Skip to main content

Posts

Showing posts from April, 2016

ট্রেনি

- তাহলে কী ঠিক করলেন চ্যাটার্জিবাবু? - আমি রাজী স্যার।  - ভালো করে ভেবে নিয়েছেন তো?  - আসলে চাকরীটার খুব দরকার আমার। খুব। - তিন মাস ট্রেনি হয়ে কাজ করতে হবে। সব ঠিকঠাক চললে, তার পরে কনফার্মেশন। - রাজী।  - তাছাড়া স্টার্টিংয়ে যে বেসিকটা পাচ্ছেন, সে'টা কিন্তু নেহাত ফেলনা নয়।  - সে জন্যই তো...।  - কাজটা খুব সেনসিটিভ। - জানি। খুন বলে কথা। সেনসিটিভ তো বটেই। - তবে মাসে যেহেতু শুধু একটা করে খুন, ওয়ার্ক প্রেশারে নুয়ে পড়তে হবে না আশা করি।  - চারদিক দেখে শুনে এগোতে হবে।  - ও সার্টেনলি। ধরা না পড়াটা প্রায়োরিটি। তিন মাসে তিনটে খুন ঠিকঠাক নামিয়ে দিন। কনফার্মেশন লেটার পেয়ে যাবেন।  - জানি। শুধু প্রথম ক্যান্ডিডেটটা যদি একটু রিকনসিডার করতেন...। - শুনুন। শহরকে টেররাইজ করার জন্য খুন হওয়ার লিস্ট প্রি-কনফার্মড। সোজা হিসেব, আপনি খুন করে লাশ কসবার ডেরায় পৌঁছে দেবেন, আমাদের অন্য লোক সে লাশ হাপিশ করে দেবে। ওয়ান আফটার আনাদার। জলের মত। ইট ইজ আ উইয়ার্ড কোইন্সিডেন্স যে খুন হওয়ার লিস্টে প্রথম নামটা আপনার প্রাক্তন প্রেমিকার। তবে লিস্টে হেরফেরের উপায় নেই।  - আসলে ব্রেক আপটা এত ঝামেলা

একের বদলা দুই

বাবা চললে। ফের। ফের মিলুর চোখ ছলছল। - কবে ফিরবে? - আট মাস। পাক্কা। প্রতিবার যেমন। - চিঠি? - সপ্তাহে একটা করে। তুই? - একের বদলা দু'টো। প্রতি সপ্তাহে। - গুড বয়। - ওখানে খুব বরফ? - খুব। চাদ্দিকে বরফে হদ্দ। - মাইনাস কতো? - পাঁচ। কী সাত। কী বারো। মাইনাসে। - উফফ। ওপার থেকে কেউ গুলি করলে? - একটা চিঠির বদলা দু'টো চিঠি। একটা গুলির বদলা দু'টো গুলি। - যদি তুমি মরে যাও? - আমি তো ভালো সৈনিক। ওপারে তো খারাপ সৈনিক। ভালোর মরতে আছে? - ওপারে খারাপ? - খারাপ। খুব। - ওপারেও বরফ? খুব? - ওপার তো পাশেই। - বরফ? খুব? - খুব। চাদ্দিকে। - মাইনাস কত? - ওই। পাঁচ। কী সাত। কী বারো। মাইনাসে। - খারাপের বাড়ি থেকেও চিঠি আসে? একের বদলা দু'টো?

