Skip to main content

Posts

Showing posts from February, 2016

ডক্টর

বুকে স্টেথো চেপে বসে রইলেন মাধব ডাক্তার। ঠায়। যদি ধুকপুকুনি ভেসে আসে। যদি। খানিক পর স্টেথো সরিয়ে কান চুলকে নিলেন তিনি। বয়েসের কান, বলা তো যায়না; নরম ধুকপুক যদি সহজে কানে টোকা না মারে? তারপর ফের মন দিলেন স্টেথোস্কোপে। "আয় ধুকপুক আয়, আয়, আয়, আয়"। বড় বেআক্কেলে বেয়াদপ বুক। হাজার ঠেলাতেও রা কাড়লে না। - আপনি ডাক্তার? - নয়তো কী? ময়রা? - ডাক্তার হলে হাতুড়ি কই? - যাব্বাবা! এ কী রসিকতা!  এই যে। অ্যাই দ্যাখো স্টেথোস্কোপ। বুকের ধুকুরপুকুর চট করে মেপে বলে দিই হাল ক্যাইসন। - বটে? তা আমার লাশের হাল কেমন বুঝছ ভাইটি? - লাশ? মুখে ঝ্যাঁটা। দিব্যি ভুঁড়ি বাগিয়ে খোশ গপ্প করে যাচ্ছ, তোমার আবার লাশ হবে কেন? - আহা! আমি লাশ হতে যাব কেন? আমি তো বোধিসত্ত্ব। এই যার বুকে স্টেথো ধরে রয়েছ, সে আমার দু'জন্ম আগের শরীর। এখন দিব্যি লাশ। - ভূ....ভূ...। - নিজে লাশ হয়ে অন্য লাশ দেখে ভূতের ভয়? তোমার মাথা গেছে মাধব ডাক্তার। - ননসেন্স। ইস্টুপিড। আমি লাশের বুকে স্টেথো চেপে ধরেছি? আর আমি নিজেও লাশ? তুই লাশ। তোর বাবা লাশ। - চটছ কেন মাধব ডাক্তার! লাশ বলে কি মানুষ নও? তোমার ওপর আমার বড় মায়া। গত জন্মে আমি

তিন জনের গল্প

সুকুমার  এক বিজেপি সাপোর্টার সুকুমার রায় ভালোবাসে। এক তৃণমূল সাপোর্টার সুকুমার রায় ভালোবাসে। এক সিপিএম সাপোর্টার সুকুমার রায় ভালোবাসে। সে এক বিশ্রী ব্যাপার। পুলিশ ডাকতে হল। র‍্যাফ নামাতে হল তাদের ঘিরে। ফেসবুক বন্ধ হওয়ার জোগাড় যে। ডেমোক্রেসি দুম করে লগআউট করে বেরিয়ে গেল বলে। ধোনী কোনও একদিন। কোনও এক ম্যাচের শেষে। একটা স্টাম্প মাথা থেকে বেল ঝেড়ে ফেলে এগিয়ে আসবে গুটিগুটি। মহেন্দ্রবাবুর মাথা থেকে হেলমেট সরিয়ে সে বলবে "লেটস গো ক্যাপ্টেন, লেটস গো"। বনলতা  - আপনিই জীবনবাবু? - হ্যাঁ। তবে আপনাকে আমি ঠিক..। - আমি বনলতা। - সেন? - সেন। - সফেনে ছন্দ মেলানো সেন? - আজ্ঞে। - আহ। শান্তি। বনলতা। আহ! লতা বলে ডাকব আপনাকে? - এ মা! তার চেয়ে আমায় বরং আমার ডাকনামেই ডাকুন। - আপনার ডাকনাম কী বনলতা? - ট্রাম।

