Wednesday, September 26, 2012

পুজোর ছুটি ঘটিত


দত্ত: মে আই কাম ইন স্যার?
বস: দস্তুরের ফাইলটা কমপ্লিট করেছো?
দত্ত: ইয়ে স্যার ,ওই আর ঘন্টা-খানেকে হয়ে যাবে স্যার
বস: তাহলে ইয়ে দত্ত, তুমিও ঘন্টা-খানেক পরেই এসো
দত্ত: ভারী আর্জেণ্ট স্যার!
বস: দস্তুরের ফাইলের চেয়েও বেশি?
দত্ত: ইয়েস স্যার!
বস: প্রমোশোন নিয়ে ন্যাকা কান্না জুড়বে না তো?
দত্ত: না স্যার
বস: কাম ইন
দত্ত: থ্যাঙ্ক ইউ স্যার
বস: কী ব্যাপার? দস্তুরের ফাইলটা এখনো কমপ্লিট হলো না?
দত্ত: ওই যে বললাম, আর ঘন্টা খানেক...
বস: তবে তার আগে এসেছো কেনো?
দত্ত: ইয়ে স্যার, ভারী জরুরি ব্যাপার!
বস: জলদি বলে ফেলো, টাইম ইস মানি এন্ড মানি ইজ ইন দস্তুরস পকেট

Tuesday, September 25, 2012

মনের বাইসেপ, হৃদয়ের ট্রাইসেপ


“এই যে স্যার, হ্যাঁ, এই যে, আপনাকেই বলছি স্যার,গুড মর্নিং, এই যে ট্রেড-মিলে ঝড় তুলে আপনি বেদম দৌড়চ্ছেন, এ তে আপনার মেদ ঝড়ছে ঠিকই, কিন্তু মগজের জং সাফ হচ্ছে কই?হৃদয়ের ঝুল ঝাড়-পোছ হচ্ছে কই? কলজেতে হাওয়া খেলছে কই? চাবুক শরীরে খেন্তী-বুড়ির মন পুষে কী লাভ? মাল্টি-জিম ছেড়ে মনটি জিমে দিন। দৈন্য দূর করুন।

রোল-কাবাবের তেলে রক্ত ভরিয়ে নিতে কসুর করবেন না; জিহ্বা শাণিত হবে।
দুম-ফটাস হাসতে গিয়ে আটকে যাবেন না; হৃত্পিণ্ড অক্সিজেন পাবে।
জমাটি প্রেম করুন, বউ-প্রেম, বিয়ণ্ড বউ-ভালো লাগা জড়ো করুন; মনের শিকল আলগা হবে।
হুইস্কি খান; পাঁজড় কড়ক পাবে।
মাসে একবার গাঁজা টানুন; মগজে তিরিং যাবে।
খিস্তি করুন; ফুসফুস বল পাবে।

Monday, September 24, 2012

গৌরহরি বস্ত্রালয়


গৌরহরি বস্ত্রালয়দেড়-তলার কাপড়ের দোকান। দোকানের মাথার গ্লো-সাইন আর মালিক মধু মল্লিকের চামড়ায় ভাঁজ ছাড়া, জন্ম হতে আজ তক; দোকানটি কে একই চেহারায় দেখে অভ্যস্তহাজার শপার্স স্টপ এসেও এর হুলিয়া বদলাতে পারেনি বা এর ব্যবসায় চাকু বসাতে পারেনি। নিচের তলা জুড়ে শুধুই শাড়ি, এবং ওপরের হাফ-তলা জুড়ে “জেণ্টস কাম কিডস সেকশন” । ধবধবে গদিতে বসে মধুকাকু কর্মচারীদের ধোনী-ভঙ্গিতে চালনা করছেন এবং চকাম শব্দে মিঠে সুপুরি চিবুচ্ছেন, এ দৃশ্য অতি পরিচিত। দোকান-ময় ধুপ, ঘাম, কাপড় এবং পুরনো দেওয়ালের গন্ধ মেশানো একটা হাওয়া ঘুর-পাক খাচ্ছে সর্বক্ষণ কিন্তু তবুও সাবেকি রুচির ক্রেতাদের ভীড় লেগেই আছে; “বেস্ট কোয়ালিটি এন্ড প্রাইস ইন দ্য টাউন” পিতৃদেবের মতে।

