার মধ্যে? - ন্যাকাকুমার। সকাল আটটা পর্যন্ত আমায় চিলেকোঠায় লুকিয়ে রাখবি না মানিব্যাগে? - কবিতার নিয়মে রাত আটটা? - গদ্যের নিয়মে। - এমন জ্যামিতির বাক্স নিয়ে প্রেমে পড়িস কেন রে? *** - ঝাল লেগেছে? - *সম্মতিসূচক মাথা ঝাঁকুনি* - বেদম ঝাল লেগেছে? - *সম্মতিসুচক মাথা ঝাঁকুনি* - এ কী! ঝালের চোটে চোখে জল। - *সম্মতিসুচক মাথা ঝাঁকুনি*। - এগরোলে লঙ্কা দিতে বারণ করিসনি কেন? যে মেয়েরা ঝাল খেতে পারে না তাদের বড় ইয়ে লাগে। - *প্রচণ্ড বেগে কানমলা*। - কানে লেগেছে? - *সম্মতিসুচক মাথা ঝাঁকুনি* - যে সব ছেলেরা কানমলা রেসিস্ট করতে পারে না তাদের বড় ইয়ে লাগে। যা ভাগ, শিকঞ্জি নিয়ে আয়।

সৌরভ

- সেই গন্ধটা। আবার। - কেমন গন্ধ রে? - ওই। নরম। ঝিমঝিমে।  - কীসের? - তোর। - পারফিউমের। - না না, সেটা পেরিয়ে। তোর চামড়া মাংস আর পন্ডস মেশানো। - ফের ছ্যাবলামি? - সিরিয়াসলি। - সে গন্ধ তুই পাস? - পাই। - আমি পাশে এলে? - সেদিন। যেদিন বিন্নদির গায়ে হলুদ। তুই শাড়ি পরেছিলিস। - হুঁ। - হলুদ। - তো? - গায়ে হলুদের শেষে। তুই স্কুল মাঠের পাশে এসে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েছিলিস। লং অন বাউণ্ডারির দিকে। - তুই দেখেছিলিস? - অপাইদা রাউন্ড দি উইকেট করছিল। মিডল অ্যান্ড লেগ গার্ডে ছিলাম। নালুভুলু লোপ্পা ফুলটস দিয়েছিল অপাইদা; বোধ হয় হাত ফসকে। জাস্ট হাঁটুর হাইটে। সোজা লাইন মিস করলাম। সোজা লেগ স্টাম্প গেল। - ঢ্যাঁড়শের মত ব্যাট চালালে তাই হবে। - ঠিক তা নয়। - তাহলে বোল্ড হলি কেন? - ওই। ধপ করে গন্ধটা নাকে এসে পড়ল। লং অন থেকে। তুই আর পন্ডস মেশানো।

বিয়েবাড়ির খাওয়ার ব্যাপারে পাঁচটা কথা

১. বিয়েবাড়িতে বর/কনে যাত্রীদের টিফিন যদি করাতেই হয় তাহলে মাংসভাতেই করানো ভালো।  পকোড়া কফি হল ক্রিকেটীয় অঙ্কের হিসেবে রানিং ডাউন দ্য মিডল অফ দ্য পিচ অন টু দ্য ডেঞ্জার এরিয়া। ২. ফুচকা ভালো। তাই বলে বিয়েবাড়িতে? পায়ে প্যাড বেঁধে পেস বোলিং? কেন? ৩. কফির কাগজের কাপ। সাইজে আর স্ট্রেন্থে। সাইজে তাইবু আর স্ট্রেন্থে সৌরভ। কাম অন। ৪. আলু পোস্ত বিয়েবাড়ির মেনুতে স্থান পাবে কবে? চানা কুলচা কি নাসা রেকমেন্ডেড? শেওয়াগ কে বাদ দিয়ে অলটাইম ইন্ডিয়ান টেস্ট টিম? ৫. বর/কনে যাত্রী বিয়ে/বৌভাতে ঢোকার সঙ্গে তাদের হাতে আননেসেসারি রাংতা জড়ানো গোলাপ না ধরিয়ে ফাইনাল মেনু কার্ড ধরিয়ে দিলে সুবিধে হয় না? পিঞ্চ হিটার নামাতে হবে কী না, ক'টা স্পিনার খেলাতে হবে- সমস্তটা আগাম ছকে নেওয়াটা দরকারি।

জিনিয়াস ও দীপু

- মাঞ্জা ভালোই দিয়েছিস। - টিটকিরি দিচ্ছ মামা? - কম্পলিমেন্ট। জেনুইন। - থ্যাঙ্কস। - গরদের পাঞ্জাবীটার জাঁক আছে। - বলছ? - আলবাত আছে। - গত পুজোর। মেজপিসি দিয়েছিল। - কোলন? - ওল্ড স্পাইস। বাবার। - তবে সবটাই বোধ হয় জলে গেল রে। - জ...জলে? - অথৈ। - কেন? - সে। আসছে না। - সে..সে মানে? কার কথা বলছ। তিন্নিদির বিয়ে। আমাদের কত কাজ। বরযাত্রী এসে পড়ল বলে। তাতে কে এল না এল...আমার কী? - বটে? - চলি। - জলে। জলে। - কী জলে? - কোলন। গরদ। কোলাপুরি। - ধ্যার। - চ্যাটুজ্জেদের ছোটমেয়ে। তার জ্বর। এই মাত্র আমায় ফোন করেছিল। দু'দাগ হোমিওপ্যাথি চেয়ে। - কি....জ্বর? তাতে ইয়ে...আমার কী? - তোর কিছু হোক না হোক। তোর পকেটে যে নীল কাগজের চিঠিটা উঁকি মারছে সেটার আর কোন মানে থাকল না। - না মানে...। - গরদের ট্রান্সপারেন্ট নেচারটায় এই এক প্রবলেম। - আসলে...। অ্যাকচুয়ালি...। - বলছিলাম বরযাত্রী ব্যাপারটা না হয় আমিই ম্যানেজ করি। তুই বরং এ দু'টো ওষুধ দিয়ে আয়। দাগ লেখা আছে শিশির গায়ে। - ইয়ে, মামা মানে...। - যা ফোট। - না মানে। দু'টো ওষুধ বললে...এটা তো একটা শিশি...। - পকেটে নীল চিঠিখানাই তো মেইন দাওয়াই চাঁদু। শিশি তো দ্যাখনাই