সে সময়টা সপ্তাহে অন্তত তিনদিন সন্ধ্যাবেলা মা গাইতে বসতো। সন্ধ্যাবেলা, সন্ধ্যে দিয়ে।বিছানার এক কোণে মা। সামনে হারমোনিয়াম। ডায়াগোনালি অন্য কোণে আমি, বাবু হয়ে বসে। ক্লাস সিক্স বা সেভেন। হাফ প্যান্ট। ঘরের কোণে চেয়ারে ঠাকুমা। ঢুলছে। শ্রীকৃষ্ণের একশো আট নাম আধোঘুমেও বিড়বিড় করে চলতো। আমার ডাকনাম দিয়েছিল গোপাল। হরিনাম যত মুখে আসে তত নাকি ভালো। স্নেহ উথলে উঠলে গোপালের আগে নাড়ু প্রি-ফিক্স হয়ে যেত। স্মৃতির ছক সাজাতে বসলে মায়ের কালচে সবুজ ছাপার শাড়িটাই মনে পড়ে। বাটিক প্রিন্টের বিছানার চাদর। ঘরময় ভারতদর্শন ধুপের সাথে অল্প ধুনো মেশানো মেজাজ। মায়ের হারমোনিয়ামের বয়স আমার চেয়ে অনেক বেশি, মা ছোটবেলায় ওটাতেই গান শিখেছিল। বিয়ের পর বাক্স-প্যাঁটরার সাথে ওটাও মায়ের সাথে এ বাড়িতে আসে। হারমোনিয়ামের ওপর খোলা মায়ের গানের খাতা। খাতাটাও মায়ের ছোটবেলার – আধ-ছেঁড়া, লাল বাঁধাইয়ের।