Skip to main content

Posts

Showing posts from May, 2015

খুচরো প্রেমের গল্প

তিথি দরজা খুলে দেখলে নিমু দাঁড়িয়ে। এদিকে ঘরের ভিতরে সমরের লাশ। তিথি নিমুকে জড়িয়ে ধরল। ওদিকে নিমুর পিছনে দাঁড়িয়ে ঘাড় পছন্দ করছিল সমর। ** থার্ড ক্লাসটা ছিল অডিটের। দীপার নজর এড়িয়ে ওর খাতার ভাঁজে চিরকুট চালান করলে দেবু। "তোকে লালে বেশ মানায়"। খানিক পর দীপা সেটা দেখতে পেয়ে চিরকুটের পিছনে লিখে ফেরত পাঠালে; "আজকেকে তো সাদা সালোয়ার, লাল দেখলি কই?"। দেবু নতুন চিরকুট লিখলে "আমার পকেটে ছুরি, আর মনে এইটুকু ভিসুয়াল ক্ল্যারিটি থাকবে না?"। ** প্রেমের গল্প - ৩ "আই লাভ ইউ স্যুইট হার্ট".... এই বলে পাশবালিশটা জড়িয়ে ধরলেন ভূতোবাবু। - আমি না হয় মোটা, তাই বলে নিজের প্রেমিকাকে পাশবালিশ বলে ডাকবে গো? - আমি না হয় ভূত, তাই বলে নিজের প্রেমিককে ভূতোবাবু বলে ডাকবে গো? ** সাদা ফুলকে ভয় পান সমরেশ।  ওরা রাতে ফোটে। ঠিক যেমন ভাবে মাঝরাতে সাদা থান গায়ে নীলিমা বারান্দায় আস; সেরকম ভাবেই রাতের কালচে নিস্তব্ধতায় সাদা ফুলেরা ফোটে। সাদা ফুলেদের মতই, নীলিমাকে দেখেও ভয় পান সমরেশ। কিন্তু এর কোন মানে হয় না।  মা

পঞ্চম

সোমনাথ অবাক হলে অনুপের চিঠি পেয়ে। মোবাইল ইন্টারনেটের যুগে অনুপ ব্যাটা এমন গুছিয়ে হাতে লেখা চিঠি পাঠাতে গেল কেন? রোজ যেখানে ফোনে কথা হচ্ছে। “চাকরিবাকরি না থাকলে যা হয় আর কী”, সোমনাথ ভাবলে, “ব্যাটা এখন চিঠি লিখে ল্যাদ কাটাচ্ছে”। আনন্দবাজারটা সরিয়ে রাখলে সে। অদিতি ছেলেকে স্যুইমিং ক্লাস থেকে আনতে গেছে। শনিবারের এই অলস সময়টা বেশ লাগে সোমনাথের। মোবাইল স্পীকারে শ্রীকান্ত আচার্যর রিমেক গান নিরিবিলি বেজে চলেছে। পাশের টেবিলে ছুটির আধ খাওয়া ব্রেকফাস্টের প্লেট- লুচি, আলুভাজা আর সন্দেশ। উইকেন্ডের এই সময়ে ইজিচেয়ারটা জাস্ট মায়াবী ভঙ্গিমায় জড়িয়ে থাকে সোমনাথকে। ড্রাইভার কমলেশ চিঠিটা দিতে ভেতরে এসেছিল; সোমনাথের ভাষায় এটা এক প্রকারের ট্রান্স-ভঙ্গ। চিঠিটা খুলে পড়ার আগে সোমনাথ ভাবল অনুপকে ফোন করে সামান্য গাল ঝাড়বে, চিঠি লেখার মত প্রাগৈতিহাসিক একটা কাজ করে ফেলার জন্য। একটা ফোন করলে কি দোষ ছিল? অনুপের ফোনটা সুইচ্‌ড অফ। চিঠিটা পেয়ে যে নেহাত খারাপ লাগছিল তা নয়, আজকাল চিঠি ক’টা লোকে পায়। খামটা খোলার আগে উঠে গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘরের এয়ার কন্ডিশনারটা চালিয়ে দিল সোমনাথ। ইজিচেয়ারে ফেরত এসে খাম ছিঁড়ে চ

অনিলের রাত

রাত জাগার অভ্যেসটা অনিলের এখন বেশ কাজে লাগছে। রাতভর না ঘুমিয়ে নিঝুম কলকাতা জুড়ে টইটই করতে পারার সুযোগটা তার কাছে স্বপ্নের মত। এই লাগামছাড়া জীবনটাই তো সে চেয়েছিল চিরকাল।  রাত দশটা বাজলেই "খোকা এবার ঘুমোতে যা" বলে মায়ের ঠ্যালা; একদমই ভালো লাগতো না অনিলের। মা ঘুমিয়ে পড়লে সে চুপিচুপি ছাদে উঠে যেত মাদুর বগলদাবা করে। রাতের আকাশের দিকে চেয়ে রাত কাটাতে ভারী ভালো লাগতো তার। দিনভর আলস্যে কাটিয়ে রাতভর টহল দেওয়ার জীবনটাই কাম্য ছিল তার। এবং শেষ পর্যন্ত সে জীবন তার জুটলো জীবনের অন্য দিকে। অন্ধকার নামলে এখন তার আড়মোড়া ভাঙা।  মায়ের নজর এড়িয়ে আর তাকে রাত্রিবেলা ছাতে উঠে যেতে হয় না; এখন সে নিভৃতে ছাদে নেমে আসে অন্ধকার গভীর হলে। মাতাল ট্রাক ড্রাইভারটাকে "ধন্যবাদ" বলতে মন চায় অনিলের; সেই দিনটার জন্য। কিন্তু সে উপায় আর কই? ছবির ক্রেডিট : শ্বেতা 

ব্যথার কথা

- আপনিই ডক্টর ভগবান দাস ? - আজ্ঞে হ্যাঁ। বলুন। - আমি দৈনিক দিবাকর থেকে আসছি। আমি সাংবাদিক। অনুমান রায়। - ওহ। আপনিই ফোন করেছিলেন গতকাল। - হ্যাঁ। আমিই করেছিলাম ফোন। - ভেতরে আসুন। ইয়ে...ড্রয়িং রুমে বসে তাহলে কাজ নেই। আপনি তো আমার সেই মডেল দেখতে এসেছেন। তাই তো ? - হ্যাঁ। - তাহলে সোজা চলুন ল্যাবরেটরিতে যাই। ** - এটাই আপনার ল্যাবরেটরি ডক্টর দাস ? - হুঁ। সাবধানে আসবেন প্লীজ। এত ঘুপচি ঘরটা। দিনের বেলাতেও অন্ধকার। বাতিটাও পাল্টানোর সময় এসেছে। - আরও সফিস্টিকেটেড একটা সেটআপ এক্সপেক্ট করেছিলাম কিন্তু । - ব্যবস্থাপনার অবিশ্যি ঘাটতি নেই এখানে। তবে কী মিস্টার রায় ,  সৃষ্টি ব্যাপারটাই একান্তই হৃদয় দিয়ে হওয়া দরকার। টেকনোলজি দিয়ে গতি পরিবর্তন সম্ভব ,  দিগন্ত পরিবর্তন নয়। এদিকে আসুন। এই টেবিলটার দিকে। আপনার পায়ের কাছে অনেকগুলো শিশি বোতল পড়ে আছে। সাবধানে আসবেন। - এইটে আপনার মডেল ? - হ্যাঁ ,  এই কাঁচের বাক্সে যে কালো ধোঁয়াশা মত দেখতে পারছেন। সেটাই আমার মডেল। - না মানে ঠিক বুঝলাম না। আমাদেরই এই ব্রহ্মাণ্ডের মতই একটা সমার্থক দুনিয়া আপনি তৈরি করতে চলেছেন তাই তো ?   খালি সাইজে

