মনখারাপের খুব জটিল কোণে পৌঁছে গেছি। নিজেই অবশ্য নিজেকে বারবার বলছি "তা বাপধন, কবর যখন নিজেই খুঁড়েছ তখন কবরে নরম তোষকের অভাব নিয়ে কান্নাকাটি করলে চলবে কেন"? দুঃখ আছে, হেরে ভূত হওয়া আছে, পাপের কড়াইতে ডীপ-ফ্রাই হওয়া আছে। কিন্তু তবুও বার বার মনে হচ্ছে যে সেই গ্লানিটাকে আমি আমার শেষ ডেফিনিশন হতে দিতে পারি না।
পাপী মানুষের সমস্যা হলো তাদের দুঃখ সাজিয়ে উপন্যাস খাঁড়া করা সম্ভব নয়। একটা ট্র্যাজিক পটভূমি না থাকলে ট্র্যাজিক হিরোর চরিত্র বোনা সম্ভব নয়। ধরুন শোলের জয় চোর-বাটপাড় মানুষ, আজ একে ঠকাচ্ছে তো কাল ওর ঠ্যাঙ ভাঙছে। কিন্তু তবুও তাঁর মধ্যে কোথায় একটা নিরেট ভালোমানুষি আছে; যে ভালোমানুষ বন্ধুর জন্য জানকবুল করতে সদাপ্রস্তুত, যে ভালোমানুষ নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসতে পারে, প্রেমেও পড়তে পারে। এই ভালোমানুষিগুলোর ফিল্টার দিয়ে অমিতাভস্থ জয়কে যাচাই করলে দেখা যাবে যে তাঁর অখারাপ দিকগুলোর মধ্যে একটা অদ্ভুত অপু-সুলভ রোম্যান্স আছে, সে গল্প ছলছলে চোখে বলা যায়। সে বন্ধু, সে প্রেমিক, সে নির্ভীক, পাপে গলা পর্যন্ত ডুবে থেকেও তাই সে নায়ক।
অন্যদিকে গব্বর সিং। তার খারাপমানুষি নিরেট, তার অন্ধকারে বিন্দুমাত্র আলোর বালি মিশে নেই। সে অবলীলায় খুন করছে, অভব্যতা করছে, গরীবদের রক্ত চুষে খাচ্ছে। সে ভিলেনের গল্পের ফাঁকে কোনো অসতর্ক মুহূর্তেও কোনো হারানো বন্ধুর জন্য মনকেমন অথবা ফুলের সুবাস ঢুকিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। গব্বরের রিডেম্পশন নেই।
দু:খকে পাশ কাটিয়ে যেতে মন চায় না, যে গ্লানির কথা বলছিলাম, সে'টাও তো জরুরী ডিসইনফেক্ট্যান্ট। ভয় হয় রিডেম্পশন না থাকায়। যে'দিন নিজের গল্পে নিজের চরিত্রকে বিভূতিভূষণের লাইন দিতে দ্বিধাবোধ হবে, সে'দিন থেকেই বোধহয় রিডেম্পশনের আশাটুকু শেষ।
No comments:
Post a Comment