Skip to main content

Posts

Showing posts from 2011

অতি প্রেম-পত্তর

ডিয়ার মাই বৌর্ণভীল সোনামণি , উফ্ফ , পার্কে থেকে তোমাকে ছেড়ে এলুম আধ ঘন্টাও হয়নি , এর মধ্যেই হাওয়ায় অক্সিজেন কমে আসছে , পেটের ভেতরটা কেমন শেওয়াগ-গোছের লাফালাফি হচ্ছে ; তোমায় ছাড়া আমার অবস্থা এক্কেবারে দেবু-জ্যাঠার নস্যি-মাখা রুমালের মত হাল হয় মাইরি । তোমার সঙ্গে থাকলে সময়টা এক্কেবারে দালের মেহেন্দির তুনক তুনক তুন ’ এর মত কেটে যায়। তোমার আব্দারের বালি ছড়ানো মেঝেতে হামাগুড়ি দিতে যে আমার কী ভালোই লাগে... এক্কেবারে ভিমনাগ ছড়ানো গলায় যখন বলো: “ বাসে ভীষণ ভীড় , ট্যাক্সি নাও না প্লিজ” “বসন্ত কেবিন না ডিয়ার , লেট্স গো টু সাম নাইসার প্লেস না সোনা , মেনল্যান্ড চায়না ?”

নব্য-বঙ্গ ব্যঙ্গ

গালাগাল , থুড়ি..তিরস্কার ক্রমশ বড় আলুনি হয়ে উঠছে । কদিন ধরেই দেখছি শাপ-শাপান্ত বা বাপ-বাপান্ত করে তেমন লে হালুয়া গোছের ফুর্তি হচ্ছে না । তবে বাঙালির ব্রেন থাকতে খিস্তি...ইয়ে মানে...ভর্ত্‍সনার জন্যে নব্য ভাষা বা যুক্তির অভাব হবে , এ কেমন কথা ? একটা জটিল যোগ-মন্ত্র মনে মনে আউড়ে নিয়ে , মনসংযোগ সুদৃঢ় করে এগিয়ে এলাম , আধুনিক এবং সদ্য-আবিষ্কৃত কিছু ভেলকিময় হুমকি লিপিবদ্ধ করতে । ১. অকর্মণ্য : “পার্লামেন্ট কোথাকার” (ডেমোক্রেসি ভিত্তিক)

দ্য গ্রেট ইটালিয়ান সেলুন

পুরুষ-প্রসাধনের মত সহজ ব্যাপার এ পৃথিবীতে বিরল

সীতাভোগ-মিহিদানা ও ছোটোমামা

“ মত্‍স মারিব খাইবো সুখে ; এহেন স্লোগান বদলে বাঙালি যখন মত্‍স ধরিব পুষিবো সুখে বলে ছলকে ওঠে , তখন ব্যাপারটা অতি সিরিয়াস পচা , নিজেকে কন্ট্রোল কর , তুই বখে যাচ্ছিস” আমার নতুন কেনা দু জোড়া মাছ সহ ফিশ-বাওল পর্যবেক্ষণ করতে করতে বললো ছোটমামা । একটা ফিস-বাওল ’ এর শখ বহুদিন ধরেই ছিলো । সেদিন হঠাত্‍ নিয়ে এসেছিলাম । দু জোড়া গৌরামি ( GOURAMI) মাছ-সহ । এক জোড়া হলুদ , অপর জোড়াটি সাদা । ঘটনাচক্রে সেদিন ছোটমামা বাড়িতে এসেছিল । ছোটমামা মাছ-প্রেমিক , তবে পুষ্যি মাছের নয় , যেসব মাছ উদরস্থ করা যায় তাদের । পাড়ার মাছ বাজারে ছোটমামা আনন্দবাজারি ভাষায় বীরেন্দ্র সহবাগ।

শিশুপাল

রোববার সন্ধ্যেবেলা অচেনা নম্বর থেকে ফোন এলেই মেজাজ খিঁচড়ে ওঠে কোনও অফিসিও খবরের আশঙ্কায়। ফোন-কলটা ধরবো কী ধরবো না ভাবতে ভাবতে ধরেই ফেললাম। -“হ্যালো , পচা ?”, দুরুম ব্যারিটোনেই বুঝতে চিনতে পারলাম আনন্দ-স্যার , ছোটবেলার ইংরেজি গৃহ-শিক্ষক কাম কৈশোরের জীবন-গুরু। ব্যাচেলর , গিটার-বাজিয়ে , দাপুটে এই ইংরেজি শিক্ষকটি ছিলেন আমাদের স্কুল-জীবনের আরাধ্য। ক্লাস এইট-নাইনে যখন আনন্দ-বাবুর কাছে পড়তাম , তখন মনে হত ; আজন্ম ব্যাচেলর থাকা , গিটার বাজানো , চারমিনার খাওয়া আর গড়গড় করে ইট্স বা শক্তি আউড়ানো ছাড়া জীবন বৃথা। কিন্তু উচ্চ-মাধ্যমিকের পর যথারীতি আনন্দ-বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ কমে এসেছে। এখন যোগাযোগ বলতে বিজয়ার সময় আমার প্রণাম-সহ ফোন। কিন্তু এতদিন পর এই রবিবার সন্ধ্যে বেলা হঠাত্‍ আনন্দবাবুর ফোন পেয়ে অবাক হলাম বটে।

শাহরুখ যদি

শাহরুখবাবু বাংলা প্রমোট করবেন । ভালো কথা । “ ব-ব-ব-ব-বাংলাআ-আ-আআ!” বলে নাইট-রাইডার্স অধিপতি দুলে উঠবেন , পশ্চিম বাংলা ঢেকুর তুলে গলা মেলাবে । শাহরুখ ভক্ত হিসেবে আহ্লাদ কোথায় রাখি । তবে রা .ওয়ান বলেই নাচবো আর বাংলা তুলে ‘ আ মরি আ মরি ’ করবো না , তা তো হয় না। অতএব শাহরুখ বাবু , কয়েকটি ব্যক্তিগত মারপ্যাঁচে আপনার অভ্যস্ত হতে হবে , যদি না আপনি হিন্দ-মোটর ঘটিত এমবাসেডারের মত বঙ্গ-মানসে বাংলা-এমবাসেডার হয়ে মুখ থুবড়ে পড়তে না চান। কি কি এডজাষ্টমেন্ট করতে হবে আপনাকে ? টুকে নিন: ১. কোলকাতা উচ্চারণ শিখুন স্যার। তুরন্ত!

মগজ পোশাক

-“ পচা , ঘুমাইতাসিলি নাকি ?”, ভোর পৌনে ছটার সময় বিনু-মামার ফোন । -“হুম , কি ব্যাপার ?” -“কইতাসি কি , তর কাসে একখান শান্তিনিকেতনী ঝোলা হইবো ?” -“শান্তিনিকেতনী ঝোলা ? মা ’ র আছে মনে হয় একটা পুরনো , তবে ময়লা হয়ে আছে বোধ হয় , কেন ?” -“ময়লা হইলে তো আরো ভালো , আর হ্যাঁ , আরেক খান জিনিষের দরকার আছিলো”

সেক্সিস্বর

ভূত ১: ভাই , নতুন নাকি ? ভূত ২: ইয়ে , হ্যাঁ , তিন মাস। আপনি ? ভূত ১: ১২০ বছর। ভূত ২:ওরে বাওয়া , আপনি তো এলেমদার মামদো মশায়। ১২০ বছর ধরে কলকাতায় কচলাচ্ছেন ? এই তিন মাসেই নাভি-শ্বাস উঠে গ্যালো , ভাবছি শিমুলতলা বা সিলেটে শিফ্ট করব। ভূত ১ :ভারী চটপটে ভূত তো হে তুমি!অল্পবয়সে বিদেয় নিতে হয়েছে নাকি ? ভূত ২ :আর বলবেন না স্যার , উনিশ বছরেই কেলো ঘটে গ্যালো। একটা সেক্সি অঙ্কর সলিউশন চিন্তা করতে করতে রাস্তা পার হচ্ছিলাম

বন্ধু-ব্যঞ্জন

বন্ধুরাই সর্বনাশের কারণ । আমার যাবতীয় বদগুণের উত্‍স হল আমারই কোনও এক প্রাণের বন্ধু । অতএব একটি বন্ধুও যদি আমার না থাকত , তাহলে আমার মধ্যে ভেজা তুলসী পাতার চেয়েও বেশি ক্লোরোফিল থাকতো।

ভাষা-বোমা

গত কুড়ি বছর ধরে মেজো-পিসিদের বাড়িতে রামখিলান গোয়ালা দূধ দিয়ে চলেছে । যখনই পিসির বাড়ি যাই , রামখিলানের দূধ দিতে আসবার সময় বাড়ি থাকার চেষ্টা করি ; তার মূল কারণ হলো রামখিলান আর আর আমার মেজোপিসির ' র কথোপকথন। বিহার থেকে ৩৭ বছর আগে এসেও , এখনো রামখিলান বাংলা ভাষার মার-প্যাঁচ কব্জা করতে পারেনি । । আর তার সাথে আমার পিসি র হিন্দী মিলে যে আণবিক-ককটেল তৈরি হয় , তা অনাবিল । যাবতীয় গরমিল সত্ত্বেও মেজোপিসি নিজের হিন্দী এবং রামখিলান নিজের বাংলা ছেড়ে এক চুল নড়বেনা। ফলশ্রুতি ? ভাষাগত হিরোশিমা , দৈনিক

জন্মদিন

আঠাশ , পাঁচ বছরের প্রাণের বন্ধু বিল্টা এখন বেপাত্তা । সাত বছরের হাঁটুর চোটের স্টীচের দাগ এখন বেমালুম শুকনো । দশ বছরের ‘ চাঁদের পাহাড় ’ এখন মলাট-ধর্ষিত হয়ে ঘরের কোনো কোণে রগরাচ্ছে। এগারো বছরের অঙ্কে ফেল এখন মুচমুচে ফুর্তি-স্মৃতি। পনেরোর প্রেম সতেরো-বার কবরে ঢুকেছে। ষোলোর বন্ধুত্ব এখনো কনক্রীট।

ওয়াক-থু: কালচার

বাঙালিকে অফিস-মুখি করে তোলা চাট্টি-খানি কোথা নয় স্যার । ওসব ওয়ার্ক-কালচার বলে ওয়াক তুলে বাঙালিকে ভূলিয়ে কাজ করবেন , এমন ন্যালা-ক্যাবলা বাঙালি নয় ।রক্তে কমিউনিজ্ম আর তৃণমূলীজ্ম এককেবারে ককটেল মেরে আছে মশাই , বেমক্কা যদি কাজ কাজ করে বাঙালি লাফাতে শুরু করে , তাহলে আর রাইটার্স ’ এর ইজ্জত কে বাঁচাবে

কফি-শপের হাসিয়ে

সিমলার মল-রোড ধরে হাঁটতে হাঁটতে , চড়াই-উতরাই মেপে নিতে নিতে টুক-টাক খিদে পেতেই থাকবে । এমত অবস্থায় বেদম-হারে মোমো-চাউমিন-সিজলার হজম করে যখন একটু মিষ্টি মুখ করব ভাবছি , এমন সময় নজরে এলো এমব্যাসি নামে একটি খাদ্য-বিহার । বাইরে থেকে অতি মনোরম চেহারা । ভেতরে কাঁচে ঘেরা বসবার জায়গাটিও বেশ মনোরম , বসলেই বেশ অর্ধেক সিমলার বসতি চোখের সামনে জুড়ে বসে । এসব দেখে ঢুকে পড়লাম এমব্যাসি ’ তে আর একটা চেয়ার টেনে যাবতীয় আলস্য মেলে দিয়ে বসে পড়লাম এবং একটা চকোলেট কেক আর এক টুকরো আপেলের পাই অর্ডার দিয়ে দিলাম । এ খাদ্যালয়টি এক দিকে বিচিত্র । স্থান নেহাত স্বল্প বলা চলে না কিন্তু এখানের মালিক তথা ম্যানেজার তথা রাঁধূনি তথা ওয়েটার একজনই

Boss কহিলেন

[এমন এক BOSS কে চিনি , যাকে তার দ্বারা Boss’ ইতো জনগণ অসুর কুমার বলে ভক্তি-শ্রদ্ধা করে থাকেন । সেই অসুর-কুমার ’ এর বস-মুখি চিন্তা-ভাবনার এক খাবলা চুরি করে নীচে টুকে দিলাম । Boss- দু:খে যারা মরমে মরে আছেন , তাদের হাড়ে-হাড়ে এই ভাবনা-গুলোর পাল্স অনুভূত হবে , এ আমার বিশ্বাস ] “এই যে পাহাড়ের মত চেয়ারটায় ওপর চড়ে বসে আছি , সেখান থেকে নিচের দিকে থাকলেই মাথাটা কেমন বন-বন করে ঘুরতে থাকে ; কত্তসব ছুটকোছটকা অপদার্থের দল পোকা-মাকড়ের মত ঘোরাঘুরি করছে। আমি যে এতো খাটা-খাটনি করে এদ্দুর উঠে এলাম , সেই হার্ড-ওয়ার্কিং স্পিরিটের ভগ্নাংশও যদি এই গাধাগুলোর মজ্জায় থাকত তাহলে এর উর্বর মানুষ হয়ে উঠতো । কাজ-কর্মের বালাই নেই , গোটাদিন শুধু ‘ চাই-চাই-চাই ’; ছুটি চাই , বোনাস চাই , লোন চাই , টি-এ/ডি-এ চাই! আরে ? আমার অধস্তন বলে কি আমার স্তন পিষে নেবে নাকি

