Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2019

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

ষাট

- প্রাইম মিনিস্টার। - আরে মেকশফ, ভিতরে এসো। তোমারই অপেক্ষায় ছিলাম। তা, কী হে? হাতে কোনও ফাইলপত্তর দেখছি না, অফিসটফিস তুলে দিয়েছ নাকি? - আজকের দিনটা অন্তত...। - মেকশফ। আমার শেষ দিন হতে পারে, কিন্তু তোমাদের পৃথিবীটা তো আর থেমে থাকবে না। কাজ না করলে চলবে কেন? - আজ বড় ক্লান্ত লাগছে...। - রং ডে টু আস্ক ফর আ পেপ্‌ টক মাই বয়। তবে পেপ টকের চেয় কফিতে কাজ দেয় বেশি। - সে'টা থাক। অনেক জরুরী কাজ পড়ে রয়েছে। বেশ কিছু ডেলিগেশন এসেছে...। - একটা চমৎকার ব্যাপার তোমায় জানিয়ে রাখি। আজ এই নিয়ে বত্রিশ বার হ্যারি পটার শেষ করলাম। গতকাল সন্ধে থেকেই সমস্ত কাজ বন্ধ করে পড়েছি; শেষ করতেই হত। - থার্টি ট্যু। ইনক্রেডিবল। - আমার বাবা চুয়াল্লিশ বার পড়েছিলেন। - আমার তো এখনও একবারও...। - কাজ কাজ করেই তোমরা গেলে। - মনখারাপ প্রাইমমিনিস্টার? - ঠিক মনখারাপ নয়। বরং মনকেমন বলতে পারো। বৃষ্টি শব্দে আর কোনোদিন ঘুম ভাঙবে না, মায়ের কথা মনে পড়ে অকারণ কান্না পাবে না, নতুন গল্পের বইয়ের পাতায় আঙুল বোলানোর আরাম আর টের পাব না, খিদে পেটে গরম ভাতের গন্ধ আর নাকে এসে ঠেকবে না...। - মনকেমন। মনখারাপ। আলাদা, ত

মোড়ক

- আসুন ব্দগ্বিউদ। - ধন্যবাদ। তা এই অসময়ে তলব? তেমন জরুরী কিছু কি? - মাঝরাতে দুম করে ডেকে বোধ হয় খুবই ব্যতিব্যস্ত করে ফেললাম তোমাকে, তাই না? - ল্পসদজে। আপনি সর্বাধিনায়ক।  প্রয়োজনে তলব করবেন বৈকি। নির্দ্বিধায় বলুন। - আগে বসুন। - ধন্যবাদ। - এ গ্রহে আমাদের সংখ্যা আজ হাজার ছাড়িয়েছে ব্দগ্বিউদ। - সে খবর আমি দুপুরেই পেয়েছি মাননীয় ল্পসদজে। গ্রহের উত্তরে যে দ্বিতীয় কারখানাটা সদ্য চালু হয়েছে, আজ সে'খানে প্রডাকশনের প্রথম লট বেরিয়ে এসেছে। সে লটে বাইশজন বেরিয়েছে। কাজেই সব মিলে আমাদের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো এক হাজার সাত। অত্যন্ত আনন্দের খবর। দু'টো কারখানা যদি ঠিকঠাক প্রডাকশন করতে পারে তা'হলে আগামী কুড়ি বছরের মধ্যে এই হাজার খানেক সংখ্যাটা কয়েক কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে। এই পোড়ো গ্রহটা ফের জমজমাট হয়ে উঠবে। সেই আগের মত..। - কুড়ি? না, কুড়ি বছর নয়, আমার হিসেবে আগামী সাত বছরের মধ্যে সংখ্যাটা আড়াই কোটিতে গিয়ে ঠেকবে। প্রতিদিন এই দুই কারখানার প্রডাকশন এক্সপোনেনশিয়ালি বাড়বে ব্দগ্বিউদ। আর যত প্রডাকশন, লেবারও তত বাড়বে। ভবিষ্যতে আরো নতুন কারখানা বসবে। - ব্যাপারটা তো তা'হলে খুবই আশাব