কিডন্যাপ

- আমায় কিডন্যাপ করে কোন লাভ হল? - পঁচিশ লাখ আসছে।  - ধুস। নস্যি। - নস্যি? - পঞ্চাশ চাইলেও আসতো। সুড়সুড় করে। - মাইরি? - তবে আর বলছি কী! - রিসার্চে গোলমাল হয়ে গেল! - ইনএফিশিয়েন্ট লট তোমরা। আমার বাবা, মানে শেঠ জনার্দন প্রসাদ কিডন্যাপ হয়েছিলেন নাইনটিন সেভেনটিটু'তে। তখন কত টাকা দিয়ে তাকে ছাড়াতে হয়েছিল জানো? - কত?  - চল্লিশ।  - লাখ? - অবভিয়াসলি। আর এত বছর পর তোমরা চাইছ পঁচিশ। ধুর ধুর। তোমার উচিৎ ছিল ঢনঢনিয়াকে কিডন্যাপ করা। সস্তা গার্মেন্টের ব্যবসায় কিছু বাড়তি পয়সা করে ফুরফুর করে উড়ছে। সে না হয় পঁচিশ দিয়ে ধন্য মনে করত। আমার জাস্ট বিরক্তি লাগছে।  - যাহ্‌ শালা। - ভাষা সামলে। আমার বয়স কত জানো? বাহাত্তর। জ্যেঠু বলে ডাকবে আমায়। - এখন কিছু একটা করা যায় জ্যেঠু? - কিসের কী? - ওই। পঁচিশের বদলে পঞ্চাশ এলে ভালোই হয়। বড্ড প্রেশার আজকাল।  - সে গুড়ে বালি। অলরেডি দান চেলে দিয়েছো। বারবার ফোন করতে গেলে পুলিশ কপচে দেবে। - সে'টাই তো ভয়। - একটা আইডিয়া আছে আমার অবশ্য। - কী আইডিয়া জ্যেঠু? - তোমরা এই পঁচিশ লাখ রিফিউজ করো। - পঁচিশ আসছিল, পঁচিশও নেব না? - নেবে না। - তাহলে পেটে লাথি প

কলকাতাবাবুর ৯

১ শাওয়ারের জলে বাসন মাজতে বসা কলকাতাবাবুর পুরোনো অভ্যাস। ২ কলকাতাবাবু ভাবছিলেন; এত অল্প আলাপে চুমু খেতে যাওয়া ঠিক হবে? সাত পাঁচ ভেবে তিনি সাহস করে জিজ্ঞেস করেই ফেললেন; "আপনার এগরোলে টমেটো সস চলে?"। ৩ ডাইনিং টেবিলের চেয়ার বাবু হয়ে না বসলে কলকাতাবাবুর ভাত পানসে লাগে, ঝোলকে মনে হয় জল। ৪ কলকাতাবাবু জানেন, পরীক্ষার হলে পাশবালিশ নিয়ে ঢোকা অ্যালাউ করলে তার অঙ্কে লেটার কেউ আটকাতে পারতো না। কেউ না। ৫ কলকাতাবাবু খামকে ভয় পান। পোস্টকার্ডকে স্নেহ করেন। ৬ কলকাতাবাবু বাসের জানালার জন্য জান কবুল করতে পারেন। এয়ার কন্ডিশনারের হাওয়া আবার ধাতে আর টনসিলে সয় না। ৭ ভূতে বিশ্বাস করা মগজ ও ভূতে ভয় না পাওয়া হৃদয়; দু'টোকেই সমান তালে ঘৃণা করেন কলকাতাবাবু। ৮ বাড়ি থেকে বাজারের রাস্তাটাকে কাল্পনিক ট্রেডমিল বলে কাছে টেনে নিয়েছেন কলকাতাবাবু। বাজার ফেরতা ব্যাগজোড়া তার মননের ডাম্বেল। ৯ বিয়েবাড়ির মেনুকার্ডগুলোকে সযত্নে পুষে রাখেন কলকাতাবাবু, বুকমার্ক হিসেবে ওরা অতি চমৎকার।

