Skip to main content

Posts

Showing posts from September, 2017

পাড়া

সবার একটা পাড়া থাক। কয়েকটা 'কবে এলি?" কিংবা 'কদিন আছিস তো?"। কিছুটা কামিনী আর অল্প ছাতিম মেশানো পুজোর সন্ধে খান দুই। মণ্ডপের এক কোণে টেনে নেওয়া চেয়ারটুকু। অনভ্যাসের তাসের দুপুর, বা জীর্ণ ক্লাব ঘর থেকে ভেসে আসা জরুরী ক্যারম-তলব। থাকুক একটা গোপন স্মৃতি ছমছমে  গন্ধরাজ গাছ। খুব দরকার একটা সাইকেল ধার দেওয়া প্রতিবেশীর। ছোটবেলার বিকেল স্মৃতি আর বিটনুন ছড়ানো তেলে ভাজার দোকান। অউর উসকে সাথ; হাড়হিম করা "আমার ডাকে সাড়া দিতে নেই, তাই না রে বাবু?"। সবার একটা ফিরে আসার পাড়া থাক।

ব্রিজ

- ব্রিজটা কি দুলছে? - অল্প। - ভেঙে পড়বে? - জানি না। অপেক্ষা করে দেখতে পারি। - স্ট্রেঞ্জ। রোজ সন্ধেবেলা আমাদের ব্রিজে দেখা হয়। দু'চারটে কথা, তারপর আপনি এ'দিকে নেমে যান ডাউনের ট্রেন ধরতে, আমি অন্যদিকে আপের জন্য। অথচ আজ কাঁপছে বলে অপেক্ষা করব? দুদ্দাড় করে বেরিয়ে যাব না? - কাঁপুনি অনুভব করার সময়ই পালানো উচিৎ ছিল, জিজ্ঞেস করতে গেলেন কেন? - না, কাঁপুনিটা কতটা সিরিয়াস জানার কিউরিওসিটি ছিল। - আগুনের টেম্পারেচার দেখতে থার্মোমিটারসহ আগুনে ঝাঁপ দেবেন? তাছাড়া  আমি কোনও দিন কোনও ভেঙে যাওয়া ব্রীজে থেকেছি কি? এ কাঁপুনি সিরিয়াস কিনা কী ভাবে বলব? - তাও বটে। আজ ওয়েদারটা বেশ ভালো ছিল। ইশ, আজকেই ব্রীজটার এমন দশা হতে হল? - ওয়েদার ভালো? - ভালো না? কেমন ফুরফুরে হাওয়া! ভাবলাম আপনার নাম জিজ্ঞেস করে ফেলব আজ। - এদ্দিন করেননি কেন? - খুব অ্যাগ্রেসিভ হত। - আগ্রাসী? আপনি পুরুষ আমি নারী বলে? - টু সাম এক্সটেন্ট। - আজ ব্রীজ ভেঙে পড়তে পারে বলে দুঃসাহসী হয়ে উঠেছেন? - নাম জিজ্ঞেস করব ভেবেছিলাম। করিনি। - আমাদের প্রথম ব্রীজে কথা হয়েছিল কেন যেন? - সময়। ক'টা বাজে জিজ্ঞেস করেছিলাম। আমার হাতঘড়ি আর