প্রিমিয়াম

**প্রিমিয়াম** - কী চাই? - আপনিই অভিরূপ মাইতি? - হ্যাঁ, কিন্তু আপনাকে তো ঠিক...। - আমি এজেন্ট পাঁচশো বাইশ বাই সেভেন জেড।  - গভর্নমেন্ট?  - করেক্ট।  - ও, তা কী চাই? - আপনার আর তিন সপ্তাহের অক্সিজেন কোটা বাকি আছে। বহুবার ওয়ার্নিং দেওয়া সত্ত্বেও আপনি রিনিউয়াল ফীস জমা করেননি।  - অ।  - জলের প্রি-বুকিং রয়েছে আর মাত্র আগামি তিন দিনের জন্য।  এ ব্যাপারেও বহুবার ওয়ার্নিং দেওয়া হয়েছে কিন্তু তবু..। - রিনিউ করাইনি। জানি। - সুইসাইড টুইসাইড প্ল্যান করছেন নাকি মশাই? - নট এগজ্যাক্টলি। ইয়ে, কফি খাবেন? - উম? কফি? কাপে? - তিন দিনের জলের কোটা পড়ে রয়েছে। কফি ফ্লেভার্ড ক্যাপসুল ছাড়া আর কীই বা..। - নাহ্, সে'সব বাদ থাক। কাজের কথাই আসি মিস্টার মাইতি। আপনার ক্রেডিটে আর বারো হাজার সোশ্যাল বেনেফিট পড়ে রয়েছে। তা'দিয়ে দিব্যি আপনি আগামী এক বছরের অক্সিজেন আর ন'মাসের জলের সাপ্লাই কিনতে পারবেন।  আর তদ্দিনে আবার আপনার ক্রেডিটে হয়ত কিছু পয়েন্ট...। - ক্রেডিট পয়েন্ট খরচ করতেই হবে বটে, তবে...। - তবে? অক্সিজেন আর জলের রেশিও পাল্টাতে চাইছে

চিঠি ও বেঞ্চি

বিলু, চিঠিটা খুব মন দিয়ে পড়বি, কেমন? প্রথমত, ফ্রিজে চার'দিনের রান্না রাখা আছে। আমি যদি চট করে না ফিরতে পারি তা'হলে ছোটমাসীকে ফোন করিস একটা, কেমন? ও তোকে আসানসোলে নিয়ে গিয়ে রাখবে কিছুদিন। (আর আমি যদি দু'দিনের মাথায় ফেরত চলেই আসি, তা'হলে তো সমস্যা মিটেই গেল)। দ্বিতীয়ত, ব্যাঙ্কের খাতা, ইন্স্যুরেন্সের কাগজ আর বাড়ির দলিল আলমারির লকারে রাখা আছে। সঙ্গে আমার কিছু গয়না। সে'গুলো একটা ব্যাগে করে নিয়ে যাস আসানসোল যাওয়ার সময়, কেমন?   (আর আমি যদি দু'দিনের মাথায় ফেরত চলেই আসি, তা'হলে তো সমস্যা মিটেই গেল)। খেয়াল রাখিস কিন্তু। বিলু, পড়াশোনাটা মন দিয়ে করিস। তোর বাবা নিজে পড়াশোনার মধ্যে ডুবে থাকা মানুষ ছিলেন, ওর মানটা রাখিস। আসানসোলে কত ভালো ইস্কুল আছে, সে'খানেই পড়বি না হয়। অবশ্য ছোটমাসী তোকে বড্ড স্নেহ করে, সে'খানে তোর অযত্ন হবে না। (আর আমি যদি দু'দিনের মাথায় ফেরত চলেই আসি, তা'হলে তো সমস্যা মিটেই গেল)। ভেবেছিস আমি দুম করে কোথায় চলে যাচ্ছি? ভেবেছিস একেবারে আকাট পাগলামো? না রে বিলু, বিশ্বাস কর আমি পাগল নই। তোর বাবার ও'রকম দুম

