Skip to main content

Posts

Showing posts from January, 2019

লস্ট বয় অফ সুদান

এ বই ছাব্বিশে জানুয়ারি পড়া শেষ হল, সে'টা একটা উপরি পাওনা। ১৯৯০। দক্ষিণ সুদানের এক প্রত্যন্ত গ্রাম; কিমটং।  বিজলিবাতি বা গাড়িঘোড়া বা স্কুল সে গ্রামে ছিল না; শুধু এ'টুকু বললে সে গাঁয়ের অন্ধকার সঠিকভাবে বোঝানো সম্ভব নয়। আসলে আমি কোনো কিছু বললেই সে পৃথিবীর যন্ত্রণাগুলো যথাযথ ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারব না। তার জন্য লোপেজের আত্মজীবনী 'রানিং ফর মাই লাইফ' পড়া ছাড়া গতি নেই। ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে তখন সুদান তছনছ; লোপেপে (ভালো নাম; লোপেজ লোমং)  নামে ছ'বছরের এক শিশু কিমটং গ্রামের গীর্জা থেকে অপহৃত হয়। লোপেপে একা নয়, প্রতিদিন বহুসংখ্যক শিশুদের তুলে নিয়ে যেত যুযুধান সেনারা। যে পাশবিক পরিস্থিতিতে সেই অপহৃত শিশু ও কিশোরদের রাখা হত, তা'তে অনেকেই মারা যেত অত্যাচার ও অনাহার সহ্য করতে না পেরে। যাদের মধ্যে বেঁচে থাকার দুঃসাহস ও অমানবিক তাগদ থাকত; তাদের জোর করে ভর্তি করা হত সৈন্য হিসেবে। উইকিপিডিয়ায় 'লস্ট বয়েজ অফ সুদান' সার্চ করলে সে বিষয়ে কিছুটা জানা যায়। বাপ-মায়ের কোল থেকে এক প্রকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল লোপেপেকে। তখন সে দুধের শিশু, বন্দী অবস্থার অকথ্য অত্যাচার সহ্য করে তার বে

মুঝে ইয়াদ আতি হ্যায়

"...অপনে দেশ কি মিট্টি কি খুশবু মুঝে ইয়াদ আতি হ্যায় মুঝে ইয়াদ আতি হ্যায় কভি বেহলাতি হ্যায় কভি তড়পাতি হ্যায় মুঝে ইয়াদ আতি হ্যায়"। মাটির টান, দেশের টান, ফেলে আসা সময়ের টান; এ'সবের মিশেলে বোধ হয় এমন সুরই তৈরি হয়। আর গানের কথায় এত সহজে কী ভাবে যে মায়ের আদর আর সোঁদা গন্ধ মিশিয়ে দেওয়া যায়; তা জাভেদবাবুই জানেন। পতাকা, পার্লামেন্ট আর সিলেবাসের ইতিহাস; এ'সবের বাইরে যে দেশটুকু; এ গান একান্তভাবে সেই দেশের। প্রত্যেকটা মানুষ নিজের মধ্যে যত্ন করে বয়ে নিয়ে চলে একটা দেশ; 'আমি-রিপাবলিক'- কারুর কাছে সংবিধান বলতে মায়ের সাতপুরোনো গানের খাতা, আবার কারুর কাছে আয়নার এক কোণে সাঁটা লাল টিপ। কারুর পতাকা বলতে শিব্রাম, কারুর দেরাজে যত্নে রাখা ফেরত-না-দেওয়া রুমাল। কারুর মুক্তিযুদ্ধ লোকাল ট্রেনের মান্থলিতে, কারুর ইতিহাস জমাট বেঁধে আছে অজস্র পোস্ট না করা চিঠিতে। খোদ ভারতবর্ষের বুকের মধ্যে ধুকপুক করে চলেছে একশো কোটিরও বেশি দেশ। এ গান তেমন যে কোনো দেশের জাতীয় সঙ্গীত হয়ে উঠতে পারে। এই গানের মধ্যে আছে সেই অগুনতি দেশের জার্নাল। আর আছে সেই সমস্ত দেশের  কাছে ফিরতে চাওয়ার কাঙালপন

