Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2016

রাজার দুঃখ

ঝড় মাথায় করে উঠে দাঁড়ালেন রাজা। থুড়ি। ঠিক দাঁড়ানো নয়, ব্যাপারটা ওড়া আর ভাসার মাঝামাঝি। রাজা আলগা করে দিলেন মনের যত ছিটকিনিগুলো। আহ! বড়ই যন্ত্রণা। এত কিছু হলো, তবু যন্ত্রণা উড়ে গেলো না।  খানিকক্ষণ বাতাসে পতপত করে ওড়ার পর একটা তালগাছের মাথায় ঠেকে খানিক ফোঁস করলেন তিনি।  রাজা বলে কথা। রাজার দায়িত্ব কি কম? প্রজাপালন, দেশের ভালো, দশের ভালো, দশের ভালোবাসা, দশের মঙ্গল।  আহা! এহেন রাজার কি দু'দণ্ড জিরিয়ে নেওয়ার যো আছে ভাই? কত কাজ তার! কত মন ভালো করা কাজ আছে রাজার হাতে। নাওয়াখাওয়ার সময় থাকবে না; নজরে শুধু এর ভালো আর ওর ভালো! তবেই না রাজা! তবেই না রাজার মত রাজা! তালগাছের মাথায় হাওয়া সামান্য বেশি, বাতাসের ভেজা ভাব সামান্য কম। অন্ধকারে নরমের ছ্যাঁত আরও বেশি। এ পরিবেশে চিন্তার দল পরিপুষ্ট হয় আর রাজার বুকের ভার টুপটাপ বেড়ে চলে। বেড়ে চলে আফসোস।  "এ কী করেছি আমি? এ কী করেছি?", রাজার ছটফটানিতে তালগাছ মুচড়ে ওঠে।  ** - আপনিই আমাদের নতুন রাজামশাই? - হ্যাঁ। আপনি ঝাও? -  আজ্ঞে। আমিই।  - ইয়ে, ঝাও ব্যাপারটা ঠিক কী? বলবেন একটু বুঝিয়ে? - আমরা! মানে ভূতেরা নিজেদের

ট্র্যাভেল প্ল্যান

- দেবী, শোনো! - বলো! - মন দিয়ে শুনতে হবে কিন্তু। - অফ কোর্স। অফ কোর্স। মন দিয়ে। - কন্সেন্ট্রেট করতে হবে। কল্পনাকে প্রলিফারেট করতে দিতে হবে। - হবে। হবে। তাই হবে। - তার জন্য চোখ বুজে ভাবতে হবে। - চোখ বুজলাম। আমি কল্পনা-প্রস্তুত। এবার বলো। - বলি? - বলো! - মনে করো...সবুজ ঢেউ খেলানো একটা পাহাড়। পাহাড়ের বুকের কাছে মেঘ জমে। । - বাহ্‌। বাহ্‌। চমৎকার! স্পষ্ট দেখতে পারছি। - সেই পাহাড়ের মাথায় একটা কটেজ! মন খারাপ করা পুরনো গন্ধ সে কটেজের গায়ে। কাঠের মেঝে, স্নেহের জানালা।  - মিঠে রোদ সে কটেজের বারান্দায় লেজ গুটিয়ে নেমে আসে... তাই না? -এইতো দেবী। তোমার কল্পনা ফ্লোট করতে শুরু করেছে। - তারপর? - সে কটেজ থেকে পঞ্চাশ মিটার মত হেঁটে গিয়ে একটা সবুজ কাঠের বেঞ্চি। সে বেঞ্চি থেকে সামান্য এগোলেই খাদ।  - দারুণ! আমার হাততালি দিতে ইচ্ছে করছে।  - চোখ খুলো না তাই বলে! সেই আদুরে বেঞ্চি আলো করে তুমি বসে। তোমার হাতে আশাপূর্ণা দেবী।তোমার হাতে কফির কাপের ধোঁয়াময়তা।  - আনন্দে গলে যাবো তো গো। - আরও আছে, সবুজ পাহাড়ের অন্য প্রান্তের সুদূর সফেদ করে দাঁড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা আর তার সাঙ্গপাঙ

ঘিলুপাড়ার পোস্টমাস্টার

-           পোস্টমাস্টারদা। ও পোস্টমাস্টারদা। শুনছেন? বলি ও...। -           ধ্যাত্তেরি। দুপুরের বেলায় অল্প জিরিয়ে নেবো তারও উপায় নেই। কী চাই? -           আমি হৃদয়পুর থেকে আসছি। -           অ। হৃদয়পুর থেকে আসা হয়েছে? তবে তো ভারি কাণ্ড করলে দেখছি। বলি মাথায় কুলো ঠেকিয়ে বরণ করতে হবে নাকি? মুড়ি বাতাসা জল দিয়ে দাওয়ায় বসাতে হবে? -           আহ! চটছেন কেন! এই দুপুর রোদে কেই বা সাধ করে বারো মাইল পথ ঠেঙিয়ে ঘিলুপাড়া পোস্টাপিসে আসতে চেয়েছিল। নেহাত বড়বাবু পাঠালেন, জরুরী তার। এখুনি না করলেই নয়। -           তার? টেলিগ্রাম? -           আর্জেন্ট। -           অ। তা নর্মাল আর্জেন্ট না সুপার আর্জেন্ট ? -           সুপার। যত তাড়াতাড়ি যায় আর কী। -           ডবল দাম লাগবে।  সত্যি না সাজানো? -           আজ্ঞে? -           বলছি তারের বয়ান সত্যি না সাজানো? -           সাজানো। -           বটে? চারগুণ দাম লাগবে। -           চারগুণ? -           চারগুণ। আর ইয়ে, সাজানো বয়ান লেখা আছে না কি আমায় সত্যি থেকে বদলে সাজিয়ে নিতে হবে? -           আমি চিরকুটে সত্যিটা লিখে এনেছি। আপনি একট

মৃণালবাবুর শেষ স্বপ্ন

নমস্কার। আমি মৃণাল দত্ত। আমি ঠিক আপনার সাথে কথা বলছি না। নিজের মধ্যে বিড়বিড় করছি। ওহ, বলে রাখা ভালো যে আমি নিজের মধ্যেই রয়েছি। এই যে লাল দেওয়ালের ঘর দেখা যাচ্ছে, এটা আমার সাবকনশাস্‌। এই সোফাটা, যেটায় আমি বসে আছি; সে’টা সম্ভবত সিমলার পি ডাবলু ডি গেস্ট হাউসের ড্রয়িং রুমে রাখা ছিল; কালো চামড়ার, বড় আরামের। নাইনটি সিক্সে ঘুরতে গেছিলাম; সেখানকার সোফা যে এইভাবে মরমে পশেছিল সেটা আজ মালুম হচ্ছে। যাক সে’সব নিয়ে ভেবে লাভ নেই। হাতে সাত মিনিট আছে স্বপ্নে জীবন রিভিউ করার জন্য। আচ্ছা আমি কি বলেছি যে আমি মারা গেছি? এই জাস্ট! ভুগছিলাম। এক্সপেক্টেড ছিল। কিন্তু সে’সব এখন আননেসেসারি ডিটেইলস। মোদ্দা কথা হচ্ছে মগজের একদম ভেতরটা এখনও সক্রিয় রয়েছে। থাকবে আরও সাত আট মিনিট। সে জন্যেই এই সোফা আর লাল দেওয়াল। ওই সাদা আলোর ফোকাসের সোর্সটা ধরতে পারছি না; চোখে পড়ছে বটে কিন্তু অস্বস্তি হচ্ছে না। সাবকনশাসে মনে হয় সিগারেটের প্রয়োজন নেই। পকেটে বাক্স নেই দেখলাম। যাক গে। হাতে যে কয় মিনিট আছে তাতে জীবনকে রিভিউ করে দেখে নিতে হবে। ইন দ্য ডিপেস্ট ড্রিম। না, না! এটা আমার শখ নয়। সায়েন্স। সাইকোলজি। বিভিন্ন আর্টিকেলে আমিও পড়েছি