ক্যাপ্টেন কোহলি

হুব্বারত্ন সমর্থক আমি। ঝোঁকের মাথায় হইহল্লা করে আর র‍্যান্ডম সমস্ত কুসংস্কার আঁকড়ে থেকে খেলা দেখি। ভারত জিতলে মাইনের বাড়ার আনন্দ আর হারলে পিএফে ইন্টারেস্ট কমে যাওয়ার হাহাকার অনুভব করি। গভীর অ্যানালিসিসের চেয়ে চটকদার হেডলাইন আমায় সহজে গলিয়ে ফেলে, পরিসংখ্যানের চেয়েও বেশি প্রিয় হয়ে দাঁড়ায় গপ্পগুজব এবং ব্যাক্তিগত বায়াস (bias)। বিভিন্ন পরিসংখ্যানের খাপছাড়া টুকরোকে সুবিধেমত ব্যবহার করে থাকি শুধু নিজের বায়াসকে প্রমাণ করার স্বার্থে। কালেভদ্রে কেউ কেউ অবিশ্যি মনের মধ্যে ঢুকে যাবতীয়  বায়াসের জঞ্জাল ঝেঁটিয়ে সাফ করে, যুক্তির ফিনাইল ঢেলে মনটা ধুইয়ে দেন। যেমনটা করেছেন ক্যাপ্টেন কোহলি। ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁকে হাজার-স্যালুট জানিয়েও ক্যাপ্টেন কোহলির প্রতি খুঁতখুঁত বহুদিন পুষে রেখেছি৷ হাজার হোক, একসময় কোহলি বলতেই একটা বখাটে মুুখ ভেসে উঠত (যুক্তি বা তুলনায় যাবেন না প্লীজ, ব্যাপারটা বায়াস)। তাছাড়া ধোনির মত ঠাণ্ডা মেজাজ নেই; মাঠের মধ্যে হাত-পা ছুঁড়ে একাকার কাণ্ড, আগ্রাসনে মাত্রাবোধ নেই মোটে; কোহলির কেরিয়ারের শুরুতে এমন ধারণাটাই বদ্ধমূল ছিল। এমন কি কোহলি-কুম্বলে-বিবাদ পর্ব পর্যন্ত মনে হয়েছে

কফিহাউসের সেই আড্ডাটা

"তা ব্যাপার কী হে রমাপদ, আজকেও কি স্পেশ্যাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল নাকি"? ইঙ্গিতটা রমাপদর সুপরিচিত আর এ বিষয়ে সে রীতিমত লাজুকলতা৷ এমনিতে আড্ডার ব্যাপারে সে বেশ তৎপর, অন্য সকলের আগেই সে পৌঁছে গিয়ে একটা ব্ল্যাককফি আর অমলেট নিয়ে বসে পড়ে। কিন্তু যেদিন সে অর্পিতার সঙ্গে অফিসের বাইরে দেখা করতে যায়; সে'দিন দেরী হবেই। আর ভজহরিদা বোধহয় রমাপদর লাজুক হাসিটা বেশ উপভোগ করেন, তাই তাঁর এহেন প্রশ্ন। ডিসুজার সামনের প্লেটে তখনও একটুকরো স্যান্ডুইচ পড়ে আছে দেখে তার পাশ ঘেঁষেই বসল রমাপদ, বড্ড খিদে পেয়েছে। ডিসুজা হেসে প্লেটটা তার দিকে সামান্য ঠেলে দিল। " হ্যাঁ রে রমা, এ'বছর তোর একটা প্রমোশনও তো হল, তা এ'বার অন্তত বিয়ের কথাটা কি পাড়তে পেরেছিস না এখনও সেই অফিস থিয়েটার রিহার্সালের প্রেমালাপেই আটকে রয়েছিস..", সুজাতার যাবতীয় আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে 'কবে বিয়ে করছিস' গোছের প্রশ্ন। ব্যাপারটা খানিকটা বিরক্তিকর। স্যান্ডুইচ চিবুতে চিবুতেই রমাপদ বলেই ফেলল "একটা পেল্লায় বাড়ি আর মস্ত চাকরীওলা পাত্র জোগাড় করে নিজেকে সঁপে দিয়েছিস; ভালো কথা। কিন্তু তা বলে কি জগতসংসার

আমাদের মওকা

মওকা মওকার লেবুটা শিলনোড়ায় বেটে সুপার-ছিবড়ে করে ফেলা গেছে। বর্ডারের দু'দিকেই ম্যাচ নিয়ে যে সব ভিডিও ও বিজ্ঞাপন তৈরি হচ্ছে তা'তে হিউমর ও রুচি দু'টোরই ঘামাচি-আক্রমণে মৃত্যু হওয়া উচিৎ। এই "আমি তোর বাপ" স্তরের কথায় নাকি দুর্দান্ত চালাকি রয়েছে। পাকিস্তান যদি বাংলাদেশের বাবা হওয়ার দাবী করে, তা'হলে কানে কী বিশ্রীই না ঠেকবে, তাই না? আর ভারতবর্ষ আরও প্রাচীন বলে অহংকার? আরো সুগভীর তার চরিত্র ও ইতিহাস? গর্ব তো ভালোই, কিন্তু সে'টা এ'ভাবে ফাটা মাইক বাজিয়ে অন্যের গায়ে 'আমি তোর বাপ' ম ার্কা জলবেলুন ছুঁড়ে না বললে প্রকাশ করা যায়না? হরপ্পা মহেঞ্জোদারোর মালিকানা ফলিয়ে পাকিস্তানও দাদাগিরি (থুড়ি...বাবাগিরি) ফলাবে বোধ হয় এ'বার। ওরা অভিনন্দনের চায়ের কাপ তুলে কথা বলেছে তাই আমরাও অভিনন্দনের দাড়িগোঁফ ওদের মুখে চাপিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছি; এতে কি অভিনন্দনের প্রতি বেশ জমকালো কুর্নিশ জানানো হল আদৌ? ক্লাস ওয়ানের ঝগড়াতেও এর চেয়ে বেশি গভীরে গিয়ে কথা চালাচালি হয়। 'বিশ্বকাপ হারলে হারুক, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতলেই হল'; এ'তে হিউমর নেই, দেশের প্রতি ভক্তি

