Skip to main content

Posts

Showing posts from April, 2013

বিনু মারান্ডির গ্রামে

বিনু মারান্ডির বাড়িতে  সন্ধ্যেটা মন্দ কাটলে না। ছোট্ট কুঁড়ে, তার উঠোনে খড়ের ওপরে পাতা মাদুর ; এই হলো বিছানা। খান-কুড়ি  আদিবাসীদের  গেরস্থালি মিলে এই গ্রাম।  আদিবাসীদের  উচ্চারনে ঠিক মালুম হয় না; তবে গ্রামের নাম বোধ হয় বিধ্মা। বিটকেল। বিধ্মা’র কাছেই রয়েছে ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল। সব চেয়ে কাছের বসতি রয়েছে রামগড়ে; অন্তত আড়াইশো মাইল দূরে। যাচ্ছিলাম রামগড়েই। ঠিক সন্ধ্যের মুখে গাড়িটা গড়বড় করলে এই খানে এসে। নিজের বিদ্যেয় অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু গাড়ি গুমরে রইলে । পুরনো ফিয়াট গাড়িটা এবার বিদায় করতে হবে; এত দুরের ড্রাইভে এমন নড়বড়ে গাড়ি নিয়ে বেরোনোটাই ঝুঁকি। আশেপাশে মেকানিকের টিকিও নেই। রামগড়ে এক সহকর্মী থাকে; মোবাইলে অগত্যা তাকেই ধরতে হলো। সহকর্মীটি জানালে সে গাড়ি এবং মেকানিক দুইই পাঠাচ্ছে তবে তা ভোরের আগে পৌছবে না। অগত্যা কাছের এই আদিবাসি বসতি দেখে এখানেই ঢুঁ মেরে দেখলাম রাতে মাথা গোঁজার একটা ব্যাবস্থা করতে পারি কি না । বিনু মারান্ডির এই কুঁড়েতে আশ্রয় জুটে গেল; বিনুই এ গ্রামে এক মাত্র স্মার্ট ব্যাক্তি; মোড়ল গোছের কিছু বোধ হয়, ভাঙ্গাচোরা হিন্দিতে চমৎকার কাজ চালিয়ে

চিট-ফান্ড

বস বলছে ছয় মাসের কাজ ছয় দিনে সারতে।  বউ বলছে পুজোয় দীঘা-টিঘা চলবে না, ম্যালেইসিয়ার টিকিট কাটতে হবে।  মন্ত্রীরা ভাবছেন এক কোপেই হাজার কোটি হাপিস মারতে, ইনস্টলমেন্টে ঝাড়ার  গড়িমসি অসহ্য। প্রেমিকার মনের চিড়ে সওদাগরী আপিসের চাকরির জলে আর ভিজছেনি, দরকার "ফরেন পোস্টিং"। ভিক্টোরিয়া প্রেম প্রেমিকের মনে যথেষ্ট সুধা-সঞ্চার করতে পারছে না আজকাল, কথায়  কথায় শুধু বকখালি-উইকেন্ডের বাই।  বাংলা সিনেমা-দেখিয়ে পাবলিক এখন আর বাইক-চড়া রোম্যান্সে গলে পড়ছেন না, "বেড-সিন" চাই'ই চাই। ভগবানও মাগনায় ক্রিকেট ছাড়তে চাননা, চল্লিশে চালসে ভগবান মানবেন কেন ?  জগত্টাই এখন চিট-ফান্ড, তামাম পাবলিক চাইছেন কানা কড়ি ছড়িয়ে গ্যালন গ্যালন সর্ষের তেল গায়ে মাখবেন। লে রগড়।  খামোখা সুদীপ্ত সেন'য়ের পেছনে হুমড়ি খেয়ে গড়াগড়ি যাওয়ার কি দরকার ?   

চৈত্র সেল কেলো

চৈত্র সেল হলো বাঙালি হুজুগের ভাঁটিখানা। অমুক ডিস্কাউন্ট তমুক ফ্রি’র চক্করে যে একটা তামাম জাতী কি বীভৎস ভাবে কাছাখোলা হয়ে পড়তে পারে তা মালুম করতে হলে এ সময়ে সন্ধ্যেবেলা গড়িয়াহাঁট ঢুঁ মারলেই চলবে। ফুটপাত উপচে লোকের ঢল রাস্তায়, পুলিস বারোয়ারি পুজার ভলেন্টীয়ারের মত নাচনকোঁদন করে হিমশিম খেয়ে চলেছে। পুরো এলাকাটা গরম কড়াইয়ের মত টগবগ করছে আর আমি পাঁঠার মত ক্রমশ সেদ্ধ হয়ে চলেছি। পাশে ঝাঁ-চকচকে জিন্স যুক্ত বউ ডীস্কাউণ্ট সমেত বাঁকুড়া’র গামছা খুঁজে পাওয়ায় আহ্লাদে আট-খানা। অক্সিজেন কমে আসছে। এপ্রিল গরমে প্যাচপ্যাচে জামা গায়ের সাথে লেপ্টে। পায়ের ওপর দিয়ে কত শত হিল-ময়ি চটি ও বিরাশি সিক্কার জুতো বয়ে যায় তার ইয়ত্তা নেই। তবু শালা সারা বছরের যত ঝরতি-পড়তি মাল,  চৈত্র-সেলের আছিলায় পাবলিক তা গিলেই ছাড়বে। ফেড আপ। গামছার দোকানে দাঁড়িয়ে যখন অসহায় হয়ে ভাবছি যে ওই এক পিস গামছা সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে নিজকে টাঙ্গিয়ে দেওয়া যায় কিনা এমন সময় আমার পাশে লেপ্টে থাকা, ঘামে লটপট টাক সমেত এক মাঝ বয়েসি ভদ্রলোক আমার দিকে ফিরে বললেন “ দাদা এই মানিব্যাগ টা কি আপনার ?” লে হালুয়