নতজানু

চোখের জ্বালাটা ফের ফিরে আসছিল। বুকে পিঠের চামড়ায় অসোয়াস্তিকর চিটচিট। গলার ভিতরটা শুকিয়ে কাঠ। পায়ের গোড়ালি থেকে নিয়ে হাঁটু পর্যন্ত  অসহ্য টনটনে ব্যথা। কিন্তু হাঁটার গতি কিছুতেই কমাতে পারছিল না লোকটা।  পরনের ধবধবে সাদা জামায় ঘামে আঁকা ক্লান্তিস্তানের সাহসী মানচিত্র। গোটানো হাতার পরিসর ছাপিয়ে ক্লান্ত হাতের মুঠো সপাটে এগিয়ে, সে মুঠো আলগা হয়ে আসে না। পথের ধুলোয় ট্রাউজারের নিচের দিকটা লটপট। তবে এ হাঁটা অসাবধানতার, এ অসাবধানতা যন্ত্রণার। হাঁটার গতি শ্লথ হতে দেওয়া যায় না।  হাঁটার গতি কমার সাথে সাথে মাথার ভিতরের টিমটিমে ব্যথার টুকরোগুলো ফের জড়ো হয়। ফের। বুকের ভিতর থেকে একটা হাওয়ার দলা পাকাতে পাকাতে পাঁজরা বেয়ে গলা বুকে ছড়িয়ে পড়ে।  পায়ের পাতায় ব্যথা বাড়ার সাথে সাথে হাঁটার গতি বাড়তে থাকে, সাথে বুকের ধড়ফড়ানি। থামলে চলবে না। গঙ্গার পাশের রাস্তাটা কালচে হলুদ অন্ধকার থেকে অন্ধকারের নীলে মিশে যায়। অবিরাম। লোকটা থামতে পারছিল না কিছুতেই।  কিছুতেই না। যন্ত্রণাটাকে ক্যাপিটালাইজ করে দম ফুরিয়ে আসার সৎসাহসে গা ভাসিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল লোকটা।  ** - শাদি করোগি মুঝসে? - বাজে কথা হিন্দিতে বলি

ফেরত

ভরদুপুরের গন্ধটা মনে করার চেষ্টা করছিল দীপু। কাজটা সহজ তো নয়। এখন রাত। ছাদে পাতা মাদুরে বছরের এ'সময়টা দানা দানা শিরশির জমতে শুরু করে। বাতাসে ইতিউতি ভাসে পাশের বাড়ির মুসুরির ডালের ফোঁড়ন আর নিচ থেকে উড়ে আসা রিক্সার ক্যাঁচরম্যাচর  পোঁপাঁ। এ সময়ে এ মাদুরে গা এলিয়ে মনের মধ্যে দুপুর টেনে আনা চাট্টিখানি কথা নয়। তবু। দীপু চেষ্টা করছিল। ছোটমামার পাল্লায় পড়ে গত আড়াই মাস ধরে যোগব্যায়াম করছে দীপু। দিনে আধঘণ্টা করে। যোগার্জিত যাবতীয় কন্সেন্ট্রেশন মুঠো করে ধরে রাতের ছাদে দুপুর নামাতে চাইছিল দীপু। রাতের ছাদের শীতমনস্কতা অনেকটা পাশ কাটিয়ে দিতে পেরেছিল সে। বিলুদের মেজানাইন ফ্লোরের ঘরটার রোদ্দুর পিঠ অনুভব টানতে চাইছিল দীপু। আনন্দবাবু কেমিস্ট্রির মাস্টার হলেও, মিস্ট্রিতে তার মাস্টারি কম ছিলনা। তিনি বলেছিলেন "স্মৃতির বাজার! বুঝলে হে দীপুকুমার। বাপ মা বন্ধুরা সেখানে আনাজপাতির মত ঝুড়িতে ঝুড়িতে গিজগিজ করছে। এ মুহূর্ত হাঁকছে 'ইধর আইয়ে, ফ্রেশ হ্যায় সব কুছ"। তো ও মুহূর্ত স্মৃতির আনাজে জল ছিটিয়ে বলে "এদিকে আসেন কত্তা। দ্যাখেন! দ্যাখেন! টাটাকা কাকে বলে"। সে বাজারে। বুঝলে দীপুকুমার,