অ্যান্থেম

- এতক্ষণে আসার সময় হল? - না আসলে এদিকে নতুন তো...আর তাছাড়া সূর্য ওঠা নামার কোন বালাই নেই। সময় ঠাহর করতে বড় অসুবিধা। - সে অবশ্য স্বর্গে এসে প্রথম প্রথম এ অসুবিধেটা অস্বাভাবিক নয়। যাক গে। জলদি এদিকে এসে লাইনে দাঁড়ান। অ্যাটেনশন পোজিশনে। অ্যাসিস্ট্যান্ট ভগবান এলেন বলে। - উনি রোজ লেকচার দেন বুঝি? - না না। লেককচার না। দিনের শুরুতে রোজ জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় কিনা।  রোজ! সে'টাই ওভারসি করতে আসেন। - জাতীয় সঙ্গীত? স্বর্গের আবার জাতীয় সঙ্গীত? - আজ্ঞে। - সে কী! - কেন? আপনি জাতীয় সঙ্গীত মুখস্ত করে আসেননি? - আমি তো একদম নতুন! - কুছ পরোয়া নহি। অ্যাসিস্টান্ট ভগবান আসার আগে আমি শিখিয়ে দিচ্ছি। - এত অল্প সময়ে শিখতে পারব? - ভেরি ইজি। জলবৎ।  এক মিনিট লাগবে। - আচ্ছা। বলে দিন। - সুর করে বলছি। মনে দিয়ে শুনবেন, কেমন? - ওকে। - মডিউলেশনটা ইম্পর্ট্যান্ট। ঠিক আছে? - ঠিক আছে ভায়া। এবার জাতীয় সঙ্গীত শুরু করুন। আমিমি শুনছি। - বেশ। ওয়ান। টু। থ্রী। স্টার্ট;    "সচিইইইইইইইইইইন, সচিন!!! সচিইইইইইইইইইইন, সচিন!!! সচিইইইইইইইইইইন, সচিন!!! সচিইইইইইইইইইইন, সচিন!!! সচিইইইইইইইইইইন, সচিন!!!"।

তাঁর মিত্তির

- আসুন। - মানে? - উঠে আসুন। আসুন,আসুন। - উঠে আসব মানে? - এখন তো ঝামেলা সমস্ত মিটে গেছে। অ্যাস্ট্রাল প্রজেকশনের দরকার নেই তো। পার্মানেন্ট ডিপার্চার। উঠে আসুন। আসুন। এই হাত বাড়ালাম। - ঝামেলা মিটে গেছে? - ডেফিনিটলি গেছে। - শরীরটাও বেশ ঝরঝরে লাগছে বটে। - শরীর? - ওহ্‌। সরি। আসলে মাথাটা এমন গুলিয়ে যাচ্ছে...। - মাথাই নেই তো গুলিয়ে যাওয়া। - করেক্ট। তা আপনি তো...? - ভূত কিনা জিজ্ঞেস করছেন? অবভিয়াসলি না। - তাই তো। কল্পনার আবার মৃত্যু তার আবার ভূত হওয়া। তবে  অফ অল পিপ্‌ল, আপনি আমায় দেহ থেকে টেনে তুলবেন ভাবিনি। - ওহ্‌। আমি তো আবার আপনার ফেমাস ক্রিয়েশনে একজন নই। - ফেমাস হতে হলে বোধ হয় সহজ পাচ্য হতে হয়। তাই না মিস্টার মিত্তির? - ইউ মিন ফর মাসেস্‌, তাই তো? - রাইট। এবং আপনি আসায় আমি যতটা খুশি হয়েছি, অন্য কেউ এলে ততটা হতাম না। ডেফিনিটলি। আচ্ছা, মিস্টার মিত্তির! আপনি অন্য মিস্টার মিত্তিরকে চেনেন? - আপনি অন্য রায় কে চেনেন? - কোন রায়? - এগজ্যাক্টলি। কোন মিত্তির? - হেহ্‌। - আসুন।

দুই ভাই

- দাদা। - ডিস্টার্ব করিস না। - আচ্ছা। - জরুরি কিছু বলার ছিল রে বিলু? - তেমন কিছু না। ছাড়। - ডিস্টার্ব করেই ফেলেছিস। বলে ফেল। - মারা গিয়ে কেমন আছিস? - বই পড়াটা আটকাচ্ছে না। - শেল্‌ফ টেল্‌ফ থেকে নামাতে কোন অসুবিধে? - নান অ্যাট অল। - বই আছে মানে তো মেজর একটা চিন্তা দূর হল। - তা হল। তবে কেনায় অসুবিধে রয়েছে। - ওহ। - সেটুকু কোঅপারেশন তোর থেকে পাব আশা করছি। - শিওর। - তবে তোর কলেকশন মন্দ নয় রে। আগামী ছ'মাস বোধ হয় কোন চিন্তা নেই। তারপর বলে দেব। - গুড। - খাওয়া দাওয়া? - নাহ্‌। সে দরকার হচ্ছে না। জলেরও না। ফলত বাথরুমও যেতে হচ্ছে না। ইন ফ্যাক্ট এইটুকু অ্যানোমালি না থাকলে ভূত হিসেবে নিজেকে অত্যন্ত খেলো মনে হতো বিলু। - হুঁ। তা, কী পড়ছিস রে? - একটু আবোলতাবোল পড়ে নিজের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভাবনাগুলোকে কনসোলিডেট করে নিচ্ছি। দিন কয়েক যাক। আচ্ছা, তোর শেলফ থেকে পামুক কেউ ঝেড়ে দিয়েছে রে? অ্যাক্সিডেন্টের দু'দিন আগেও তো দেখেছিলাম। - তারপর তো বিশেষ কেউ আসেনি বাড়িতে। - দেখি খুঁজে। ভূত হয়ে একটা সুবিধে হয়েছে রে বিলু। সোফার তল, আলমারির ওপরের তাকের কোণা, যে কোন দিকে সেঁধিয়ে যেতে পারছি অনা

দু'জন

মান্না সে কী সাংঘাতিক কাণ্ড! কী? না ভগবান ভুলে "মান্না দে" তৈরি করে ফেলেছেন। এবার তৈরি যখন করে ফেলেইছেন, তখন কী করা যায়? কী করা যায়? তারপর অনেক ভেবেচিন্তে ভগবান "মাঝরাত" তৈরি করলেন। তারপর বাঁচোয়া। সুমন "বৈশাখী ঝড়ে আমি তোমাকে চাই"। ওখানে এসেই থমকে গেলেন সুমনবাবু। পকেট থেকে রুমাল বের করে কপালের ঘাম মুছলেন। ঘটঘট শব্দে ঘুরে চলা ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে মিচকি হাসলেন। সে হাসি ক্লান্ত। তারপর ফের ডুব পিয়ানোতে। এবার গাইলেন; "বৈশাখী ঝড় আমি তোমাকে চাই"।

কল্পনা যন্ত্র

যন্ত্রটার দিকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাকিয়েছিলেন বিপিনবাবু। কল্পনা যন্ত্র। কালে কালে এও আবিষ্কার হবে তা কে জানতো? যন্ত্রটা মানুষ সমান লম্বা আর ভেন্ডিং মেশিনের মত চেহারা। সে যন্ত্রের ওপরের দিকে বড় স্ক্রিন। যন্ত্রের কোমরের কাছে একটা ফোঁকর, চিরকুটে যে কোন কল্পনার কথা লিখে সে ফোঁকরে গুঁজে দিলেই স্ক্রিনে ভেসে উঠবে কল্পিত চিত্রপট। ভাবা যায় না। রোমহর্ষক অনুভূতি যে ঠিক কী, তা জীবনে এই প্রথম টের পেলেন বিপিনবাবু। প্রথমেই চিরকুটে খসখস করে লিখলেন “ইউনিকর্নে টানা টাঙ্গা” এবং গুঁজে দিলেন যন্ত্রে। ফশ করে কালো স্ক্রিন জ্বলে উঠলো; সেখানে দেখা গেলো দু’টো ইউনিকর্ন একটা পেল্লায় টাঙ্গা টেনে নিয়ে যাচ্ছে ভিক্টোরিয়ার সামনে দিয়ে। একটা ইউনিকর্ন সবুজ রঙের, অন্যটা গোলাপি-নীল চেক চেক উত্তেজনার লাফিয়ে উঠলেন বিপিন সমাজপতি। চট করে নতুন চিরকুট টেনে লিখে ফেললেন দ্বিতীয় কল্পনা; পার্কস্ট্রিটে এভারেস্ট। যেই না সে চিরকুট পড়েছে যন্ত্রে; অমনি স্ক্রিন জুড়ে সাদা বরফের মোড়ক, তারই মাঝে টিমটিম করে জ্বলছে পিটার ক্যাটের বেড়াল চোখ আলো। আনন্দাশ্রুর কথা বিপিনবাবুর জানা ছিল। আনন্দঘাম এই প্রথম এক্সপিরিয়েন্স করলেন। সাহস

অপটিমিজ্‌মের উপন্যাস

১ নিবারণবাবু গেলাসের দিকে তাকিয়ে ঘাবড়ে গেলেন। ২ অপ্টিমিজ্‌ম প্র্যাক্টিস করতে নিয়মিত টাইপরাইটার বয়ে নিয়ে ছাদে উঠে যান অমল সেনগুপ্ত।  ৩ মৃদু খটখট যেটা কানে আসছে সে'টা গেলাসের মধ্যে থেকেই আসছে; নিবারণবাবু নিশ্চিত।  ৪ পাঁচশো বত্রিশ নম্বর "আজ মেঘ করবে" টাইপ করে খানিক থমকালেন অমলবাবু; আর চারশো আটষট্টি লিখলেই ল্যাঠা চুকে যায়।  ৫ খটখটটা ক্রমশ অসোয়াস্তিকর জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছিল;  কড়ে আঙুলে ফতফত করে কান চুলকে চেয়ার ছেড়ে সোজা দেরাজের দিকে হেঁটে গেলেন নিবারণবাবু।  ৬ অল্প মেঘ জমছিল যেন, আচমকা দমকা হাওয়ায় সাফ হয়ে গেল; গজগজ করতে ফের টাইপে মন দিলেন বিকেল রোদে ঘর্মাক্ত অমলবাবু। ৭ এটা কি ভয় না আশা; সে ভাবনায় মশগুল হয়ে না জ্বালিয়েই ঠোঁটের সিগারেট টানতে লাগলেন নিবারণবাবু। ৮ সাতশো বাহাত্তর নম্বর "আজ মেঘ করবে"তে এসেও আকাশে মেঘের কালো দানা না বাঁধায় খানিক দমে গেলেন অমলবাবু; আজও নামবে না কি? ৯  "নাহ", ফুঁসে উঠলেন নিবারণ,"বড় কাজ ফেলে রাখতে নেই"; বলে সাহস করে দেরাজ খুলে সলিউশনের শিশিটা নামিয়ে ফের টেবিলে রাখা গেলাসটার দিকে এগিয়ে গেলেন ত

হিউমর

- অমন হাঁ করে তাকিয়ে কী দেখছ? - পেন্টিংটা। - পেন্টিং? - পেন্টিং। মাস্টারক্লাস। - জুয়োচুরি? এ তো সাদা ক্যানভাস। একটা আঁচড়ও নেই। - তুমি দেখতে পারছ না। - পেন্ট করা আছে অথচ দেখতে পারছি না? - না। - ইয়ার্কি হচ্ছে? - অন দ্য কন্ট্রারি। আই অ্যাম এক্সট্রিমলি সিরিয়াস। পেন্টিংটার নাম কী জানো? - কী? - হিউমর। - হিউমর? - হিউমর। - আমি তাহলে সাদা ক্যানভাস দেখছি কেন? - কারণ hue মরে গেছে।

রেস্ট্রিকশন

- বলুন দাদু। - বলছিলাম...স্পেশ্যাল মোগলাইটা স্পেশ্যাল কেন? - এক্সট্রা ডিম। - ওহ। আর কষা মাংস। - হাফ না ফুল? - হাফে ক'পিস? আর ফুলে? - চার পিস, আট পিস। হাফ দিই? - ফুল দাও। - স্পেশ্যাল মোগলাই আর কষা মাংস, তাই তো? - থাম্‌স আপ দিও। একটা। - তিনশো এমএল না দু'শো? - তিনশো। - মেনুটা নিয়ে নিই? - থাক্‌ না এখন। - আচ্ছা। - একটু তাড়াতাড়ি দিও। - দশ মিনিট লাগবে দাদু। - পাঁচ মিনিটে হবে না? - অত তাড়া দিলে হবে না দাদু। কাস্টোমারের ভিড় দেখছেন তো! - একটু দেখো না বাবু, যত তাড়াতাড়ি হয়। আমার বড় তাড়া। হসপিটালে যেতে হবে যে। - হসপিটালে দাদু? - মাংস তেলে রেস্ট্রিকশন আই সি ইউতে ভাই। - মানে? - ডাক্তার বলে দিয়েছে। এখন তখন। - কার এখন তখন? আপনার? - আমি কী আইসিইউ তে? - না আপনি এখানে। তবে কার? - চল্লিশ বছর ভাইটি। আমার রেস্ট্রিকশনই যদি না থাকে, তাহলে আর আমার রেস্ট্রিকশনে কাজ কী বলো? একটা মোগলাই। স্পেশ্যাল। একটা মাংস কষা। ফুল। একটা থাম্‌স আপ। তিনশোর। ক্যুইক। ক্যুইক।

আঁচ

- কী রে শিউলি...হাসিতে ডগমগ যে! ব্যাপার কী? - বলি ডুলিদি? - না বললে ছাড়ব কেন? হাসিতে কেমন গোলমেলে আভাস পাচ্ছি।   - গোলমালই তো। গোলমাল, গড়বড়, গুবলেট। সমস্ত।   - প্রেম? - হি হি হি হি।   - সে কী! - হি হি হি। - নায়কটা কে? - বলব ডুলিদি? - না বললে ছাড়ব কেন? - অনুপদা। - দত্ত বাড়ির ছোকরা?   - হুঁ! - এ আবার কেমন কথা! গত পুজোর এই অনুপই না তোকে ভালোবাসি বলাতে তুই চটি হাতে তাড়া করেছিলি? - সে তো অনেক আগের ব্যাপার। তখন কি আর জানতাম ছাই অনুপদা এতটা গভীর?   - বটে? অনুপ দত্তর গভীরতার আঁচ পাওয়া হয়ে গেছে? - গেছেই তো। নয়তো আমি অত সহজে প্রেমে পড়ার মেয়ে নাকি?   - তা গভীরতার আঁচ কী ভাবে পাওয়া গেল? - গতকাল পাড়ার থিয়েটারের রিহার্সাল দেখতে এসেছিল অনুপদা।   - তো? - সেখানে ভুলে নিজের টিউশনের ব্যাগ ফেলে গেছিল। - তো? - তো সেই ব্যাগে ফিজিক্সের নোটের খাতা ছাড়াও ছিল একটা বই। - কী বই? - শেষের কবিতা। - তাতেই আঁচ পেলি? অনুপের গভীরতার? - নাহ্‌। আমি অত সহজে ভোলার মেয়ে? অনুপদার কতটা দম রাখে নিজের কলজের মধ্যে, কতটা গভীরে গিয়ে ভাবতে পারে; তার প্রমাণ পেলাম শেষের কবিতার মধ

হালখাতা

- ই তো হিউজ সারপ্রাইজ হলো মিস্টার মিত্তির। - আপনাকে সারপ্রাইজ দিতে পারা চাট্টিখানি কথা তো নয় মগনলালজি। - সারপ্রাইজ-উরপ্রাইজ তো ঠিক হ্যায়। লেকিন জেলে দেখা কোরতে এলেন...ইয়ে তো আজিব বাত। - মিষ্টি খাওয়াতে এলাম। - কেনো? এলএসডি মিক্স করিয়েছেন? - আমি সস্তা মজার মানুষ নই। আপনি জানেন। আজ পয়লা বৈশাখ। আপনাকে শুভেচ্ছা জানাতে আসা। আফটার অল, আমার বিজনেসে আপনারাই মূলধন। বিশেষত আপনি। - বিজনেস? পহেলা বইশাখের মিঠাই? হাল খাতা কই? নো হালখাতা, নো বিজনেস! মিচকি হেসে পকেট থেকে নীল ডায়েরীটা বের করে মগনলালের চোখের সামনে মেলে ধরলেন ফেলুদা।