মনোজ দত্তর চিঠি

- চিঠি? আমার নামে? - অনিল হালদার আপনি হলে, ইয়েস। - তোমায় দেখে তো ঠিক ক্যুরিয়র কোম্পানির লোক মনে হয় না হে..। - ও মা। না না, আমি পোস্টম্যান বা কুরিয়রের লোক নই। - তা'হলে আমার অফিস বয়ে এলে যে...। - শুধু তাই নয়, আগাম অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আসিনি। তাই আপনার সেক্রেটারি ঝাড়া তিন ঘণ্টা বসিয়ে রেখেছিলেন। - খামের গায়ে তো কিছুই...। - লেখা নেই..। জানি। - এ চিঠি কার লেখা? তুমি নিয়ে এসেছ কেন? - এত মন দিয়ে লিখলাম চিঠিটা, তাই ভাবলাম আমিই নিয়ে যাই। ওহ, আমার নাম মনোজ দত্ত। - সশরীরেই যখন এলে, তখন চিঠির কী দরকার ছিল..ব্যাপারটা কী...। আজকাল ছেলেছোকরাদের ব্যাপারস্যাপার বোঝা দায়। চাকরীর আবেদনটাবেদন নয় তো? - লেফাফা খুলে দেখুন না স্যর।  - তোমার হাবভাব কেমন সাসপিশাস মনে হচ্ছে, খামে গোলমেলে কিছু নেই তো? - গুড নিউজই আছে স্যার। খুলেই দেখুন না। - নিজেই লিখেছ যখন, বলেই দাও কী আছে এতে। বৃদ্ধ বয়সে এই অকারণ কায়দা বরদাস্ত হয় না। - আপনি এত স্কেপ্টিক কেন বলুন তো অনিলবাবু? - আমি? স্কেপ্টিক? শোন হে ছোকরা, বাতিকগ্রস্ত হলে কলকাতার বুকে এত বড় ব্যবসা ফেঁদে বসতে পারতাম না। রেন্টেড টেবিল দিয়ে

জুতোবাজ

এক বন্ধু রেকমেন্ড করেছিল 'বিসনেস ওয়ার্স' পডকাস্ট। পেপসি-কোকের পর নাইকি এবং অ্যাডিডাসের বাজারদখলের লড়াই নিয়ে রোমহষর্ক কয়েকটা এপিসোড শুনেছিলাম। আর তার কয়েকদিনের মাথায় নজরে পড়ল এই বইটা; নাইকির ফিল নাইটের আত্মজীবনী। সোজাসাপটা ভাষা, কিছু কিছু জায়গায় প্রায় ডায়েরির মত গড়গড়িয়ে লেখা। আর সোজাসাপটা লেখার যে কী গুণ; মনে হয় টেবিলের ও'পাশে বসে কেউ গল্প বলছেন। এ চ্যাপ্টার থেকে ও চ্যাপ্টার যাওয়ার সময় মনে হয়; "এক মিনিট স্যার, চট করে চানাচুরের ডিবেটা নিয়ে আসি"। এ'বারে র‍্যান্ডম অবজার্ভেশনগুলোঃ ১. আমেরিকানদের খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহের সঙ্গে আমাদের কিছুতেই তুলনা চলে না। আগাসি বা ফিল নাইটরা ব্যতিক্রমী, তাঁদের দৃষ্টান্ত দিয়ে গড়পড়তা আমেরিকানদের বিচার করা অবশ্যই অনুচিত।  কিন্তু এই দু'জনের আত্মজীবনী পড়ে  বুঝেছি যে সে'দেশে স্পোর্টস ব্যাপারটা সিস্টেমের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে ভাবে মিশে আছে; বিশেষত শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে। এবং সবচেয়ে বড় কথা হল অলিম্পিয়ান বা সেলেব্রিটি হওয়ার লোভটুকুই স্পোর্টসের শেষ কথা নয়। আগাসির টেনিস বা নাইটের দৌড় নিয়ে গল্প লেখা হয় বটে কিন্তু তাঁরাই শুধু ক্রীড়াব