পিতৃদেব বছরে দুইবার কাপড়-জামা কেনেন, পুজো এবং পয়লা বৈশাখ; গুষ্টির সক্কলের জন্যে; এবং জন্মাবধি দেখে আসছি যে প্রত্যেকের জন্যে একি ধরনের পোশাক প্রত্যেক বার। যেমন পয়লা বোশেখে আমার জোটে একটা ফতুয়া, একটা পাঞ্জাবি ও একটি কমন পায়জামা। পুজো এলে জোটে একটা চকমকে হাফ শার্ট, একটা গম্ভীর ফুল শার্ট এবং একটা ট্রাউজার। ক্লাস সিক্স থেকে এই বয়স পর্যন্ত এর অন্যথা হয় নি। এবং গৌরহরি বস্ত্রালয়য়ের মধু মল্লিক পিতৃদেব কে ভারী খাতির করেন; কর্মচারীদের হাতে ছেড়ে দেন না; পিতৃদেব এলে নিজেই এগিয়ে এসে কাপড়-জামা দেখান।

Sunday, September 23, 2012

বঙ্গ-জব



যাবতীয় বেকার সমস্যা সত্ত্বেও, বাঙালি অন্তত জব-লেস নয়। জোড়া জবে বাঙালির শৌখিন-ব্যস্ততা হিমালয় হয়ে থাকবে চিরকাল।
   
বঙ্গ-হৃদয়য়ের ক্যালরি-ক্ষরণের সব চেয়ে বড় অস্ত্র: গুজব।
প্রতিবেশীর বৌদির গোপন মনোভাব, মেদু-বাবুর নব্য-ভূড়ির রহস্য, অমুক অভিনেত্রীর ঢল-ঢলে ঢল, ভোটের ফলের চোরা আভাস, ময়দানে গড়াপেটা, বিদেশী আক্রমন; গুজবে পরিচয়তে

দুসরা বৃহত্‍-জব: আজব।
বাঙালির ধড়াম-বুকে অবাক বনে যাওয়ার অভ্যেস চির-অমলিন। মাধ্যমিকে লেটার? আজব! গড়িয়াহাটের ভীড়? আজব! দেবয়ের পাগলু একশন? আজব! সুমন চাটুজ্যের সুর; আজব! প্রেম: আজব। আমরা জাতিগত ভাবে আজবিয়া। পৃথিবীর সামান্যতম হেল-দোল আমাদের কাছে এক আজব-খেল।

গুজব-আজবই বাঙালির হৃদিয়ানা জব; বাঙালির আদি দুধ-ভাত। 

Saturday, September 22, 2012

ফ্লপকার্ট

অনলাইন কেতাব খরিদের সুবিধে আমাদের জীবনে এক দৈবিক আশীর্বাদফ্লিপকার্ট এক দেবদূতশুধু বই কেন? যাবতীয় খুচরো বিকিকিনি এখন কী মায়াময় ভাবে সহজএকটা ক্লিক আর ফিক হাসি, দিব্যি কাজ হাসিলবই, ব্যাগ, গানের সিডি বসন্তের আনন্দ বয়ে দরজায় হাজিরটেকনোলজির কাঁধে হাত রেখে বলতে ইচ্ছে করে, “সাবাস তোপসে”

নিজে কেনো, অন্যকে উপহার দাও। সহজিয়া ইজ দ্য ওয়ার্ডশুধু কী ঘরে বসে খরিদ্দারী? যেমন ভাবে খুশি দাম মেটানো; নগদে, ক্রেডিট কার্ডে, এমনকি রয়েছে ক্যাশ-অন-ডেলিভারির হিমালয় মাফিক সুবিধে

Thursday, September 20, 2012

ব্যর্থ বাংলা-বন্ধ, বমকানো বাঙালি

“বোল্টুদার বাড়িতে ডাকাত পড়েছে”। হুড়ুম হল্লাব্যাপারটা অত সস্তা নয়বোল্টুদা আমার প্রতিবেশী এবং পাড়ার রক-স্টার মাস্তান।তোলা আদায় করতে, মড়া পোড়াতে, চোয়াল ভাঙ্গতে, চাঁদা তুলতে, রক্তগঙ্গা বইয়ে দিতে, রক্তদান শিবির আয়োজন করতে; বোল্টুদার কোনও জুড়ি নেই। লোকাল এম-এল-এয়ের ডান হাত। এক দিন নিজেই কাউন্সিলর হবেএমন লোকের বাড়িতে ডাকাত?