মনখারাপবাবু

- এ কী! আপনি এইখানে? - রিল্যাক্স মিস্টার চ্যাটার্জী। আমি আশ্চর্য প্রদীপ নই। পুজো প্যান্ডেলের ভিআইপি পাস নই। এমনকি কোনও স্ক্র‍্যাচকার্ডও নই। আমি মনখারাপ। ইউ আর সাপোসড টু রান অ্যাওয়ে ফ্রম মি। - অমন করে বলবেন না স্যার। আপনি যে কী ভীষণ কাছের। - রোম্যান্টিকালি বলছেন নাকি? - যাক গে, কোথায় ছিলেন বলুন তো মশাই? মাস খানেক এক্কেবারে উধাও! পুজোর ক'দিন থেকে থেকেই আপনার কথা মনে পড়ছিল, জানেন? শেষে যে চাঁদুদার চায়ের দোকানের বেঞ্চিতে ঘুগনির প্লেট হাতে আপনাকে দেখব, তাও নবমীর সন্ধেয়; এ'টা কিছুতেই ভাবতে পারিনি। হোয়াট আ সারপ্রাইজ। - আচ্ছা, আমার কথা মনে পড়ছিল কেন? - কী কেন? - আমার কথা মনে পড়ছিল কেন? মতলবটা কী? হিডেন মোটিভ কোনও? - মতলব ছাড়া আপনার কথা মনে পড়তে নেই? - না পড়াটাই মঙ্গল। - মনখারাপবাবু! - কী চাই? - আমার সঙ্গে কিন্তু আজ যেতেই হবে আপনাকে। - কিন্তু...। - কোনও কিন্তু শুনছি না! - তাই বলে পুজোর হুল্লোড়ের মধ্যে আপনি আমায় বাড়ি নিয়ে যাবেন? বৌ মেয়ে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কত প্ল্যান থাকার কথা...। - আরে ধুর মশাই। - ধুর মানে? - কেউ কোত্থাও নেই। চারদিকে ট্রানজাকশন! ফেলো কড়ি মাখো তেল। অপরচ

থার্মোকলের বাটি

গোটা পিঠ রামথাপ্পড়ে ভাইব্রেট করে উঠল। পিছনে ঘুরতেই দেখি দীপুদা। সেই একগাল হাসি। সেই উষ্কখুষ্ক চুল। ফতুয়াটার বোতামগুলো আগের মতই খোলা। এক গাল খোঁচাখোঁচা দাড়ি। ময়লা পাজামা। মণ্ডপের পিছনের দিকটা অন্ধকার। কামিনী ফুলের গাছটা নুয়ে পড়েছে সুবাসে। সিগারেট ধরাতে হলে এ'দিকে আসে ছেলেছোকরারা। - দীপুদা! তুমি? - ভুলিসনি তা'হলে! - কবে ফিরলে? - ফিরিনি। - তবে? - বুড়ি ছুঁয়েই কেটে পড়ব। কিছু কাগজপত্রে সই করার জন্য দাদারা ডেকেছিল। বাবার সম্পত্তির ভাগ কোনওদিন চাইব না সে'টা আগেই জানিয়ে ছিলাম। তবে লিগাল ভ্যালিডেশন ছাড়া দাদারা নিশ্চিন্ত হতে পারছিল না। অবলাইজ করতে চলে এলাম। - কখন নামলে? - আট সতেরোর কাটোয়া লোকালে নেমেছি। সাড়ে এগারোটাত ব্যান্ডেলে ফিরছি। হাতে এখনও দেড় ঘণ্টা সময় আছে। ভাবলাম তোর হালহকিকতের খবর নিয়ে যাই। - দীপুদা, মণ্ডপে চলো! - পাগল? সিগারেট দে। - এই যে। - থ্যাঙ্কস। - কোথায় ছিলে এদ্দিন? - হুঁ? - এই পাঁচ বছর, কোথায় ছিলে? - পরিব্রাজক। দিল্লী টু বলরামপুরম...ট্রেনে, বাসে, জাহাজে, পদব্রজে। - বলরামপুর? - পুরম। কেরলের একটা গাঁ। স্প্যানটা বোঝতে বললাম। গুজরাত, মহারাষ্ট্র, ছত্তিসগড়