ভাঙা প্রেম

প্রত্যেক ভাঙা প্রেমের শেষ দৃশ্যে এক থালা বিরিয়ানি থাকলে ভালো হয়৷ থালার একপাশে হেরো প্রেমিক, অন্যপাশে পর্যুদস্ত প্রেমিকা। বিরিয়ানি সুবাসের পাশাপাশি ইতিউতি "খাচ্ছ না কেন?" ভেসে বেড়াবে বাতাসে। আর সরু চালচাপা-নরম আলুর মত ঘাপটি মেরে পড়ে থাকবে "আর দেখা হবে না, না?"র ধান্দাবাজ প্রশ্ন। বিরিয়ানি আর ভাঙা প্রেমে তাড়াহুড়ো চলে না, সে'টাই বাঁচোয়া।

রাজ্যপাট

- ভাই মন্ত্রী! ও মন্ত্রী! - রাজাদা, ডাকছেন? - আমার আর কে আছে ভাই? - কেন? সিংহাসন আছে। এক ডিবে ইয়ারবাড আছে৷ মাইক্রোওয়েভে দেড়খন্ড পিৎজা আছে। আর আছে বালিশের ওয়াড়ে চায়ের ছোপ। - তোমার আমি এত কদর করি ভাই মন্ত্রী,  অথচ তোমার যত চ্যাটাংচ্যাটাং কথা। নেহাত রাজ্যপাট সামলে রাখো। সকালে পোনামাছটা, বিকেলে সিগারেটটা এনে দাও; তাই বলে কি একটু মিঠে সুরে কথা বলতে নেই? - আহ, রাজন। রাজপুরুষের অত নেকুপুষু হলে মানায় না। - মনে বড় দুঃখ ভাই মন্ত্রী। - দুঃখ? স্যাডনেস? ফ্যাঁচফোঁচ? হুহু? - মান্নাদের গলা কাঁপুনির মত। সঞ্জীবের শেষ লাইনের মত। রোববার দুপুরের কলেজস্ট্রীটের মত। - সরেস। রাজাদা, বড় বাজে বুকে। না? - বড্ড বাজে। রীতিমত বাজে ভায়া। বুকে জমাট বেঁধে আসে। মনে হয় যদি ছাতে উঠে সাইকেল চালাতে পারতাম তা'হলে খানিকটা ভার লাঘব হত। - আপনার দুঃখ ভল্যিউম উইদাউট ওয়েট নয় দেখছি৷ - হাই ডেন্সিটি মন্ত্রী।  হাই ডেন্সিটি। - মায়ের কথা মনে পড়ছে? - ছেলেবেলার দুপুরে মাকে জড়িয়ে শুতাম। বিকেলে তড়াং করে উঠে পড়তাম আমার প্রাণের বন্ধুর সাইকেলের কলিংবেলে। সব কন্ডেন্স করে গেছে ভাই। - তা, এ দুঃখের গন্ধ কিছু

