Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2015

প্যারালাল

- লাইফ আফটার ডেথ্‌য়ে বিশ্বাস থাকাটা বিজ্ঞান বিরোধী বলছ? - অফ কোর্স। যার প্রমাণ নেই, তার অস্তিত্ব নেই। - এক সময় তো আমাদের পরিচিত ভূমণ্ডলটারও কোন প্রমাণ আমাদের ল্যাবরেটরিতে ছিল না হে। - সেটা প্রাগৈতিহাসিক সত্য। কিন্তু তার পর থেকে বিজ্ঞানের প্রোগ্রেস্‌ অভাবনীয় গতিতে হয়েছে সেটা ভুললে চলবে না। এখন অন্তত আমাদের কাছে যুক্তির জমিটুকু তৈরি আছে। থিওরি বল আর কল্পনা, সমস্ত সেই জ্ঞানের জমির ওপরেই খাড়া করতে হবে তোমায়। আর মৃত্যুর পরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে কোন থিওরি বা কল্পনা সেই যুক্তিগ্রাহ্য  জমির ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না।  - কে জানে! সমস্ত সত্যই কী যুক্তির ওপর দাঁড়িয়ে?   - আলবাত। থাকতেই হবে। - তর্ক করতে মন চায় না বাপু।   - তর্কের যে স্কোপ আছে বলে তোমার মনে হচ্ছে, সেটাই আমায় অবাক করছে। এ এক অদ্ভুত প্রেজুডিস্‌। - আমার প্রেজুডিস? আর তুমি যে গোটা ব্যাপারটাকে একদম হতেই পারে না বলে উড়িয়ে দিচ্ছ, এটাও কী বিজ্ঞানভিত্তিক প্রেজুডিস নয়? - অর্থাৎ তোমার ধারণা আমরা মারা গেলে নশ্বর দেহ ধারণ করি; এই বোগাস আইডিয়াটা বেস্‌লেস অর্বাচীন নয়? - আপাত দৃষ্টিতে তাই।

শেল্টার

১।  কমল মিত্র কণ্ঠ - ডেলি প্যাসেঞ্জারি করবে অথচ কল ব্রে বা ট্যুয়েন্টি নাইন খেলবে না? উত্তম কণ্ঠ - আমার তাস খেলতে ভালো লাগে না। কমল মিত্র কন্ঠ - তাস খেলতে কেন ভালো লাগবে! আনসোশ্যাল উজবুকের মত এমপিথ্রি প্লেয়ারের ইয়ার ফোন কানে দিয়ে থাকাটাই তোমার কাছে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। উত্তম কন্ঠ - ইয়ারফোন আর এমপিথ্রি প্লেয়ার সম্বন্ধে আপনার এ ধারণা ভুল। কমল মিত্র কণ্ঠ - চুপ কর উজবুক। তোমার লজ্জা করে না আমাদের তাসের আড্ডায় পার্টিসিপেট না করে রোজ রোজ আমাদের এরিয়ার উইন্ডো সীটের শেল্টার নিতে? উত্তম কন্ঠ - তাহলে আপনি বলতে চাইছেন তাস না খেললে আপনার শেল্টারে থাকা যাবে না? কমল মিত্র কণ্ঠ - বলতে চাইছি না; বলছি। ২। -প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে। -ফুটপাথে শুয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে বেশ লাগে রে ভাই। গেয়ে যা। -রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইছি না হে। এই মাত্র দুঃস্বপ্ন দেখলাম একটা। হম আপকে হ্যায় কউন সিনেমার নায়ক চুপচাপ গাড়ি নিয়ে ফুটপাথে উঠে এসে আমাদের বুকের ওপর দিয়ে চলে গেল। তাই বোধ হয় বিড়বিড় করছিলাম। -প্রেম ফুটপাথে নেমে এলে? -ডাইরেক্ট।  -ভেবে লাভ নেই ভাইটি।  -তা তো বটেই। ইয়ে, আমরা কী ভাস

চুপচাপ

- কী রে প্যালা, চুপচাপ একলা বসে? মন ভালো নেই? - না। নেই। - কেন? কুমড়োর ঝোল দিয়ে ডিনার সারতে হয়েছে বলে? - না। - ছেলে জিওগ্রাফি ক্লাস টেস্টে কম নম্বর পেয়েছে? - না। - পুজোর ছুটি ক্যানসেল করতে হয়েছে কোন কারণে? - না। - বৌয়ের সাথে ঝগড়া করেছিস? - না। - অফিসে মান্থ এন্ড সেল্‌স প্রেশারের ঝামেলা চলছে? - না। - মাসীমা বা মেসোমশাইয়ের শরীর-টরীর খারাপ হয়নি তো? - না। - কবিতা লিখছিস? - না। - আমার বায়প্সি রিপোর্ট হাতে পেয়েছিস? - আহ! আজকাল তুমি বড্ড বেশি প্রশ্ন কর টেনিদা।

মেনু

- কী ব্যাপার , অত মন দিয়ে কী লিখছিস রে ? - কবিতা । - রিয়েলি ? - ইয়েস মিস চ্যাটার্জী । রিয়েলি । - ছন্দ মিলিয়ে না আধুনিক ? - আকাশে মেলেছি খাম , পড়ে আছে নুড়ি পাথর - হিমেল হাওয়ায় বুক জমে প্লাস্টিক । - এ তো জালি । - অতএব আধুনিক । - সিরিয়াসলি পাপাই । বল না , কী লিখছিস । - আবৃত্তি করলাম তো রে । ওই আকাশে মেলেছি খাম ... । - আরে থাম থাম থাম । - শুনবি ? কী লিখছি ? - বলতে চাইলে বল । - শোন । এক নম্বরে নুন । দুই নম্বরে লেবু । তিন নম্বরে স্যালাড । চার নম্বরে সস । পাঁচ নম্বরে ফিশ ফ্রাই ; জেনুইন ভেটকি । ছয় নম্বরে চিকেন পকোড়া । সাত নম্বরে সাদা ভাত । আট নম্বরে মাছের মাথা দিয়ে মুগের ডাল । নয় নম্বরে ফুলকপির রোস্ট । দশ নম্বরে বেগুনী । এগারো নম্বরে পটল চিংড়ি । বারো নম্বরে ভাত রিপিট । তেরো নম্বরে ইলিশ ভাপা । চোদ্দ নম্বরে পোলাও । পনেরো নম্বরে পাঁঠার কষানো ঝোল । ষোল নম্বরে পেঁপের প্লাস্টিক চাটনি । সতেরো নম্বরে পাঁপড় । আঠেরো নম্বরে লেডিকেনি । উনিশ নম্বরে কে সি দাস য

প্রেসক্রিপশন

-    কিন্তু আপনি এই সমস্যাটা নিয়ে আমার কাছে এলেন কেন মলয়বাবু? -    বলে রাখি, আপনি আমার সাইকিয়াট্রিস্ট বলে আপনার কাছে এসেছি; তেমনটি ভাববেন না ডাক্তার সেন। আমি এসেছি কারণ আপনি স্মার্ট, ইন্টেলিজেন্ট, প্র্যাক্টিক্যাল। আমায় অনেকদিন ধরে চেনেন। অনেক কাছ থেকে চেনেন। আপনি জানেন যে আমি আপনার কাছে আসি মাথার ব্যারাম নিয়ে নয়, সমস্যা নিয়ে। আপনার কাউন্সেলিংয়ের ওপর আমার ভরসা আছে। -    আমার কখনও মনে হয় না আপনার মাথার ব্যামো আছো। -    সেটাই আমায় নিশ্চিন্ত করে। তাই এবারের সমস্যাটাও আপনাকে এসে বলেই ফেললাম। -    টেকনিক্যালি। এটা সমস্যা নয়। একটা প্রসেস নিয়ে কন্‌সাল্ট করতে এসেছেন মাত্র।তাই তো মলয়বাবু? -    তা ঠিকই বলেছেন। আই জাস্ট নিড আ ডিফারেন্ট অ্যান্ড গ্র্যাজুয়াল প্রসেস। -    কিন্তু এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা যে আমার একদমই নেই মলয়বাবু। আফটার অল আমি কোনদিন নিজে এর আগে সুইসাইড অ্যাটেম্পট্‌ করিনি। কিছু সুইসাইডাল টেন্ডেন্সি বয়ে বেড়ানো মানুষের সাথে আগে কথা হয়েছে সেটা ঠিক। কিন্তু সুইসাইড করার সহজ ও গ্র্যাজুয়াল প্রসেস; এ ব্যাপারে কী আমি পারব আপনাকে গাইড করতে? -    আপনি পারবেন। আপনার মত শার্প

রবিন ও সোমলতা

রবিনবাবুকে ফোনটা ধরতেই হল। -হ্যালো। -কী ব্যাপার রবিন? ফোন ধরছ না কেন? -সোমলতা প্লীজ। কেন এভাবে বারবার ফোন করছ? -আমি আসছি। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আসছি। -জানি তো আসছ। জানি আমায় শেষ করে দিতে আসছ। কিন্তু এই শেষ কয়েক ঘণ্টা অন্তত আমায় আমার মত থাকতে দাও। -আমায় ভুলে থাকবে? -কয়েক ঘণ্টা; প্লীজ সোমলতা। -আমি যে তোমাকে আমায় ভুলে থাকতে দেব না সোনা। -এখন প্রায় বেলা বারোটা সোমলতা, আর তো মাত্র বারো ঘণ্টা। এরপর সবটুকুই তো তোমার। -জানি। তবু। এই কয়েক ঘণ্টায় তুমি আমার কথা ভাববে না এ কী করে হয় রবিন? -ভয় হচ্ছে সোমলতা। -প্রতি হপ্তায় মরেও মৃত্যু ভয়?  -হপ্তায় হপ্তায় মারা যাওয়া তো তোমারও অভ্যাস সোমলতা। -হাউ স্যুইট অফ ইউ টু থিঙ্ক সো রবিন। আমিই সমস্তটুকু, সেটা জানো না? আমি মরতে পারি না যে। আমি মরার ভান করি যাতে হপ্তায় হপ্তায় তোমায় কফিন থেকে টেনে তুলতে পারি গো! আর তোমার এই সন্ত্রস্ত দেহটাকে বারবার কফিনে শুইয়ে দিয়ে যে আমি কতটা মজা পাই; তা তো তুমি জানোই।  -সোমলতা প্লীজ। -আর বারো ঘণ্টা রবিন। আমি আসছি।    