ফিলিপ্সের রেডিও

দাদুর একটা ফিলিপ্সের রেডিও ছিল। তিনটে বড় ব্যাটারির। এভারেডির লাল ব্যাটারি ছাড়া ভরসা করতে পারতেন না। প্রতি মাসে ব্যাটারি বদল করতে হত। গোটাদিনের সঙ্গী ছিল সেই রেডিওটা। এফএমে অভ্যস্ত হতে পারেননি। খবর শুনতেন। যে কোনও খেলার ধারাবিবরণী শুনতেন মন দিয়ে। আধুনিক, রবীন্দ্রসঙ্গীত,  অতুলপ্রসাদী, নজরুলগীতি, বাউল; কোন ফ্রিকুয়েন্সিতে কখন বাজবে, সে খবর রাখতেন। টপ্পা ভালোবাসতেন। হেমন্তকে ভালোবাসতেন। ধীরেন বসুর কণ্ঠস্বর পছন্দ করতেন। কবীর সুমনে সবিশেষ আগ্রহ ছিল। দৃষ্টিশক্তি যত ক্ষীণ হয়েছে, দাদুর বই পড়া তত কমেছে। বেড়েছে রেডিও শোনা। মামাবাড়ি গেলেই আমার রাতের শোওয়ার ব্যবস্থা হত দাদুর পাশে। রাতে বহুক্ষণ খুব লো ভল্যুমে রেডিও চলত খাটের পাশে। জানালার একটা পাল্লা খোলা থাকত, তা'দিয়ে স্ট্রিটল্যাম্পের ঘোলাটে আলো ঘরের মেঝেতে এসে পড়ত। মাঝরাতের রেডিওর মিনমিনে সুরে সে আবছা হলুদ আলো মিশে যেত দিব্যি। কখনও অনেক রাতের দিকে ঘুম ভেঙেছে। তখন ঘরময় ঘোলাটে আলো। কোনও একটা ফ্রিকুয়েন্সিতে সে সময় প্রতি রাত্রে খেয়াল বাজত বোধ হয়। তখন বছরের এই সময়টায়; জানালার খোলা পাল্লা বেয়ে অল্প শীতের আমেজ এসে ঘরের বাতাসে  মিশে যেত। দাদুর একটা

আড়াই সেকন্ড

আমি চারদিকে অন্ধকার দেখতে পাচ্ছি।  না মানে, আমি বলতে চাইছি যে আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।  নিকষ।  নিশ্ছিদ্র।  কানে যে গম্ভীর শব্দের ঝমঝমে শব্দের আসা যাওয়া, সে'টা নিশ্চয়ই সমুদ্রের ঢেউ।  মুখে ফুরফুরে হাওয়া। অল্প ভেজা।  পায়ের নিচে বালি। তা'তেও সামান্য ভেজা ভাব।  সৈকত। বেশ। বেশ।  যাক। স্পষ্ট হচ্ছে ব্যাপারটা। পায়ের পাতায় বার বার জল ছুঁয়ে যাচ্ছে, পায়ের তল থেকে বারবার বালি সরে যাওয়ার অদ্ভুত শিরশিরানি।  অন্ধকারের গুমোট কালচে ভাবটা কেটে গিয়ে তা'তে নীল মিশতে শুরু করেছে। কানেও ঢেউ বাদ দিয়ে অন্যান্য শব্দ ঢুকতে শুরু করেছে: গেলাসে ডিম ফাটিয়ে চামচ দিয়ে নাড়ার খটখট শব্দ।  "আপনার হাতে কি ও'টা আনন্দবাজার নাকি"?  "পইপই করে বলেছিলাম মাদুর ক্যারি করতে"। "বাবু, চা দিব"?  "ঢাইকিড়িকিড়ি"।    অন্ধকারের বেলুন ফুটো করে দু'টো একটা আলোর দানা ভেসে উঠতে শুরু করেছে। নিথর ঠাণ্ডা অনুভূতিটা কেটে গিয়ে বুকের ভিতরের আনচানটা টের পেতে শুরু করেছিলাম সবে। পিঠে একটা জব্বর ধাক্কা এসে পড়াতে অন্ধকারটা এক ধাক্কায় উবে গিয়ে চোখ ঝলসে গেল

আর ভাই।

Note to self.  পুজোর ছুটি টুক করে শেষ হয়ে যাবে ভাই। ফলত; ১. অফিসের পেন্ডিং ফাইলপত্তরগুলো মা ট্রাঙ্কে করে হিমালয় নিয়ে যাবেন না। ২. পুজোর ছুটির পর বস ডেস্কের ওপর নারকোল নাড়ু সমেত টিফিন বাক্স রেখে অপেক্ষা করবেন না। ৩. অফিসের কোনও কল্যিগ এগিয়ে এসে বলবেন না "পুজোর ক'দিন খুব লম্ফঝম্প গ্যাছে, তাই না ভাই? একটু জিরিয়ে নাও।  এক্সেল ফাইলটা আমি সামলে নিচ্ছি। আমি বরং তোমার জন্য একটু ডাবের জল আনিয়ে দিই। কেমন"? ৪. অফিসটাইমের ভিড়ে শিউলির গন্ধ লেগে থাকবে না। ৫. কাশফুলের জেপেগ ইমেজ দেখে অফিস ইনবক্সের আনরেড ইমেল সংখ্যা কমানো যাবে না। অতএব। "পুজো আসছে, আই ক্যান্ট কীপ কূল" বলে কলার তুলব না।

পুরনো লেখা।

চিঠি লেখাটা অম্লানের অভ্যাস ও বাতিক। ডিনারের পর। রোজ। মিনিমাম দু'টো। ম্যাক্সিমাম চারটে। সমস্তই সুতপার জন্য লেখা। সবগুলোই পোস্ট হয় রাতের ছাতের কোণ হতে নিচের ফুটপাথের দিকে। যেমন সুতপা নেমেছিল বছর কয় আগে। সে অবিশ্যি চিঠিদের মত ভেসে ভেসে নামেনি, সে নেমেছিল এক ঝপাতে। শেষ ঝপাতে। খামে লেখা নাম ঠিকানা; সুতিদেবী ফুটপাথ, ল্যাম্পপোস্ট আর শিবুর পান দোকানের মাঝামাঝি, কলকতা ৭০০০৬৮। তবে। অভিমান কি সহজে ভোলার? রোজ আসেন সুতপা। চিঠি পোস্টের সময় যদি অম্লানকে ঠেলে ফেলে দেওয়া যায়, ছাত থেকে ওই ফুটপাথে। ল্যাম্পপোস্ট আর শিবুর পান দোকানের মাঝামাঝি। কিন্তু রোজকার লোভ আটকে দেয় সুতপাকে। কালকের চিঠিতে কী কান্না বেশি না খুনসুটি? দুপুরের স্মৃতি? রাতের গল্প? সঞ্জীব কোটেশনে না বাউল সুরের গল্পগাছা? চিঠির লোভে ক্রমশ পিণ্ডদান অনুভব করে চলে সুতপা। প্রতি চিঠি ভাসিয়ে দেওয়ার সময় ঘাড়ে শীতল স্নেহ অনুভব করে অম্লান।

টুথপিকিফিকেশন

- মিস্টার ডেথ! - কী চাই? - টুথপিক হবে? - কী? টুথপিক?  আপনি আমার কাছে টুথপিক চাইছেন চোক্ক? আমি অন্ধকার! আমি বরফশীতল। আমিই আবার গনগনে আঁচ। আমি খুনে। আমি রক্তমাখা। আমি...। - অথচ টুথপিক নেই? মাইরি! - বাইপাসের পেশেন্ট হয়ে রাতে মাটন ঠেসে শুয়েছেন! অথচ আমার কাছে কিনা...। - আছে? টুথপিক? - প্রাণ ক্যাপচার করে ঘুড়ির মত ওড়াই তাহলে? - প্রাণ সটকে নিলে আর টুথপিকের দরকার কিসের? আমার উইন উইন। আছে টুথপিক? না থাকলে আই ডেয়ার ইউ...। - ডেয়ার কীসের! - প্রাণ সরিয়ে নিন। মাইরি, জিভ পড়ছে একটা দাঁত অথচ আঙুল সেই দাঁত শুধু আঙুলে লোকেট করা যাচ্ছে না। আছে নাকি ভাই? টুথপিক? না থাকলে তুলে নাও। - আমি এখনও ভাবতে পারছি না। আমার কাছে টুথপিক চাওয়া? - নেই, তাই না ভায়া? - না নেই! - খুনে অথচ কী ইনএফিশিয়েন্ট। - সরি চক্কোত্তিদা। আপনার ছেলের ঘরে আছে? তাহলে খুঁজে এনে দিই। - ওর বিছানার মাথার কাছের দেরাজের নিচের ড্রয়ারে। কেমন? - আচ্ছা। - ও কী ভাই! অমন মন খারাপ করে যাচ্ছ কেন? টুথপিক এনে দিয়ে না হয় আমার হাপিস করে দিও। একটা টুথপিক ছাড়া এ জীবনে আর কিছুই চাহিদা ছিল না। - নাহ। আজকে আপনার আত্মা নেওয়ার প্ল্যান ড্রপড। টুথপি

বাবায় বাবায়

- ক'টা বাজে স্যার? - ইয়ে, বাবা! - ক'টা বাজে? - ক'টা বাজে বলো তো? - ঝাপসা লাগছে? ঘড়িটা? ইডিয়ট! - সরি। - ছিঃ ছিঃ ছিঃ!  তোর এদ্দূর অধঃপতন রে বিল্টে? - না মানে...। - রাত একটায় মদে টং হয়ে বাড়ি ফিরেছিস? এই দিনও আমায় দেখতে হল? - সরি। - আজ তোরই একদিন কি আমারই একদিন! - বাবা! জলের বোতলটা এগিয়ে দেবে? - তোমায় চৌবাচ্চায় নিয়ে গিয়ে চুবিয়ে আনব। বাপকে অর্ডার করা হচ্ছে? - প্লীজ। - এই নে। গেল্! আর একদিন যদি দেখি তাহলে বাড়ি থেকে বের করে দেব! - বুবলু ঘুমিয়েছে? - নয়ত কি তোমার বেলেল্লাপনা দেখার জন্য জেগে বসে থাকবে? পিঠের চামড়া তুলে নেওয়া উচিৎ তোমার! - বাবা! বুবলু জেগে যাবে। - সরি। - জানো বাবা! - জুতোটা খুলছি। একটু কুওপরেট করুন স্যার। - বাবা। - ডিনার করেছিস? - ইয়েস বস। - আজ সোফাতেই শুয়ে থাক। কাল ভোরে উঠে ডেটলে স্নান করবি। - থ্যাঙ্কস। বাবা...। - ইয়েস বল্টে! - আজ ফাইনাল হয়ে গেল। - জানি। মিতুল আমায় ফোন করেছিল। পরশু আসছে বুবলুকে নিতে। - কোর্টে দেখা হল। ও কাঁদল। কিন্তু কিছুতেই ওর সামনে আমি কাঁদতে পারলাম না। - কিন্তু নবাবপুত্তুর মদটা বেশ গিলতে পারলে! - আসলে...বুঝতে পারছিলা

ফার্স্ট ফ্লাইট

- নমস্কার। - হুঁ। - তুমি নমস্কার বললে না তো? - জ্বালিও না খোকা। - ম্যানার্স শেখোনি? - ভারি ডেঁপো খোকা তো! যাও যাও। জ্বালিও না। - তুমি এত রেগে আছ কেন? - তা'তে তোমার কী? এত্তটুকুন ছেলে, গুরুজনদের রেস্পেক্ট দিয়ে কথা বলতে শেখোনি? - এতটুকুন? আমি এতটুকুন? আমি তোমার চেয়ে কত্ত বড়! - সে তো সাইজে। দশাসই চেহারা থাকলেই বড় হওয়া যায়? তোমার বাবা মা তাই শেখাচ্ছে বুঝি? - না তা নয়। আচ্ছা, আমার বয়স নয় বছর। তোমার বয়স কত? - আট। - তা'ও বলবে তুমি আমার গুরুজন? - আচ্ছা মুশকিলে পড়া গেল। এক ঘটি জল কি আধ বালতির চেয়ে বেশি? - না তা নয়...। - তুমি মানুষ, আমি পাখি। তাও বদ্রি পাখি। আমার আট মানে তোমার আশি। আমি মানুষ হলে তোমায় বলতাম ছুট্টে  গিয়ে আমার জন্য চশমা আর খবরের কাগজ নিয়ে আসতে। আমার বয়সে এসে তুমি খিটখিটেমোর এভারেস্ট হয়ে উঠবে। - সরি। কিন্তু তুমি এত ছটফট করছ কেন? - সে আমার দরকার আছে। - কীসের? - বড় প্রশ্ন করে তো ছেলে। এত জেনে তোমার কী হবে? - কীসের অপেক্ষা? - উড়ব। - বেশ তো! খাঁচা খুলে বের করে দিই তোমায়? - ভারি বদ ছেলে তো তুমি! - যাব্বাবা। ভালো করতে চাইলাম তো। - বাপের জন্মে উড়েছ

