Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2017

করোলারি

- এতক্ষণে আসার সময় হল হে রাখহরি ? - বৃষ্টি দেখেছেন চক্কোত্তিদা ? ক্যাটস অ্যান্ড ডগস। আপনার অ্যাসিস্ট্যান্টটিকে একটু বলুন দেখি এক কাপ দার্জিলিং সাপ্লাই দিতে। আমার আবার শুগারলেস।   - কলিংবেল শুনেই সে ইন্সট্রাকশন চলে গিয়েছে শিবুর কাছে।   - আগের দিন পেঁয়াজিগুলো বড্ড কড়া করে ফেলেছিল। আজকে একটু কেয়ারফুলি ভাজতে বলবেন প্লীজ।   - আজ করলা স্পেশাল ফ্রাই।   - করলা ? - অবহেলা কোরো না ভাই। করলার যে এমন ট্রান্সফর্মেশন হতে পারে সে ' টা কামড় না বসিয়ে টের পাবে না। তিল , চালবাটা আর দু ' চারটে সিক্রেট ইনগ্রেডিয়েন্ট মিলিয়ে...আমার স্পেশাল রেসিপি।   - যা হোক। শিবুকে বেগুনীর কথা বলে দিতে হয়। করলা যদি বাই চান্স মুখ থুবড়ে পড়ে ?   - চান্স নেই। তবে বেগুনীতে কারুর কোনওদিন ক্ষতি হয়েছে বলে শুনিনি । সে ব্যবস্থা করা যাবে। যাক গে , এ ' বার আসল মালটা বের করো দেখি বাবা রাখহরি।   - এত ইম্পেশেন্স নিয়ে আপনি যে কী করে রেসের মাঠে নার্ভ ধরে রাখেন চক্কোত্তিদা।   - আরে ফটোফিনিশে পঞ্চাশ হাজার ফসকে গেছিল এইটিট্যুতে। তা ' তেও টেন্স হইনি। পঞ্চাশ হাজারের আজকের দিনে ভ্যালু ভেবে

পুজো পুজো ইয়ে

- পুজো আসছে। - চিরকাল তেমনটাই ঘটে ভাই। - মানে? - ডিসেম্বর মাসেও পুজো উলটো দিকে হেঁটে যায় না, এদিকেই এগিয়ে আসে। - আই মীন, পুজো প্রায় এসে গেল আর কী। - এসে যাওয়ার ডেফিনিশন কি? - মানে ইয়ে, নেয়ার বাই। - আমার আলিগড় পৌঁছেও মনে হয় দিল্লী বহুত দূর। ওদিকে সুভাষবাবুর বার্মায় এসে মনে হয়েছিল দিল্লীরর ছোলেকুলচের গন্ধ পাচ্ছেন। - আমি বলতে চাইছি যে, বাতাসে একটা বেশ পুজো পুজো গন্ধ...। - ইউ মীন, চারদিকে ঘেমো ভিড়ের গন্ধ? - আরে উৎসবের মেজাজটা বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে...। - ইলিশের দাম কমেছে? - কই! না তো! তা'তে কী? - ইলিশের দাম আগুন, এরপরেও আপনারা উৎসবের কারণ খুঁজে পান?