বেরিয়ে এসে দেখি, ডাকাত নয়; পাড়ার বিজুকাকু দমাদম লাথি কষাচ্ছেন বোল্টুদার বাড়ির দরজায় আর উদোম চিত্‍কার করে চলেছেনবিজুকাকু রাগে-উত্তেজনায় থর থর করে কাঁপচ্ছেন, বোঝা যাচ্ছে অফিস ফেরতা সোজা চলে এসেছেন বোল্টুদার বাড়িতেগায়ের হাফ-শার্ট ঘামে চপচপ, চুল উস্ক-খুস্ক আর একটানা গলা ফাটিয়ে চলেছেন : “বেরিয়ে আয় শালা বল্টে, আজ তোরই একদিন কী আমার, একটা এস্পার-ওস্পার না করে আমি হটছি না। কাম আউট শালা স্কাউন্ড্রেল”

বিজুকাকুর কাছে গিয়ে কী ঘটেছে জানতে চাওয়াতে কেস স্পষ্ট হলো ; 

“এই শালা বল্টে, একটা ইউজলেস রাস্কেল কোথাকার, এমন একটা দলের হয়ে লেজ নাড়ে যে যাদের মুরোদ নেই ডাল-ভাতের আর ঢেকুর তোলে বিরিয়ানিরশালা, কতদিন পরে একটা বন্ধ ডাকলোআমি ভাবলাম আপিস কেচে যাবেরাস্তা-ঘাট শুনসান থাকবে।কাল সন্ধ্যে বেলা খাসি নিয়ে এলাম কষিয়ে বন্ধের দুপুরে আমেজ করবো। আর এই আহাম্মকদের জন্যে সব গেলো রসাতলেআপিস শালা যথারীতি খোলা, বাঙালির ইজ্জত যে ধুলোয় লুটিল আজসেই ফাইলের নোংরা ঘাটা, সেই বসের চিত্‍কার, উল্টে যাতায়াতে বাসের বাড়তি ভীড়ে নাকালবন্ধের আশা জাগিয়ে এমন বিট্রে? শালারা দু-চারটে বাস জ্বালাতে পারলো না? দু একটা আপিস ভাঙ্গচুর করতে পারলো না? ন্যাকা-কুসুমের দল এসেছে রাজনীতি করতে? বন্ধ করতে পারে না, সরকার গড়বেআমার মুণ্ডু করবেআমি বল্টে আর বল্টের দলের বিরুদ্ধে কনজিউমার কোর্টে মামলা করবো এই কোয়ালিটি-লেস বন্ধ ডাকবার জন্যেএই বল্টে শুয়ার আসুক এবার চাঁদা চাইতে, ওর হাড় দিয়ে আমি থিম প্যান্ডেল বানিয়ে ছাড়বোসাধারণ মানুষকে অফিস-কামাইয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে ধোকা? কাম আউট বল্টে, তোর নেতাগিরি ন্যাতা না করে আজ আমি ছাড়বো না”

সত্যি-মিথ্যা জানি না, তবে ফিসফাস শুনলাম যে বিজুদা এমন রন-মূর্তি দেখে বোল্টুদা নাকি পিছনের দরজা দিয়ে ভেগে হাপিস হয়ে গেছে। পুজোর আগে আর পাড়া-মুখো হচ্ছে না হয়তো।    

নব্য বং প্রেম

রাত পৌনে এগারোটা বাজতেই বেবুলদা বৌদিকে ঘরে টেনে নিয়ে দরজায় খিল

-“একটা সারপ্রাইজ আছে সোনা”

বৌদি তো অবাক, “এই রাত্রে আবার কিসের সারপ্রাইজ ?”

