এলোপাথাড়ি কয়েকটা শব্দ বলে একটা বড়সড় দীর্ঘশ্বাস ফেললে বড়দা।
"শরীর খারাপ লাগছে রে দাদা? একটা ট্যাক্সি নিয়ে নেবো"?
"নেভার ফেল্ট বেটার। আমি চাইলে এখন সহস্র মাইল হেঁটে যেতে পারি। তা'ছাড়া সন্ধের এই নরম আলো-বাতাস বেশ গ্লুকোজের কাজ করছে"।
এ কথার পিঠে কথা চলে না।
বড়দাটা বরাবরই এ'রকম।
সবাই বলে খ্যাপা, আমি বলি খ্যাপাটে।
সবাই ওর বকবক থেকে পালিয়ে বাঁচে, আমি ওর কাছে পালিয়ে আসি। বরাবরই।
ও পারলেই আমায় লজেন্স কিনে দেয়, যেমনটা দিত তিরিশ বছর আগে নিজের বইপত্র কেনার টাকা থেকে। আজও দিয়েছে। ও ঠিক বুঝতে পারে না আমি দিব্যি একটা চাকরি সংসার ঠেলা বুড়োটে লোক। ও জানে আমি ওর ছোট। তাই ওর পাশে আমি এত নিশ্চিন্ত।
"ছোট, পরের ম্যাচে তোকে তিন নম্বরে নামাবো। নন্তুদের থোঁতামুখ ভোঁতা করে দিস"।
উত্তর না দিয়ে বড়দার ডান হাতটা শক্ত করে ধরলাম। রাস্তা পেরোতে হবে।
"রাস্তা পেরোনোর ভয় তোর এখনও গেল না রে ছোট"।
"তুই থাকতে আমার বাড়তি সাহসের দরকারটা কী"?
"শোন, নন্তুর স্লোয়ারটা কিন্তু বড্ড ডেঞ্জারাস"।
"কিছু খাবি দাদা"?
"খিদে পেয়েছে বাবু? চল মিলনদার চপ খাওয়াই আজ তোকে। চল তারপর তোকে বাঁটুল কিনে দিই। চল তারপর মেঘপিসের বাড়ি গিয়ে স্পোর্টস্টার নিয়ে আসি। চল.."।
মেজদাকে নিয়ে একটা কেএফসিতে ঢুকে পড়লাম।
"মিলনদার মত মুর্গির চপ আর কেউ বানাতে পারে কি ছোট? বল....বুকে হাত রেখে বল..সত্যিই পারে কি"?
বড়দাকে খাইয়ে দেওয়ার সময় মনে হয়ে মনের ভিতরটা কেউ গান আর সাবান দিয়ে ধুইয়ে দিচ্ছে। বড়দার মত আর কেউ ভালোবাসতে পারে কি? বুক হাত রেখে বলতে পারি, কেউ না। আমায় ওর মত ভালোবাসতে কেউ পারে না।
No comments:
Post a Comment