ভাজাভুজি

- এতক্ষণে আসার সময় হল হে রাখহরি? - বৃষ্টি দেখেছেন চক্কোত্তিদা? ক্যাটস অ্যান্ড ডগস। আপনার অ্যাসিস্ট্যান্ট শিবু বাবাজীবনকে একটু বলুন দেখি এক কাপ দার্জিলিং সাপ্লাই দিতে। আমারটায় আবার শুগারফ্রী। - কলিংবেল শুনেই সে ইন্সট্রাকশন চলে গিয়েছে শিবুর কাছে। - আগের দিন পেঁয়াজিগুলো বড্ড কড়া করে ফেলেছিল। আজকে একটু কেয়ারফুলি ভাজতে বলবেন প্লীজ। - আজ করলা স্পেশ্যাল ফ্রাই। - করলা? - অবহেলা কোরো না ভাই। করলার যে এমন ট্রান্সফর্মেশন হতে পারে সে'টা কামড় না বসিয়ে টের পাবে না। তিল, চালবাটা আর দু'চারটে সিক্রেট ইনগ্রেডিয়েন্ট মিলিয়ে...আমার স্পেশ্যাল রেসিপী আর শিবুর রান্নার হাতের কামাল। - যা হোক। শিবুকে বেগুনীর কথাও বলে দিতে হয়। করলা যদি বাই চান্স মুখ থুবড়ে পড়ে?  - চান্স নেই। তবে বেগুনীতে কারুর কোনওদিন ক্ষতি হয়েছে বলে শুনিনি । সে ব্যবস্থা করা যাবে। যাক গে, এ'বারে গুছিয়ে বসো দেখি। - চক্কোত্তিদা, আজ দিনটা বড় ভালো। - শাঁসালো কাউকে জোটালে নাকি? - বড়বাজারের ভুতোড়িয়া। ফ্যামিলির চার ভাইয়ের নামে চারটে পলিসি গছানো গেলো বেশ। মোটা প্রিমিয়াম। আমার এ কোয়ার্টারে আর চাপ রইল না। - এত বড় একটা ব্যাপার, তাও খা

নিশ্চিন্দি

রাত্রি এলেই রোখ চেপে যায়। তরতরিয়ে চিঠি লেখা চলে। আত্মবিশ্বাসী ঝরঝরে ভাষা। টেবিল চাপড়ানো দাবী,  লোফার মার্কা আদর। সিগারেটের নেশাটা নেহাত ধাতে সয় না, নয়তো অ্যাশট্রে উপচে একাকার কাণ্ড হত। মাঝেমধ্যে পায়চারীতে জিরিয়ে নেওয়া। সে'সময় আবার মনের মধ্যে শাসনের ভাষাটুকু সাজিয়ে নেওয়া  যায় যা'তে কলম ধরলেই পুরনো বাড়ির ঝুরঝুরে পলেস্তরার মত অভিমানটভিমান সমস্ত ঝরে পড়া যায়। পুরীর রাস্তায় বিকেলের ক্যাঁচরম্যাচর ধরে এগোনো রিক্সার মত এগিয়ে চলে সেই সাড়ে সাত পাতার চিঠি। স্বর্গদ্বারের ভীড়ে এসে প্যাডেল নরম হয়ে রিক্সা থামে। দু'জনে টুপটাপ নেমে পড়ে, রিক্সায় আটকে পড়া নীল ছাপার শাড়ির আঁচলটা ছাড়িয়ে নেন সরু চেক হাফশার্ট। খুব সাবধানে বন্ধ করা ছিটকিনির মত "ইতি তোমার..." টেনে দেওয়া চিঠির নীচে। বেশরম হয়ে দিনদুপুরে দুদ্দাড় ঘরের দরজা বন্ধ করে লোক জানান দেওয়ার বদমায়েশি বরদাস্ত করেন না নীল ছাপা। চেকশার্টের হয়েছে যত জ্বালা আর রয়েছে দু'টো খোলা বোতাম। ভোরের দিকে বোধবুদ্ধির পোস্ট অফিস হাঁ করে দাঁড়ায়, কুচিকুচির স্টাম্প লাগিয়ে ফেলে দিলেই নিশ্চিন্দি।

দেশ মেরে

গত তিন দিন ধরে ইউনিভার্সিটিতে রয়েছি। বাড়ি ফেরার সুযোগ হয়নি। ইয়ে, ক্লাস করারও সুযোগ হয়নি। গত বছর ভারতকে কুচিকুচি করার প্ল্যান যে চুয়িংগাম চিবুতে চিবুতে কষেছিলাম, আজ সে'টা ফেলে দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু সময় মত মনে পড়েনি। পাঁজি বলছে চুয়িংগাম ফেলার পরের লগ্ন আগামী ডিসেম্বরে আসবে। তবু। ঠায় বসে রয়েছি ইউনিভার্সিটির মাঠে। আমি একা নই। সঙ্গে রয়েছে আমার বাকি কমরেডরা। থুড়ি। আমরা একে অপরকে কমরেড বলা বন্ধ করেছি গতকাল থেকে। আমরা এখন একে অপরকে 'স্বামীজি' বা 'গুরুমাতা' বলে ডাকছি। মন সাইকেল আগরবাতির গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে আছে সবসময়, ডাকের কী মহিমা। আমরা তিন দিন ধরে শুধু বসে রয়েছি। চোখে বিস্ময়, বুকে আনচান, গলা বুজে আসছে কান্নায়। বিশ্বাসে দেশের জিডিপি, তর্কে বহুদূর ; এ পরম সত্য আমাদের সকলের রক্তে গাঁজার সুবাসের মত মিশে যাচ্ছে। আহ্। বিপ্লবকে আজ শুধু চ্যাটার্জী বলে ডাকতে ইচ্ছে করছে। এই তিন দিন ধরে ক্রমশ আমরা নিজেদের বদলে যেতে দেখছি। জয় জয় জয় হে। এই তিন দিন ধরে আমরা একটানা ওই কামানের দিকে তাকিয়ে। যে ছেলেটা এই সেদিনও গিটার নিয়ে রূপম ইসলামের গান গাইত, সে আজ দু'দিন ধরে গাইছে &q

কলকাতার মেসিয়াহ্‌ - ৫

মেসবাড়ি থেকে কলেজ বাসে তিনটে স্টপেজ। সকাল এগারোটা থেকে ফার্স্ট ক্লাস। অরূপ অবশ্য হেঁটেই যায়। হাঁটার জন্য কলকাতা অতি চমৎকার জায়গা। একটু আগেভাগে স্নান সেরে নিতে হয়। একটা বাথরুম , পনেরোটা মানুষ ; একটু হুড়মুড় থাকেই। সব থেকে বেশি সময় লাগে অজয়দার , তবে অজয়দা কলেজটলেজ বিশেষ যায় না। সকলে বেরিয়ে গেলে তারপর স্নান সারে সে। অজয়দা বলে স্নান হল সাধনা ; দু ’ রাউন্ড সাবান , একটু টপ্পা আর দু ’ দিনে একবার শ্যাম্পু না মিশলে স্নান জমে না। অরূপ একবার বোকার মত প্রশ্ন করে ফেলেছিল “ প্রতি স্নানে দু ’ রাউন্ড সাবান ? কিন্তু এই দু ’ মাসে যে তোমায় একটাও নতুন সাবান আনতে দেখিনি ” । অজয়দা খুব চটে গেছিল “ গুরুজনকে সম্মান করতে পারিস না ? ইডিয়ট! পালটা প্রশ্ন ? মেসে অ্যানার্কি ঢোকাবার তাল করছিস ”? রীতিমত ঘাবড়ে গেছিল অরূপ। অজয়দার টপ্পাপ্রীতি নিয়ে আর প্রশ্ন করা হয়ে ওঠেনি। অজয়দার রাগ অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেনি কারণ ওর নিয়মিত জলখাবার হচ্ছে মেস লাগোয়া মন্টুদার দোকান থেকে আনা এক ভাঁড় চা , অরূপের বাড়ি থেকে নিয়মিত সাপ্লাই আসা মায়ের হাতে বানানো দু ’ পিস গজা আর একটা গোল্ডফ্লেক। কাজেই অরূপের ওপর বেশিদিন রাগ করে থাকলে অজয়দাকে গজা

এই মেঘলা

- বৃষ্টি থামার কোনও চান্স দেখছি না ভাই। আকাশের যা অবস্থা মেঘ সহজে কাটবে বলে মনে হচ্ছে  না। - তা'তে ম্যাদা মেরে যাওয়ার কী আছে ভায়া? দুপুরে খিচুড়ি।  সন্ধেবেলা বেগুনী। ইলিশ ভাজা রাতে। এঞ্জয়। এ'টাই তো সময়! - আসলে হয়েছে কী...। - আজি ঝরঝর মুখর বাদল দিনে, গুনগুন করে ওঠো। রোম্যান্স ভুললে চলবে? - অসুবিধেটা হচ্ছে...। - এই মেঘলা দিনে একলা...আহা! মেঘলা দিন ছাড়া এমন ক্লাসিক মেজাজ জেনারেট হবে কী করে? এত নেগেটিভ হলে চলে ভায়া? বি পসিটিভ! বর্ষাকে ভালো না বেসে থাকা যায়? - গেঞ্জি জাঙিয়া ইমিডিয়েটলি না শুকোলে কিছুতেই পসিটিভ হওয়া যাচ্ছে না স্যার। ইন্সটাগ্রামে বৃষ্টি নিয়ে আহাউঁহু শুনলেই লাইকের পাশে কানমলার বোতাম আছে কিনা খুঁজে দেখছি।

মালিশের ছয়

সেলুনে মাথা মালিশ করানোর সময় যে গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো মাথায় রাখা দরকার: ১. তেল ছাড়া মাথা মালিশ মিথ্যে। ২. নবরত্ন ছাড়া সব তেল মিথ্যে। ৩. মালিশদাদা মিউট মোডে মালিশ করবেন না। চ্যাঁচাবেন না। স্রেফ গুনগুনিয়ে কথা বলে যাবেন। মোদী, মমতা, ম্যানহোল, মার্কিন কন্সপিরেসি; সমস্তই থাকতে পারে। থাকবে না শুধু প্রশ্ন। ৪. এফএমের বিজ্ঞাপন মালিশ-নির্বাণ বিনষ্ট করে। দরকার হলো এম্পিথ্রিতে নাদিম-শ্রবণ। অথবা "কী উপহার সাজিয়ে দেব" লেভেলের সুর। ৫. মালিশ নরমে গরমের ব্যাপার। গুঁতোগাঁতা নয়, তুলতুল নয়। মালিশকরনেওলার অপ্টিমাম বোধ মালিশখানেওলার অপ্টিমাম বোধের সঙ্গে মিলেমিশ না গেলেই গোটা ব্যাপারটা থাবড়ানোতে নেমে আসবে। ৬. সেমিনারে অফিস রিভিউতে পকেটে রাখা ফোন বেজে উঠুক ক্ষতি নেই। কিন্তু সেলুন-মালিশের সময় ফোনটি স্যুইচড অফ মোডে ভাইটি। ম্যান্ডেটরি। সাইলেন্ট ফাইলেন্ট না। বন্ধ। নিষ্পাপ মালিশ মুহূর্তগুলো, শুধু নিজের জন্যে রাখা থাক।

দ্রোণ পর্ব

চারদিকে ধুন্ধুমার যুদ্ধ। অবশ্য গোটাটাই এক তরফা। দ্রোণাচার্য পাণ্ডব সৈন্য দেখলেই বেগন স্প্রে ঝেড়ে আরশোলা মারার মেজাজে কুপিয়ে যাচ্ছেন। নকুল ইতিমধ্যে মেট্রোজিলের খোঁজ শুরু করে দিয়েছিল। সহদেব "শিবিরে লাইটার ফেলে এসেছি, ক্যুইকলি নিয়ে আসছি" বলে সেই যে হাওয়া হয়েছে এখনও পাত্তা নেই। ভীম গদার ডাঁটি দিয়ে পিঠ চুলকে যাচ্ছিলেন। অর্জুন সিলেবাসের বাইরের কোশ্চেন পেপার দেখে কৃষ্ণের ওপর তম্বি শুরু করেছিলেন 'শুরুতেই সম্মানজনক এগজিটের ব্যবস্থা করেছিলাম, তা নয়। বাবু এলেন গীতাগিরি করতে। এ'বার হ্যাপা সামলাও'। যুধিষ্ঠির লুকিয়ে অ্যাডাল্ট জোকসের বই পড়ে নার্ভ ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করছিলেন। কেষ্ট দেখলেন কিছু একটা না করলেই নয়। পাণ্ডবদের ডেকে বললেন "আউট অফ বক্স সলিউশন ভাবো"। নকুল দরাজ গলায় অফার দিলে "সহদেব খুব ভালো আউট অফ দ্য বক্স ভাবতে পারে। আমি বরং শিবিরে ফিরে যাই, যদি ওকে আউট অফ শিবির ভাবানো যায়"। যুধিষ্ঠির বললেন "দুর্যোধনকে অনলাইন রামিতে চ্যালেঞ্জ করে দেখব"? অর্জুন বললেন "বাক্সটা দেখছি না কেন ভাই কেষ্টা'? ভীম বললেন "মেনহিরটা কাজের সময় খুঁজে