Skip to main content

Posts

Showing posts from January, 2013

চুমুর কথা

পাল্টে যাওয়ার প্রয়োজন আছে। আর্তজনে দান করবার কি রাম-হিড়িক চতুর্দিকে , কিন্তু সে হিড়িক কি নিদারুণ সংকীর্ণ। আরে অভাব কি শুধু পেটের খাদ্যের আর দেহের আভরণের ? রাবিশ! চুমু-বিতরণ শিবির আয়োজন হবে কবে ? পাবলিকের ঠোঁটে বোরোলিন আর খিস্তি ছাড়া যে কিছুই টিকছে না। পাবলিকের হৃদয় যে সবুজ ময়দান থেকে বিটকেল গন্ধওয়ালা ধাপার মাঠ হয়ে চলেছে ক্রমশ। শুধু অমুক যোজনা , তমুক প্রকল্পের বার-ফাট্টাই মারলে হবে ? রাজ্যের মাথায় ঋণ আর অন্যদিকে পাবলিক চুমুতে দীন ; হাউ উইল বেঙ্গল মুভ অ্যা হেড মাই ডিয়ার বেহেড মুখ্যুস ? ঋণ-টিন বাদ দিন , লেট দ্য চুমুস কাম ইন। দেশের ছেলেরা শুকিয়ে মরছে , রোম্যান্সের গ্লুকোজ ঢালুন , নয়তো জিন্দেগি আন্ত্রিক। ল্যালল্যাল ঘুরে বেড়ানো ইয়ুথ ; এম-পি-থ্রি প্লেয়ার যুক্ত সস্তা মোবাইলে ফেসবুক ব্রাউজ করে ও চিপস -কোলা মাখা হাফ-আনার ভুঁড়ি দুলিয়ে – বখে গেলো ; জাস্ট বখে গেলো। চুমু-টুমু ঢালো ঈশ্বর । নন্দন- নলবন -ভিক্টোরিয়ায়-পার্কে বিস্তর কেস। দু ’ মিনিট ধরে মন দিয়ে চুমুতে চুমুক দেবেন উপায় নেই ; চারিদিকে হাভাতে চোখ ; শালা থার্ড ওয়ার্ল্ড। এগিয়ে আসুক সরকার। বন্যপ্রাণী সংরক্ষ

গুরু

এ জীবনে গুরু ব্যাপারটা ভারী দরকারি । পিতা পরম গুরু-ফুরু বাতেলা অতি নরমেই ঘুচে যায় । ছেলেবেলাতেই ইচ্ছে করে রিভার্স-স্যুইপ-খ্যাত নেত্য ’ দার চরণে অজন্তা হাওয়াই হয়ে যাই । নেত্যদার হাতের তালু আমার মাথার তালুতে না ঠেকলে যে পাড়ার টিমেও সাত নম্বরের আগে ব্যাট করতে নামা যাবে না । বয়স এগোলো , অন্য গুরু এলো অন্য খেলা শেখাতে ; মেয়ে-খেলা । একজন কে খেলিয়ে খেলিয়ে যেই না ডাঙ্গায় তোলা অমনি গুরুভার চলে গেলো ঈপ্সিতার কাঁধে । বউ বললে মাই ওয়ে অর হাইওয়ে। বস বললে- দ্যাখো বাওয়া , আমার জুতো চেরি-ব্লসমে নয় ; তেলে চমকায় । এরপর হয়তো ডায়াবেটিক রক্ত আর বাইপাসিও হৃদয় বয়ে ছুটে যাবো দক্ষিণেশ্বর ; পরমহংসের পদতলে থেবড়ে বসে বলতে হবে: “রহিসিয়ানার গোস্তাখি মাফ খোদা , ওসব নির্ভানা-টির্ভানাও আর চাই না- শুধু হাঁটুর বাত আর ছেলের হেরোইনের নেশাটা একটু কন্ট্রোলে এনে দাও গুরু”।      এই গুরু থেকে ওই গুরুর হাতে খেলে গেলাম । ঘুরে গেলাম । লটকে গেলাম । চমকে গেলাম । ভেবড়ে গেলাম । গুরুভার বয়ে জীবন কাবার হয়ে গেলো। শুধু “বেওসা-বিজনেস” করে , নিষ্পাপ ভালোবাসাগুলো জানান দেওয়া হলো না । 