সেল্‌স

**প্রথমত** - হ্যালো টিএসএম নম্বর ওয়ান! - হ্যালো বস্‌। ইয়ে, কতবার বলেছি আমায় টিএসএম বলে না ডাকতে?  প্রেসিডেন্ট বলুন। সক্কলে আমায় প্রেসিডেন্ট বলে ডাকে। - উফ। এই ডেসিগনেশন ডেসিগনেশন করেই গেলে তোমরা। বলি এদিকে সেল্‌স ফিগার তো অল ডাউন সাউথ! - না মানে ইয়ে..., বস...মানে...ইয়ে...।  - ইয়ে মানে কী হে? ইয়ে মানে কী? স্টকের অবস্থা দেখা আছে? গোডাউন ভরাট, এক ইঞ্চি জায়গা নেই। সেল্‌স ফিগার প্রতি মাসে ওয়ান ওয়ে বাঞ্জি জাম্প দিচ্ছে।  - না মানে ইয়ে...। - বোঝ! আবার ইয়ে!।  শোন। ইনভেন্টরি কস্ট কোথায় গিয়ে ঠেকছে কোন আইডিয়া আছে? - ইয়ে...। - আর একবার ইয়ে বললে কোতল করব!  - ইয়ে...সরি।  - মনে দিয়ে শোন টিএসএম ওয়ান...।  - প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট বলে ডাকুন না।  - ধেত্তেরি ছাই। প্রেসিডেন্ট! মনে দিয়ে শোন। হাজার হাজার বোমায় ঘুণ, জং, ধুলো পড়ছে। বোমা ফ্যাক্টরিতে স্টকলস আমি বরদাস্ত করবো না। নেক্সট কোয়ার্টারের মধ্যে সেল্‌স ফিগার ইম্প্রুভ না করলে...চাকরী নট্‌ করতে হেসিটেট করব না কিন্তু। ডিয়ার প্রেসিডেন্ট...। মনে থাকে যেন!   - অমন কথায় কথায় থ্রেট কেন স্যার!  - থ্রেটের এ আর কী দেখলে! ব্যাটাচ্ছে

অর্ডার

- মাটন কষা আর কাজু কিসমিস পোলাও। - সাথে আর কিছু স্যার? - সাথে? - আজ্ঞে? - ইয়ে। সাথে। মানে। আর এক বাটি। - এক বাটি কী স্যার? - মাটন। অবভিয়াসলি। - তার আগে স্টার্টারে কিছু? - স্টার্টার? - ইয়ে স্যার...। তন্দুর বা...। - বাটি। ওয়ান মোর। আগে এক বাটি দিয়ে যান। পরে এক প্লেট পোলাও আর তার সাথে দু'বাটি। - ও। আচ্ছা। অর্ডারটা একবার রিপিট করছি স্যার। তিন বাটি মাটন। এক প্লেট পোলাও।  - এক বাটি আগে। পরের দু'বাটি অ্যালং উইথ পোলাও। -  আর ইয়ে...ডেজার্টে স্যার...আমাদের এখানের হট গুলাবজামুন বেশ পপুলার। কিংবা টুটিফুটি, জলেবি উইথ রাবড়ি...। - হেহ্‌। - স্যার? নো ডেজার্ট। - হেহ্‌। - সেখানেও বাটি?  - ওয়াটের সাহেব। বাটি ছাড়া। সমস্তই। ডেসার্ট।  - শুরুতে এক বাটি। পোলাওয়ের সাথে দুই। শেষ পাতে এক। রাইট স্যার? - ইউ ক্যান নেভার গো রঙ। ক্যুইক ক্যুইক। প্লিজ। 

স্পেশ্যাল স্কিল্‌স

- আইয়ে।  - আমি? - জী! সাহাব বুলায়ে হ্যায়। - আপনি শিওর? আমাকেই ডেকেছেন? - আপ হি অনির্বাণ মিত্রা, নহি? - হ্যাঁ, আমিই। কিন্তু...। কিন্তু আমার ইন্টারভিউটা খুবই খারাপ হয়েছিল। আমার সেকেন্ড রাউন্ডে চান্স পাওয়ারই কথা নয়...।  - অন্দর যাকে বোল দিজিয়ে। ওহি বাত। - আমাকেই ডাকা হয়েছে তো? - আইয়ে।  ** - অনির্বাণ...।  - আজ্ঞে মিত্র। মিট্টার লেখা, ইংরেজিতে।  - আপনি জানেন আপনাকে কেন ডেকেছি? - না। জানি না। ইন ফ্যাক্ট আর্দালিবাবুকেও তাই বলছিলাম। আমার সেকেন্ড রাউন্ডে চান্স পাওয়ারই কথা নয়। - এ'টা সেকেন্ড রাউন্ড অফ ইন্টারভিউ নয় অনির্বাণবাবু।  - তবে? - চা না কফি? - আজ্ঞে? - চা না কফি? না কোল্ড ড্রিঙ্কস? - চা।  - দুধ, চিনি?  - সমস্ত চলে। এবারে বলুন। চাকরী দেবেন না, কিন্তু তবু আমায় সকাল থেকে বসিয়ে রেখে দুপুরে আবার ডাকার মানেটা কী? - সেকেন্ড রাউন্ড ইন্টারভিউ নেব না বলেছি। চাকরী দেব না কে বলেছে? - মানে? - মানে দিজ জব ইজ ইওর্স।  - মাইন? আমার? হাউ? - আপনি বায়োডাটাতে স্পেশ্যাল স্কিল্‌সে লিখেছেন...আপনার ডানা আছে। আপনি প্রয়োজনে উড়তে পারেন। - ট্রু। কিন্তু এই

