Skip to main content

Posts

Showing posts from August, 2018

পাসওয়ার্ড

- যাক বাবা, জ্ঞান ফিরল তবে আপনার ডক্টর সামন্ত। আমি তো ঘাবড়েই গেছিলাম। দুম করে অক্কা পেলে একটা বিশ্রী ব্যাপার হত। - যন্ত্রণা! - ডান হাতের আঙুলগুলোর সমস্ত নখ উপড়ে ফেলেছি ডাক্তার৷ সামান্য যন্ত্রণা তো হবেই। তবে অজ্ঞান হওয়াটা বাড়াবাড়ি।  যা হোক, কম্পিউটারের পাসওয়ার্ডটা এ'বার বলবেন? নাকি বাঁহাতটা ডান হাতের সঙ্গে ম্যাচিং করে দেব? - কতবার বলেছি আমার কম্পিউটারের পাসওয়ার্ড বলব না? আপনি এমন নিরেট কেন? - ধুস। আবার চিমটে গরম করতে হবে? - লে হালুয়া। বলছি তো, পাসওয়ার্ড বলব না৷ আগেও পই পই করে বললাম তবু শুনলেন না, পটপট করে নখ উপড়ে গেলেন। এমন গবেট হয়ে গুণ্ডামি করতে অসুবিধে হয় না? - চোপ হারামজাদা। - আবার ভাষার বহরও তেমনি। আনুন আপনার চিমটে। ও কম্পিউটার আপনার দ্বারা খোলা হবে না৷ আপনি এই ছিঁচকেমোই করে দিন কাটিয়ে দিন৷ এই, মাধ্যমিকে কত পেয়েছিলেন বলুন তো? - আমার আর কোনো উপায় নেই, আপনি এত কাঠি করছেন যে এ'বার আপনার চোখ না খুবলে উপায় নেই। - আরে ধ্যার। পাসওয়ার্ড বললাম তো। মহাঝামেলা। - কী বললেন? - বলব না। - জিভ টেনে ছিঁড়ে নেব। - যাব্বাবা। আপনার মাথায় কি ছিঁট আছে? - পাসওয়ার্ড বলবি বুড়ো? ওই মান

তেলাপিয়া

- আইয়ে বেগমসাহিবা, আইয়ে।  - কী ব্যাপার? মেজাজ চনমন? - রীতিমত। হাতের কাছে কাগজ কলম থাকলে কবিতাঠবিতাও লিখে ফেলতে পারতাম। বাড়ির পাশে এভারেস্ট থাকলে সামিটে গিয়ে আনন্দবাজার পড়তাম।  - সর্বনাশ! ব্যাপারটা কী? বারো নম্বর টিউশানি জোটালে নাকি? তা'হলে তো কেল্লা ফতে, বাপুজি কেকে মোরব্বার টুকরো। - গোটাদিন অফিস অফিস করে তোমার মেজাজটা একদম মার্সিনারি হয়ে গেছে। যাচ্ছেতাই৷ গা জ্বালানো। - তা'হলে কী ব্যাপার জনাব? গোপন প্রেমিকাট্রেমিকা কেউ? গোলাপি কাগজে চিঠি লিখেছে? - আমি স্পেসশিপে বার্থ রিজার্ভ করেছি আর তুমি পড়ে আছ হাওড়া স্টেশনের লোকাল ট্রেনের টিকিটের লাইনে। - অফিস থেকে সবে ফিরলাম। সাসপেন্স সহ্য হচ্ছে না৷ ব্যাপার কী? মেজাজ এমন ফুরফুরে? খোলসা হোক।  - আজ বাজার গেছিলাম। রুটিন বহির্ভূত ট্রিপ। আর তারপর রান্নাঘরে একটা ম্যাজিকাল স্পেল। আজ আর রুটি আলু চচ্চড়ি নয়৷ ও'দিকে ইয়ে শাম থা মস্তানি আর এ'দিকে রাত শবনমি। - মাসের মধ্যিখানে এত নবাবি? স্পেশ্যাল বাজার সফর? রান্নাঘরে আলু চচ্চড়ির বদলে সারপ্রাইজ?  - মেগা সারপ্রাইজ। - বলো না গো, আরো টিউশনি পেয়েছ? -