দুর্গা পুজো খাদ্য নির্ঘন্ট

সপ্তমী : সকাল ৭ ঘটিকা – লুচি + ছোলার ডাল নারকোল দিয়ে + বেগুন ভাজা + ভীম নাগ সন্দেশ বেলা ১১ ঘটিকা - দেবী প্রসাদ (চাল-কলা , শসা , আপেল ইত্যাদি) + কোকা-কোলা দ্বিপ্রহর ২ ঘটিকা - নুন , লেবু , ভাত , বেগুনী , ঝুড়ি আলু ভাজা , সোনা মুগের ডাল , মাছের মাথা দিয়ে বাঁধা কপির তরকারী , রুই মাছের কালীয়া , মৌরলা মাছের ঝোল , খেজুরের চাটনি , ছানার পায়েস বৈকাল ৫ ঘটিকা - লেবুর সরবত সন্ধ্যে ৬ ঘটিকা - পাঁঠার ঘুগনি , ঘটি-গরম চানাচুর মিশ্রণ , দই-ফুচকা + ঠান্ডা পানীয় রাত্রি ১০ ঘটিকা - রকমারি কাবাব , মুর্গ-মুসল্লাম , মাটন বিরিয়ানী , ফির্নি , কে সি দাসের রসগোল্লা , মিষ্টি পান

মহালয়া কান্ড

মহালয়া মানেই বাঙালির হাড়-গোড়ে কাঁপণ । আধুনিক বাঙালি আর কাশ-শিউলি-নীল আকাশে পুজো পুজো সিগন্যাল খোঁজে না।কলকেতিয়ে বঙ্গ-সন্তান হলে তো কথাই নেই। ট্র্যাফিক বাতির লাল-সবুজ , ট্যাক্সির হলুদ আর রাইটার্স ’ এর লাল বাদে কলকাতার পাবলিক রঙ চেনে না। বাঙালি এখন পুজোর হাওয়া চিনতে পারে পাড়ার দাদা ’ দের চাঁদা তোলার হিড়িকে , ক্যালেণ্ডারের তারিখে , পূজা বার্ষিকী ’ তে তথা পণ্য-বাজারের দুর্গা পূজা ধামাকা ডিসকাউন্ট অফার থেকে । আর এই পুজো-আনন্দ ছলকে ওঠে মহালয়া থেকে। ভোর রাত্রে বীরেন ভদ্রের প্যাঁপর যেই না বাজল অমনি বাঙালির গায়ে কাঁটা ! নিষ্ঠাবান বাঙালি মাত্রই ভোর ছটা থেকে দূরদর্শনের সামনে বসবেন কফি বা চা হাতে , সঙ্গে চানাচুর , নিমকি। নিষ্ঠা যদি অতিমাত্রায় জাগে তবে তিনি ভোর পাঁচটা থেকে শুনবেন আকাশবানী । এবং পনেরো মিনিটে চা-টা হজম করে বসে বসে ঢুলবেন । বীরেন্দ্র ভদ্র থকে গিয়ে ক্ষান্ত হলে , বাবু জেগে উঠবেন ‘ আহ ! সাচ এ পীওর ট্র্যাডিশন ’, বলে চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুম চালিয়ে যাবেন । - “ পূজা ইজ হিয়ার মায় বয় , লিসেন টু দ্য ম্যাজিকাল ভয়েস অফ ভিরেন্দ্রা কৃষ্ন্যা ভ্যাদ্রা ”, সাউথ সিটির ৩৬

শুদ্ধ বাংলা বিশুদ্ধ বাংলা

প্রশ্ন: শুদ্ধ কি প্রকারে শুদ্ধতর হয় ? বাহ্যিক পরিবর্তন ছাড়াও সমূহ ব্যবহারিক পরিবর্তন কি ভাবে সম্ভব ? দশটি উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা করো । উত্তর : শুদ্ধ হতে শুদ্ধতর হওয়া এবং বাহ্যিক পরিবর্তন ছাড়া ব্যবহারিক পরিবর্তনের যে পদ্ধতিটি , তার উত্তম প্রয়োগ-দৃষ্টান্ত আমরা দেখতে পারি আমাদেরই আপন মাতৃভাষায় । অতএব , বঙ্গ -ভান্ডার চষে দশ খানি বিবিধ-রতন নীচে লিপি-বদ্ধ করা হলো: শব্দ ১- ব্যাপক: প্রাচীন ব্যবহার : “ কলিকাতা শহরে ওলাউঠার প্রাদুর্ভাবে ব্যাপক হারে মানুষ মরিতে লাগিলো ” আধুনিক ব্যবহার: “ ব্যাপক মেয়ে , সাধু ভাষায় যাকে বলে ডানা লেস পরি ” শব্দ ২- আগুন: প্রাচীন ব্যবহার : “ এত বেলা হয়ে গ্যাল এখনো উনুনে আগুন পড়ল না রে মুখপুড়ির দল ?” আধুনিক ব্যবহার: “ হোয়াট আ কভার ড্রাইভ , আগুন শট , জিও দাদা ” শব্দ ৩- গুরু: প্রাচীন ব্যবহার : “ তুমি গুরু তুমি রাম , তুমি ভগবান , তোমারি লগিয়া তাই কাঁদে মোর প্রাণ ” আধুনিক ব্যবহার : “ ভ্যানতারা না মেরে একটা সিগারেট দাও দেখি গুরু ”