বেবুলদা মিউ মিউ করে কইলে, “ একটা, মস্ত ব্যাপার বয়ে এনেছি”

-   “কী গো? লিলুয়া থেকে মেজপিসি বড়ি পাঠিয়েছে নাকি গো?”, বৌদি উত্‍সুক।

-   “দ্যুত, একটা রোমান্টিক ইয়ে তৈরি করছি, আর কোথা থেকে নিয়ে এলে লিলুয়া আর বড়ি”

-   “ঈ:, চল্লিশ বছর বয়সে নাগর হয়ে এলেন রোম্যান্স করতে, কবে থেকে বলছি রান্না ঘরে একটা নতুন চিমনী বসাতে,সে বেলা কোন খেয়াল নেই। আর আমার এদিকে তেলে-ঝুলে একাকার কান্ড”

-   “উফ্ফ, হবে হবে। লেট আস ফোকাস ওন দ্য নাইট সোনা”

-   “হটাত্‍ এত সোনা সোনা বাই কেনো? ওদিকে মানতাশা গড়িয়ে দেওয়ার বেলায় অমন নেকু-কান্না কাঁদাই বা কেনো?”

-   “ওরে বাবা, আহা শুনবে তো কী এনেছি...”

-   “কী জলদি বলো, আমার বাজে সময় নেই। মালতীর মাকে কাল আবার ভোর আসতে বলেছি”

-   “না মানে, তার আগে বলো, তোমার কী মনে হয় না যে আজকাল আমরা ইয়ে ব্যাপারটা একটু ইয়ে, কম ইয়েতে করছি?”

-   “ইয়ে?”

-   মানে, ইয়ে ফিজিক্যাল ব্যাপারটা....একটু গেজে যাচ্ছে না...”

-   “বয়স গাছ বেয়ে উঠছে, এখনো আবার অমন কচি ন্যাকামো কেনো?”

-   “আরে বয়স তো মনে, ইয়েতে আবার বয়েস কিসে?আসলে আমাদের ইয়ে টা ভারী এক ঘেয়ে হয়ে যাচ্ছিল, বুঝলে ডিয়ারএকটু বৈচিত্র আনতে হবেআরে বাবা সব বলই যদি গুড লেন্থ পড়ে তবে কী আর বোলারএর কোনও মান থাকে? দুটো শর্ট বল, একটা ইয়র্কার, একটা নিচু ফুলটস থাকবে; তবে না বোলার হ্যাডলি-সম

Tuesday, September 18, 2012

নব-সাহিত্য সভা

অনাদি সেন : স্যার, বসবো?

গোলঞ্চ-বাবু : বসবে কেনো? শোনো, যে বসে থাকবে, জেনো তার ভাগ্যও বসে থাকেআর তুমি তো দেখছি ইয়ং ম্যান হে! ছোকড়াবসবে কী? বরং এই বেলা দু চারটে ডন বৈঠক দিয়ে নাও

অনাদি সেন : ডন-বৈঠক? দেবো? এখন?

গোলঞ্চ বাবু: না, না, এইটে ব্যায়াম করার জায়গা নাকি হে? ডন বৈঠক মারতে হয় তো নেদু মল্লিকের আখড়ায় গেলেই পারো? নব-সাহিত্যসভার আপিসে এসে ফচকেমো কেনো?  আজ ডন-বৈঠক মারতে চাইছ, কাল এসে বলবে মুজরো করবো।আমি কী সম্পাদক না শতরঞ্চি?

অনাদি সেন: ইয়ে স্যার, আ...আমি তো ইয়ে, ডন বৈঠক মারতে আসিনি

গোলঞ্চবাবু: এ তো আচ্ছা ঝ্যামেলা, ওরে ও পঞ্চা, কতবার বলেছি আপিস ঘরে কাউকে ঢোকাবার আগে একটু ভালো করে ঝালিয়ে নিতে

অনাদি সেন: আঁজ্ঞে আমি অনাদি, অনাদি সেন।