Skip to main content

Posts

Showing posts from October, 2018

বেহালার সুর

কী অদ্ভুত। এই একটানা বিশ্রী গোলাগুলির গুড়ুম গুড়ুম। চারদিকে  বিকট চিৎকার। আর ঢেউয়ের মত আছড়ে পড়া সৈন্যদের বুটের বুকভার করা মসমস শব্দ। এই সব ছাপিয়ে কী ভাবে যেন একটা বেহালার সুর মাথাচাড়া দিয়েছিল। অদ্ভুতই বটে। বহুক্ষণ কোনো জ্ঞান ছিলনা য়মনতের। যখন জ্ঞান ফিরল তখন মুখে কড়া রোদ্দুর, গোটা পিঠ রক্তে ভেজা। দু’টো বুলেট; একটা পিঠে আর অন্যটা ডান পায়ে। যন্ত্রণার ভার কিছুটা লাঘব হচ্ছিল অপার ক্লান্তিতে; যন্ত্রণা অনুভবের শক্তিটুকুও হারিয়েছিলেন য়মনত। একটা স্বস্তির কথা; শত্রু সৈন্যের হাতে বন্দী হতে হয়নি, নয়ত যে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হত তার কাছে মৃত্যুও নস্যি।  মাথা তোলার একটা মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন য়মনত, লাভ হয়নি। তীব্র পিপাসার জ্বালা শরীরের অন্যান্য যন্ত্রণা আর ক্লান্তিকে ম্লান করে দিচ্ছিল। আর কী কাণ্ড; এই এতকিছুর মধ্যে বেহালার সুরটা কানে বুকে দিব্যি নেচে বেড়াচ্ছিল।  য়মনত ঠিক সঙ্গীতের সমঝদার নয়। তবে বেহালাটা বড় মিঠে ঠেকছিল কানে; সে মিঠে স্বাদের সুরে সামান্য মনখারাপ মেশানো। বাড়ির সুবাস মেশানো, মায়াময়, তুলতুলে। গোলাগুলির শব্দ আর হাহাকারের মধ্যিখানে বড্ড বেমানান।   সুরটা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছ

নবা ও জগা

- নবা রে। আর এক পিস রোববার। গন্। - এই আবার শুরু হল। এখনও দুপুরের খাওয়াটাও তো হয়নি। রোববার রীতিমত জলজ্যান্ত। স্নান করতে যাও জগাদা। - লাঞ্চ। তারপর ঘণ্টাখানেক গড়িয়ে নেওয়া। তারপরেই বুকের মধ্যে ধড়ফড়। সকালের অ্যালার্ম লাগাও রে। জামা ইস্তিরি করো রে। জুতো পালিশ করো রে৷ মেসের এই জলডাল আর চালানি রুইয়ের ঝোলে মাখা ভাত গেলা। তারপর মিনিবাসের চটকানি। অটোর বিষাক্ত লাইন। বসের খ্যাচরম্যাচর। ফাইলের চালাচালি। ধুর। - স্নান করতে যাবে না আমি যাব? - ও মা। তুই যাবি কী রে। গতকাল বাথরুমে তুই আগে গেলি। আজকে যে রস্টারে আমার নাম। - তা'হলে যাও না। খামোখা ঘ্যানঘ্যান করে সময় নষ্ট করছ কেন? - তুই একটা পাষাণ রে নবা। রোব্বারের চানে কাউকে তাড়া দিতে আছে? পরের জন্মে নিরামিষভোজী হয়ে জন্মাতে হবে যে। - ও মা। তা'তে ক্ষতি কী? দিব্যি ছানার ডালনা আর আলুপোস্ত দিয়ে হাপুসহুপুস করে খাব'খন। শেষ পাতে টমেটো আমসত্ত্বের চাটনি। প্লাস ওয়ান পিস রসগোল্লা। ওয়ান? না। দু'টো। - নেহাত অবজেকশনেবল কিছু বলিসনি। তবে অবলা পাঁঠাগুলোকে মাঝেমধ্যে মুক্তি না দিলে যে এই পাপের দুনিয়ায় তাদের অন্তরাত্মা পচে মরবে। - জগাদা। লেনি

ফিল্টার

- আসুন। আসুন। - আমাকে কেন ডাকা হল...? - ওহহো, প্রতিবাদে অভ্যস্ত।  হুঁ? কথায় কথায় প্রশ্ন? - না সে'ভাবে বলতে চাইনি...। - প্লাস ডিফেন্সিভ। চট করে ব্যাকফুটে। ইন্টারেস্টিং কম্বিনেশন৷ ভেরি ইন্টারেস্টিং। - আমি শুধু বলতে এসেছিলাম যে..। - সবাই শুধু বলতেই আসে। কিন্তু দু'টো কথা বলতে দিয়েছ কি টালবাহানার বাক্স খুলে বসে৷ আর বলবেনটাই বা কী! সবই তো ধান্দাবাজি। তাই না? - শুনুন স্যার, আপনার ভুল হচ্ছে। - মাই গুডনেস। আমায় আপনি বড় জোর মিনিট দুয়েক হল দেখেছেন, এর মধ্যেই আমার ঠিক ভুল বুঝে ফেললেন? আরে মশাই লোকে ফ্রয়েডে সাঁতার কেটেও মানুষের হাবভাব বুঝতে গিয়ে হিমশিম খায়৷ কী ওভারকনফিডেন্স। - এই শুনুন, আপনি না বড্ড বেশি কথা বলেন। - খবরদার! খবরদার! মুখের ওপর বেয়াদবী? বেরিয়ে যান। এখুনি। আমার চোখের সামনে থেকে দূর হয়ে যান। - আরে! ধুর। আপনি যা ভাবছেন আমি তা নই। - আপনি তা নন মানে? স্পষ্ট তাই। - তাই তো বলছি। ভুল করছেন। আপনি যাকে খুঁজছেন, সে বাইরে দাঁড়িয়ে আপনার অপেক্ষা করছি৷ - ও মা! সে কী! ছিছিছি! বোঝো কাণ্ড৷ তা আপনি কে? ওকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন কেন? - সে'টাই তো নিয়ম স্যার। বইয়ের অন্তরের নাগ