ফির নহি আতে

कुछ लोग एक रोज़ जो बिछड़ जाते हैं वो हजारों के आने से मिलते नहीं उम्र भर चाहे कोई पुकारा करे उनका नाम वो फिर नहीं आते, वो फिर नहीं आते.. সে'সব "ফির নহি আতে"র ফর্দে কত ঝাপসা মুখ যে রয়েছে। এই যেমন; ১। এক মাছওলাকাকু ক্রিকেট নিয়ে গল্প জুড়তে পারলে খদ্দের ভুলে যেতেন। আজহারউদ্দিনের ফিল্ড প্লেসমেন্টের ভুলগুলো অনায়াসে বলে দিতে পারতেন। প্রবীণ আমরের ডিফেন্সের খামতিগুলোও তাঁর চোখ এড়াত না। আর ক্রিকেট নিয়ে জরুরী আলোচনার সময় কেউ বেমক্কা 'মাগুর কত করে গো' জিজ্ঞেস করলেই রেগে টং হয়ে যেতেন। ২। স্কুলছুটির পর স্কুলগেটের কাছেই একটা গাছের ছায়ার দেখা যেত ফুচকাকাকু। একসঙ্গে সাত-আটজনকে সাত-আট রকমের ঝাল-টক-নুন রেশিওতে খাইয়ে যেতেন। আর যে আলুকাবলি মাখতেন তা' খেলে আয়ুবৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী। তবে তার বিশেষত্ব ছিল ফুচকাপযোগী কিশোরের গানে। "মেরে মেহেবুব কয়ামত হোগি"র সুরে এগিয়ে দেওয়া ফুচকার টইটম্বুর বুক থেকে জল চলকে ওঠা...আহা। ৩। কাগজদাদাভাই গল্প করতেন শুকতারা, আনন্দমেলা নিয়ে। ভোরে কাগজ দিয়েই গায়েব হতেন বটে কিন্তু ছুটির দিন দুপুরবেলা ঠিক একবার ঢুঁ মেরে যেতে

তুক ক্রিকেট

আমার ধারণা কুসংস্কার না থাকলে বোধ হয় স্পোর্টস-ফ্যান হওয়াতে সাংবিধানিক বাধা আছে। বিশেষত ক্রিকেটে; যে'খানে প্রতিটি বলের মধ্যে বেশ কিছু সেকেন্ডের বিরতি থাকে; সেই মুহূর্তগুলোয় সোফা-কুশন-চেবানো মামুলি ফ্যানেরা টিভির দিকে তাকিয়ে ছটফট করা ছাড়া তেমন কিছুই করে উঠতে পারেনা। ফুটবলের ক্ষেত্রে গোটা ব্যাপারটা স্যাট করে শুরু হয়ে ফ্যাট করে শেষ হয়ে যায়; ম্যাচ চলাকালীন ব্রেনকে সোজাসুজি অ্যাড্রেনালিনের হাতে ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকে না। কিন্তু ক্রিকেট সে তুলনায় রীতিমত বিষাক্ত। ওই ব্যাটসম্যান হেলমেট খুলে ড্রেসিংরুমের দিকে কিছু ইশারা করলেন, এই বোলার মিড অফে ক্যাপ্টেনের দিকে তাকিয়ে সামান্য থমকালেন; এমন হাজারো অ-স্কোরবোর্ডিও সিচুয়েশন আর নখ খাওয়ার সুযোগে ভরপুর এই ভল্ডেমর্টিও খেলাটা। আমার এক পাড়াতুতো কাকু কমিউনিস্ট; মানে পরশুরামের কুঠারকে টুথপিক হিসেবে ব্যবহার করা কমিউনিস্ট। ভদ্রলোক ভোগের খিচুড়িতে দু'ফোঁটা ভডকা ছিটিয়ে শুদ্ধ না করে মুখে তুলতে পারতেন না। তিনিও দেখেছি ম্যাচ খুব খটমট জায়গায় পৌঁছলে চটপট মানত করে ফেলতেন। বহুদিন আগে, সেই কাকুর পাশে বসে ভারত পাকিস্তান ফাইনাল দেখছিলাম। ডান পায়ে ঝ

