Skip to main content

Posts

Showing posts from March, 2022

সুমনবাবুর হুকুম

- কফি চলবে অনিলবাবু? - না৷ থাক৷ - টাকাটা পেয়ে গেছেন আশা করি। - হ্যাঁ। - ভালো কথা৷ কাল গুপ্তাদের চারটে ট্রাক বর্ডার ক্রস করে ওদের করিমগঞ্জের গোডাউনের দিকে যাবে৷ বড় কনসাইনমেন্ট, হাতাতে হবে৷ - বারো পার্সেন্ট। - দশ থেকে এক্কেবারে বারো? ট্যুয়েন্টি পার্সেন্ট জাম্প? আপনি যে আমাদেরও এক্সটর্ট করতে শুরু করলেন মশাই৷ ও'টা এগারো করুন। - বারো৷ - আমার কথার অনারে অন্তত কিছুটা..। সাড়ে এগারো, ফাইনাল! সেটল করুন। - শম্ভু সিংকে বলুন৷ সাড়ে সাতে ট্রাক হাতিয়ে আপনার জিম্মায় ফেলে দেবে৷ তবে ওর পুলিশের ওপর কন্ট্রোল কম৷ সে ঝক্কিটা সামাল দিতে পারবেন নিশ্চয়ই৷ - সামনে বসিয়ে কফি অফার করেছি বলে নিজেকে আমার ইকুয়াল বলে ভেবে বসবেন না অনিল৷  - ও মা, না! আপনি পে-মাস্টার৷ আমাদের নমস্য৷ আর শম্ভু একসময় আমারই সাগরেদ ছিল৷ ইদানীং নিজের মত করে লাইনে নেমেছে, উইথ মাই ব্লেসিংস৷ তাই ভাবলাম রেকমেন্ড করি৷ ব্যাপারটা অন্যভাবে নেবেন না সুমনবাবু৷ - আপনার থেকে আমার বয়স অনেক কম হতে পারে৷ কিন্তু আমি গুণ্ডা নই অনিলবাবু, আমি একজন ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট। বাজারে আমার একটা সুনাম আছে৷ অবশ্য দোষটা আমার বাবার৷ বেঁচে থাকতে লাই দিয়ে আপনাদের মাথায় তুলে গ

শুটিংয়ে ফেলুদা আর আমাদের আকাশকুসুম

ছোটবেলায় পড়া প্রিয় অ্যাডভেঞ্চার বইয়ের ইলাস্ট্রেশন রিক্রিয়েট করার প্রসেসটা নির্ঘাৎ দারুণ জমজমাট৷ ব্যাপারটায় ঠিক কী কী ঘটে?  সেটে সবার হাতে ফেলুদার বইয়ের সেই ছবি আঁকা পাতাটা ঘোরাঘুরি করে?  নির্দেশক অভিনেতা অভিনেত্রী এবং সমস্ত কলাকুশলীরা কি নিজেদের কাজ সাইডে রেখে বইয়ের ছবিতে লালমোহনের বসার অ্যাঙ্গেল আর সেটের লালমোহনের বসার ভঙ্গি মিলল কিনা তা নিয়ে মারাত্মক তর্ক জুড়ে বসেন?  সেটের ফেলুদাকে কি পাইকারি হারে জ্ঞান শুনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়তে হয়?  অকুস্থলে উপস্থিত প্রতিটা মানুষই কি ভেবে বসেন না যে " আহ্, আমিই যদি ফেলুদার সেই একপেশে ক্যারিস্মাটা নিজে গিয়ে ডেমোন্সট্রেট করে দিতে পারতাম"! আর সেটের 'এক্সট্রা' বা ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকা সংলাপহীন জুনিয়র অভিনেতারাও কি বইয়ে আঁকা ছবিতে নিজের খুঁজে হদ্দ হন? এই যেমন এ'খানে বইয়ের আঁকায় এক দম্পতি (তাদের দাম্পত্য নেহাতই আমার  কল্পনার ফসল) খানিকদূরে হেঁটে যাচ্ছেন। আবার সেটের ছবির আবছা ব্যাকগ্রাউন্ডে সে দম্পতি দূরের সোফায় বসে। সোফায় বসে কি তাদের মনের মধ্যে খতরনাক হ্যাঁচোড়প্যাঁচোড় শুরু হয়েছে "প্রিসাইস রোলে" নিজেদের ফেলতে না পেরে? দিনের শেষে ফ