একুশে একুশ

হারারিদার লেখা পড়া মানে মগজকে সমুদ্রস্নান করিয়ে আনা। বই শেষ করার পর কিছুদিন অন্তত হারারি-মোডে সমস্ত কথাবার্তা,থিওরি,খবরকে অ্যানালাইজ করার চেষ্টা করি। কিন্তু সে ব্যাপারটা রীতিমত আননার্ভিং। এক বন্ধুর রেকমন্ডেশনে বছরখানেক আগে পড়েছিলাম সেপিয়েন্স। গত বছরের শেষে পড়েছি 'হোমো ডেউস' আর এ বছরের শুরুতে 'টুয়েন্টি ওয়ান লেসনস ফর দি টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি'। এ দু'টো বই পরপর পড়ে ফেলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। হারারি থরেথরে কনসেপ্ট সাজিয়ে দেওয়ার লোক নন; কাজেই মুখে'উরিব্বাস' অথচ মনের মধ্যে অসহায় 'এ বই শেষ হচ্ছেনা' গোছের হাঁসফাঁস থাকার সম্ভাবনা নেই। ভদ্রলোক সম্ভবত চেয়েছেন তাঁর পাঠক অবজেক্টিভ আর সাব্জেক্টিভের তফাৎগুলো স্পষ্টভাবে চিনতে শিখবেন; অন্তত চেষ্টা করবেন। অসুবিধে হচ্ছে আমরা প্রায়শই ভেবে থাকি  সাব্জেক্টিভ আর অব্জেক্টিভের তফাৎ কী এমন হাতিঘোড়াডাইনোসোর; আমরা দিব্যি বুঝি। কিন্তু হারারিদা এই কনফিডেন্সের কলার নাচিয়ে ডিগবাজি খাওয়াতে ওস্তাদ। ব্যাপারটা কিন্তু নেহাত মজার নয়; কত কিছু নিয়ে আজীবন নিশ্চিন্তে ছিলাম, হারারিদা গোলমাল পাকিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। এই যেমন রাজস্

২৮১র বই

গতবছর শুরুর দিকে পড়েছিলাম সৌরভের বায়োগ্রাফি।  এ'বছরটা শুরু হল ভিভিএস লক্ষ্মণের জীবনী দিয়ে। ব্যক্তিগতভাবে এই ধরনের বই পড়ার সময় খুব মারকাটারি ভাষায় ভেসে যাওয়ার আশা আমার থাকে না। বরং থাকে দু'টো স্পষ্ট চাহিদা; এক, কেরিয়ারের টাইমলাইন গড়গড় করে আউড়ানো হবে না। বিশেষত লক্ষ্মণ, দ্রাবিড়, শচীন বা সৌরভদের ক্রিকেট জীবন সম্বন্ধে আমারা অনেকেই বেশ কিছুটা ওয়াকিবহাল; তাঁদের ব্যাপারে বিভিন্ন খবর, সাক্ষাৎকার ও প্রতিবেদনে ইন্টারনেটও রীতিমত সমৃদ্ধ। কাজেই আমাদের আগ্রহ না শোনা গল্পগুলোর প্রতি, তাঁদের সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলোর প্রতি। গসিপ নয়, কিন্তু তাঁর আশপাশের মানুষগুলো সম্বন্ধে উপলব্ধিগুলোও জরুরী। এ'ব্যাপারে নিজের বইটা ঠিক জমিয়ে তুলতে পারেননি শচীন (বা বোরিয়াবাবু)। দুই, লেখার টোন হবে সৎ এবং নির্মেদ। অমুকের জীবনী পড়তে গিয়ে তমুকের কণ্ঠস্বর কানে এসে ঠেকলেই মুশকিল। ভালো কি মন্দ; সে প্রশ্নে না গিয়েই স্বীকার করে নিতে পারি যে সৌরভের বইটাতে এই সমস্যাটা প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে; ও বই সৌরভের চেয়ে অনেক বেশি গৌতমবাবুর। মন খুলে গল্প বলার ব্যাপারটাই সৌরভের বইতে তেমন ভাবে পাইনি; অথচ বিভিন্ন সাক্ষাৎকার দেখে আমার ম