দরদাম

দরদাম করাতে বাবার জুড়ি নেই। বাবার বিশ্বাস কাস্টোমার দরদাম না করলে মার্কেট বখে যায়। চশমায় নতুন লেন্স বসানোর জন্য বেশ ঝলমলে গ্লোসাইনওলা একটা দোকানে নিয়ে গেলাম বাবাকে। লেন্স ঠিকঠাক হল। শৌখিন সুরে 'ইয়েস স্যার' 'রাইট স্যার' বলা সেলসপার্সন শুধোলেন; - "বিল করি স্যার"? - "কেন"? বাবা সুট করে কাউন্টার করল। সেলসদাদা ঠিক তৈরি ছিলেন না। - "এই যে স্যার, পছন্দ করলেন। এই লেন্স। বিদেশী। বিল করি"? - " পছন্দ করেছি, তা বলে বিল করবেন কেন"? - "করব না"? - " দাম ঠিক হোক"। - " ওই যে বললাম স্যার। দশ পার্সেন্ট অন এম আর  পি"। - "ওহ৷ না৷ দশ পার্সেন্টে নেওয়া যাবে না"। - " আমাদের ফিক্সড রেট স্যার। ওই যে দেখুন৷ দেওয়ালে লেখা আছে"। - "রাইটিং অন দ্য ওয়াল"। - " ইয়েস স্যার, বিল করি"? - "আপনারা কখনও দরদাম করেন না"? - "নেভার স্যার। রেপুটেশন আছে আমাদের একটা। আমি আপনাকে আমাদের বিলবই দেখাচ্ছি। নিজের চোখে দেখুন"। - "লাস্ট দু'তিন বছরের বিল বই দেখব। মিনিমাম দুই&qu

বরফি ও ইলিশ।

বরফি। শ্রুতি। বরফির শ্রুতি। ঝিলমিলের 'বরফি' ডাক শুনে ঘুরে দাঁড়ানো শ্রুতি। টাইমিং-ঠাইমিং ক্রিকেট মাঠে দিব্যি থাকে। জীবনে মিডল অফ দ্য ব্যাট বলে কিছু না থাকলেও ইনিংস দাঁড়িয়ে যায়, এবং সে কারণেই বরফি সিনেমাটা মূলত শ্রুতির গল্প। আর গান। আর শ্রুতির দার্জিলিংয়ের বাড়ির সামনে বরফির সাইকেলে লাথি। আর গান। আর কলকাতায় 'ফির লে আয়া দিল'য়ের সুরে শ্রুতির ঝিলমিল-বরফিকে দেখা। আর গান।  বছরে বার-দুয়েক বরফি দেখে মনমেজাজ ম্যারিনেট করে নেওয়া উচিৎ। ইলিশ। মা যে কদ্দিন গান গাইতে বসে না। হারমোনিয়ামটা ডকে। ছেঁড়া লাল মলাটের গানের খাতাটাও কদ্দিন দেখিনা। বিন্দু বিন্দু জলের মত হাতের লেখায় নজরুল আর রজনীকান্ত; খাতার শুরুতে আর শেষে ফাউন্টেন কলমে আঁকা আল্পনা। আজ রাত করে ফিরে বললাম 'খেয়েদেয়ে এসেছি'। মা বললে 'তবু, এঁটো মুখ না করলে ঘুম আসবে নাকি'?  আমাদের সাংসারিক হুজ্জুতি, অবুঝ দাবীদাওয়া আর স্টার জলসা মিলে মায়ের গাইতে বসা বন্ধ করলেও, মায়ের থেকে সুর কেড়ে নিতে পারেনি।

সিরিয়ালিটি

খুব ড্রামাটিক একটা বাংলা সিরিয়াল হচ্ছে। কনেযাত্রীর কেউ দামী ফুলদানি ভেঙেছে বলে বরপক্ষের এক বৌদিদি বেদম হল্লা করছেন। "ওরা কি জানে ভাসটার দাম কত"? নতুন বৌ অপদস্থ হচ্ছেন। বরপক্ষের ফুলদানি-বিরোধী মানুষরা বৌদিদিকে ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করছেন কিন্তু বৌদিদিকে রোখা যাচ্ছে না; 'আনকালচার্ড' গোছের গালিগালাজ করে ভার্বাল স্টেনগান চালিয়েই যাচ্ছেন। ঘ্যাম,ড্রামাটিক, টানটান; কিন্তু এক তরফা। ঠিক এই মুহূর্তে মিস করছি রঞ্জিত স্যরকে। বরপক্ষের সৎ নির্ভীক মেজকাকা হিসেবে রঞ্জিত স্যর অ্যাটাকিং বৌদির পায়ের তলা থেকে স্যাট করে কার্পেট সরিয়ে নিতে পারতেন। মনে মনে সিটি দিতাম, সোফাকুশন খামচে বলতে পারতাম "দ্যাখ তবে মজা"। যাহোক, অঞ্জনস্যরের সিনেমার আগুন সে স্ক্রিপ্টও নেই; সেই রঞ্জিত স্যরের চাবুক কামব্যাকও নেই। অগত্যা কেন্ট আরওর বিজ্ঞাপন দেখে মন শান্ত করতে হচ্ছে।