শনিবারের ডেট্‌

- তুই ভাবতে পারছিস? কাল আমাদের বিয়ে? - নাঃ! - তুই এত আনরোম্যান্টিক কেন রে? সবসময় কাঠ কাঠ উত্তর। - এমনিই। - কাল আমাদের বিয়ে অর্ঘ্য। বিয়ে!!!!!!! এটা আমাদের শেষ শনিবারের ভিক্টোরিয়ার বেঞ্চিতে বসে বাদাম চেবানো ব্যাচেলর ডেট! তুই একটানা গুম মেরে থাকবি? -হুম! - তুই অসহ্য। - জানি। - প্লীজ কথা বল না রে। সময় চলে যাচ্ছে। - বলছি তো। - কই বলছিস? অমন গুম মেরে থাকিস না রে! - তাই তো। গুম মেরে থাকাটা অনুচিত। - কথা বল। প্লীজ বল। হাত ধর। যেমন রোজ চুমু খাওয়ার বায়না করিস আজও কর না। আমি যেমন রোজ মুখে বেঁকিয়ে না করি, তেমন আজও করব। - পারব না আজ। - তোর চোখে জল? - কেন? তোর মত হাউ হাউ করে সিন ক্রিয়েট না করলে চলছে না? - আজ কেঁদে সময় নষ্ট করতে চাইছি না রে। চুমু খাওয়ার বায়না কর না প্লীজ। আজ হয়তো রিফিউজ করব না? - কাল বিয়ে বলে? - হয়তো। তুই এমন গুমোট হয়ে বসে থাকিস না। - আসলে কোইন্সিডেন্সটা বড় ডিস্টার্বিং রে। কাল আমাদের বিয়ে। কিন্তু বিয়ে হচ্ছে দু'পিস। চার সেট মালা। এক পিস এক্সট্রা বৌ, এক পিস এক্সট্রা বর। কোনও মানেই হয় না। জাস্ট কোনও মানে হয় না।

শনিবারের অফিস

- স্যার, একটা কথা ছিল। - আবার কী কথা শুভ্র? আই টোল্ড ইউ। গেট দ্য এম-আই-এস রেডি এস্যাপ। - না মানে...কথা তেমন নয়। জাস্ট একটা চিঠি দেওয়ার ছিল। - চিঠি? হোয়াট চিঠি? - ওই। রেসিগনেশনের। - রেসিগ...? হোয়াট? চালাকি করছ নাকি? - না স্যার। সিরিয়াস। - কী ব্যাপার? টেল মি ক্লিয়ারলি। আই ডোন্ট হ্যাভ টাইম ফর দিস ননসেন্স। - না মানে। এই ভাবে প্রতি উইকেন্ডে আপনি অফিসে ডেকে নেবেন। আমার একটা ফ্যামিলি লাইফ আছে স্যার। এটা চলতে পারে না। - হোয়াট দ্য হেল ইজ দ্যাট সাপোজ্‌ টু মিন শুভ্র? আমিও অফিস আসি উইকেন্ডে। - আপনি আসেন কারণ আপনার ফ্যামিলি অন্য শহরে থাকে। ইউ হ্যাভ নাথিং টু ডু হিয়ার সিন্স ইউ আর আ ফোর্সড ব্যাচেলর। কিন্তু আমার ফ্যামিলি আমার সাথে থাকে। অদরকারী কাজের জন্য হুড়মুড় করে শনি রবি অফিস আসা। টূ মাচ স্যার।  -ইউ আর অ্যান ইডিয়ট। আমার আর কিছু বলার নেই। তোমার মত লোক আসবে যাবে, কোম্পানি ডাজন্‌ট বদার। যদি তুমি ভেবে থাক যে আমায় ব্ল্যাকমেল করবে দেন লেট মি টেল ইউ ইউ আর মেসিং উইথ দ্য রং পার্সন। - মেস্‌ টেস্‌ করছি না স্যার। যাক। কথায় কথা বাড়ে। আপনি অকারণে উত্তেজিত হচ্ছেন।