রবিবারের শেষ পাতে

রবিবারটি মরে আসছে গো , মরে আসছে । শনিবার বিকেল থেকে তা-ধই-তা-ধই বেয়াদপি নেচে চললাম । কচুরী খায়েগা , দুপুরে ঘুমায়েগা , বিশের চায়ের দোকানে আড্ডা মারেগা , ফ্রেঞ্চ ওপেনে মেয়েদের টেনিস দেখেগা , মটন গিলকে চিকেন কো ডাঁটা-মাফিক বোলকে গালি পাড়েগা , দায়-দাইত্ব ’ র নিকুচি করেগা । ধুর শালা । পলিটিকাল গুণ্ডাবাজি শেষ হয় না , বউ ’ য়ের চাহিদার ফিরিস্তি শেষ হয় না , কফি হাউসের আঁতলামি শেষ হয় না , আনন্দবাজারে পাত্র-পাত্রী বিজ্ঞাপন পড়ে শেষ হয় না - এই রবিবার শেষ হয় কেন ? শুক্রবারের শেষ বেলায় দাঁড়িয়ে মনে হয় রবিবারের পর পৃথিবী ক্ষতম । উইকেণ্ড-মুখী অফিসের শেষ বেলায় যে ফাইল হাফ-খামচা মেরে রেখে চলে এসেছি , সেই ফাইল কাল আমায় গিলে মুখ আচাবে । বস কলার পাকড়িয়ে চেল্লাবে , “পাকড়াশীর ফাইল কমপ্লীট হয়নি কেন ? তোমার পাবলিক ফাঁসি হচ্ছে না কেন ?”

মহাকাশে বাঙালি

বাক্স-প্যাঁটরা গুছিয়ে তৈয়ার হওয়া চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। পাক্কা তিন মাসের মহাকাশ- Cruise । অনন্তবাবুর কাছে এ এক হিল্লে ব্যাপার। দেড়-খানা গ্যালাক্সি জুড়ে প্রমোদ ট্যুর। নন্দী-ট্র্যাভেলস চমত্‍কার ডিসকাউণ্ট অফার করেছে। এই মাগ্গির বাজারে এত সস্তার এই মহাকাশট্যুর টা মিস করার মানে হয় না।তাছাড়া বেশ কিছুদিনের ছুটি জমে ছিলো। বে-থা নেই , ঝাড়া হাত-পা। দেড় বছরের মধ্যে রিটায়ারমেন্ট , এই তো ঘুরে নেওয়ার সময়। মিল্কি-ওয়ে ছাড়া অন্য কোনও গ্যালাক্সি  আজ পর্যন্ত দেখা হয়নি অনন্তবাবুর ; শেমফুল। দু খানা বেঢপ সুইট-কেস আর একটা ঝোলা ব্যাগে সমস্ত জিনিষ-পত্তর ধরে গ্যাছে। দুগ্গা বলে হাউই-ট্যাক্সি ধরে সিধে গিয়ে হাজির হলেন টলিগঞ্জ এয়ার-বোর্ন সিটির নতুন এই ভাসমান টারমাকে।  *** কাঁচের ১৭ তলা নন্দী-ট্র্যাভেল স্পেশ্যাল মহাকাশ-ক্রুজ-ক্র্যাফ্ট ’ য়ে মৌজ করে বসে আছেন অনন্তবাবু। কিউবিকেলের দ্বিতীয় বেডের সঙ্গীটি এখনো আসেন নি। কী মুস্কিল। আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে ক্রুজ যাত্রা শুরু করবে যে। লোকে এত দেরি যে কেন করে। একবার মনে হলো যে আর হয়তো কেউ আসবেন না। একা পুরো কিউবিকেল জুড়ে থাকতে পারবেন ভেবে মন্দ

হেসে-ভালোবেসে

মগ হবে তো এলুমিনিয়ামে । নাড়ু হবে তো মিল্কমেডি নারকোলে । মুড়ি মাখা হবে তো আম-তেলে। ইলিশ হবে তো ডিমে টইটুম্বুর পেটীতে। আড্ডা হবে তো গোল্ডফ্লেকে। একলা হবে তো বৃষ্টিতে। দোস্তি হবে তো খিস্তিতে।   জানুয়ারীও ভাত-ঘুম হবে তো জেলুসিল আর লেপ-মুড়িতে। প্রেম হবে তো হাত-চিঠিতে। চুমু হবে তো জিভ-চকামে। আর সুর হবে তো ব্যথায় ,  শিরশিরে চিনচিনে যন্ত্রনায় , অন্ধকারে। যখন দুমরে-মুচড়ে ঘাপটি মেরে থাকা যন্ত্রণাগুলো মা ’ কে পায় না ; তখন গুটিগুটি সলিল এসে জড়িয়ে ধরবেন , “কখন জানি না সে , তুমি আমার জীবনে এসে , যেন সঘন শ্রাবণে প্লাবনে দুকুলে ভেসে...শুধু হেসে ; ভালোবেসে”