মাসাজ

নবরত্ন তেল দিয়ে পাড়ার সেলুনে মাথা মাসাজ করাচ্ছিলেন দত্তবাবু। বিধুর হাতের তালু আর আঙুলে তালবোধ আছে, মাথা থেকে আরাম উপচে ঘাড় বেয়ে নেমে আসে। প্রত্যেক শনিবার সন্ধ্যের রুটিন। দত্তবাবুর শুধু মনে হয় বিধুর বডি আর দুই হাতের সঙ্গে মাথাটাও যদি আসতো এ পোড়ো সেলুনে, তবে বেশ হতো। ওদিকে বিধুর আবার ঘোর আফসোস,  দত্তবাবু শুধু নিজের ঘাড় মাথা নিয়েই দুলতে দুলতে হাজির হন ফি শনিবার। বডি আনলে কী এমন ক্ষতি হত? মালিশ করতে করতে ঘাড় থেকে দিব্যি পিঠে নেমে আসা যেতো। ** নিমতলা বাজারের স্টাইলিশ জেন্টস সেলুনের মালিক বিধু দত্ত রেলে এমন ভাবে কাটা পড়েছিলেন যে মুণ্ডু উড়ে পড়েছিল দেড়শো মিটার দূরে। ফলে সে মুণ্ডু খুঁজে পাওয়া যায়নি, চিতায় চড়েছিল মুণ্ডুলেস ধড়। ** শেষ কাস্টোমারের খেউরি করে মাথা মালিশ করছিলেন বিধু দত্ত, তখনই বুকটা হুহু করে উঠলো। "আহা, কেউ আমায় যদি এমন নবরত্ন তেল দিয়ে মালিশ করে দিত হপ্তায় একবার। এমনটাই। যত্ন করে"। বুকের হুহু তাড়িয়ে মালিশে মন দিলেন বিধু দত্ত। আজ সকালে আবার তাড়াহুড়োয় বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় টর্চটা ফেলে এসেছেন তিনি, ফেরার সময় অন্ধকার রেলগেট পেরোতে বড় ঝকমারি।

মাসকাবারি

- হ্যালো। - কী ব্যাপার? কল করেছো কেন? - নিপা! আ স্মল হেল্প! - আমি রাখছি। - না, প্লীজ! এক্স ওয়াইফ হয়ে এতটুকু হেল্প করবে না? - সদ্য এক্স হাজব্যান্ড হয়ে তোমার এত সাহস হয় কোথা থেকে? - মাইরি। এসেনশিয়াল। - কী ব্যাপার? - বলছিলাম। ইয়ে। মানে মাসকাবারির গতমাসের ফর্দটা জেরক্স করিয়ে রেখেছিলাম। জানতাম এ মাসে দরকার হবে, সব আইটেম কোয়ান্টিটিতে ডিভাইডেড বাই টু করে নিলেই হলো। কিন্তু গতকাল পিক পকেট হয়ে সমস্ত প্ল্যান গড়বড় হয়ে গেলো বুঝলে! - বাই! - প্লিজ কেটো না। - লিস্ট হারিয়েছো! তো আমি কী করবো? - বেসিকগুলো বলে দাও। প্লীজ। - শাট আপ। আমি এখনও অফিসে। কোয়ার্টারলি রিভিউ। ফোন রাখো। - মাইরি। আমি ভেসে যাবো। - বাঁচব। তুমি ভেসে গেলে। - ক'কিলো চিনি? আড়াই? বারো? বাইশ? - বাহাত্তর। - হাতি কাদায় লটপট করছে বলে হ্যাটা করবে? - দিন দিন হাতিই হচ্ছ! - আর অরিন্দম কী? নীল তিমি? - সে অন্তত মাসের জন্য বাইশ কিলো চিনি বয়ে বাড়ি আসবে না! - বেশ করব বাইশ কিলো নেবো। আমি বত্রিশ নেবো। - নাও। তোমার মহুয়াকে এক স্যুইমিং পুল চিনি গুলে সাঁতার কাটিও। - আমার পুল, আমার চিনি। মহুয়া তানিয়া যাকে পাবো তাকে চুবনি খাওয়াবো। ত