বিনুর মা

১ - এহ্ হে। - কী হল? - আঙুলের ডগাটা গেল কেটে। - দাড়ি? - রেজারে বসানোর আগেই তো...। - দেখলি তো, কেত দাড়িতে নেই। সরঞ্জামে। - উফ! বাবা! ফার্স্ট এড বাক্সটা কই? - ফলস ফার্স্ট এড বাক্সটার কথা বলছিস না গীতবিতান? - আহ! বাবা। বেশ কেটেছে কিন্তু। ২ - বস! - আমায় বস বলে ডাকছ কেন? -  ডিভোর্স দিয়েছি, বসবাজি ছাড়ার লাইসেন্স দিইনি। - ন্যাকামো করতে ফোন করলে? - শোন না! - কী? - ডিভোর্সটা বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। - শাট আপ। - আই উইল। কিন্তু তুমি না থাকলে চলছে না। - এই আদেখলাপনাগুলো বাদ দিলে হয় না? আমাদের ডিভোর্স দু'দিন আগে হয়নি সৃজন। ষোলো বছর কেটে গেছে। - সো হোয়াট? তোমায় এখনই সবচেয়ে বেশি দরকার। জানো কী কাণ্ড? আজ ফার্স্ট এড বাক্সটাই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। - তার দরকার কেন পড়ল? কী হয়েছে? - বিনু আজ প্রথম দাড়ি কামাতে গেছিল, ব্লেড রেজারে  লাগাতে গিয়ে সে রক্তারক্তি ব্যাপার। - সৃজন, এমন কেন করছ? - সে কী রক্ত নিভা! - বিনু নেই। নেই। নেই। - শাট আপ! শাট আপ! খচ্চর মেয়েছেলে কোথাকার! শাট আপ! শাট আপ! - সৃজন, শান্ত হও। প্লীজ। প্লীজ। - যা ভাগ! মর!  মর! মর! ৩ - বাবা! বাবা! - বি...বিনু....। - তুমি ফোন

বালিশের পরে

বালিশ আবিষ্কার শেষে থুতনি চুলকোতে চুলকোতে পায়চারি করছিলেন ঈশ্বর। এমন মার দিয়া কেল্লা আবিষ্কার; এমন মাখনে ছুরি চিজ; ব্যবহার হবে কী করে? তখনই হাওয়ায় ভাসলো ইউরেকা। নয়া আবিষ্কারের ঝিলিকে লাফিয়ে উঠলেন ঈশ্বর। হুড়মুড় করে ল্যাবরেটরির দিকে ছুটে গেলেন তিনি; মুণ্ডুওলা মানুষ তৈরির ফর্মুলা ঠাহর করতে।

প্যারাসুট

প্যারাসুটে ঝুলে উপরের দিকে ভেসে যাচ্ছিলেন রজনীকান্তবাবু। খাবলা খাবলা তুলোর মত মেঘ পাশ কাটিয়ে উঠছিলেন তিনি, উঠেই যাচ্ছিলেন। এত উপরে উঠে এলে আকাশের নীলটা যেন আরও মনোরম  ভাবে গায়ে চেপে বসে। আহা! দিব্যি উড়ে ওপরের দিকে যাচ্ছিলেন, এমন সময় রজনীবাবুর চোখে পড়ল সে ভদ্রলোকের ওপর। এক ফালি মেঘের ওপর বসে নিশ্চিন্তে নিজের পৈতে চিবচ্ছিলেন।  খালি গা, কোমরে জড়ানো গামছা। - এক্সকিউজ মি! - আমায় বলছেন কিছু? - এদিকে আর ক'জন আছে বলুন। ইন ফ্যাক্ট এই প্রথম দেখতে পেলাম কাউকে। এত উপরে। - অ। - আমি রজনী। রজনীকান্ত। আপনার নামটা? - মলয়। মলয় মুখুজ্জে। বেলঘড়িয়ার। - আমি এখানে প্যারাসুটে নিয়ে উড়ে এসেছি। - আপনিও? - আমিও মানে? ইয়ে। আমি তো জানতাম আমি ছাড়া প্যারাসুটে ঝুলে ওপরের দিকে কেউ উড়তে পারে না। - আরে আমারও তো সেই সমস্যা হল। - আজ্ঞে? - গতকাল অফিস থেকে ফিরে মনে হল মাথাটা বেশ ভার হয়েছে। কলকাতায় বেয়াল্লিশ চলছে, বুঝলেন কিনা রজনীবাবু। দেখলাম তালুটা আগুন হয়ে রয়েছে। ভাবলাম যাই, কষে মাথায় তেল ঘষে  দু'মগ ঢেলে আসি। - তো ? - কোথায় দু'মগ জল! কোথায় কী! সবে মাথায় প্যারাসুটের নারকোল তেল রগড়েছি, অমনি মাথা ভা

