Thursday, December 4, 2025

পুজো ও বম্বে


মুম্বইয়ের এই জমজমাট পুজো মণ্ডপ ঘুরে খাওয়াদাওয়ার অঞ্চলে পৌঁছে মনে হলো পুজো এ'বারে পুরোদমে শুরু।

কলকাতাইয়া ফুচকার দোকানের সামনে হইহই রইরই। ফুচকাদাদা কুপনের দু'প্লেট দেওয়া শেষ করে শুকনো ফাউ গোছাতে শুরু করেছেন, আর খাইয়েজ্যেঠু কটমট করে তাকিয়ে বলছেন, "আমি কি আপনাকে থামতে বলেছি"? ফুচকাব্রাদার আমতাআমতা করে বললেন "দু'প্লেটের পেমেন্ট ছিলো যে"। সপাটে উত্তর "কই স্ক্যানার, দিন প্রিপেড রিচার্জ করি, আপনি চালিয়ে যান"।

বিজলিগ্রিলের স্টলের সামনে আর্তনাদ, "বিরিয়ানি শেষ? ও'ভাবে বলবেন না প্লীজ"।
"ও মা, আর কী'ভাবে বলবো"।
"দেখুন না কুড়িয়ে-বাড়িয়ে যদি.."।
"বিশ্বাস করুন স্যার। শেষ"।
"এ'বারে কী হবে"?
সে মহাজাগতিক "কী হবে"র উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা দেবতাদেরও নেই।

হ্যাংলার স্টলে অজস্র মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। প্রতি মিনিটে অন্তত সতেরো রকমের রোলের অর্ডার অবলীলায় টুকে নিচ্ছেন কূপন কাটা দিদিভাই। দিদিভাইয়ের সাতজন সাগরেদ রোল ফিশফ্রাই চপ ভেজেই চলেছেন। এর মাঝে গোবেচারা কারুর হাতে দোকানের এক কর্মচারী শশব্যস্তভাবে ধরিয়ে দিলে রোল।

"এ'টা এগচিকেন রোল যে", বেশ নির্লিপ্তভাবে বললেন খদ্দেরটি।
"আপনি কোনটা বলেছিলেন"?
"মটন রোল"।
"সরি। এ'দিকে দিন। আমি আপনারটা..ও কী! কামড় দিলেন যে"।
"মটনরোল না আসা পর্যন্ত সামান্য মুখ চালানো যাবে আর কী। দিন স্ক্যানারটা দিন"।

একটা নিরামিষ দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এক অল্পবয়সী ছোকরার হাত টেনে ধরলেন তার কাকা-জ্যাঠা গোছের এক মুরুব্বি, "ডোন্ট গো দেয়ার। ওরা কাঁঠাল বিরিয়ানি বিক্রি করছে। নিজেকে কন্টামিনেট কোরো না"।

ঘণ্টাদেড়েক পর রোল, ফুচকা, ফিশকবিরাজি আর থামসআপ সাঁটিয়ে যখন প্যান্ডেল চত্বর থেকে বেরোলাম, মন, প্রাণ ও জিভ ততক্ষণে সপ্তমী আলোয় পরিপূর্ণ।

No comments: