Skip to main content

Posts

Showing posts from 2020

অনুরাগের লুডো

অনুরাগবাবু আমার অত্যন্ত প্রিয়৷ তার মূলে রয়েছে "বরফি"। লোকমুখে ও বিভিন্ন রিভিউয়ের মাধ্যমে জেনেছি যে বরফিতে ভুলভ্রান্তি ও গোলমাল যথেষ্ট রয়েছে৷ কিন্তু গাম্বাট সিনেমা দেখিয়ে হিসেবে আমি বেশ বুঝেছি যে নিজের ভালোলাগাগুলোকে বুক বাজিয়ে আঁকড়ে থাকাটাই কর্তব্য৷  বরফি কতবার দেখেছি তার ইয়ত্তা নেই৷ সিনেমার টেকনিকালিটি বুঝি না - শ্রুতিদেবীর ছলছলে চোখের পাশাপাশি বরফি আর ঝিলমিলের প্রতি তাঁর অপত্য স্নেহ, ও'তেই এস্পারওস্পার হয়েছি, বারবার। মোদ্দা কথা হল, সিনেমাটি যে আগাগোড়া প্রবল যত্ন আর ভালোবাসায় তৈরি - সে সম্বন্ধে কোনও সন্দেহ থাকেনা। সে'খানেই অনুরাগবাবুর ভক্ত হয়ে পড়া৷  (আদতে হয়ত অনুরাগবাবু প্রবল অযত্ন আর অ-ভালোবাসায় বানিয়েছিলেন ছবিটা। তাতে আমার কী? আমার মনে হয়েছে 'বরফি'র ফ্রেমে ফ্রেমে রয়েছে স্নেহ, ভালোবাসা আর জ্বরে-জলপটি-মার্কা যত্ন৷ সেই মনে হওয়ার দামই তো লাখ টাকা)।  যাকগে৷ এতটা পাঁয়তারা কষলাম এ'টা জানাতে যে "লুডো" দেখেছি৷ অনুরাগবাবুর সিনেমার ব্যাপারে আমার একটা বায়্যাস থাকবে, সে সম্ভাবনাও  উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ কাজেই গোড়াতেই বলে দি যে সিনেমাটা আমার বড়

মনখারাপের দিন

- এই যে ভায়া, মনটন খারাপ নাকি? - হুম? - মনখারাপ? - আমার আবার মনখারাপ৷ ইট পাথর সিমেন্ট বালি আলকাতরা ট্র‍্যাফিক লাইট দোকান বাড়ি প্রমোটার মেট্রোরেল ফ্লাইওভার রাস্তায় তৈরী কেঠো চীজ আমি..আমার আবার মন খারাপ। - তা'তে কী?শহরদের স্নেহ থাকতে নেই? মনখারাপ থাকতে নেই? - আমাদের কি আর ফুলফুল প্রিন্টেএ ওয়াড় পরানো নরম বালিশ আছে ভাই? যে'খানে মুখ গুঁজে স্বস্তি পাব? আছে কী? বলো? - মেঘলা আকাশ চলবে? ভাই কলকাতা? - আর রুমাল? বালিশে ডাইরেক্ট ফ্যাঁচফোঁচ করাটা আনহাইজেনিক। - পুরনো ছবি আছে৷ দেব? - দেবে? - আর একবার জিজ্ঞেস করেই ফেলি না হয়৷ আজ মনখারাপ নাকি? ভাই কলকাতা? - একটা টলটলে ভালোবাসা, জানো। টলটলে। আর ছলছলে মনকেমন৷ ছলছলে। (১৫.১১.২০২০)

মিত্র

- আপনি টিকটিকি মিট্টার নন? - আর কতবার বলব? আমি ও নামে কাউনে চিনি না। - ফেস সেম টু সেম৷ ভয়েস সেম টু সেম৷ ভেরি ফিশি মিস্টার মিট্টার। ভেরি ফিশি। - কাল সন্ধ্যে থেকে বলে যাচ্ছি আমার নাম অপূর্ব। আমি আপনার ওই মিত্তির নই৷ আর আপনার সঙ্গে এর আগে আমার কখনও দেখা হয়নি। - বেনারস আপনি ভিজিট করেননি? - আমি সে'খানে থেকেছি ক'বছর৷ তাও অনেক ছেলেবেলায়। - ওয়েব অফ লাইজ৷ উ বিজনেস হামার আছে মিস্টার মিট্টার৷ ইউ আর অ্যান অনেস্ট ম্যান৷ খামোখা ঝুট বলে রেপুটেশন নষ্ট করা কেন? হোয়াই? এখন বলবেন কাঠমাণ্ডুতে ভি হামাদের মোলাকাত হয়নি। - কাঠমাণ্ডু? নেপালে?  - আরে৷ ইউ আর ফলিং ফ্রম স্কাই। - দেখুন, বিশ্বাস না হয় আমার বন্ধু পুলুর ঠিকানা দিচ্ছি৷ তার কাছে গিয়ে যাচাই করে আসুন। - পুলু? আঙ্কিলের নয়া নিকনেম? - আমায় ছেড়ে দিন।  - ফর ওয়ান ফাইনাল টাইম৷ ইউ আর নট প্রাইভেট ডিটেকটিভ মিট্টার? - ছোটখাটো একটা চাকরী করি। ক্লার্কের৷ সে'টাও খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন৷ ও'সব গোয়েন্দাগিরিটিরি আমার ধাতে সইবে কেন? লেখালিখির একটা বাজে অভ্যাস আছে বটে কিন্তু..। যাক গে৷ মগনলালবাবু, আমায় ছেড়ে দিন। - ছাড়তে পারি। অন ওয়ান কন্ডিশন। অ

ভূতচতুর্দশীর বাজে গল্প।

- ভূতের গল্প? - হ্যাঁ মামা। ভূতচতুর্দশীর রাতে একটা জমজমাট গা ছমছমে ভূতের গল্প না হলেই নয়। - জমজমাট? গা ছমছমে? - এগজ্যাক্টলি৷  - একবার হয়েছে কী, একটা স্কন্ধকাটা গিয়ে পড়েছে টুপির দোকানে..। - যাহ্৷ এতে গা ছমছম কই? - স্কন্ধকাটার সিচুয়েশনটা ভাব ভাগনে৷ চারদিকে হাজার হাজার টুপি..অথচ সে ব্যাটা ঠুঁটোজগন্নাথ হয়ে দাঁড়িয়ে৷ ঠিক যেন কেউ কাঁটাচামচ দিয়ে স্যুপ খেতে বসেছে।  - আহা, এতে ট্র‍্যাজেডি আছে৷ কিন্তু গা ছমছম কই?  - বেশ৷ বেশ৷ অন্য প্লট। - ইরশাদ। ইরশাদ। - একবার হয়েছে কী..একটা মেছোভূত গিয়ে পড়েছে এক ভিগানের বুফেতে৷ আর তারপর ব্রকোলি কালিয়ার গন্ধে গা গুলিয়ে সে মূর্ছা যায় আর কী...। - মামা, তুমি গল্প বলার ব্যাপারটাকে সিরিয়াসলি নিচ্ছ না।  - কেন রে? সাফিশিয়েন্টলি গা ছমছমাচ্ছে না বুঝি? - ধুর৷ ভিগান বুফেতে মেছোভূত৷ এ'টা ভূতের গপ্প না জ্যোমাটোর ট্যুইট? - তুই বড় খুঁতখুঁতে ভাগনে। - মামা, আর একটু তলিয়ে ভাবো। - বেশ। শোন মনে দিয়ে৷ অ্যাটেনশন। কেমন? - টোটাল ফোকাস নিয়ে বসেছি। - একবার হয়েছে কী..একটা শিব্রাম ভক্ত শাঁকচুন্নির মাথায় পানের ভূত চেপেছিল। হাজার রকম পদের মধ্যে থেকে সে শুধু শাক বেছে নিয়ে গাইত

বিধুবাবুর কেল্লাফতে

- কে? কে? - এসেছি ভায়া, এসেছি।  - কে আপনি? - পরিচয়টা তো বড় কথা নয়৷ এসেছি৷ এ'টাই বড় কথা৷ তাই না বিধুশেখর?  - আইশ্লা! মার দিয়া কেল্লা! নামিয়েছি৷ আমি ভূত নামিয়েছি। প্ল্যানচেটের জোর আছে৷ আছে! - আলবাত আছে। তোমার কনসেন্ট্রেশনের জোরেই তো এলাম। - বেয়াল্লিশ বছর ধরে চেষ্টা করছি, জানেন৷ বেয়াল্লিশটা বছর৷  শর্টসার্কিট বিধু,  ভূতপাগল বিধু, প্ল্যানচেট পাগলা- এমন কতশত বদনাম বয়ে বেড়াচ্ছি৷ পাড়ার লোক পাত্তা দেয় না, আত্মীয়স্বজন এড়িয়ে চলে৷ তবু, তবু আমি হাল ছাড়িনি৷  - সাবাশ ব্রাদার! - হিয়ার ইজ মাই সাকসেস৷ ভূত! আপনি! - চা'টা অফার করবে না হে? বিধুশেখর? - চা?  - ভূতেরা চা খায়না বটে৷ তবে এই যে তোমার সোফায় এসে বসলাম, এ'টুকু সৌজন্য আমি আশা করতেই পারি৷ তুমি অফার করবে, আমি রিফিউজ করব। - চা খাবেন স্যার? - নো, থ্যাঙ্কস। - ইয়ে, আপনার নামটা? জানতে না পেরে কেমন খচখচ করছে৷ আপনাকে ঠিক দেখতেও পারছি না যে৷ কেমন আবছা আবছা সমস্তটা৷  - দেখবেটা কী করে! এখনও পুরোপুরি তৈরি হতে পারিনি তো৷ এখনও ওয়ার্ক ইন প্রগ্রেস। - ঠিক ইয়ে, ধরতে পারলাম না স্যার..। পুরোপুরি তৈরি হননি মানে? - মানে, যে ব্যাটা মরে আমি..সে পুরোপ

নিউনর্মালে লোকালে

আমার দুই মামা চাকরীর পাশাপাশি যে'টা করে সে'টা হল ডেলি প্যাসেঞ্জারি৷ ছোটমামা মাঝেমধ্যেই বলে যে তাঁর চাকরীর একভাগ অফিস আর তিনভাগ ডেলিপ্যাসেঞ্জারি৷  সারা বছর লোকাল ট্রেনের ভীড় সামাল দিয়ে কলকাতা পৌঁছে তাদের 'অফিস-করা'৷ লোকাল ট্রেনের চলাচল মফস্বলের মানুষজনের জন্য ধানচাষের মতই জরুরী, কলকাতার চাকরী ধরে রাখতে এই লোকাল ট্রেনের ডেলিপ্যাসেঞ্জারিই অজস্র সংসারের ভরসা। মাসের পর মাস সেই ট্রেন চলাচল বন্ধ আবার ও'দিকে ঠুনকো প্রাইভেট ফার্মের চাকরী। করোনার দুর্বিপাকে পড়ে বেশ কিছু দিন প্রবল অনিশ্চয়তার মধ্যে কেটেছে৷  বিশ্রী একটা ধুকপুক নিয়ে ফের শুরু হয়েছে লোকাল ট্রেনের যাওয়া-আসা৷ খানিকটা স্বস্তি এসেছে, যাতায়াতের একটা সুরাহা হল, চাকরীটা হয়ত টিকিয়ে রাখা যাবে৷ কিন্তু তার পাশাপাশি রয়েছে প্রবল শঙ্কা- মুণ্ডু গেলে খাবোটা কী?  নিয়মিত কলকাতা যাতায়াতের সহজতম পথটা যেমন চালু হল, তেমনই এর পাশাপাশি বহুগুণ বেড়ে গেল ট্রেনের ভীড় এবং অসতর্কতায় কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার দুর্বিষহ ভয়৷  এই অসহায় পরিস্থিতিটা বুঝিয়ে বলাটা নেহাৎ সহজ নয়৷   আমি শুধু জানি যে দু'জন সাধাসিধে সরল মানুষ সংসারের

এখন অবসন্ন যারা

- ও নিতাইদা, টুয়েন্টি নাইন হবে নাকি? ভজা আর রতন রেডি৷  - না রে মধু। এই সবে অফিস থেকে ফিরলাম। বড় ক্লান্ত৷ ভাবছি সাততাড়াতাড়ি ডিনারটা সেরে লম্বা হব।  - আজ মেসে নতুন রাঁধুনি এসেছে৷ তার হাতে ডাল আর ঝোলের নাকি একদর।  - অমিয়বাবুর কাছে এ'বার একটা প্রটেস্ট না জানালেই নয়। মাস গেলে এতগুলো টাকা দিই আমরা। অথচ আজ ছ'মাস হল একটা ভালো রাঁধুনি জোগাড় করতে পারছেন না উনি?  - মাথা গরম করে আর কী হবে গো নিতাইদা। - সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর মেসে ফিরে যদি তৃপ্তি করে ভাত মাছেরঝোলটুকুও না খেতে পারি, মেজাজ ঠিক থাকবে কী করে। ধুরছাই।  - বড় ক্লান্ত তুমি। তাই না নিতাইদা? - কাজের যা চাপ রে মধু। আর ভাল্লাগেনা।  - তোমার মেজাজটা ঠিক..উঁহু৷ শুধু কাজের চাপ তো নয়। মনখারাপ নিতাইদা? বাড়ির জন্য? - কদ্দিন বাড়ি যাইনা বল দেখি। কদ্দিন।  - খোকা কত বড় হল? - এই পৌষে ছয়ে পড়বে। - ফোনে কথা হয় তো ওর সঙ্গে রোজ৷ তাই না? - খোকার গায়ের মিষ্টি গন্ধ কী আর ফোনে পাওয়া যায় রে মধু। তাছাড়া কদ্দিন তোর বৌদির পাশে বসে তার সঙ্গে প্রাণ খুলে গপ্প হয়না৷ আমার ভাই সামনের মাসে পার্ট টু পরীক্ষা দেবে, সে ব্যাটা কেমন প্রিপেয়ার করছে, সে'খ

ফেরা

- এই যে ভায়া৷ এই যে। - রবিদা? আপনি? - আমি ট্রেন ধরতে আসিনি।  - আমায় ধরতে এসেছেন? - তুমি তো আর চোর-ডাকাত নও৷ তোমার মাথার ওপর তেমন কোনও ইনামও নেই যে পাকড়াও করে দু'টো বাড়তি টাকা পিপিএফে রাখতে পারব৷  - তবু। আপনার কাছে হাজার তিরিশেক টাকা ধার রয়ে গেছে। এখুনি চাইলে কিন্ত দিতেও পারব না। তবে, টাকাটা মেরে দেব না৷ কোনও না কোনও ভাবে ঠিক..। তা সে আমি যে'খানেই থাকি। - ইয়ং জেনারেশনের এ এক মস্ত বড় অসুবিধে হে৷ গিভ অ্যান্ড টেক ছাড়া কিছুই দেখতে পাওনা। আমি ধান্দাবাজ হতে পারি, তবে চশমখোর নই।  - ছি ছি রবিদা৷ বাবা মারা  যাওয়ার পর এমন অথৈ জলে পড়েছিলাম৷ চাকরীটাও ছাই এমন সময়..। রবিদা, আপনি সে'সময় পাশে এসে না দাঁড়ালে..৷  - তা, এমন ভরদুপুরে..পাততাড়ি গুটিয়ে কোথায় যাওয়া হচ্ছে? আমার এজেন্ট খবর দিলে তুমি আন্ডারগ্রাউন্ড হওয়ার তাল করছ৷  - মুঙ্গেরে একটা চাকরীর সম্ভাবনা আছে৷ বিশুর মামা সে'খানে কন্ট্রাক্টরি করছেন৷ উনিই ডাকলেন তাই..। - তা, তোমার তো ছাত্র পড়ানোয় বেশ রেপুটেশন তৈরী হয়েছে আজকাল৷ আর বেঙ্গলে তো আজকাল টিউশনিই হল ইন্ডাস্ট্রি৷   আচমকা সে'সব ছেড়ে মুঙ্গেরে আবার কেন। - রবিদা৷ আমি সত্যিই

দড়ি

- ও দাদা..দাদা গো৷ ও দাদা। - কী চাই? - ওই দড়িটা..একটু ধরব? - সে কী৷ ভূতের মুখে রামনাম যে৷ তা, তোমার এই দড়িতে কাজ কী? তুমি তো বিপক্ষ শিবির৷ উলটে তোমার তো উচিৎ  আমাদের পিঠের চামড়া তুলে নেওয়া।  - বিপক্ষে? তা বটে। পিঠের চামড়া তুলে নেওয়া? সে'ও হবে'খন৷ তবু৷ তার আগে৷ দাদা গো, একটু ধরে দেখব? দড়িটা? - মতলবটা কী বলো তো ভায়া? তোমার ভাবগতিক তো সুবিধের ঠেকছে না। - দড়িটা বড়..বড় ভালো৷ ধরি না একটু। একটু ছুঁয়ে দেখব। - বেশ৷ ধরো। তবে ধান্দাবাজি ফলালে ভালো হবে না। - আমার কলজেতে জোর নেই৷ ধান্দাবাজি ছাড়া আমার গতিও নেই৷  তবে দড়িটা একটু ছুঁয়ে না দেখলেই নয়। মনটা বড় হ্যাঁচোড়প্যাঁচোড় করছে গো দাদা  - বেশ৷ এই ধরো৷ হাত লাগাও ভায়া। - এই৷ এই যে৷ আহ্৷ ছুঁয়ে এক্কেবারে ঝিলিক লাগছে যে হাতে৷  - জোরসে ধরো না হে৷ জোরসে৷ লজ্জা কীসের। - লজ্জার কিছুই নেই৷ তাই না?  - কিছুমাত্র না৷ এই তো চাই। - শুধু কলজেটা বুঝলে দাদা..কলজেটা একটু কেঁপে কেঁপে উঠছে..।  - কলজেই তো৷ শিখিয়ে পড়িয়ে নিলেই হবে'খন৷ খামচে ধরো দেখি দড়িখানা৷  - ধরি৷ জোর লাগিয়ে৷ কী বলো? - একদম। - ইয়ে দাদা..টেনে দেখব? - দড়িতে টান? সে'টা কলজেতে সইব

ব্যস্ত নাকি?

"ব্যস্ত নাকি"? অফিস-পরিসরে এই প্রশ্নটা অত্যন্ত বিপদজনক। মামুলি দায়সারা উত্তর দিয়ে এ'সব প্রশ্ন পাশ কাটাতে গিয়ে বহু রথী-মহারথী ধরাশায়ী হয়েছেন৷ মনে রাখবেন, এই প্রশ্ন যাঁরা করেন তাঁরা উত্তর নয়, সুযোগসন্ধানে ব্যস্ত।  হয়ত সত্যিই আপনি কোনও জরুরী কাজে ব্যস্ত। সাদা মনে কাদা নেই তাই টপাৎ করে বলে দিলেন "হ্যাঁ দাদা, ব্যস্ত আছি বটে। শ্বাস ফেলবার সময় নেই মাইরি"। আবারও বলি, প্রশ্নকর্তাটি আপনার ব্যস্ততা বুঝতে চেয়ে প্রশ্ন আদৌ করেননি৷ তিনি আপনার সহকর্মী,  পাড়ার বন্ধু নয় যে আপনি ব্যস্ত না থাকলে আপনাকে জোর করে নিয়ে গিয়ে স্টেশন রোডের ধারের মহেশদার চাইনিজ স্টল থেকে মোমো খাওয়াবে। আপনি কাজে ব্যস্ত না মনে মনে টুয়েন্টিনাইনের স্ট্র‍্যাটেজি সাজাতে ব্যস্ত, তা জেনে আপনার সহকর্মীর কোনও লাভ নেই৷ প্রশ্নটা নেহাতই প্রি-কাঁঠালভাঙা-মাথায়-হাতবুলোনো। কোনও দরকারেই আপনার কথা তাঁর মনে পড়েছে। কাজেই আপনি ব্যস্ত আছেন, সে'টা শুনলে ওঁর হাড় জ্বলবে৷ আর তিনি যদি 'ওপরওলা' হন, তা'হলে সেই হাড় জ্বলা গন্ধ আপনার নাকেও এসে ঠেকবে। তিনি মুখে হয়ত বলবেন " ওহ, আই সী" কিন্তু মনে মনে ভাববেন "কী

লক্ষ্মী

- কে? বিমল? - হ্যাঁ ভজাদা। - বাইরে দাঁড়িয়ে কেন। ভেতরে আয়। - না, মানে..ঠিক বলেকয়ে আসার সুযোগ পাইনি তো।  তুমি মক্কেলদের নিয়ে ব্যস্ত আছ কিনা এই ভেবে একটু হেসিটেট করছিলাম আর কী। - কাতলা আর ওয়াসাবি দিয়েএকটা এক্সপেরিমেন্টাল রেসিপি ফ্রেম করছিলাম।  সে'দিক থেকে বলতে গেলে ব্যস্ত তো বটেই। আয়, বস। এ, কী। ভিজে কাক অবস্থা যে। - অসময়ের বৃষ্টি। আর এমন ঝমঝমিয়ে নামল। ট্যাক্সি থেকে নেমে গিয়ে গলির ভিতর দৌড়ে আসতে গিয়েই..। - উকিলের চেম্বারে ব্যাকআপ শার্ট  এক্সপেক্ট করিস না, গামছাও নেই। তুই বরং শার্টটা খুলে টেবিল ফ্যানের সামনের ওই চেয়ারটায় মেলে দিয়ে বস। আর আমি কফি বানাই গিয়ে। ফ্লাস্কের নয়, টাটকা। সে'সরঞ্জাম আজকাল অফিসেই রাখছি। তবে ব্ল্যাককফি। - না না। অত ব্যস্ত হয়ো না। আমি এখুনি বেরোব। গলির মুখে ট্যাক্সিটাকে দাঁড় করিয়ে এসেছি। - সে কী৷ এমন শশব্যস্ত হয়ে এ'খানে এলি? আমি ভাবলাম ওই ইউসুয়াল তাস আর আড্ডার টানে এসেছিস। তা, কোনও আইনি ফাঁপরে পড়লি নাকি? - না ভজাদা।  - তবে? - ব্যাপারটা খুবই পাতি..। - বলেই ফেল না বিমল। ভেজা গায়ে অত ভূমিকা ফাঁদার কোনও দরকার নেই। - আজ সন্ধ্যেবেলা একবার আমার ফ্ল্যাটে

সেতু কার

- কে? বিমল? - হ্যাঁ ভজাদা। - বাইরে দাঁড়িয়ে কেন। ভেতরে আয়। - না, মানে..ঠিক বলেকয়ে আসার সুযোগ পাইনি তো।  তুমি মক্কেলদের নিয়ে ব্যস্ত আছ কিনা এই ভেবে একটু হেসিটেট করছিলাম আর কী। - কাতলা আর ওয়াসাবি দিয়েএকটা এক্সপেরিমেন্টাল রেসিপি ফ্রেম করছিলাম।  সে'দিক থেকে বলতে গেলে ব্যস্ত তো বটেই। আয়, বস। এ, কী। ভিজে কাক অবস্থা যে। - অসময়ের বৃষ্টি। আর এমন ঝমঝমিয়ে নামল। ট্যাক্সি থেকে নেমে গিয়ে গলির ভিতর দৌড়ে আসতে গিয়েই..। - উকিলের চেম্বারে ব্যাকআপ শার্ট  এক্সপেক্ট করিস না, গামছাও নেই। তুই বরং শার্টটা খুলে টেবিল ফ্যানের সামনের ওই চেয়ারটায় মেলে দিয়ে বস। আর আমি কফি বানাই গিয়ে। ফ্লাস্কের নয়, টাটকা। সে'সরঞ্জাম আজকাল অফিসেই রাখছি। তবে ব্ল্যাককফি। - না না। অত ব্যস্ত হয়ো না। আমি এখুনি বেরোব। গলির মুখে ট্যাক্সিটাকে দাঁড় করিয়ে এসেছি। - সে কী৷ এমন শশব্যস্ত হয়ে এ'খানে এলি? আমি ভাবলাম ওই ইউসুয়াল তাস আর আড্ডার টানে এসেছিস। তা, কোনও আইনি ফাঁপরে পড়লি নাকি? - না ভজাদা।  - তবে? - ব্যাপারটা খুবই পাতি..। - বলেই ফেল না বিমল। ভেজা গায়ে অত ভূমিকা ফাঁদার কোনও দরকার নেই। - আজ সন্ধ্যেবেলা একবার আমার ফ্ল্যাটে ঢুঁ মেরে যে

অরুর গান

- একবার গান গাইতে বসলে অরুর আর সময় জ্ঞান থাকেনা। - তাই নাকি? - একদম৷ এই দেখ। বিকেল পাঁচটা বেজে গেছে। সেই তিনটে নাগাদ গলা সাধতে বসেছে।  - বটে। - জানিস মন্টু, অরুর সুরে বড় মায়া আছে৷ অনেকটা ব্যথাও মিশে আছে অবিশ্যি। এমনিতে হাসিখুশি ছটফটে হলে কী হবে, ছেলেবয়সে মাকে হারানোর যন্ত্রণাটা কি সহজে ভোলা যায়? মিনুর না থাকার ব্যথাটা ও সর্বক্ষণ বয়ে বেড়ায়। হ্যাঁ রে মন্টু, তুই এলেই মিনু কতরকমের পদ রান্না করতে বসত..মনে আছে? - বৌদির হাতের রান্না ভোলা অসম্ভব।  - না হয় সে চলেই গেছে। মানছি, আমার হেঁসেল বিদ্যেয়  ডাল ডিমের অমলেটের বেশি রেঁধে খাওয়ানো সম্ভব নয়৷ তাই বলে দাদা ভাইপোর খবর নিতে মাঝেমধ্যে আসবি না? বছর দুয়েক পর তুই এ বাড়িতে এলি মন্টু। - ফোন তো নিয়মিত করি রে দাদা। - তা করিস। নাহ্, খোঁজখবর তুই রাখিস বটে। আমিও অরুকে তাই তো বলি, রক্তের টান ব্যাপারটা উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। আর তাছাড়া..। ওহ্। আহা৷ এই যে। - কী হল রে দাদা? - অরু এ'বার একটা নজরুলগীতি ধরেছে৷ শুকনো পাতার নুপুর পায়ে৷ আহা। মিনু খুব গাইত।  - দাদা, অরু গান করছে না। - তুই শুনতে পারছিস না হয়ত। কিন্তু অরু গান গাইছে মন্টু৷ ওই যা না পাশের ঘরে, দেখ কেমন

সুবিনয়বাবু আর মনু

- আরে। মনু না? - মনু?  - তুই মনুই তো? প্রেসিডেন্সি? বারুইপুর বুলেটসের সেন্টার ফরওয়ার্ড? ফুচকা চ্যাম্পিয়ন?  - জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। ছেলেবেলা থেকে ক্রনিক হাঁপানি, তাই ফুটবল জীবনে খেলিনি।  বারুইপুরের ছোটপিসি থাকে বটে তবে ও'দিকে  বড় একটা যাওয়া হয়না। আর ক্লাস সেভেন থেকে গ্যাস্ট্রিক আলসারে জেরবার, একবারে ম্যাক্সিমাম তিনটে ফুচকা খেতে পারি, আলু আর টক জল ছাড়া। - তা'হলে তো মনুর সঙ্গে মিলছে না। কিন্তু চেহারায় কোথায় যেন একটা স্ট্রাইকিং ইয়ে আছে।  - স্ট্রেঞ্জ ব্যাপার হল,আপনকে দেখেও আমার ঠিক তেমনই একটা ইয়ে বোধ হয়েছিল। চেহারায় ঠিক কোথায় যেন..। - আপনি শিওর আপনি মনু নন? - সেন্ট পার্সেন্ট৷ মানিব্যাগে আধার কার্ড আছে৷ চাইলে দেখতে পারেন।  আমি সুবিনয় দত্ত৷। কিন্তু ব্যাপারটা খুব ইন্ট্রিগিং, এই আপনার চেহারা দেখেও আমার এমন এই ইয়ে হওয়াটা৷ চেনা চেনা যেন। যাক গে, ভেরি সরি ভায়া৷ আমি মনু নই। খুব আশা করেছিলেন নিশ্চয়ই..পুরনো চেনামুখের সঙ্গে দেখা হল ভেবে।  - কী আর করা যাবে বলুন। - তা আপনার নামটা তো জানা হল না। - আমার নাম? মনু।  - এক্সকিউজ মি? - মনু। - আপনিই মনু?  - প্রেসিডেন্সি। বারুইপুর বুল

দ্য গ্র‍্যান্ড তুকতাক

- কী চাই? - হুঁ? - কী চাই? চাকরীতে টপাটপ প্রমোশন বাগানোর মাদুলি? শুগার কন্ট্রোলে রাখার তাবিজ? হাড়বজ্জাত মানুষজনের বদনজর এড়িয়ে চলার জন্য কবচ? - কই, না তো। - তা'হলে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসা কেন? - দ্যাখ বুড়ো..। - আমার সঙ্গে যারাই দেখা করতে আসে তারা আমায় চমৎকারিবাবা বলে ডাকে। আপনি-আজ্ঞে করে নুয়ে পড়ে।  - তাঁরা তো আর তোর বাপ নয় বুড়ো। - উফ। আদত তন্ত্রসাধকের বাপ-ঠাকুরদা থাকতে নেই। - প্রায় এক বছর হতে চলল বাড়ি ছেড়ে এইসব ফোরটুয়েন্টিগিরি শুরু করেছিস।  আর কতদিন! - ফোরট্যুয়েন্টিগিরি?  আমি রেগে গেলে একটা যাচ্ছেতাই কাণ্ড ঘটে যাবে কিন্তু।  - মানছি আমি একসময় তোর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছি৷ পারিবারিক ব্যবসায় ফাঁকি দিচ্ছিস দেখে মেজাজ খিঁচড়ে গেছিল, না হয় ভালোমন্দ চারটে কথা বলেই দিয়েছি। কিন্তু তাই বলে তুই তারাপীঠে এসে পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙার ব্যবসা শুরু করলি রে বুড়ো?  - আর একটাও আজেবাজে কথা শুনলে এমন বাণ মারব..। - বাড়ি ফিরে চল বুড়ো। আমি না হয় মায়াদয়াহীন স্ক্র‍্যাপের দালাল। মায়ের কথা ভেবে অন্তত বাড়ি ফের। - তন্ত্রসাধকের আবার বাড়ি। তন্ত্রসাধকের আবার মা। - তুই না হয় বাড়িতে গিয়েই একটা এই হোকাসপোকাস

মামা ও বিরিয়ানি রহস্য

- কী হল মামা! বিরিয়ানিতে কবজি না ডুবিয়ে অমন গুম মেরে বসে রইলে যে? - ক্যালামিটি! - সে কী। - ক্যাটাক্লিজম। - আরে হয়েছেটা কী? - রাহাজানি।  - উফ! বিরিয়ানির খুশবুতে গড়বড়?  - না। পার্ফেক্ট সৌরভ নাকে বুকে কভারড্রাইভ চালাচ্ছে৷ সমস্যা অন্য জায়গায়৷  - কোথায়? - আমি নিজে দু'প্লেট বিরিয়ানি প্যাক করিয়ে এনেছি ভাগ্নে। নিজের হাতে করে বয়ে এনেছি সেই দু'প্যাকেট। - তবে? - তোর প্লেটে পরিমাণ ঠিক আছে৷ কিন্তু আমার প্লেটে..। - কম?  - কম। - কিন্তু আমার চোখে তো..। - শুধু চোখ দিয়ে বিরিয়ানির তল পাবি নাকি রে রাস্কেল? - স্পষ্ট দেখছি তো, সেম কোয়ান্টিটি।  - কাঁচকলা। আমার প্লেটে কম। - কতটা কম? - এককণা চাল কম।  - তুমি আমার সঙ্গে ইয়ার্কি করছ মামা? - ডেড সিরিয়াস। বিরিয়ানি নিয়ে ফচকেমো আমি বরদাস্ত করতে পারিনা।   - তোমার সামনেই তো প্যাকেট থেকে প্লেটে ঢাললাম। এই দেখো বাক্স। এক কণাও চাল এখানে পড়ে আছে কি? নেই। শেষ কণাটুকু  প্যাকেট থেকে থালায় ট্রান্সফার করেছি। আর টেবিলেও ভালো করে দেখো। এক কণাও কোথাও পড়ে নেই। উফ, আমি এই আজগুবি অভিযোগের উত্তরই বা কেন দিচ্ছি কে জানে। - একসময় পৃথিবীর রোটেশন আর রিভোলউশন ব্যাপারটাও

অমলকান্তির অফিসে

সকাল সকাল বসের তলব।  অমলকান্তি তড়িঘড়ি ছুট দিলেন বসের ঘরের দিকে। পৌঁছে দরজায় একটা মোলায়েম টোকা। তারপর গুলকন্দ মেশানো গলায় শুধোলেন "স্যার, আসব"? উত্তর এলো টিনের ওপর ইটপাটকেল পড়া বাজখাঁই সুরে। "আপনাকে নিশ্চয়ই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নজরুলগীতি গাওয়ার জন্য ডাকিনি। ভিতরে এসে উদ্ধার করুন"। অমলকান্তি বুঝলেন হাওয়া সুবিধের নয়। নিজের গোবেচারা না-ঘরকা-না-ঘাটকা হাসিখানা মুখে সেঁটে ঘরের মধ্যে পা রাখলেন। "আচ্ছা অমলকান্তিবাবু, আপনি কি আমায় বোকা ভাবেন? ডু ইউ থিঙ্ক আই অ্যাম আ ড্যাম ফুল"? ভেবড়ে গেলেন অমলকান্তি। এই ধরণের প্রশ্নের সামনে অধোমুখ নেকুসম্রাট হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কোনও উপায় থাকেনা৷ কিন্তু সকাল সকাল এই রাফায়েল-বোফর্স মেশানো আক্রমণের কারণটা ধরতে পারলেন না৷  শর্মা অ্যান্ড শর্মার ফাইলটা জমা হয়ে গেছে৷  গতকাল সন্ধ্যেয় ঘণ্টা দুই বাড়তি বসে গতমাসের স্টেটমেন্টখানাও রিকনসাইল করা হয়ে গেছে।  তবে?  সেই 'তবে'র তল আর পেলেন অমলকান্তি। কী একটা অতি-খুচরো প্রসঙ্গ তুলে উত্তমমধ্যম শুরু করলেন বস। মিউমিউ করে দু'চারটে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন বটে কিন্তু সেই মিউমিউ বসের

চাউমিনার

রাস্তা ঘেঁষা চাউমিনের স্টলগুলোর সবচেয়ে বড় 'প্লাস পয়েন্ট' হলো চাউমিন রান্নাটা আগাগোড়া দেখা যায় এবং উপভোগ করা যায়। বড় রেস্তোরাঁর (বা জোম্যাটোর মাধ্যমে আনানো) চাউমিন প্রথমেই দেখা যায় প্লেটে। চাউমিনের গায়ে কী'ভাবে রং ধরল, সে'টুকু 'অবজার্ভ' করতে না পারলে তৃপ্তি হয়না৷  সামান্য পেঁয়াজকুচি আর অনেকটা কুচনো বাঁধাকপি (কিছু ক্ষেত্রে সামান্য রুখাশুখা গাজর কুচিও থাকে) ফায়্যার হবে চাটুর গরম তেলে। মনে রাখা দরকার- 'রাস্তার' চাউমিনে বিনস, বেলপেপার গোছের বাড়তি শখ-শৌখিনতা অদরকারি,সে'খানে চাই মারকাটারি অ্যাকশন ।  চাউমিনের চাটুর ওপর খনখনাখন্ খুন্তি নাড়ার শব্দ, আহা; এর তুলনা শুধু অমলেট বানানোর আগে স্টিলের গেলাসে চামচ দিয়ে ডিম ফেটানোর খটখটর মিঠে শব্দের তুলনা চলতে পারে৷ যা হোক৷ কথা হচ্ছিল চাউমিন নিয়ে। ভাজা পেঁয়াজ আর বাঁধাকপির মধ্যে পড়বে চাউমিন, বাড়বে চাউমিন-ভাজিয়ের ব্যস্ততা৷ পড়বে নুন, মশলা আর (যতই খুঁতখুঁত করুন না কেন) আজিনামোটোর গুঁড়ো। বাতাসে ভেসে বেড়াবে সুবাস। আর সে সুবাসে চড়চড়ে বিদ্যুৎ যোগ হবে ভিনিগার ছড়িয়ে দেওয়া মাত্র। জিভের মধ্যে সুড়ুৎ খেলে যাবে জল। এরপর যেই