সলমানি

১ – জেল হয়েছে। পাঁচ বছর। জব্বর জাস্টিস। কী বলেন ফেলুবাবু? – লাল মোহনে ভালো, মগনে নয়।তেমনই জাস্টিস ব্যাপারটা জেলে ভালো, সেলেব-প্যারোলে নয়। দ্যাখা যাক। ২ -খুড়ো, ফুটপাথে শুয়ে থাকাটা অন্যায়; তাই না? – আলবৎ! হাতে দামী গাড়ির স্টিয়ারিং আর পেটে দামী স্কচ থাকলে বুঝতিস ন্যাপলা; ফুটপাথে হিউমান স্পীড ব্রেকার কি বিরক্তিকর। ৩ – এমন ম্যাদা মেরে আছেন কেন মশাই? – মিরাকিউরল ফেল মেরে গেল অবিনাশবাবু। – সেই আজব বড়ি? কেন? – মিরাকিউরল মারণ রোগ সারাতে পারে। কিন্তু চেষ্টা করে দেখলাম; মাতালের ফুটপাথ প্রেম আর অন্ধ ভক্তের উন্মাদ ভক্তি ঘোচাতে পারে না। ৪ গাড়ী? রাস্তায় চালাবো? নেক্সট ইজ হোয়াট? জামায় বোতাম আঁটবো? ৫ ‘নায়ক’ সিনেমায় মদ্যপ অরিন্দম বলেছিলেনঃ “আই উইল গো টু দ্য টপ। টু দ্য টপ। টু দ্য টপ”। ** কয়েক পেগে ভেসে তিনি বললেনঃ “আই উইল গো টু দ্য ফুটপাথ। টু দ্য ফুটপাথ। টু দ্য ফুটপাথ।” ৬ “তুমি জানো এমন দামী স্কচ দুনিয়ায় খুব বেশি নেই?”, মলসন খানের পা টলছিল, কিন্তু কথা থামছিল না,”তুমি জানো এর দু’ফোঁটা পাথরে পড়লে পাথরে প্রাণ সঞ্চার হয়? জানো কি” এত রাত্রে রাস্তায় মলসনের কথা শোনার জন্য কেউ ছিলেন না। ত

বাড়ি

মঙ্গলবার, বেলা এগারোটা। -আসুন অমুবাবু। আসুন। আপনার জন্যেই অপেক্ষা করছিলাম।   -আপনার অফিসটার কিন্তু বেশ দুরবস্থা আগরওয়াল সাহেব। -আমার দাদুর বাবা নাইনটিন হান্ড্রেড অ্যান্ড সেভেনে বড়বাজারের এই অফিসটা নেন। তখনও মোহনবাগান শিল্ড জেতেনি। -কলকাতার ফুটবলের সঙ্গে ছন্দ মিলিয়ে যদি নিজের অফিসের রক্ষণাবেক্ষণ করতে চান, তাহলে বলতেই হয় নিখুঁত কন্ডিশনে আছে। -অমুবাবু, আপনি অ্যাকাডেমিক্‌সের লোক। প্রফেসর মানুষ। আপনার কাছে এ অফিস ঘুপচি লাগতে পারে। কিন্তু আমাদের ডিল স্ট্রাইক করার জন্য এমন পরিবেশে কোন অসুবিধে হয় না। পার্ক স্ট্রিটে রেস্তরাঁতে খেতে যান ঠিক আছে, কিন্তু রিয়েল এস্টেট এজেন্টের জন্য আপনাকে কষ্ট করে এই বড়বাজারে ঘুপচিতে আসতেই হবে। হে:, আর শুধু রিয়েল এস্টেট কেন, এখানে কোন দালালিটা হয় না বলুন । -যাক। কাজের কথায় আসুন। -আরে কাজ টাজ হবে। আগে বলুন কী নেবেন। চা কফি কোক্‌ এনিথিং। স্পেশ্যাল দার্জিলিং টি আছে বুঝলেন...। -কফি। ব্ল্যাক। -হরিশ। এক ব্ল্যাক কফি আউর এক নিম্বু পানি ভিজওয়া দো। তুরন্ত। আর বলুন অমুবাবু, খবর কী। -বাড়িটা বিক্রি আমি করবো না আগরওয়ালজী। -হুম। মুস্কিল এইটা অমুবাবু, যে