Skip to main content

Posts

Showing posts from November, 2013

প্যান্ডোরার বাক্স

প্যান্ডোরা অস্থির হয়ে পায়চারি করচিলেন। ঘেইমে-নেয়ে সে এক একাকার কাণ্ড। ঢাউস বাক্সখানা রাখা আছে চিলেকোঠার ঘরে। কত্তা বার বার কয়ে গিয়েচেন যেন বাক্সখানের ধারে কাছে প্যান্ডোরা না ঘেঁষে। কিন্তু মনের মধ্যে তার কেমন যেন এতাল-বেতাল হচ্ছে গো। মিনসে ভর দুপুরে অমন বাক্স নিয়ে এলেন কেন গো। আনলেনই যখন তখন চিলেকোঠার কোনায় লুইকে রাখলেন কেন গো। লুইকে রাখলেনই যখন, তখন প্যান্ডোরাকে সে বাক্সের ধারে কাছে যেতে বারণ করলেন কেন গো। মিনসে বারণ করে আবার নিজে বাড়ি থেকে বেইরে গেলেন কেন গো। এখন প্যান্ডোরা কি করবে গো।

এক্সপেরিমেন্ট

দিবাকর দু আঙুলের ফাঁকে সাবধানে টেস্ট টিউবটাকে ধরে নাড়ছিলেন। আড়চোখে খেয়াল রাখতে হচ্ছিল স্টপওয়াচের প্রতি। পাক্কা বাহাত্তর সেকেন্ড। তারপর একটা চিমটে দিয়ে টেস্ট টিউবটার টুঁটি টিপে বার্নারের ওপর ধরলেন। দিবাকরের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম, গরমের নয়, উত্তেজনার। এই ছোট্ট ল্যাবরেটরিতে এর আগেও বহু চমৎকার ঘটনা ঘটেছে; কখনও তাঁর হাতে, কখনও বা তার সহকর্মী ইন্দ্রে’দার তত্ত্বাবধানে। তবে এই প্রথম দুজনে এক সঙ্গে মাঠে নেমেছেন কারণ কাজটা তেমনই দুর্দান্ত। এই কম্পাউন্ড আবিষ্কার হলে দুনিয়ার ভোল পাল্টে যাবে। এক সময় মনে হচ্ছিল কাজটা অসম্ভব। কিন্তু ভাগ্যিস দুজনের কেউই হাল ছেড়ে দেননি। ব্রেক-থ্রুটা আসে গত পরশু সন্ধ্যে বেলা। কি ভাবে সেটা বলাই বাহুল্য কিন্তু দুজনেই লাফিয়ে উঠেছিলেন। একটানা ত্রিশ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে তারপর থেকে দুজনে কাজ করে গেছেন। এই সামান্য কিছুক্ষণ আগে ইন্দ্রদা গেছেন একটু ফ্রেশ হয়ে নিতে।

নামকরণ

লালু রেগে কাই । রাগবে নাই বা কেন ? পল্টু ব্যাটা একেবারে ইস্টুপিড। টিফিনের পরের প্রথম ক্লাসে বাংলার স্যার অমন দরাজ গলায় “ কন্যাকুমারীর রকমারি মনিহারী” কবিতাটি পাঠ করছিলেন; ক্লাসময় স্যারের আওয়াজ গমগম করে খেলা করছিল, গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল লালুর। অমনি পল্টে ব্যাটা এমন একটা বিরাশি সিক্কার হাঁচি ঝাড়লে যে সব মাটি। ছন্দপতন ঘটায় স্যার ফের ফিরে গেলেন সমাসে। রাগে মাথার চুল ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছিল লালুর। এই বাংলার স্যার নতুন এসেছেন, মাঝে মাঝেই স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। ক্লাসের বাকি ছেলেরা ফচকেমি করে যে এই নতুন স্যারকে দাঁড়িলেস-রবীন্দ্রনাথ বলে ডাকে, তাতে লালু ভারি মর্মাহত হয়। ইয়ে, এই মর্মাহত শব্দটা লালু নিয়মিত ব্যাবহার করছে আজকাল, সেনটেন্সে বেশ জোর আসে তাতে। লালু্র ভারি অপূর্ব লাগে নতুন বাংলা স্যারের কবিতা। স্যারের দেশ  বেড়ানোর নেশা আছে, আজ হিমালয় তো কাল কেরল। আর ঘুরে এসেই রোমাঞ্চকর সব কবিতা লেখেন। সে সব লেখায় যেমনি আবেগ, তেমনি তার ভাষা, তেমনি ছন্দ- ভারি হাইক্লাস। কবিতাগুলো লালুর মনের মধ্যে বায়স্কোপ চালিয়ে দেয়; এমন রিয়েল লেখা সেই সব।