প্রতিবাদের হিসেব

- খবরটা শুনেছ সৌরভদা? - শুনেছি৷  - গা শিউরে উঠছে। - ব্যাপারটা বেশ আননার্ভিং তো বটেই। - ক্লাবের ছেলেমেয়েদের ডাকব? আজ সন্ধ্যের দিকে একটা মিটিং করে যদি..। - হঠাৎ মিটিং কীসের শুভ? - আজকের এই পলিটিকাল নৃশংসতার বিরুদ্ধে একটা প্রটেস্ট তো হওয়া দরকার৷ এতবড় একটা ঘটনা ঘটে গেল অথচ সবাই নিশ্চুপ৷ রাস্তাঘাটে তেমন কাউকে সোচ্চার হতেও দেখা যাচ্ছে না৷ কিন্তু তুমি যদি সবাইকে গাইড করো, ইন্সপায়্যার করো; তা'হলে সবাই বুকে বল পাবে৷ সাহস করে রাস্তায় নামবে৷ তুমিই তো কতবার আমাদের টেনে নিয়ে গেছ সৌরভদা৷  তুমি পাশে ছিলে বলেই আমরা..। - এই তোদের একটা বিচ্ছিরি রোগ শুভ৷ সব কিছুতেই পলিটিকাল লাফালাফি৷ এ'বার থাম দেখি৷ আর মন্টুকে বল একটু চা-মুড়ির ব্যবস্থা করতে৷ বড্ড খিদে পেয়েছে৷  - এ'টার রাজনৈতিক প্রটেস্ট হওয়া উচিৎ নয়? - না৷ উচিৎ নয়৷ - কী বলছ সৌরভদা, ইউক্রেনের ব্যাপারেও আমরা পথে নেমেছি৷ আর নিজেদের পাড়ার ব্যাপারটাকে পাত্তা দেব না? অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকব? - সে'টাই করা দরকার৷ পুটিন আমাদের ক্লাবের ফান্ডে টাকা ঢালেনা৷ পুটিন আমাদের ক্লাবের জিম বানানোর জন্য টাকা দেবে না৷ নতুন টিটিবোর্ডগুলো রাশিয়া থেকে আসবে না

অপড়ুয়ার বইমেলা

আরে! কাল বইমেলা শেষ৷ ফেসবুক ট্যুইটারের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই, অজস্র 'বইমেলার সেল্ফি'র বদান্যতায় এদ্দূরে বসেও সে মেলার গমগম দিব্যি উপভোগ করলাম৷  চেনামানুষের হাতে অচেনা বই৷ অচেনা মানুষের হাতে চেনা বই৷ খাবারের স্টলে হুমড়ি খেয়ে পড়া বইপ্রেমি৷ আড়ালে থাকা ছোট স্টলের কাউন্টারে বসা দোকানির দমে না যাওয়া হাসি৷ বড় প্রকাশনার সামনে উৎসাহী লাইন। নতুন প্রকাশকদের ঘিরে আশাবাদী মানুষের উচ্ছ্বাস। আর সমস্ত কিছুর ওপর রয়েছে বড়দের হাত ধরে ঘুরঘুর করা ছোট্ট ছেলেমেয়েরা৷ আসলে, বইয়ের জমায়েত মানেই লাইব্রেরির নিঝুম নয়, চশমা ডাঁটি চেবানো গম্ভীর আলোচনা নয়; বই উৎসবও বটে।  মেলা আলো করা এত মানুষের মধ্যে সবাই কি বইয়ের পোকা? নিশ্চয়ই নয়৷ কিন্তু কী এসে যায় তা'তে৷ স্রেফ বই পড়ে কে কবে নিখুঁত মানুষ হয়েছে, বই পড়ার নেশা না থাকাতেই বা কার ভালোমানুষি নষ্ট হয়েছে৷ আর বইয়ের পড়ার সময় বা সুযোগ; সবার সমান নয় মোটেও৷ কাজেই, বইহুল্লোড় পাঠক-পাঠিকাদের মনোপলি নয় মোটেও৷  এই ধরুন, বই-নিরেট কোনও মানুষ বইমেলার কোনও স্টলে ঢুকে টুক করে একটা বই হাতে নিয়ে দু'প্যারাগ্রাফ পড়লেন৷ সে পড়া জলে গেল ভেবেছেন? আদৌ না৷ অপাঠক-প্রেমিক তার একনিষ্ঠ

দারোগা আর টিকিট-চেকার

- টিকিট দেখি৷ - হুম? - টিকিট৷ টিকিট দেখি৷ - আপনি আমায় দেখতে পারছেন? - মানে? - আপনি আমায় দেখতে পারছেন? - ইয়ার্কি হচ্ছে? টিকিট দেখি৷ - খোলসা করে বলুন তো মশাই, আপনি টিকিট চেকার না তান্ত্রিক? - রাতের ট্রেনে ফাঁকা কামরা দেখে উঠে ভেবেছেন টিকিট ফাঁকি দেবেন? বিজন চট্টরাজকে ফাঁকি দেবেন? টিকিট না থাকলে সোজা ফাইন বের করুন৷  - বিজনবাবু, মড়ার আবার টিকিট লাগে নাকি৷ - বটে? বেশ! সামনেই সাঁতরাগাছি৷ রেলপুলিশের থানায় ডিনার সারবেন৷ চলুন। - আরে৷ আমি তো ভূত৷ অশরীরী৷ ভেসে বেড়াই৷ এই এখন এই ট্রেনে, পরক্ষণেই হয়ত আমাজনের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছি৷ - অমন সুবিধেবাদি পাগল কম দেখিনি৷ চলুন, স্টেশনে ঢুকছে ট্রেন৷ থানায় ঢুকিয়ে তারপর আমি এগোব৷ ** - আরে ধুর মশাই৷ আর একবার "আমি ভূত আমি ভূত" ডায়লগ শুনলেই থার্ড ডিগ্রী দেব৷ - আরে দারোগাদাদা! নাহ্৷ আপনি সত্যিই বড় আলাভোলা মানুষ৷ আরে ভূতকে থার্ড ডিগ্রী দিলে লোক হাসবে যে৷  - উফ! রাতবিরেতে এই চট্টরাজ কী খ্যাপা মাল গছিয়ে দিয়ে গেল মাইরি। এই আপনি বেরোন দেখি৷ খবরদার যেন আপনাকে এই পুলিশ চৌকির আশেপাশে আর আপনাকে না দেখি৷ - আমায় তো দেখতে পাওয়ার কথাই নয়৷ তবে হ্যাঁ, ট্রেনে কাটা পড়েছি হ

নাচ মেড ইজি

নাচতে নামলেই উঠোনটাকে বিশ্রীভাবে বাঁকা মনে হয়? হাঁটু ভাইব্রেট করে? গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়? দুশ্চিন্তা ত্যাগ করুন, গোপন ফর্মুলায় ভরসা রেখে নেমে পড়ুন ডান্স ফ্লোরে। শুধু স্পীকারের গানবাজনাকে পাত্তা না দিয়ে মনে মনে গুনগুন চালিয়ে যানঃ "ঢ্যাংকুরাকুরন্যাকুরন্যাকুরঢ্যাংঢ্যাঢ্যাঢ্যাংনাককুনাকুর"। ব্যাস! দেখবেন হাত-পা নিজেদের মত এলোপাথাড়ি দুলছে৷  আর আপনি ভাসছেন৷  ভাসছেন৷  ভাসছেন৷  ভাসছেন।

মনু আর মাস্টারজ্যেঠুর ফন্দি

- এই যে৷ মাস্টারজ্যেঠু৷ চট করে মুড়ি মেখে আনো দেখি৷ আমি হাত-পা ধুয়ে আসি৷ তারপর জমিয়ে গপ্প করা যাবে৷  - আরে৷ বলা নেই কওয়া নেই বাড়ি এসে হুজ্জুতি করলেই হল নাকি মনু। তোর এ'সব অন্যায় আবদার আর চলবে না।  আমি নিরিবিলি পছন্দ করি৷ বুড়োমানুষ, সন্ধেবেলার এই সময়টা একটু বই পড়ে গান শুনে কাটাই৷ এই তুই মাঝেমধ্যেই দুমদাম করে উড়ে এসে জুড়ে বসবি, সে'টা কিছুতেই বরদাস্ত করা যায়না।  - আরে চটছ কেন৷ আচ্ছা আমিই না হয় মেখে নেব৷ বলি আমের আচারটা আছে কি মাস্টারজ্যেঠু? একটু তেল দিয়ে কষে মাখতে পারলে...। - আচার নেই৷ মুড়ি নেই৷ চানাচুর নেই৷ কিস্যু নেই। বেরো দেখি তুই। - তা'হলে আর কী৷ অগত্যা, আপাতত  চা বিস্কুট৷ রাতে ভাতেভাত৷ - আজ রাতে আমার উপোস৷ - তা'হলে একার জন্যই বসিয়ে নেব। ও তোমায় ভাবতে হবেনা জ্যেঠু।  - আচ্ছা জ্বালাতন। এমন গায়ে পড়ে কী পাস মনু? - তোমার এই লোনলিনেস আমায় ভাবায় মাস্টার জ্যাঠা৷ ছেলেবেলায় তোমার কাছে এলসিএম জিসিএম শিখেছি৷ এই নিরেট মাথায় ঠেলেঠুলে বিভিন্ন কনসেপ্ট ঢুকিয়েছ। সামান্য গ্র‍্যাটিচিউড না থাকলে চলবে কেন? তাই, চলে আসি।  - আদ্দামড়ার গদগদে গপ্প শুনলে গা জ্বলে যায়৷ যাক গে। গিজার চালিয়ে দিচ্ছি৷