খুনের গল্প

এক অফিসের ক্যান্টিনে চারাপোনা বা ব্রয়লার কাহাতক সহ্য হয়। কাজেই সোমবারের তেতো ভাবটা কাটাতে আজ লাঞ্চের সময় বেরিয়ে তন্দুরি রুটি আর দু’বাটি মটন কষা খেয়ে ফিরছিলেন তাপসবাবু। মনোজের হাতে বানানো সরেস মিঠে পান একটা খেলে জিভে লেগে থাকা কষা মাংসের স্বাদের প্রতি যথাযথ স্যালুট জানানো হবে; অতএব তক্ষুনি অফিসে না ঢুকে মনোজের পান দোকানের দিকে এগিয়ে গেলেন তিনি। অফিসের লাগোয়া যে খান দুই পানের দোকান নেই তা নয়, কিন্তু পান বানানোর ব্যাপারে মনোজের পরিমিতিবোধটা শ্রদ্ধা করেন তাপস সাহা ; কাজেই সঠিক পানের জন্য বাড়তি হাফ কিলোমিটার অনায়াসে হেঁটে যান তিনি। মনোজের দোকানে পৌঁছনোর আগেই ভবদুলাল গাঁয়েন লেনের নিরিবিলিতে থমকে দাঁড়াতে হল তাপসবাবুকে। “এই যে তাপসবাবু, ও মশাই! শুনছেন? এক মিনিট প্লীজ”। ট্র্যাকস্যুট আর স্পোর্টসশ্যু পরা এক ভদ্রলোক তার দিকেই ছুটে আসছিলেন। বেয়াড়া দুপুরে এমন জগঝম্প মেজাজে জগিং করতে বেরিয়েছেন; ব্যাপারটা অস্বস্তিকরই বটে। - আমায় ডাকছেন? - এই গলিতে আর ক’টা তাপসবাবুকে জোটাতে পারব বলুন। উফ, সেই কখন থেকে আপনাকে ডাকছি মাইরি। শোনার নামই নেই। - সরি, আমি শুনতে পাইনি। - শুনত

চুমু অ্যানোমালি

- হ্যালো হেডঅফিস! - হ্যালো! কোন ইউনিট থেকে বলছেন?  - দু'শো বাহাত্তর বাই এ বাই থ্রি জেড নাইন থ্রি।   - দু'শো বাহাত্তর বাই এ বাই থ্রি জেড নাইন থ্রি? হেডঅফিসে আপনার কল তো বড় একটা আসে না...।  - অত নরম ভাবে থাপ্পড় কষিয়ে কী হবে স্যার। সোজাসুজি বলুন আমি অকাজের।  - না না, ও মা! আমি তেমন ভাবে বলতে চাইনি ভাই...। - চাইবেন নাই বা কেন বলুন। বত্রিশ বছরের জীবনে আমি এই প্রথম হেডঅফিসে কল করেছি। আমি ব্রেনের রোমান্টিক-চুমু রেজিস্ট্রেশন ইউনিট, কিন্তু আজ পর্যন্ত একটা মাইনর চুমুও স্মৃতি হিসেবে ফাইল করতে পারিনি মগজ হেডঅফিসের মেমরি রেজিস্টারে। খুলি-স্পেস নষ্ট করে চলেছি কেবল।  - মনখারাপ করতে নেই ভায়া। মনখারাপ করতে নেই। তা আজ কী মনে করে? চুমু রেজিস্টার করার আছে নাকি? চুমু-রেজিস্টারে প্রথম এন্ট্রি আজ হবে নাকি? - ইয়ে, ব্যাপারটা গোলমেলে।  - গোলমেলে? - অ্যানোমালি রিপোর্ট করার আছে হেডঅফিস স্যার।  - ভাই দু'শো বাহাত্তর বাই এ বাই থ্রি জেড নাইন থ্রি ওরফে চুমু-সেন্টার। আপনি কি শিওর? চুমু নয়? অ্যানোমালি?   - হান্ড্রেড পার্সেন্ট। ঠোঁট এবং জিভ থেকে কোনও সিগনাল আস