'তন্ময় মুখো'

২০০২।কলকাতা । তখন কলেজে , থাকছি কলেজ স্ট্রীটের কাছে সীতারাম ঘোষ স্ট্রীটের এক মেস-বাড়িতে । আমার তখনকার এপিক-আলস্যে ভরা জিন্দেগি নিয়ে , আমার সহ-মেসি বন্ধু , বর্তমানে বাংলা কবিতার একটা কংক্রিটে-নাম , অনিমিখ পাত্র , ওরফে আমাদের মেসের সার্বজনীন ‘ কবি ’; হুট করে একটা ছড়া কষেছিল । আমার মত উলু-খাগড়ার যদি জীবনী হত , তবে এই ছড়াটাই হত উজ্জ্বলতম চ্যাপটার । **** " এটা মুখার্জি তন্ময়ের এককালের রোজনামচা , তার সৌজন্যেই আমার এ নশ্বর জীবনে শ্রেষ্ঠতম আলস্য দেখা হলো" - অনিমিখ পাত্র

টেলি-ভীষণ

টিভি দ্যাখা ব্যাপারটাকে মোটামুটি একটা ইণ্ডাস্ট্রিয়াল প্রসেসে নিয়ে এসেছি । রীতিমত ঘাম ঝরিয়ে , মেরুদন্ড মচকিয়ে তবে আমার টিভির নাগাল পাওয়া যায় । প্রথমত , টিভির প্লাগ লাগিয়ে সুইচ অন করা । দ্বিতীয়ত , স্যাটেলাইট সেট টপ বক্স ’ এর প্লাগ লাগিয়ে সুইচ অন করা । তৃতীয়ত , অতিরিক্ত সাউন্ড বক্স ’ এর প্লাগ লাগিয়ে সুইচ অন করা ।(পুওর ম্যান ’ স হোম থিয়েটার) চতুর্থত , টিভির মূল বোতামটি টিপে যন্ত্রটিকে মন্ত্র-চালিত করা। পঞ্চমত , টিভির রিমোট টিপে টিভি কে প্র্জ্জ্বল করে দেওয়া।

বঙ্গ-জীবনের অঙ্গ

কিছু কিছু ব্র্যান্ড আদ্যোপান্ত বাঙালি , সে কোনও অমুক-লিভারের নয় বা কোনও তমুক-গ্যাম্বেল ’ এরও নয় । এই পণ্য-নামগুলো বাঙালির বাঙ্গালিয়ানা ঘিরে রয়েছে , অন্তত নব্বই দশক পর্যন্তও ছিল । আর আমরা যারা এখন টি-টুয়েন্টি তথা ডিশ-টিভি তথা ফেসবুক-মগ্ন , তাদের কাছে এই নামগুলোর একক ডেফিনিসন হচ্ছে ‘ ছেলেবেলার গন্ধ ’। ~ বোরোলীন: সুরভিত অ্যান্টিসেপটিক ক্রীম । চ্যাটচ্যাটে , বাতাস ভারী গন্ধে ভরপুর । তবু ঠোঁট-ফাটা থেকে ছড়ে যাওয়া হাঁটু , বোরোলীন ছিল সর্বত্র । এখনো বোরোলিনের ছিপি খুললে মা ’ এর কথা মনে আসে । ~ মার্গো সাবান : সবুজ । ভীষণ টেকসই । চেটে দেখেছি , সত্যিই নিম-তেতো । ফ্যানা-ট্যানার পরোয়া নেই , এন্তার গায়ে - পিঠে ঘষে চলো । ~ নাইসিল: আমার বাঙালি রক্ত আমায় দিয়েছে দুপুর রোদে ফুটবল , আর দিয়েছে ঘামাচি , ভাগ্যিস নাইসিল ছিলো । ~