দিনের খাওয়া

ব্রেকফাস্ট - গুড মর্নিং। - ব্রেকফাস্টে লুচি বোঁদে? - কই, না তো। - ইয়ে "গুড মর্নিং" ঝুঠা হ্যায়। লাঞ্চ - লিস্ট তৈরি? - তৈরি মামা।  - বঢিয়া। বতাও। - ফিশ ফ্রাই।বাসা না। ভেটকি। - গুড।  - পোলাও। - ঘি কড়াইশুঁটি সাদা না কাজু কিসমিস হলুদ? - হলদে। - ফাইন। দ্যাট ইমপ্লাইজ মাটন কষা ইজ নেক্সট। - ডেফিনিটলি। আর পোনা কালিয়া। - ব্রাভো। অ্যাপ্রুভ্‌ড। - ইয়ে। সাথে ভাজা হিসেবে...। - ভাজা হিসেবে? - একটু পনীর ভুর্জি। - সুচিত্রা সেনের ড্রেসিং টেবিলে আফটার শেভ লোশন? খাওয়ার পাতে থার্মোকল? ডিনার  অন্ধকারের ঝোলে মাখা লাঠির ভাত। অনশন ভাঙার ঢেঁকুর শুনে চোখ বুজে ফেললে বিব্রত ছিছিটিভি।

বুলো সিং আর সর্দার সিংয়ের বাড়ি ফেরা

- বুলো সিং। থলে নিকালো। - সর্দার। থলে? থলেতে কী হবে? - কী হবে মানে? মালপত্তর যা আছে। থলে মে ডালো। বালিশের ওয়াড় , দাড়ি কামানোর বাক্স, তোষক, সর্ষের তেলের শিশি, হোমিওপ্যাতির বই, দস্তাবেজ, বাসনপত্তর...।  - কেন? হল কী? -  ওয়াপিস। ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন। সর্দারবাবুর প্রত্যাবর্তন। বুলো সিংয়ের সাথে।  - দেশে? ফেরতা? - পত্রপাঠ। তুরন্ত। এখুনি। চটপট।  - সে কী! দেশে ফেরত? - দেশেই যেতে বলছি। কাজাকিস্তানে না। অত চিন্তা কিসের?  - চাকরী? তার কী হবে? চাল, ডাল, রোব্বারের ব্রয়লার, টু পাইসের মানি অর্ডার; সে'সবের কী হবে? - ধর্মতলায় গামছা বেচব!  - তার চেয়ে মোবাইলের স্ক্রিন গার্ড বেচলে বেশি পয়সা। - বড় বেশি কথা বলো বুলো সিং। থলি ভরো। জাহাজের সেকেন্ড ক্লাস টিকিট। ফার্স্ট ক্লাস রিটার্ন। স্ট্রেট টু আরামবাগ। জোড়া হাঁসের ডিমের মামলেট। মায়ের স্পেশাল পেঁয়াজ ফোড়ন দেওয়া মুসুর ডাল। হাপুস হুপুস দুপুরে ঘুম।  - হবে না। - মানে?  - কোন মতেই হচ্ছে না। থলেটলে বের করে লাভ নেই। রাতের খাওয়ায় আলু সেদ্ধ মুলো-ঘণ্ট আর টমেটোর চাটনি। দিব্যি হয়েছে।  - দশ বছর হয়ে গেলো বুলো সিং। বিদেশবিঁভুইয়ে আর কদ্দিন?