বোমা

- বড়দা! - কী ব্যাপার সুমন, এত নার্ভাস কেন? - ইয়ে, এই যে। পার্সেল। - বলিস কী! এই মাত্র এলো? - এই মাত্তর। - দাঁড়া৷ নার্ভাস হোস না৷ - নার্ভাস হব না? এ পার্সেল যে অনিলদারই পাঠানো তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই৷ - তা অবশ্য নেই..। কিন্ত..। - কিন্তু আবার কী..। গতকালই হুমকি দিয়েছিল না..আমাদের উড়িয়ে দেবে? আজকেই উড়ো পার্সেল৷ আর ইয়ে, বাক্সের গায়ে কান লাগিয়ে দেখো৷ খুব সূক্ষ্ম একটা শব্দ আছে৷ - দেখি..। - শুনলে? - টিক টিক টিক৷ সাংঘাতিক৷  - ফাটল বলে। - তুই শালা এ'টা নিয়ে ঘরে ঢুকলি কেন? - কী করবটা কী! ছুঁড়ে ফেলবটাই বা কোথায়? - পুলিশ ডাকব? বম্ব স্কোয়্যাড? - আমরা অনিলদার রাইভাল গ্যাং৷ নেকুপুষুসুন্টুনিমুন্টুনি পাবলিক নই৷ পুলিশ এ আড্ডায় এলে আরও বড় ক্ষতি৷ এ'খানে যা মালপত্তর, মিনিমাম বত্রিশবার ফাঁসি হবে। - অনিলের বোমায় উড়ে যাওয়ার চেয়ে পুলিশের ফাঁস ভালো৷  - বড়দা৷ পার্সেল নিয়ে আসা মেসেঞ্জারটিকে পাকড়াও করতে পেরেছি৷ - মেসেঞ্জার? - দরজার সামনে বোমা পার্সেলটা রেখে দিয়ে কেটে পড়ার তাল করছিল৷ ক্যাঁক করে ধরেছি৷ - বলিস কী৷  - বোমা রাখতে কে এসেছিল জানো? ওই বোবা হুলো। - বোবা হুলো? ও তো আমাদের স্পাই ছিল৷ মাসে মাসে মাইনে

আমার নরম মন

১। দেখুন মশাই। আমি বড় জোর বারচারেক 'ধুর্বা* বলেছি৷ কয়েকবার 'ঢ্যা*না' বলেছি৷ খানকয়েক বোকা**'ও যে বলিনি তা নয়। তবে, খিস্তি দিইনি৷ বাজে কথায় কান দেবেন না! শুনে রাখুন; খিস্তি আমি দিইনি৷ দিতেই পারিনা। ২। আরে! সে মিথ্যেবাদী রাস্কেলের কী দুঃসাহস!  বলে কিনা আমি নাকি পোস্টকার্ডে খিস্তি লিখে পাঠিয়েছি! ডাহা মিথ্যে মশাই৷ ডাহা মিথ্যে! এক্কেবারে আড়াই কিলো সাইজের গুল৷ আমার সাদা মনে কাদা নেই মাইরি, স্রেফ দু'তিনটে ইনল্যান্ড লেটার পাঠিয়েছিলাম কিছু গালাগাল লিখে৷ সেই তিলকে তাল করা? এত বিষ মনে? ৩। আরে, শুনুন৷ শুনুন। আমি মানুষটা একটু মাইডিয়ার গোছের, বুঝলেন। তা একদিন আমি 'এসো বাবুসোনা' বলে কোলাকুলি করতে গেলাম! ও মা! ব্যাটার কী মাতব্বরি ভাবুন; কোলাকুলি রিফিউজ করে সে কিনা আমায় হাইফাইভ অফার করলে? কী মারাত্মক ইনসাল্ট! কী ইনসেনসিটিভ জুতোপেটা! আমি ওর নামে মামলা করব! ওর ভিটেয় ঘুঘু চরাব! এই বলে রাখলাম! দ্যাখ শালা কত ধানে কত চাল!