কাহারবা নয়

রাতের বাতাসে বেশ ডিসেম্বরের ছ্যাতছ্যাত। গায়ে চাদর জড়িয়ে বসে রেডিও শুনছিলাম, মনে বেশ বৈঠকি আমেজ। টকমিষ্টি চানাচুরের কয়েক পেগ মুখে পড়তেই মান্নাবাবুর গলাটা কানে আরো মিষ্টি হয়ে ঠেকল বোধ হয়। সমস্তই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু হঠাৎ কী যে হল; দুম করে 'কাহারবা নয় দাদরা' গেল মাঝপথে থেমে। রেডিও থামেনি, বিজ্ঞাপন বিরতিও নয়৷ মান্নাবাবু গান থামিয়ে দুম করে জিজ্ঞেস করলেন;. - কী ব্যাপার? মতিগতি ঠিক আছে? - ইয়ে, আমায় বলছেন? (আমি তো থ) - আর কাকে বলব শশীবাবু? বলি হচ্ছে না যে। আসর ঝুলে যাচ্ছে। - আজ্ঞে আমি আপনার তবলচি শশী নই৷ আমি তো স্রেফ শ্রোতা, তাও রেডিওর বাইরে বসে। ওই কাহারবা দাদরার ইস্যুটা আপনি আপনার তবলচিকে কনভে করুন, কেমন? - চোপ। যত ভুল কি তবলায়? গান শোনার ব্যাপার কি এতটাই এলেবেলে? হচ্ছে না আপনার দ্বারা, এমন বিশ্রীভাবে গান শুনছেন যে মনে হচ্ছে রেডিও থেকে বেরিয়ে এসে কান মুলে দিই। - সর্বনাশ! আমি কী করলাম? মন দিয়েই শুনছিলাম যে। ওই যে 'গোলাপজল দাও ছিটিয়ে,  গোলাপফুলের পাপড়ি ছড়াও'...বড্ড দরদ দিয়ে ধরেছেন স্যার...আহা। খামোখা থামতে গেলেন..। - খামোখা? বটে? এ'দিকে

ডক্টর মেওসজুস্কের কারখানা

- সরি, সরি মিস্টার মজুমদার। আপনাকে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হল। আসলে অ্যাসেম্বলি লাইনের একটা গণ্ডগোলে  ঘণ্টাখানেক প্রডাকশন বন্ধ ছিল, আর প্রডাকশন বন্ধ থাকলে যে কী সমস্যা। এত ডিমান্ড চারদিকে...। তা আমার আর্দালি ভুভজু আপনাকে কফি দিয়েছে তো? - দু'কাপ শেষ করে ফেলেছি। আমি তো ভাবলাম আজ আর আপনার সঙ্গে দেখাই হবে না। - না না, সে কী বলছেন। আপনি কলকাতার থেকে এসেছেন, আমার অনেকদিনের ইচ্ছে ভারতবর্ষে আমাদের সাপ্লাই যাবে। - আগ্রহ নিয়েই এসেছি, তবে কী জানেন ডক্টর মেওসজুস্ক, ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে পারছি না ঠিক। যদিও অনেকেই আপনার এই কারখানার প্রশংসা করেছেন। আর যে জিনিস যদি জেনুইন হয় তা'হলে আর পাঁচটা জায়গার মত ভারতবর্ষেও এর চাহিদা তুঙ্গে থাকবে। কিন্তু..তবু কোথাও যেন একটা..। - খটকা...তাই তো?  স্বাভাবিক। সরকারের হাজাররকম ত্যান্ডাইম্যান্ডাই আর অবিশ্বাস। কাজেই কালোবাজার ছাড়া এ জিনিস বাজারে ছাড়া গেল না। আর সে কারণে মাস-অ্যাওয়ারনেসের জন্য কিছুই করতেও পারলাম না। রিয়েলি স্যাড। - তাই বলে ডক্টর মেওসজুস্ক, ভূতের কারখানা? সত্যি সম্ভব? - রীতিমত সম্ভব। আর তার প্রমাণ এ'বারে আপনি হাতেনাতে নিয়ে যাবেন। এতদিনের