Thursday, December 4, 2025

খাবারদাবারের গপ্পগুজব


খাবারদাবার নিয়ে আমাদের আদেখলাপনার পিছনে যেমন আহ্লাদ বা ক্ষেত্রবিশেষে দম্ভ রয়েছে; তেমনি আছে অবসাদ, মনখারাপ, স্নেহ, আকুতি কিংবা ভালোবাসার গল্প।

"এই দ্যাখো আমি গোটাদিনের যাবতীয় ভুলভ্রান্তি বকাঝকা টেনশন উড়িয়ে দিয়ে গেরস্তালির হিসেবনিকেশ হেলায় সামাল দিচ্ছি"; এমনটা বলে তো আর সিংহনাদ করা যায় না। বাধ্য হয়ে বলতে হয় "যা ফ্যান্টাস্টিক ফুলুরি ভেজেছি না...এক্কেবারে মার্ভেলাস"।

"কত কী করার ছিল হে, কিস্যুই হলো না", সে কথা বলে বারবার নাকিকান্না জুড়লে চলবে কেন? বলতে হবে "আরে কড়াপাকের সন্দেশ দুনিয়ায় থাকতে আমি কারুর তোয়াক্কা কেন করবো"! সবাই তো আর কবি নয় প্রেমভালোবাসার অঙ্ক দেখলেই পদ্যের ক্যালকুলেটর খুলে লিলি বোস লিখে সবাইকে চমকে দেবে। তাকে চাপা দু:সাহস নিয়ে বলতে হবে, "ভুজঙ্গদার সেঁকা ভুট্টায় যে কী ম্যাজিক আছে, না খেলে অ্যাপ্রিশিয়েট করা যাবে না। আর তার ওপর একটা লঙ্কাগুঁড়ো মেশানো লবন যা ছড়িয়ে দেয় মাপা হাতে। সে গুরুদেব ব্যাপার বুঝলে..."।

অথচ।
ফুলুরি বিজ্ঞান বুঝে কি কেউ দুনিয়া উদ্ধার করে ফেলেছে?
কড়াপাকের সন্দেশ নিয়ে লিখে কে কবে কেল্লাফতে করেছে?
ভুজঙ্গদা কী এমন হরিদাস পাল আর কে কবে ভুট্টা দিয়ে রাজ্যজয় করেছে?

বলাই বাহুল্য যে সে সমস্ত আস্ফালনই দ্যাখনাই। কিন্তু সাবধানে ঢেকে রাখা "আহা উঁহু ওহো"গুলো, যে'গুলো স্রেফ ভাষা ও মেধার অভাবে বুকের মধ্যে দলাপাকানো অবস্থায় নষ্ট হচ্ছিল, তারাই সেজেগুজে বেরিয়ে আসে খাবারের আলোচনা হয়ে। যতবার মানুষ খাবার নিয়ে হ্যাহ্যা করে মোটাদাগের গপ্প ফাঁদে, ততবার সে প্রমেথিউসকে অগোচরেই "থ্যাঙ্কিউ স্যার" বলে। কাজেই খাবার বিষয়ক কোনো হইহইই ব্যর্থ নয়।

নোট:
১। আজ যথারীতি বম্বের একঘেয়ে বৃষ্টিতে জেরবার ও মুগ্ধ হয়েছি।
২। ছিল রাস্তাঘেঁষা দোকানের কয়লার গনগনে আঁচ এবং ঝলসানো মুর্গি।
৩। রুমালিও যে ছিল সে'টা বলার দরকার নেই।

No comments: