Skip to main content

Posts

Showing posts from November, 2021

লেনিনের মাদুলি

- আচ্ছা শ্যামলদা, আফগানিস্তান নিউজিল্যান্ড ম্যাচটার ব্যাপারে আপনার গ্রহ-নক্ষত্র কী বলছে? - সে কী হে লেনিনকুমার! শেষে আমার জ্যোতিষবিদ্যের ওপর রিলাই করতে হচ্ছে? - বাজে কথা বলবেন না৷ জাস্ট চেক করছি আপনার হিসেবটিসেব কোনদিকে ফ্লো করছে৷ আফগানিস্তান একটা মিরাকল কিছু করতে পারবে কিনা..। - বেস্পতিটার ট্র‍্যাজেক্টরি চিন্তায় রেখেছে ব্রাদার৷ - অবভিয়াসলি ও'সব গাঁজাখুরিতে আমার বিশ্বাস নেই৷ ফলাফল যা হবে সে'টা খেলার মাঠেই হবে৷ স্কিল দিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে৷ নিউজিল্যান্ড জিতবে, সে'টাই তো স্বাভাবিক৷ আপনি কি ভেবেছেন, আমি আপনার বৃহস্পতির মুভমেন্টের ভরসায় ম্যাচ দেখব? - মিরাকল ছাড়া গতি নেই হে লেনিনকুমার৷  - মিরাকলই তো! নবি রাশিদকে এনক্যাশ করে উইলিয়ামসনদের ঠেকানো? আকাশের চাঁদ আঁকশি দিয়ে নামাতে চাওয়ার মত ব্যাপার।  - তা বটে৷ তাই বলছিলাম৷ বেস্পতির কলারটা যদি টেনে ধরা যেত..। - যত্তসব ডার্কএজের ব্যাপারস্যাপার..ইউ শুড বি অ্যাশেমড অফ ইওরসেল্ফ শ্যামলদা। - একটা ছোটখাটো যজ্ঞ বুঝলে ভাই লেনিন৷ শ'পাঁচেক টাকার মত খরচ৷ মাত্র।  - তার চেয়ে টাকাটা জলে ভাসিয়ে দিলেই হয়৷ - আর তারপর একটা মাদুলি ধারণ করে ম্যাচটা দেখতে হবে৷

মৃণাল সামন্তের ছক

মন্ত্রী অমল ব্যানার্জীর সেক্রেটারি মৃণাল সামন্ত শশব্যস্ত হয়ে নিজের অফিসের লাগোয়া বারান্দায় পায়চারি করছিলেন৷ মন্ত্রী মশাই একটা মোক্ষম গোল পাকিয়েছেন৷ অবিশ্যি উঁচু দরের মানুষরা গোলমাল পাকাবেন বলেই মাইনে দিয়ে সেক্রেটারি রাখেন৷ সে'দিক থেকে ভেবে দেখলে মন্ত্রীদের অল্পবিস্তর গোলমাল পাকাতে না দিলে সেক্রেটারীর চাকরী রাখা মুশকিল৷ কিন্তু এ'বারের সমস্যাটা একটু উদ্ভট৷ এক বিটকেল শখের পাল্লায় পড়ে একটা এয়ারগান কিনেছিলেন অমলবাবু৷ সে এয়ারগান তিনি ব্যবহার করেন না, তবে রোজ সকালে সে'টা হাতে নিয়ে ইজিচেয়ারে আধঘণ্টা বসে মেডিটেট করেন৷ আজ সকালে, সামনের মাসের ইলকেশনের কথা ভাবতে ভাবতে আচমকা এয়ারগানের ট্রিগারে আঙুল পড়ে যায়৷ তা'তে বিশেষ ক্ষতি হয়নি, শুধু কাছেপিঠে উড়ে বেড়ানো একটা কাক খামোখা মারা যায়৷ এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল৷ পশুপ্রেমীদের থেকে সামান্য হুজ্জুত আশা করেছিলেন সেক্রেটারি সামন্ত৷ ও'সব 'ইস্যু' চেপে দিতে তিনি সিদ্ধহস্ত৷ আর সামান্য যে'টুকু নেগেটিভ পাবলিসিটি হবে, পলিটিক্সে সে'টা বেশ উপকারি৷ কিন্তু সমস্যাটা দাঁড়ালো অন্য জায়গায়৷ মন্ত্রীর ব্যালকনি থেকে এয়ারগান ছোঁড়া হল, সে গুলি হ

বাঁধিবি

- বাড়ি ফিরছ ভায়া? - নাহ্! - সে কী! পুজোয় বাড়ি ফিরবে না? - নাহ্৷ - ছুটি পাওনি? - নাহ্! - যাহ্! কেন, সেই জরুরী রিভিউ মিটিং এড়ানো গেলো না বুঝি? - নাহ্! - কোনও ভাবেই না? - নাহ্! - ওহ্। তা, মন খুব খারাপ ভায়া? - ওই৷ সামান্য। অতি অল্প৷ তবে এ বাজারে মাসের শেষে স্যালারি পাচ্ছি, পাতে চাট্টি ভাত পড়ছে। সে'টা তো উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷ - সেই৷ নুনের দায়৷ বাঁধা তো পড়তেই হবে৷ - আমায় বেঁধেছে বটে৷ ফিজিক্যালি৷ অফিসে রোজ কার্ড পাঞ্চ করার সময় পাড়ার পুজো প্যান্ডেলের কথা ভাবব৷ পাওয়ার পয়েন্টে কাজ করার সময় পুজো কমিটির হয়ে চাঁদার বিল কাটার কথা ভাবব৷ এক্সেলে হিসেব কষার সময় হাটারির মেনু কার্ডের কথা ভাবব৷ রিভিউয়ের সময় পাড়ার ইয়ারদোস্তের ঘুগনি সহযোগে সঙ্গে খেজুরে আড্ডা দেওয়ার কথা ভাবব৷ আমায় বাঁধছে বাঁধুক৷ কুছ পরোয়া নহি৷ মন ফুড়ুৎ হবেই৷ মাইরি৷ প্রতিটা 'ইয়েস স্যার'য়ে চাপা ঢ্যাংকুরাকুর মিশিয়ে দেবই৷ দেখে নেবেন। - আলগা গিঁট? তা'তে শেষ পর্যন্ত বাঁধা পড়বে না বলছ? - নাহ্! কভি নহি৷ নেভার!

অ্যাপোক্যালিপ্স

- এই যে স্যার৷ জ্ঞান ফিরেছে তা'হলে৷ চারদিকে তাকিয়ে দেখুন৷ এই বজরাই হচ্ছে এখন আপনার আস্তানা৷ - বাহ্৷ আপনার এই বজরাটা দিব্যি তো৷ - স্টেট অফ দ্য আর্ট মশাই৷ স্টেট অফ দি আর্ট৷ - বেশ৷ একটু জিরিয়ে নিই৷ - হ্যাঁ। বেশ তো৷ এ'খানে তো আপনার অখণ্ড অবসর৷ সামান্য ব্র ‍ ্যান্ডি দিই? নাকি চা করে আনব? শুধু ব্ল্যাক টী পাবেন কিন্তু৷ - আপনি কিডন্যাপার৷ আপনি যখন বলছেন, তখন অখণ্ড অবসরই সই৷ যা দেবেন খেতে, তাই রুচবে৷ - অমন খিটখিটে মেজাজে কথা বলবেন না প্লীজ৷ বড় আশা করে আপনাকে নিয়ে এসেছি৷ - তুলে এনেছেন বলুন। - এহ হে, কিডন্যাপিংয়ের ব্যাপারটা নিয়ে আপনি বেশ ইরিটেটেড বোধ করছেন৷ তাই নয় কি স্যর? - ইরিটেটেড হওয়া উচিৎ নয়, তাই না? না হয় একটু ক্লোরোফর্ম শুঁকিয়ে চ্যাংদোলা করে তুলে এনেছেন৷ এ আর এমন কী৷ - শুনুন স্যার৷ অমন চ্যাটাংচ্যাটাং কথা বেশি বলবেন না৷ আমি আপনাকে প্রাণে বাঁচিয়েছি৷ - কিডন্যাপ করে?এই বিচ্ছিরি একটা স্টীমারে এনে আমার প্রাণ বাঁচিয়েছেন? - এক্সকিউজ মি! এ'টা স্টীমার? চারদিকে চেয়ে দেখুন মশাই৷ এ'টা বজরা৷ - তা আমার প্রাণরক্ষা কী'ভাবে করেছেন? - যে'ভাবে করার কথা ছিল৷ প্রলয় শুরু হয়ে গেছে৷ অর্ধেক

পিলুর দাদা

- কী রে পিলু৷ ঘুমোসনি? - নাহ্ রে দাদা৷ ঘুমটা ঠিক..ঠিক জুতসই ভাবে আসছে না। - ঘাপটি মেরে পড়ে থেকে কী হবে বল৷ বরং উঠে টেবিল ল্যাম্পটা জ্বেলে বই পড়৷ তাক ভর্তি তো না পড়া বই৷ - সত্যিই৷ কত যে না পড়া আর আধপড়া বই। তবে কাল অফিস তো, তাই বেশি দেরী করে ঘুমোলে..। - শুয়ে থেকেও ঘুমোতে পারছিস কি আদৌ? বরং খামোখা আরও টেন্স হয়ে পড়ছিস। একটু অন্যদিকে মন দিলে ঘুমটা আসবে বরং। বই না পড়িস, গান শোন। নিদেন পক্ষে পায়চারি কর খানিকক্ষণ৷  - নাহ্, গান বা হাঁটাহাঁটির চেয়ে বরং বইই ভালো৷ একটা চমৎকার বই পড়ছি, জানিস দাদা৷ শেষের দিকে আছি৷  - কোন বই রে পিলু? - টারা ওয়েস্টওভারের আত্মজীবনী,  এডুকেটেড৷ বেশ ইন্সপ্যায়ারিং৷ আর কয়েক পাতাই বাকি আছে৷ সে'টাই বরং শেষ করি গিয়ে৷  - সেই ভালো৷ ঘুম নিয়ে যত টেন্স হবি, ঘুম তত কাঁচকলা দেখিয়ে দূরে সরবে৷ তার চেয়ে এই ভালো। - নাহ্। বিছানায় শুয়ে ছটফট করার চেয়ে এই ভালো৷  - তবে! বললাম তো৷  - তা হ্যাঁ রে দাদা, তুই এই অসময়ে এ'খানে যে? - ভেবে দেখ দেখি৷ আমি কেন এসেছি।  - এক মিনিট৷ সত্যিই তো! তুই কেন এসেছিস? দাদা? - কেন এসেছি? তোর টানেই যে ভাই৷  - দাদা, তোকে আমি দেখতে পারছি কেন? তোকে তো আমার দেখতে