আমি শুধু রইনু

ঠিক সন্ধ্যের মুখে । আজকাল লোডশেডিং এমনিতে হয় না , আজ হটাত্‍। অন্ধকার রাস্তা ঘেঁষা চুপড়ি আঁধারে ব্যালকনি। টুপটাপ ঝড়ে চলেছে শীত । গায়ের শাল , শরীরে লাক্স ও ঠোঁটে বোরোলীন মিলে মধ্য-বয়স্ক জানুয়ারীর মায়া-বসন্ত। বউটি হাওয়া ; কোনও এক পার্লারে দেহ-লালনে । আমার হাতে রয়েছে ফাঁকা কফির কাপ ও কোলে রয়েছেন ঘুপচি অন্ধকারে অসহায় ভাঁজ হওয়া মুজতাবা । বেশ । বেশ । পকেটে রয়েছে মোবাইল। এখনই চুপুক করে কাউকে ফোনে ডাকতে পারি , ঝুপুক করে একটু ফেসবুকে উঁকি মারতে পারি । চালিয়ে দিতে পারি এফ-এম ; , মিহি হিন্দী সুর বা কোন রেডিও জকির কোদাল-ধার মস্করায় নিজেকে বলতে পারি ; লোডশেডিং আর আমাদের একা করতে পারে না । এও ভারি নাজুক হিসেব। আজকাল একা হওয়া যায় না । বাথরুমেও খবরের কাগজের ধর্ষণ নিমকি হাসে , মহা মুস্কিল । হাল-ফ্যাশন আনন্দবাজার ’ কে কমড-পণ্য বানিয়ে ছেড়েছে । একা আর থাকতে দেয় না দুনিয়া।

বিবেকানন্দ ও আনন্দ

নেতাজীপল্লী নব বালক সংঘ । এলাকার তরুণ-তুর্কি তথা মধ্যমনি ’ দের পাড়া-তুতো পার্লামেন্ট । দুর্গা-পুজো , শীতলা পুজোর মেলা , বসে আঁকো প্রতিযোগিতা , রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যে , একটি রক্ত দান শিবির , একটি বস্ত্রদান উত্‍সব এবং একটি কাঙালি ভোজন আয়োজন করে থাকে প্রতি-বছর । অবশ্যই এর সাথে থাকে একটা ফুটবল টুর্নামেন্ট , একটা একদিনের ‘ বিরাট ’ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা এবং দুটি ক্যারম টুর্নামেন্ট । ক্লাবের সেক্রেটারি বলাদা ’ র বাবা জগন্নাথ সমাজপতি সদ্য এম -এল-এ হওয়ায় ক্লাবের জাঁক দ্বিগুন হয়েছে। ক্যাশিয়ার হুলোদা আর ব্যাজার মুখে সর্বক্ষণ বসে থাকেন না। ক্লাব-ঘরে এসেছে নতুন কালার টিভি , দ্বিতীয় ক্যারাম বোর্ড।     আধুনিক কেতা মেনেই নব-বালক সংঘেরও রয়েছে কোর-কমিটি । কোর-সভ্যদের মধ্যে রয়েছে সেক্রেটারি বলা-দা , আড়তদার বিভুতিবাবুর পুত্র ও ‘ রিসোর্স ’ শ্রীমান বাপ্পা , ক্যাশিয়ার হুলোদা , উঠতি পার্টি-কর্মী এবং প্রাক্তন হাত-বোমা বিশারদ গুলে এবং লিটল-ম্যাগিও কবি নবারুন ওরফে নবা । নতুন বছরে কোর-কমিটির ফুলকপির-সিঙ্গাড়া আর কড়া কফি সহ বৈঠক একটা ট্র্যাডিসনের মধ্যে পড়ে। যথারীতি বছরের প্

পাবলিক ও কবি ও কবিতা

পাবলিক : কি ? কবিতার বই কিনবো ? সে কি ? কিনলেই হলো নাকি ? পড়বো কি করে ? গাইড বই কই ? ভূষণবাবুর টীকা-আলোচনা কই ? সুনীল-শ্রীজাত ব্লাফ মেরে গছিয়ে দেবেন তারপর কি সে সব মাল সাজিয়ে রাখবো ? এই সেদিন ড্রয়িঙ রুমের শো-কেস ’ টাও দিলাম বেচে , আসলে বিপিন ভালো একটা অফার দিলে , এমনিতেই ঘুণ পড়বে মনে হচ্ছিলো ; দিলাম চালান করে আর কি । কাজেই ওই কাব্যির কেতাব যে সাজিয়ে রাখবো তারও উপায় নেই । আরে মশাই , ছেলেবেলা থেকে দেখছি মাস্টার মশাই কবিতা পড়ে যান , শিরোনামের মানে খোলসা করে দেন , ভাব বুঝিয়ে দেন , বিশেষ লাইনগুলো আন্ডারলাইন করতে বলেন ; এত কিছু করে তবে গিয়ে কবিতা ’ তে কি কাগের ঠ্যাং-বগের ঠ্যাং গপ্প আছে তা মালুম চলে। এরপরেও ছিলো সহায়িকা। এভাবেই তো কবিতা পড়তে শিখেছি , আউড়াতে শিখেছি। এ বয়সে এসে যদি বলেন এসব পদ্য পড়লেই বুঝে ফেলবো ’ উঈদাউট মানবেন্দ্রবাবু বা দীপেনবাবু ’ স ক্লাস , তো আপনি খেপেছেন। আনন্দলোক দিন চলবে ; চেতন ভগতের বাংলা অনুবাদ দিন চলবে , এমনকি সুনীল-শীর্ষেন্দুর প্রেমের গপ্প-গদ্যও চলবে , কিন্তু কবিতায় ইনভেষ্ট করতে বলবেন না প্লিজ।