নিখুঁত

- কাজ হয়ে গেছে অনিলদা৷  - বডি? - সাফ৷ - সাফ হলেই ভালো। দু'দিন পর কাগজে কোনও ময়লা খবরটবর যেন না দেখি। - একটা কেসে সামান্য ভুলচুক হয়ে গেছিল..তা'নিয়ে বারবার খোঁটা দেবে? - সামান্য ভুল৷ সামান্য ভুলের কনসিকুয়েন্স বোঝার বয়স তো তোর হয়েছে অর্ণব৷  - আসলে কী জানো অনিলদা, সে'বার হল কী..। - পার্ফেকশনে বিশ্বাস না থাকলে এ লাইনে এত বছর টিকে থাকতে পারতাম না। আর তুই হাজারটা কাজ নিখুঁতভাবে করলেও,  এই একটা ভুলের জন্যই তোর হান্ড্রেড পার্সেন্ট স্ট্রাইক রেট আর রইলনা। ইট উইল নেভার বি আ কম্পলিট হান্ড্রেড পার্সেন্ট। - অত অবিশ্বাস থাকলে, আমায় দলে রেখেছ কেন অনিলদা? - বিশ্বাস করলে তোকে ছেড়ে দেওয়াটা সহজ হত অর্ণব। - তোমার কথাবার্তা সবসময় বোঝাও যায় না..। - টাকাটা রাখ। আর কাল রাতের দিকে উইনস্টন ক্লাবে আসিস৷  - ক্লাবে? - বাইরে অপেক্ষা করিস৷ একটা গাড়ি তোকে পিক করে নেবে সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ৷ আধঘণ্টা আগে ডিটেলস পেয়ে যাবি৷ - রিভলভার সঙ্গে রাখব? - তোকে ইন্স্যুরেন্স তো বেচতে ডাকছি না৷ ও'টা ছাড়া আসবিই বা কেন।  - টার্গেট? - সুকুমার হালদার। ক্লাব থেকে বেরোবে ডিনার সেরে। ওর ড্রাইভারকে হাত করা আছে৷ মিনিটে তিনেকের এ

লেবুজল

- আচ্ছা অভ্র, আপনি কবিতা পড়েন? - ক..কবিতা? পোয়েট্রি? - ভূতের নাম শুনলেন? নাকি ভল্ডেমর্ট? - ভূত বা ভল্ডেমর্ট শুনলে ঠিক গলা শুকিয়ে যায়না, হাতের তালু ঘামতে শুরু করেনা, হাড়-কাঁপানো পরীক্ষার হলের গন্ধ নাকে আসে না, সামান্য লেবুজলের জন্য মন আঁকুপাঁকু করে না, জুনের দুপুরে কলকাতায় বসে গায়ে শাল জড়াতে ইচ্ছে করে না৷ কিন্তু কবিতা পড়লে হয়। বুঝতেই পারছেন, আদা-কাঁচকলা ইকুয়েশনে রয়েছে আমার মাথা আর কবিতা৷  - চীনেবাদামের ভাঙা খোসার সঙ্গে আপনার তুলনা চলতে পারে৷ - কী জানেন রুবি, কবিতার লাইনগুলো কেমন কপালে গোঁত্তা খেয়ে ছিটকে যায়। গদ্যফদ্য দিব্যি সুটসাট ব্রেনে ঢুকে জাঁকিয়ে বসে পড়ে৷ কিন্তু পদ্য হলেই মগজের ইলেক্ট্রিক ফেন্সে শক খেয়ে এলোমেলো হয়ে যায়। - একটা গোটা জীবন কবিতা অ্যাপ্রিশিয়েট না করে কাটিয়ে দেবেন? - রুবি, আমি কিন্তু চেষ্টা করেছি অনেক৷ বিশ্বাস করুন৷ গ্যাঁটের পয়সা খরচ করে প্রচুর বইও কিনেছি একসময়৷ সে'গুলোকে সে'গুলোকে কোস্টার হিসেবে ব্যবহার করি৷  - আপনি ক্রিমিনাল অভ্র।  - কবিতার বইকে ডিসরেস্পেক্ট করেছি বলে?  - না৷ নিজের কবিতা বোঝার ক্ষমতাটাকে অগ্রাহ্য করছেন বলে। - যাহ শালা৷ ওহ, সরি৷ আই মীন...। - নিজ