টপ ১০ মহালয়া এলিমেন্টস ফ্রম দ্য নাইনটিজ

১। ঢাউস একখানা অ্যালার্ম ঘড়ি। যে ঘড়ির দিকে তাকালেই ঘুমটুম উড়ে যায়। যে ঘড়ি মাথার কাছে রেখে চোখ বুজলেই বুকে ঢিপঢিপ; এই বুঝি বোমা ফাটল। যে ঘড়ির অ্যালার্ম শ্যামবাজারে বাজলে গোলপার্কের ঝিমোনো মানুষজন চমকে ওঠে।  ২। ব্যাকআপ অ্যালার্ম; "দিদা, বাই চান্স অ্যালার্মটা ফেলে করলে একটু ডেকে দিও"। কম্যুনিস্ট দাদারাও এ'দিনটায় মার্ক্স ত্যাগ করে কালচারের তাড়নায় দিদিমাদের দিকে ঘেঁষতেন। ৩। রেডিও। বোনাসঃ আগের দিন সন্ধ্যেয় কাটলেট সহযোগে ফ্রিকুয়েন্সি টেস্টিং।   ৪। ব্যাকআপ ট্রানজিস্টার। ব্যারাকপুরের মেসো বারবার বলতেন, পলিটিশিয়ান আর যন্ত্রপাতিদের চোখ বুজে ভরসা করতে নেই। ৫। চানাচুর। ভোরবেলা ঝাল চানাচুর হল চাউমিনে পোস্তর সমান। দরকার হল টকমিষ্টি চানাচুর। বাটি অপ্রোয়জন,  বয়াম থেকে ডাইরেক্ট মুঠো করে তুলে নেওয়াটাই ট্র‍্যাডিশন।  তারপর দুলে দুলে বীরেন্দেবাবুর সুরে তাল দিয়ে চেবানো।  ৬। চা। কাপে হবে না। সাপ্লাইলাইন দাঁত খিঁচোবে৷ ফ্লাস্কে ভরে নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে বসাটাই যুক্তিযুক্ত।  ৭। প্রথম দু'মিনিট শোনার পর। গলায় উত্তেজনা! "ভদ্রবাবুর ভয়েসে যে কী ম্যাজিক! দ্যাখ দ্যাখ। এই দ্যাখ। গায়ে কাঁট

পুরানি দিল্লী

২০০৭। দিল্লী। একটা প্রেম দাঁড় করানোর কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রোজকার ক্লাস শেষ হতেই ছুট; সোজা গিয়ে ছ'শো একুশ নম্বর বাস ধরে কনট প্লেস। দেখাসাক্ষাতের ব্যাপারটা বেশিরভাগ দিন ও'খানেই সারা হত। তারপর ইনার সার্কেল আর আউটার সার্কেল জুড়ে মাইলের পর মাইল হাঁটা।  একটানা অকারণ হাঁটা, অর্ধেক দুপুর আর পুরোটা বিকেল জুড়ে। অকারণ; কারণ ওই বয়সের প্রেম-প্রেম হাহুতাশকে লজিকের ফ্রেমে ধরতে যাওয়াটা বাড়াবাড়ি।  কনট প্লেসের বেশিরভাগ দোকানপাট আর রেস্তোরাঁই কলেজপড়ুয়াদের পকেটের পক্ষে অস্বাস্থ্যকর৷ সে বয়সে কেএফসির মত রেস্তোরাঁতে ঢুঁ মারার কনফিডেন্সও ছিলনা৷ ওয়েঙ্গার্সের স্যান্ডউইচ বা কেভেন্টার্সের শেকও বড্ড দামী মনে হত। আমাদের ভরসা ছিল মূলত ফুটপাতের খাবার বিক্রেতারা৷  শিঙাড়া, বাদামভাজা, আলুচাট, চিপস, 'স্লাশ', বরফগোলা; এই'সব।  বুকে 'অষ্টমীতে প্রথম দেখা' মার্কা হুহু থাকলে আলুচাটের থেকেও চিকেনরোলের সুবাস পাওয়া যায়। দিব্যি উতরে যেত সেই দুপুর আর বিকেলগুলো। শুধু কোনও কোনও দিন হাঁটাহাঁটির মধ্যে পেত প্রবল খিদে। প্রবল। সুতীব্র। সে বয়সে খিদেপেটে মনে হত; পারলে মরিচ ছড়িয়ে, মাখন মাখিয়ে

আই লাভ ইউ

- তুমি আমায় আই লাভ ইউ টাভ ইউ বিশেষ বলো না কিন্তু। - ন্যাকাপনা।  - শেষ যখন বলেছিলে তখন কেন্দ্রে কংগ্রেস,  রাজ্যে সিপিএম।  - গা জ্বলে যায়। - ডাইভার্ট করে দিও না সুমি। ডাইভার্ট করে দিও না।  - হঠাৎ এ'সবের শখ হলো কেন? - শখ? রাইট বলো। অধিকার অফ আ স্পাউস। - গাম্বাটদের অধিকার থাকতে নেই। - আমি গাম্বাট? - আলবাত। - আই লাভ ইউ দাবী করেছি বলে আমি গাম্বাট?  - আই লাভ ইউতে আই লাভ ইউ খুঁজে হদ্দ হচ্ছ বলে। - এই এক ঝামেলা। যে কোনও তর্কে দিব্যি কেমন ঘুরপাক খাইয়ে গুলিয়ে পেঁচিয়ে দাও। - সাধে কি বলি? গাম্বাট। উইথ আ ক্যাপিটাল জি। - আই লাভ ইউতে আই লাভ ইউ খুঁজে হদ্দ হওয়ার কেসটা কী সুমি? - আই লাভ ইউ বলতে গেলে "আই লাভ ইউ"ই বলতে হবে, এ'সব গোদা আইডিয়াগুলো এ'বার ত্যাগ করো। মনে রেখো, গদা দিয়ে ইয়ারবাডের কাজ চালানো যায়না। - তুমি আমায় বলো কখনও? আই লাভ ইউ?  - বলি। তবে হাইক্লাস ট্রান্সলেশনে। - কী'রকম? - এই যেমন গতকাল দুপুরে যে বললাম। "তোমার বানানো বিরিয়ানি আরসালানকে টক্কর দেবে"।  - ও'টা আই লাভ ইউ? - টপমোস্ট ক্যাটগরির। রীতিমত ব্লাইন্ড। - আই সী। তা'ছাড়া? - গত হপ্তায় আদতে