দীপক চ্যাটার্জী আর আবছায়া

কনুইয়ের নিচ পর্যন্ত গোটানো খয়েরী সাদা চেক জামার হাতা। বুকের দু'টো বোতাম খোলা। দীপক চ্যাটার্জীর মোজা জোড়া জুতোয় আর জুতো জোড়া হাতে। প্যান্ট গুটিয়ে হাঁটুর ওপর। গোড়ালির বেশ কিছুটা ওপর পর্যন্ত জল, বাড়তি ঢেউয়ের আনাগোনা হাঁটু ছাপিয়ে প্যান্ট ছোপাচ্ছে অহরহ।  মুখে ঝাপটে পড়া হাওয়া। হাওয়া। রাতের হাওয়া। সমুদ্র চষা হাওয়া কিন্তু ঝোড়া নয়, মিঠে। এদিকটা ফাঁকা। কিন্তু দীপক চ্যাটার্জী একটা অবিশ্বাস্য একা না থাকার জেদ নিয়ে লোফালুফি করে চলেছেন। ভলকে ভলকে মুহূর্তরা চোখ নাক মুখ ছুঁয়ে হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে, দীপক পালটা ঢেউয়ে বঙ্গোপসাগরকে চুবনি খাওয়াচ্ছেন।  মনে মনে।  কাঁচা সন্ধ্যেরা বড় বেশি স্মৃতিগ্রাহ্য। সন্ধ্যারা বুকপকেটে বাড়ে। ঢেউ হাওয়ার ঘর্ঘস শোঁশোঁ ছাপিয়ে সাইকেল বেলের টুংটাং টের পান দীপক চ্যাটার্জী। সামুদ্রিক আকাশের নিংড়ে ঝেড়ে ফেলা অন্ধকার ঘোলাটে হয়ে আসে তার চোখের সামনে, চাষিপাড়ার দক্ষিণের সরু গলিটার পোলের বাতিতে। দীপক চ্যাটার্জী বোতাম খোলা বুকের পরিসরে চেনা শিরশিরানি অনুভূত হয়।   সে সুবাসের সাথে সে গলির আলো মিশে থাকতো। ঘোলাটে কালচে শ্যাওলা মেশানো; আদর পাকিয়ে আনা আলোর সলতেটুকু সে গন্ধে। নরম

না পাওয়ার রঙ

না পাওয়ার রঙ জড়ো করছিলেন বোধিসত্ত্ব।  আচমকা মাথায় কী ভূত চাপলো;ভাবলেন যাই,আর একবার ঘুরে আসি।   না পাওয়ার রঙটুকু কাউকে যদি গছানো যায়। ** - ভাইটি।   - আপনি? - আমি এমনি এমনি। - আপনি কি হর্লিক্স? - আমার গান আছে। - আছে? সুর? কই? - নাই। তাই না পাওয়ার রং। নেবেন? - দেবেন? - নাও তুমি। -- - দিলেন কই? - দিলাম তো। - পেলাম কই? - পাবে কী করে।না পাওয়া যে। - ধুস। বড় বেরঙিন। - ধরে ফেলেছেন।আর চিন্তা নেই। - না পাওয়া তো।থাকবে কী করে? -- - যাহ! - চলি। - চললেন? - প্রস্থান। - ওহ। খেয়ালই করিনি।আপনি মানুষ নন দেখছি। - নাহ। পোকা। - জ্বলছেন কই? - শহর তো। জোনাইয়ের জ্বলুনি নেই। -- - ওহ! জ্বলুনি নেই। আলো নেই। - নেই। যা নেই তা পাবেন কেন? - না পাওয়ার রঙ। আপনি দিলেন। - আমি?বিলকুল। - চলি। - আপনার নামটা...নেই? না পাওয়া? -- - দিয়ে যাব?সে'টুকু? - না পাওয়ার স্নেহ সমুদ্রে অল্প পড়ে পাওয়া। বিশ্রী। - বিশ্রীই তো;বোধিসত্ত্ব। - বোধিসত্ত্ব পুরুষ নন? - স্রেফ?নাহ!

মোরন দশা

-     বই? -     বই। -     বাব্বা! মিউজিয়াম টিউজিয়ামের বাইরে এ জিনিষ তো সহজে দেখা যায় না।  পেলে কোথা থেকে? -     জেনিভা থেকে পাঠানো। পাঠিয়েছেন প্রফেসর ভনল্যান্থেন। এ কেতাবে উনিশশো সত্তর বা আশির দশকের ইংরেজি ব্যবহারের চমৎকার সমস্ত নিদর্শন রয়েছে। -     নাইনটিন সেভেন্টি? বল কী! সাড়ে চারশো বছর আগের বই? দেখে মনে হয় না কিন্তু। -     কেমব্রিজে একটা কনফারেন্সে আলাপ এই ভনল্যান্থেনের সাথে। আর্ক্‌টিকের সাহিত্যে আমাদের দু’জনেরই সবিশেষ আগ্রহ। সেই থেকে মাঝেসাঝে ভিডিও বার্তালাপ হয়ই।   বার্নে ভদ্রলোকের দাদুর বাড়ির এক কোণে এই বই পড়েছিল। ইংরেজিতে ওনার উৎসাহ বিশেষ নেই। উনি ভাবলেন আমার আগ্রহ থাকতে পারে। তাই পাঠিয়ে দিলেন। -     বটে! তা বইটা তো দেখছি আদিম ইংরেজিতে লেখা। -     হ্যাঁ। -     বিষয়টা কী? -     নাটক মনে হচ্ছে। সামাজিক প্লট। বিষয়টা সম্ভবত তৎকালীন সমাজব্যবস্থা। -     কী জানলে? সে’সময়কার সমাজব্যবস্থা সম্বন্ধে? -     এ ভাষা বড় খটমট। সহজে এগোতে পারছি না। সম্যক বুঝতে সময় লাগবে। তবে যে’টা ইতিমধ্যে ঠাহর করতে পেরেছি সে’টা হল সে সময়কার ভাষা কতটা অদ্ভুত ছিল। -     হরফ তো একই দেখছি

খতরামোহন ও করমচাঁদ

- বল্লম সিং! অ্যাই বল্লম সিং! এত রাত্রে এত হাঁকডাক কেন? - কোটাল সাহেব! কয়েদীরা উল্লাস আরম্ভ করেছে। - উল্লাস? - উল্লাস। - কাল শূলে চড়বে আর আজ ফুর্তি? ভয়ে পাগল হয়ে গেছে নাকি? - ওদের নেতা করমচাঁদ। সে বললে, শূলেই নাকি মুক্তি। বিপ্লব সার্থক। - বটে? শূলে মুক্তি? ব্যাটাচ্ছেলের বাড় বেড়েছে বড়! আচ্ছা! আমিও কোটাল খতরা মোহন। বল্লম সিং! - আজ্ঞে কোটাল সাহেব।  - করমচাঁদকে বলে দাও। তার ও তার স্যাঙাতদের শূলে চড়ার রদ হয়ে গেছে।  - সে কী! দেশদ্রোহী। ওদের মারবেন না? - মারব! মারবই। না মারলে হাড় জুড়োবে ভেবেছ? তবে ঘ্যাচাং করে শূলে চাপালে দেখছি চড়ুইভাতি হয়ে যাবে। শূল ক্যান্সেল। ওদের অন্যভাবে তড়পে মারব।  - আগুন? - নাহ! জ্বালায় ওদের বড় সুখ।  - পাহাড় থেকে ঠেকে ফেলে দেওয়া? - হারামজাদাদের যত নামাবে, তারা তত উঠবে। - তবে কোটাল সাহেব? কী করে মারবেন? - বিষ।  - ফলিডল?  - নাহ! তার চেয়েও সাংঘাতিক।  - কেউটের খাঁচা? - নাহ নাহ! তাতে যন্ত্রণা যথেষ্ট নয়।  - তবে? কোন বিষ কোটাল সাহেব? - সিস্টেম। সিস্টেম।   

তেত্রিশ নম্বর সিঁড়ি

মহামুশকিল। রোজ বত্রিশটা সিঁড়ি ভেঙ্গে ছাদে উঠে আসা। রোজ। রাতের খাওয়ার ঠিক আধ ঘণ্টা বাদে। নিয়ম করে। উইদাউট ফেল্‌। মাংসের বাটি থেকে উঁকি মারা থ্যাবড়া মুখো আলুর মত চেনা এই রুট। বত্রিশ নম্বর সিঁড়ি টপকালেই ছাদের খড়খড়ে মেঝে। নিয়ম। স্যাটার্নের রোটেশন আর মারাকারির রিভোলিউশনের মত। অমোঘ। এদিকে ব্যাপার অতি সামান্যই। নলি হাড়টা সড়াৎ করে শুষে নিতে গিয়েই ধড়াস করে হৃৎপিণ্ডটা গেল আটকে। ঠিক হ্যায়। অসুবিধে নেই। টেবিলে নিজের এঁটো হাতের মড়াকে রেখে উঠে আসতে হল। এই যা। এ আর এমন কী? দুমাদুম মানুষ মরছে, তাতে কার কী?বিশেষ করে সিঁড়িদের কিছু আসা যাওয়া উচিৎ নয়। খোশমেজাজে দুদ্দাড়িয়ে তরতর করে উঠে যাচ্ছিলাম। খামোখা এই তেত্রিশ নম্বর সিঁড়িতে পা পড়ায় মনটা গেল বেজায় খারাপ হয়ে। এ'সব কী? এ'সব কেন? মারা গেলাম; দ্যাট ইজ ওকে। কিন্তু তাই বলে ছাদের মুখে বাড়তি সিঁড়ি? আচমকার মৃত্যুর ওপর বিরক্তি এলো। তেত্রিশ নম্বর সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে পড়তেই হল। পার্লামেন্ট-ফেন্ট ভেবে মনে স্ফূর্তি আনার চেষ্টা করলাম। লাভ হল না। তবে দেখলাম ভূত হয়েও থুঁতনি চুলকানোয় বাঁধা নেই। কে দিলে এই সিঁড়ি? এর পরে কি তবে ছাদ না চৌত্রিশ নম্বর সিঁড়ি

বাবু যুধিষ্ঠির

- অ্যাই। অ্যাই। চললেন কোথায় মশাই? চললেন কোথায়? - না মানে। হাতঘড়িটা বন্ধ হয়ে গেস্‌ল কিনা। জাস্ট খেয়াল করিনি। একটা জরুরী মিটিং আছে বুঝলেন। এখুনি না বেরোলে কোন উপায় দেখছি না।  - ইয়ার্কি হচ্ছে? চারটে মড়া পড়ে রইল। আমার পিপাসা মিটল না। বাতেলা ঝাড়ার সময় তো আকাশ উপড়ে খাওয়ার তাল করছিলেন। বাবা! সে কী তম্বি। আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে জল খেলে মারা যেতে হবে। কত লেকচার মাইরি। কত কেতা! হাজার গণ্ডা সওয়াল ফ্লায়িং ডিস্কের মত ছুঁড়ে দিয়ে তারপর আবার নতুন র‍্যালা; সব ভাইকে বাঁচিয়ে দেব। বলি এ'সব কী? এরা এখনও ঠাণ্ডা হয়ে পড়ে আছে তো!  - না না। বুঝতে পারছেন না। এক কেমিক্যাল মেশাতে অন্য কেমিক্যাল মিশিয়ে দিয়েছি জলে। কাজেই অ্যান্টিডোটটা কাজ করছে না। তাই বলছিলাম, জলটা আপনিও না খেলেই ভালো। - সর্বনাশ। কী ফেরেব্বাজ লোক মশাই আপনি। - আরে। তাই বলে জামা ধরে টানবেন? এই আপনি ধর্মরাজ? - এ'সব ফালতু কথা ছাড়ুন! ভীম অর্জুন না থাকলে ধর্মকে প্রটেক্ট করবে কে? গেল গেল সব গেল।  - ইয়ে জামাটা ছাড়ুন। মিটিং আছে, মাইরি।  - তবে রে রাস্কেল? - যুধিষ্ঠিরের মুখে খিস্তি? - কাঁচাগুলো তো থলে থেকে বার করিনি এখনও। এদ

ভূতের গল্প

ভূতের গল্প ১: যে আদত তান্ত্রিক; তার কলজে খুন করতে ডরায় না, ভূত ধরে চিবিয়ে খেতেও নয়। এই তো সে'বার। বলা নেই কওয়া নেই হাফ ডজন রসগোল্লাকে প্লাস্টিকের টিফিন বাক্সে করে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখলেন তারক তান্ত্রিক। তার ঠিক ছ'দিনের মাথায় তিন জোড়া ভূতের ছিবড়ে চিবিয়ে খেলেন তারক। ভূতের গল্প ২ - সেক্রেটারি নীলাকে চুমু খেতে গিয়ে দাঁত কপাটি লাগার জোগাড় হল শ্যামল দত্তর। "ভূ....ভূ....ভূ....ভূত"!!!!! নীলা ভেবড়ে গিয়ে পিছন ফিরে দেখলে দরজা আলো করে মিসেস দত্ত দাঁড়িয়ে। চোখে আগুন, কপালে শীরার টনটন। গলা শুকিয়ে গেছিল নীলার। " আ...আপনার মিসেস...মা...মা...মারা গেছেন নাকি স্যার...দরজায়...ও...ও'টা আত্মা?" কুঁইকুঁই করে শ্যামল দত্ত সারেন্ডার করলেন; "আত্মা হলে কী আর ভূতের ভয় হত? ওঝা আছে। ওঝার বাপ আছে। এ যে জ্যান্ত গিন্নী। জ্যান্ত! ওঝালেস!!....আ...আ...আ"!!!

যদিদং

- ইলোপ-টিলোপ তো ঠিক আছে। কিন্তু যদিদং টদিদংটুকু বলবে না? - হোয়াই নট? যদিদং হৃদয়ং...। - এ মা! যজ্ঞের আগুন কই? - অগ্নিসাক্ষী রেখে বলতে হবে? - নয়তো স্যাঙ্কটিটি থাকবে কেন? জ্বালাও। - সিগারেট আছে। চলবে? লাইটারটা যে দরকারের সময় কোথায় যায়...। ** সিগারেট ধরালেন বিপ্লব। মনটা বড় অগোছালো হয়ে যাচ্ছিল বারবার। নাহ।   ক্ষমতায় কুলোবে না। বড্ড বেশি মধ্যবিত্ততা ঢুকে গেছে বুকপকেটে, অফিসের ব্যাগে, মানিব্যাগে,ধমনীতে। মিতা কলকাতার স্মার্ট মেয়ে, আধুনিক পরিবার। ওর সাহসের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলবে মেদিনীপুরের একটা ছেলে? ধুস। ট্যাক্সি ঘুরিয়ে নিতে বলে মিতার মোবাইলে একটা ফোন করলে সে। ** "আজ থাক। যদি ঢং বল তাহলে তাই। আজ থাক"।

বাওয়ালি জাতি

১ ...রেখেছ বাওয়ালি মোডে, মানুষ করনি। ২ - আর একটা পেগ। না বোলো না। ওয়ান ফর দ্য রোড ভাইটি।  - আহ! আর কেন? - জমবে না নয়তো। বিজ্ঞাপনে দেখনি? ইট ইজ ইওর লাইফ, মেক ইট লার্জ!   - বটে? - লার্জার দ্য পেগ, গ্রেটার দ্য নেশা; লার্জার ইজ ইওর লাইফ। - নাহ! এ'সবে কেমিক্যালে আমার নেশা জমে না হে। আমার নেশা অন্য, আর সেখানে স্মল সাইজ লার্জ সাইজ চলে না। - অন্য নেশা? স্মল লার্জ সাইজের বালাই নেই? - টেবিল চাপড়ানো বাঙালি ভাই। আমার নেশা স্রেফ থিনঅ্যারারুট ভেজানো চায়ের কাপে। আর সেখানে স্মল সাইজ, লার্জ সাইজ, এক্সট্রা লার্জ সাইজ; সব একটাতেই।   - সে'টা কী? - ক্রিটিসাইজ । ৩।  - ভয়েড। ভয়েড। - কী ভয়েড? - এই ক'দিন। কম্পলিট ভয়েড। - বৌদি বাপের বাড়ি? - নাহ! - তাহলে? - নলেনের সিজন শেষ। হিমসাগরের সিজন ধারে কাছে নেই। ভয়েড। ভয়েড।