মিত্তিরদের গল্প

- আসুন। - আছেন কেমন? - সিগারেটে কোন...! - না না। আমার অসুবিধে নেই। - বলুন। - যা গরম পড়েছে...। - সিধুবাবু, সাত মিনিটের মাথায় দারুওয়ালার সাথে একটা চ্যারিটি ইভেন্টে যাওয়ার আছে। গাড়ি এসে হর্ন দিল বলে। - বেশ। প্রসঙ্গে আসি। অমল ব্যানার্জি। প্লাস্টো নেশনের এমডি...। - বেয়াল্লিশ। গল্‌ফ।  জনি ওয়াকার। ব্রীজ। টালি ক্লাব। ধর্মে মন আছে। - ফেলু একটা বিষয়ে ফাঁপরে পড়ে আমায় ফোন করেছিল। অমল ব্যানার্জির ব্যাপারে কয়েকটা বিশেষ তথ্য জানতে চায়। আমি ওকে আগামীকাল আসতে বলেছি। অ্যাজ ইজ অলওয়েজ দ্য কেস্‌; কচি মিত্তিরের সমস্যা যদি সিনিয়র মিত্তির সল্ভ না করে..। - নটবর মিত্তির পায়ের তলায় ঘাস গজাতে দেয় না, জানেন তো?

আনন্দদা ও মা

আনন্দদা ছুটির দিনে বাজার করে ফেরার মুহূর্তটা রেলিশ করেন। মা একবার খোঁজ করবেনই, "আনন্দ, বাজারটা কোথায় রে?"। আনন্দদা পুরোনো ঠাট্টা ঠেলে দেবেই "দ্যাখো, বাবা বোধ হয় বাথরুমে রেখে চলে এসেছে"। মা একবারের জন্য থমকে যাবেন। যেতেই হয়। যেমন নিয়মে থমকে যাওয়া। ঠাট্টার দু'মুহূর্তে যেমন ভুলে যেতে হয় যে সে'দিনের পর থেকে আর বাংলা কাগজ বাড়িতে ঢোকে না। অল্প ভার পেরিয়ে ফের হাসি। টাইমস অফ ইন্ডিয়া টেনে নিয়ে প্রসঙ্গান্তরে যাওয়া আনন্দদার।

সী অফ

"সী অফ করার পরের ইউ-টার্নিও হাঁটা। সে হাঁটায় হনহনিয়ে চলে যাওয়া থাকলে বুঝতে হবে সী-অফে তেজ ছিল"। "ও"। "কী বুঝলি"? "কী বোঝার আছে"? "তার ইউ টার্ন কেমন ছিল"? "তার? কার?"। "ন্যাকা সিং গাধাকার"! "আহ মামা"! "চোপ! গত পরশু! হাওড়া। বারো নম্বর প্ল্যাটফর্ম। এস তেরোর পিছনের দরজা"। "ছিঃ মামা"। "গার্জেন আমি"। "তাই বলে ফলো?"। "বলো"। "কী"? "ইউটার্নের হাঁটার পেস। হনহন ছিল"? "মামা"। "বাবু"। "দৌড়"। "হোয়াট"? "দৌড়"। "ভাসিয়ে এলি"? "গেল গিয়ে।  ভাসিয়ে"।