ফুলের ভয়

- আপনার ফুলের ভয় আছে? - আমায় বলছেন? - অফ কোর্স। - আপনি আমায় চেনেন? - অচেনা মানুষের থেকে প্রশ্ন এক্সেপ্ট করেন না? - প্রশ্নটা কী যেন? - আছে? ফুলের ভয়? - ইউ মীন, বোকাদের ভয়? - না। ফ্লাওয়ার। ভয় করে না? - সে কী! কেন করবে? - করে না? - কোন ফুল? - র‍্যান্ডম। যে কোনও ফুলের ভয় হতে পারে। - করে না। কী অদ্ভুত খারাপ প্রশ্ন! - কী বিশ্রী মিথ্যে কথা। - এক্সকিউজ মি? - বিশ্রী। মিথ্যে কথা। - আমি ফুলে ভয় পাই? - দীপকবাবু, পান। ডেফিনিটিলি পান। - যত্তসব আপদের পাল্লায় পড়তে হয়। - গন্ধরাজ গাছটা দীপকবাবু। সে'খানে আপনার ফেরত যাওয়ার কথা ছিল। - আপনি কে? - মিথ্যে কথা মোটে কাজের কথা নয় দীপকবাবু। - আপনি কে? - সে বড় একা দীপকবাবু। আপনার ফেরত যাওয়ার কথা ছিল। বিকেলবেলা। সেপ্টেম্বরই ছিল বোধ হয়।  গন্ধরাজ গাছটার ও'খানে। সে অপেক্ষা করছিল। - আপনি..আপনি ওকে চিনলেন কী করে? আপনি কে? দেখুন...! - সে ভালো নেই। আর আপনি একটা ইউসলেস। আর ভীতু। সেই, ফুলের ভয়। গন্ধরাজের ভয়। - আপনি কে? - বাগানটার জায়গায় এখন ফ্ল্যাটবাড়ি দীপকবাবু। গন্ধরাজ গাছ সাফ। - আপনি...আপনার গায়ের পারফিউমটা...আপনি? - আমি ওকে চিনি, আপন

মহারাজ ও নিমুভূত

- রাজামশাই! - কে? - আমি নিমু। - নিমু কে? - ভূত। - ভ..ভূত? - আজ্ঞে। - তা আমার শোয়ার ঘরে আসার গুস্তাখি কেন? - তা ভূতের আবার গুস্তাখি কী! হাওয়া ভেসে বেড়াই তো। - তুমি জানো আমি তোমায় কোতল করাতে পারি? - ভূতকে কোতল? - যাহ্। তাই তো। বন্দী করে রাখতে হবে। - হাওয়া তো। দিব্যি গলে যাবো। - চোপ! যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা! গলে যাবো! আর কোথায় আছিস রে তুই?  দম থাকলে সামনে আয়! অ্যাই সান্ত্রী! - আমি স্কন্ধকাটা,  মাথাই নেই তো মুখ। আর সান্ত্রীকে ডেকে লাভ নেই। - লাভ নেই মানে? - আপনি ঘুমিয়ে। স্বপ্ন দেখছেন। আমি দুম করে মানুষের সামনে উদয় না হয়ে স্বপ্নে আসি। সুবিধেজনক। - হোক স্বপ্ন। রাজার স্বপ্ন বলে কথা। সহবতে ফাঁকফোকর দেখলেই চট করে বন্দী। তারপর নির্মম অত্যাচার। - বেশ বিপদে ফেললেন দেখছি। - রাজার স্বপ্নে বা শোওয়ার ঘরে কোনও চালাকি নয়। - তা'হলে আসি। - রুকো! - ডাকলেন? রাজামশাই? - এসেছিলে কেন ভাই? - আপনি গান ভালোবাসেন? - চুপ! চুপ! - সে কী! কেন? - কে তুই বেয়াদপ? বেসুরবেগান রাজ্যের রাজাধিরাজের সামনে তুই গানের কথা বলছিস? অ্যাইই জল্লাদ! - স্বপ্ন তো। আপনার স্বপ্ন। সে'খানে শুধু আপনি, এই বিছ