ডাঁটাশঙ্কর, বামাপ্রসাদ ও বৃষ্টি

বামপন্থী বামাপ্রসাদ গরমে বড় কষ্ট পাচ্ছিলেন।তাই বললেন "উফ, কী গরম। কী বীভৎস গরম, ফেব্রুয়ারিতেই কী গরম"। ডানপন্থী ডাঁটাশঙ্কর প্রতিবাদ করলেন : "গরম আছে। কষ্ট আছে। তবে শালা তুমি চিটচিটে বল কোন সাহসে? স্পষ্ট মালুম হচ্ছে প্যাচপ্যাচে গরম। স্পষ্ট"। বামাপ্রসাদঃ "হারামি কি আর সাধে বলি? প্যাচপ্যাচ আবার কি? গায়ে বিটুমিন ঢালছ নাকি হে?"। ডাঁটাশঙ্করঃ "বিটুমিন?" বামাপ্রসাদঃ "ওহ। তুমি তো আবার সংস্কৃতে না বললে বুঝবে না। বিটুমিন মানে আলকাতরম্‌"। ডাঁটাশঙ্করঃ "অ। বুঝেছি। এ দেশী গরমের আলকাতরা তো আবার তোমার অনুভব করা বারণ। চিনের আলকাতরা তোমার আলকাতরা"। বামাপ্রসাদঃ "চিন তুলে কথা বলেছ কি লকআউট করব...রিভোলিউশনে ডরাই ভেবেছিস?"। ডাঁটাশঙ্করঃ "তুই তোকারি? কাস্ত্রো শিখিয়েছে? গোমূত্রের সুইমিং পুলে বাটারফ্লাই স্ট্রোক ঝেড়েও মুক্তি পাবি ভেবেছিস?"। বামাপ্রসাদঃ "এই হয়েছে এক রোগ। তর্কে ল্যাজেগোবরে হলেই গীতার নামে হাবিজাবি কোট? বলি গীতা কি রুমি না কালাম? অবশ্য ল্যাজ গোবরে ঠেকলে সে'টা তো প্লেজার, তাই না?"।

উত্তম মধ্যম

-           গরমটা কেমন ঝুপ করে পড়ে গেল দেখেছেন? -           হুম। তাই তো। -           সবে তো ফেব্রুয়ারি। তাতেই রেগুলেটর চারে না দিলেই দরদর করে ঘাম। -           ঠিক। চিন্তার ব্যাপার। -           গ্লোবাল ওয়ার্মিং। বুঝলেন? -           হুম। আচ্ছা সামন্তদা, বার্ন্স অ্যান্ড মারের বিলগুলো প্রসেস হয়েছে? -           আর বার্ন্স! সবে বিলগুলো নিয়ে বসেছি। লাঞ্চের পর। অমনি বড়বাবু এসে অমুক কনসাইনমেন্ট তমুক কনসাইনমেন্ট করে এমন ব্যতিব্যস্ত করে তুললে না! টুথপিক আছে? -           না। -           সেফটিপিন? -           ইয়ে। না। -           দাঁতে সোয়াবিনের রোঁয়া ঢুকে গেছে। তখন থেকে অস্বস্তি হচ্ছে। -           দু’বার তাগাদা পড়ে গেছে ইতিমধ্যেই। -           তাদের অফিস থেকে ফোন করেছিলে? -           না। তারা এখনও করেনি। উত্তমবাবু জানতে চাইছিলেন। -           আর এই হয়েছেন এক উত্তমবাবু। বার্ন্স অ্যান্ড মারের প্রতি ওনার যে এত কীসের পিরিত। -           অ্যাকাউন্টটা উনিই সার্ভিস করেন তো। তাই হয়তো...। -           এতটা নাইভ হয়ে যে আপনি কী করে সার্ভাইভ করছেন মিস্টার মুন্সী। -           না