খাওয়াদাওয়া আর খাবারদাবার

নামীদামী রেস্তোরাঁয় ঢোকার মোহ আর ইহ জনমে কাটবে না। কষানো মাংস, খুশবুদার বিরিয়ানি, রগরগে কালিয়া বা তেলে টইটম্বুর ভাজাভুজির টান আলাদা; যত যাই বলি, সে' টান উপেক্ষা করার শক্তি আয়ত্ত করার ইচ্ছেও তেমন নেই। কিন্তু তবু, কিছু কিছু অতি সরল-সিধে "খেতে বসার" স্মৃতি মনের মধ্যে জেঁকে বসে থাকে চিরকালের জন্য। অফিসের দৌড়ঝাঁপে বা গেরস্থালীর ব্যস্ততার মধ্যে মাঝেমধ্যে সে'সব তৃপ্তির খাওয়াদাওয়ার কথা মনে পড়ে। বলে রাখা উচিৎ, মাঝেমধ্যে খাওয়াদাওয়ার কথা ভাবতে আমার ভালো লাগে। খাবারদাবারের নয়, খাওয়াদাওয়ার কথা । এই যেমন টিউশনি ফেরতা ছাতা মাথায় দাঁড়িয়ে আছি চপের দোকানের সামনে, বৃষ্টির ছাঁটে জামার বাঁ'দিকে হাতাটা ভিজে জ্যাবজ্যাব করছে। পিঠের ব্যাগ উলটো করে বুকের দিকে ঝোলানো যাতে ভিজে না যায়। ছাতা বেয়ে জল ঝরেই চলেছে, আর ঝরছে দোকানের ছাউনি বেয়ে; তাদের গতি ও নামার ধরন অবশ্যই বৃষ্টির মোমেন্টামের চেয়ে আলাদা। সেই ছাত আর ছাতা বেয়ে ঝরে পড়া জলের রিদমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফুটছে কড়াইয়ের তেল। দোকানের চপ-মাস্টার একের পর এক আলুর চপ ছাড়ছে কড়াইতে; কড়াই ভর্তি তেলে চপগুলো ডগমগ হয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে। সেই চপে কামড় দে

ইন্ডিয়ান সামার

বই পড়ার পরপরই সে বইয়ের বিষয়ে দু'কথা বলতে গেলে যে'টা বড় সুবিধে সে'টা হল বইয়ের "ডিটেলস"গুলো টাটকা তাজা মাথার মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। রেফারেন্স টেনে কিছু বলতে সুবিধে হয়। কিছুদিন কেটে গেলে সেই "ডিটেলস"গুলো ফিকে হয়ে আসে, অন্তত আমার ক্ষেত্রে তা তো হয়ই। তবে বই শেষ হওয়ার পর কিছুদিন কেটে গেলে একটা ভালো ব্যাপারও ঘটে; প্রাথমিক উচ্ছ্বাস, চমক বা লেখকের ভাষাগত চমকের আবরণ ভেদ করে বইয়ের নির্যাসটুকু 'ইন্টারনালাইজড' হয়। বিশেষত নন-ফিকশনের ক্ষেত্রে; উচ্ছাসের বাষ্প সাফ করে নিজের বোধবুদ্ধির ফ্রেমে সে বইয়ের মূল বক্তব্যটা যাচাই করে নিতে খানিকটা সময় তো লাগেই। মাসখানেক আগে শেষ করা 'ইন্ডিয়ান সামার' বইটার ডিটেলগুলো কিছুটা আবছা হয়ে এলেও, বইয়ে সাতচল্লিশের যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন আর সংঘাতগুলো তুলে ধরা হয়েছে; সে'গুলো ক্রমশ মনের মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। সে'দিক থেকে আমার কাছে এ বই ল্যাপায়ারের 'ফ্রীডম অ্যাট মিডনাইট'য়ের চেয়ে বেশি ইম্প্যাক্টফুল। অনেক বিষয় সম্বন্ধে আমাদের ধ্যানধারণা যে একেবারে 'কাঁচকলা' তা কিন্তু নয়; কিন্তু ইনফর্মড ওপিনিওন (কিছুটা বায়