দ্য পুজো পুজো রোব্বারস

দিব্যি কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে খটরখটর কী-বোর্ড চালিয়ে যাচ্ছিল অনিন্দ্য৷ দিব্যি। সাতটা এক্সেল শিট আর আর তিনটে ওয়ার্ড ফাইল চোখের সামনে খোলা। কনসেন্ট্রেশন তুঙ্গে, কাপের কফি আধঘণ্টা আগেই ফুরিয়েছে অথচ মাঝেমধ্যে সেই খালি কাপেই চুমুক দিচ্ছিল সে।  এমন সময় হল কী...কম্পিউটারটা আপনা থেকেই রিস্টার্ট হল৷ সমস্ত খোলা ফাইলকে না পাত্তা না দিয়ে সে ব্যাটার স্ক্রিন দুম করে বন্ধ হয়ে আবার জ্বলে উঠলো৷ অনিন্দ্যর মেজাজটাও গেল বিগড়ে। আচমকা সে টের পেল কফির কাপটা ফাঁকা। তারপর খেয়াল হল আশেপাশের কিউবিকেলগুলোও ফাঁকা। কেউ কোত্থাও নেই। অনিন্দ্যর মনে পড়ল আজ রোব্বার। অন্য কারুর অফিসে আসার কথা নয়৷ কিন্তু তাকে প্রায়ই ছুটির দিনে আসতে হয়৷ প্রায়ই তাকে রোব্বারি-তলব পাঠান বড়সাহেব৷ বড়সাহেবের রোব্বারি ডাক সবাই এগিয়ে গেলেও অনিন্দ্য পাশ কাটাতে পারেনা। সে জন্য অবিশ্যি বড়সাহেব তাকে বিশেষ পছন্দ করেন।  যা হোক। কম্পিউটার রিস্টার্ট হওয়ার সময় কনসেন্ট্রেশনটা গেল গুলিয়ে। আর সে'টাই হল কাল। মুহূর্তের অসাবধানতায় অনিন্দ্যর চোখ গিয়ে পড়ল জানালার ও'পাশে, আকাশের দিকে। এক্সেল, ওয়ার্ড ডক, আউটলুক ইনবক্স সব কেমন ঝাপসা হয়ে প

সেল্ফ হেল্প

যে সেলফ হেল্প বইগুলো আমি পড়তে চাই -   ১। দ্য সেভেন হ্যাবিটস অফ হাইলি এফেক্টিভ ল্যাদিস্টস। ২। হাউ টু উইন এক্ট্রা ফাউস অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স ফুচকাদাদাস। ৩। দ্য পাওয়ার অফ "ভাল্লাগছেনা"। ৪। দ্য সাটল আর্ট অফ "সোফা ছেড়ে উঠব না"।  ৫। দ্য ম্যাজিক অফ থিঙ্কিং বিরিয়ানি।

নেশা ও সলিউশন

- এই যে অনির্বাণ। ও'দিকে কোথায় ছুটে যাচ্ছ। এ'দিকে এসো।  - বড়সাহেবের চেম্বারে দিকে যাচ্ছিলাম। জরুরী তলব। - ব্রাদার। হিউম্যান রিসোর্সে থেকে অমন তাড়াহুড়ো করতে নেই।  - বস তাড়া দিলেও নয়? - তা'হলে তো একেবারেই নয়। সিনিয়রদের লাই দিয়ে মাথায় না তোলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। - সান্যালদা, কী যে বলেন আপনি মাঝেমধ্যে।  - বাইশ বছর এই কোম্পানিতে আছি হে। আজ পর্যন্ত একটা প্রমোশনও মিস করিনি। কাজেই আমি যখন যাই বলি, জানবে সে'গুলো আদতে বাণী।  - একটু বুঝিয়ে বললে সুবিধে হয় সান্যালদা। - বড়সাহেব কেন ডেকেছেন। সে'টা জানা আছে? - কোম্পানির অবস্থা তো সবই জানেন। গতমাস থেকে ফ্যাক্টরির সমস্ত লেবারদের সবার মাইনেকড়ি আটকে আছে। সামনের হপ্তায় কিছু টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু ফিনান্স থেকে আজ জানালে আগামী মাসখানেক তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। এ'দিকে আজ বিকেলে খেপচুরিয়াস ইউনিয়নের নেতারা আসছেন বড়সাহেবের সঙ্গে মিটিং করতে। তাঁদের কী ভাবে শান্ত করা যায়..সে'সব নিয়ে আলোচনা করতেই আমায় ডেকেছিলেন বড়সাহেব। - আই সী। তা, কী ভাবে তাঁদের শান্ত করবে? মিটিংয়ে শিঙাড়া জিলিপি আর সল্টেড কাজুবাদাম খাইয়ে?  - সান্যা

প্রজাপতি

কলকাতা সরগরম। ফুটপাত জমজমাট। সন্ধ্যের হইহট্টগোল, ট্রামের ঘরঘর,  বাসের হর্ন আর অটোর হুড়মুড়।  ভীড়। ঠেলাঠিল।  "আরে দাদা, একটু দেখে পা ফেলবেন তো" গোছের খোঁটা। ব্যস্ততার স্রোত বয়ে যায়, সন্ধ্যের এই সময়টা শ্বাস ফেলার ফুরসৎটুকু পায় না কলকাতা। আহা, মানুষের দল বাড়ি ফিরছে। শহরের গায়ে যে কী অবিশ্বাস্য গতি লেগে থাকে এই সময়। সেও ছুটছিল।  অবিশ্বাস্য গতিতে।  তবে কলকাতার উল্টো দিকে।  কলকাতা ডাইনে ছুটলে, সে এগোচ্ছে বাঁয়ে।  কলকাতা ছড়া কাটলে, সে ধরছে খোলতাই টপ্পা। কলকাতা ধুরন্ধর চালে কিস্তিমাত করতে চাইলে, সে চালছে দু'ছক্কা পাঁচ। কলকাতার কভার ড্রাইভের জবাবে তার বাইসাইকেল কিক। কলকাতা উত্তম হাসি হাসলে, সে ভাসিয়ে দিচ্ছে তুলসী চক্কোত্তি মার্কা 'বাপ রে বাপ রে বাপ'। মোদ্দা কথা হল কলকাতার বয়ে চলা অগ্রাহ্য করে সম্পূর্ণ উল্টো খাতে বইছিল সে। গোটা শহরটাকে এক অন্য ডাইমেনশনে ফেলে রেখে অন্য জগতে এসে পড়েছিল সে। সে ছুটছিল।  একহাতে কাগজের ঠোঙায় ডিমপাউরুটি৷ পাউরুটি, ডিম আর সর্ষের তেলে ভেজা কাগজের গন্ধ মিলেমিশে তার নাকেবুকে নহবত বসিয়েছিল যেন। অন্য হাতে একজোড়া প্রজাপতি বিস্কুট।  ডিমরুটির নরম

ধপাস

সাঁইসাঁই। সাঁইসাঁই। সাঁইসাঁই। পড়ছি তো পড়ছিই। পড়ছি তো পড়ছিই। পড়ছি তো পড়ছিই। পড়ছি তো পড়ছিই। বহুক্ষণ পর আমার পড়া একটা প্রবল 'ধপাৎ' শব্দে; এসে নামলাম নরম স্যাঁতসেঁতে শ্যাওলাধরা মাটির ওপর।  এ'খানে দিনের আলো এসে পৌঁছয় বলে মনে হয়না। চারদিকে গুমোট অন্ধকার, চরম অস্বস্তিকর একটা পরিবেশ।  খানিকটা ধাতস্থ হওয়ার পর চারপাশটা জরীপ করার চেষ্টা করলাম। কোমরের চিনচিনে ব্যথা একটা আছে বটে, তবে সে'সব পাত্তা দিলে চলবে কেন? ও মা।  এই গর্তে আমি একা নই। আর এক ম্যাদামারা ভদ্রলোক থেবড়ে বসে। তিনিও যে সদ্য ধপ্ করে ল্যান্ড করেছেন তা বলে দিতে হবেনা। একটি সঙ্গী পেয়ে বুকে সামান্য বল পেলাম।  এগিয়ে গেলাম আলাপ করতে। - এই যে। শুনছেন? হ্যাঁ৷ আপনাকেই বলছি। - কে? কে কথা বলে? - এই যে। আমি। আমিও এইমাত্র এই গর্তে এসে পড়লাম। - অ। আপনিও।  - হ্যাঁ। নমস্কার। - পেন্নাম। - দেখা যখন হয়েইছে তখন আলাপটাও সেরে নেওয়া যাক। আমার নাম কনফিডেন্স। আর আপনি? - আমি? আমি জিডিপি। 

জন্মদিন আর চাকরীর গল্প

- বায়োডেটাখানা তো মন্দ নয়। - থ্যাঙ্ক ইউ। - ফীডব্যাক নাম্বার ওয়ান। আপনার পশ্চারটা ঠিক নয়৷ ইয়ং ম্যান, ইউ আর স্লাউচিং। এ'রকম সিরিয়াস ইন্টারভিউয়ের সে'টা মোটেও বরদাস্ত করা যায়না।  - ওই। সামান্য গা ম্যাজম্যাজ, তাই আর কী। যাকগে। বলুন। - এই চাকরীর জন্য আমরা একজন চটপটে ক্যান্ডিডেট খুঁজছি। সামান্য ম্যাজম্যাজে গা এলিয়ে দেওয়া শখের প্রাণ গড়ের মাঠ মার্কা মানুষ দিয়ে আমাদের চলবে না। - আপনার চোখ তো থার্মোমিটার নয়। ম্যাজম্যাজটাকে সামান্য বলে কোয়ালিফাই করাটা কি ঠিক হচ্ছে? - এঁড়ে তর্কের টেন্ডেন্সি। ফীডব্যাক নাম্বার ট্যু। - ও'টাকে আমি স্ট্রেন্থ বলেই জানি। বরাবর। - আপনি কোনওদিন বোর্ডরুমে প্রেজেন্টেশন দিয়েছেন?. - আপনি কোনওদিন কফি হাউসে আড্ডা দিয়েছেন? - এ'টা আমার প্রশ্নের উত্তর নয়। - কর্পোরেটে আপনারা আদত উত্তর এড়িয়ে চলার জন্য পাওয়ারপয়েন্টে প্রেজেন্টেশন ব্যাবহার করেন।  ওই একই প্রয়োজনে আমি কবিতা লিখি। দু'একটা লেখায় সুরও দিয়েছি। শুনবেন নাকি?  - তার চেয়ে বরং আপনার প্যাশনের ব্যাপারে শুনি৷ কী করতে ভালো লাগে আপনার? - আপনি কি সত্যিই আমার ভালোলাগাগুলো জানতে চাইছেন? না আমার অধ্যবসায় নিয়

রবিবারের হিসেবকিতেব

সকাল। লুচি বেগুনভাজা মুখে দিয়ে শ্যামল মিত্রের গান,  আর পাশাপাশি কয়েক পাতা শীর্ষেন্দু, অদ্ভুতুড়ে সিরিজ।  জলখাবার শেষে জিলিপি চিবুতে চিবুতে নারায়ণ দেবনাথ। আকাশের সিচুয়েশন যাই থাক, আদত রোদ্দুর জেনারেট করতে হবে মনের মধ্যে। এবং সে রোদ্দুর হতে হবে 'ও মন কখন শুরু কখন যে শেষ' মার্কা সুপার-মিঠে।  *** প্রি-দুপুর। রান্না চলাকালীন স্টিলের বাটিতে দু'পিস মাংস এক পিস আলু নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা। তখন আবার কানের ইয়ারফোনে মান্নাবাবুর 'ও আমার মন যমুনার' সুর ফ্লো করবে। স্নানের আগে মনটাকে একটু মাটন-মান্না রোম্যান্সে ম্যারিনেট না করলেই নয়। *** দুপুর। খেতে বসে তাড়া নেই। খাওয়া শেষে হাত ধোয়ার হুড়োহুড়ি নেই। আড্ডা আছে, এঁটো হাত শুকিয়ে যাওয়া আছে। নিজের রান্নার অ্যানালিসিস আর অন্যের রান্নার প্রশংসা আছে। আর আছে লাঞ্চ সেরে খাটে ফ্ল্যাট হয়ে হেমন্তবাবুর হাতে নিজেকে সঁপে দেওয়া। প্রো-টিপঃ ব্যাকগ্রাউন্ডে লো ভল্যুমে জীবনপুরের পথিক আর চোখের সামনে ক্যালভিন অ্যান্ড হবসের কমিক্স বই দিব্যি খাপেখাপ মিলে যায়।  ভাতঘুম শব্দটায় তুলসীবাবু রয়েছেন,সিয়েস্টায় রয়েছেন ছবি বিশ্বাস। গান আর কমিক্সের মিশেলে কোনও র

আইডিয়ালিস্ট

- ঘুষ? - অফারটাকে আপনি ঘুষ হিসেবে কেন দেখছেন মিস্টার সান্যাল। আমাদের জন্য আপনার যে'টুকু ইনকনভিনিয়েন্স হবে, এ'টা তার জন্য সামান্য একটা কম্পেনসেশন। - দেখুন মিস্টার তালুকদার। আমি নিজের দায়িত্ব সম্বন্ধে যথেষ্ট সচেতন। আর নিজের কাজটাকে ইনকনভিনিয়েন্স বলে আমি মোটেও মনে করিনা। আপনার ফার্মের ফাইলটা আমি দেখেছি৷ ইট উইল বি প্রসেসড ইন ডিউ কোর্স। - ডিউ কোর্সে তো হবেই৷ - অফ কোর্স। তাছাড়া আপনাদের প্রপোজাল আমি নিজে রিভিউ করেছি৷ ইউ হ্যাভ প্রেসেন্টেড আ ভেরি কমপেলিং কেস। বড়সাহেবদের মনে ধরবে নিশ্চয়ই। কাজেই এই বিশেষ কম্পেনসেশনের চিন্তাটা বাদ দিতে পারেন। -  মিস্টার সান্যাল৷ বড়সাহেবরা তো স্রেফ সই করবেন। ডিসিশন মেকিং তো আপনার লেভেলেই..। - বড়সাহেবরা ভেন্ডর সিলেকশনের মত জরুরি প্রপোজালে অন্ধের মত সই করবেন, আপনার এমন ধারণা কিন্তু ভুল। - আমরা ছাপোষা ভেন্ডর। কিন্তু আপনার গুরুত্বটা বুঝি মিস্টার সান্যাল৷ আমাদের প্রপোজালটা যে ইনফিরিয়র কোয়ালিটির নয়, সে'টা আপনি জানেন। আপনি স্পেশ্যালি রেকমেন্ড করে আমাদের ফাইলটা এগিয়ে দিলে সার্ভিসের দিক থেকে আপনাদের ফার্মের যে কোনও ক্ষতি হবে না সে আশ্বাস আমি দিতে পার