Skip to main content

Posts

Showing posts from June, 2007

পিতা-কন্যা

এ'দিকে পিতা , ও'দিকে কন্যা । পিতা ক্লাসিকাল ; নিয়ম-কানুন , মর্নিং ওয়াক , ক্যালকুলাস , সর্ষের-তেল স্নান , নিম-বেগুন , আর্নিকা , সতিনাথ ভাদুড়ী , ভীম সেন যোশী মেশানো প্রাচীন বাঁধুনি । কন্যা পোস্ট-মডার্ন । জিন্স , শুক্তো , হার্ড রক , সন্ধ্যা মুখার্জী , ডট কম , ফেমিনিজ্ম , ও শক্তি চাটুজ্যের সম্মিলিত লাবড়া ।বারান্দায় শরতের আদুরে রোদের মত ছলছলে। প্রাচীন অঙ্ক মেনেই ; যেই কন্যা জীবনমুখী ; অমনি পিতা রথের চাকা বসে যাওয়া সৈনিক।  কন্যা প্রেমে হাবু-ডুবু , পিতা অক্সিজেনের নল-কাটা ডুবুরি। তবুও:  পিতার হালুম  ,  কন্যার আধো-ম্যাও । পিতা : প্রেম করছ  ? কন্যা: ওই আর কী।  পিতা: ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়ে ডজ করবে না...।  কন্যা: হ্যাঁ প্রেম। পিতা: শেম! কন্যা: বাবা! পিতা: বুচি! কন্যা: আই অবজেক্ট। পিতা: ওভাররুল ড। কন্যা: আগে শুনবে তো....  পিতা: কী শুনবো ? প্রেম-ট্রেম গুরুপাক ব্যাপার। আমি ভেটো করছি। যার ডিমাণ্ড কার্ভ আঁকতে গেলে এখনো হাত কাঁপে , সে করবে প্রেম ? পাগল না পার্লামেন্ট ? কন্যা: তুমি আনরিসনেবল হচ্ছো। পিতা: আন-রিসনেবল ? আমি আনরিসনেবল

রিটায়ারমেন্ট

অনুপবাবু চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলেন। পাশে তখন সহকর্মীরা একে একে স্যালুট জানিয়ে চলেছে।  এই গতকাল পর্যন্ত যারা পিছন পিছন কাঠি হাতে ঘুর ঘুর করেছে তাঁদের গলা আজ বুজে আসছে।  কেউ বুঝল না। কেউ চিনল না। অনুপবাবুর বুক হুহু করে ওঠে। সদ্য পাওয়া শালটা খামচে ধরে নিজেকে সামলে নেন তিনি। গাড়ি নাকি এক ড্রাইভারের হাতে থাকলে সুস্থ থাকে, অথচ আজ মনে হচ্ছে বহু হাত ঘোরা হয়ে গেছে। অফিস গসিপ, বসের খিচিরমিচির, সম্পর্কগুলোর থেকে মিউচুয়াল মাখন দেওয়ানেওয়া; আচমকা অফিসের দেওয়াল ঘড়িতে বিকেল পাঁচটার ঘণ্টা শুনে বড় মন কেমন হয়ে গেল।  প্রভিডেন্ড ফান্ড ব্যাপারটায় যে কত ধানে কত চাল সে'টা এবার ঠাহর হবে। সকাল বেলা বাস ট্রামের ভিড়ে হদ্দ হতে হবে না সে'টা ভেবে কিছুদিন বেশ চনমনে লাগছিল বটে। কিন্তু চোখের সামনে হঠাৎ হাজার হাজার রোববার দেখতে পেয়ে কেমন অস্বস্তি শুরু হল। ডিমিনিশিং মার্জিনাল ইউটিলিটি এমন ভাবে কলার টেনে ধরলে যে বুকের মধ্যে হঠাৎ একটা বিশ্রী হাঁসফাঁস শুরু হল। ওদিকে তখন হিউম্যান রিসোর্সের শেখরবাবু "শেখরবাবুকে ছাড়া আমাদের অফিস অন্ধকার" বলে একটা মায়া জড়ানো আবহাওয়া তৈরি করে ফেলেছেন। অনুপবাবুর কিছুতে

শহরে বৃষ্টি

প্রবল গরম ধুয়ে মুছে সাফ করে দেওয়া বৃষ্টি।  মিনিবাসের ঠাসাঠাসি সব মাথায় "ঝর ঝর মুখর বাদর দিনে" লেভেল বৃষ্টি।  বাতাসে ডাব-সরবতি ফ্লেভার এনে দেওয়া বৃষ্টি।  খিচুড়ি মামলেটের ক্লিশেতে মন দোলানোর বৃষ্টি।  ইলিশের কার্পেটে মাছের বাজার মুড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বয়ে আনা বৃষ্টি।  সব মিলে মাখনের ঢিপির মধ্যে দিয়ে মখমলে ছুরির ডগা বেশ তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছিল বটে, শুধু ঠোক্কর খেল উত্তর কলকাতার হাঁটু জলে। কলেজ স্ট্রীট টু হ্যারিসন রোড, সর্বত্র নাকানিচোবানি। কলেজ স্ট্রিটের ফুটপাতে দাঁড়ানো উচিৎ না ভাসা উচিৎ সে'টা নিয়ে ভেবে মিনিট দুই থুতনি চুলকানো যেতেই পারে।  তবে ইয়ে, আমাদের ক্ষমতা আছে হাঁটুজলের ঘায়ে নস্টালজিয়ার বোরলিন লাগানোর।  ইনফ্রাস্ট্রাকচার করে বেশি লাফালাফি করলে রোম্যান্সে চোনা পড়তে পারে। অন্তত তেমনটাই বলেছেন দিল্লী প্রবাসি বান্ধবি। কফি হাউস  থেকে কাটলেটি মেজাজ নিয়ে বেশ মৌজ করে বেরিয়েছিলেন। আমি ভাবলাম লম্বা স্কার্ট রাস্তার জলে ছপরছপর করলেই মুডের ফুরফুর চুপসে যাবে।  কিন্তু ওই। নস্টালজিয়ার বোরোলিন।  ভাসা ভাসা চোখ নিয়ে তিনি জানালেন; "আমার বড় ইচ্ছে এমন জলজমা রাস্তার ধারে একটা

মিস্ড কল

মিস্‌ড কলকে অনেকে বেশ মর্সকোডের মত ব্যবহার করছেন। অবশ্য টকটাইম কিনতে গেলে যে ভাবে পকেট টকে যাচ্ছে, তা'তে এই দুরন্ত ইনোভেশনে নিজেদের সঁপে না দিয়ে কোনও উপায় নেই। বিশেষত পড়ুয়া প্রেমিক প্রেমিকারা মিস্‌ড কলকে অন্য পর্যায় নিয়ে যেতে পেরেছেন। সমস্ত কল কোডেড। ভর দুপুরে হাফ-বার বেজে থেকে গেল। প্রেমিকা নির্ঘাত খটমট মেজাজে।  বার চারেক বাজল। প্রেমিক নিশ্চয়ই ভর দুপুরে পার্কের বেঞ্চে অপেক্ষা করে করে হদ্দ হয়ে পড়েছে। রাতের বেলা মিস্‌ড কলে বালিশের তলায় রাখা ফোন একবার ভাইব্রেট করে চুপসে গেল। প্রেমিকার মন কেমন। মিনিবাসের ভিড়ে নকিয়া টিউন টুপ করে বেজেই স্পীকটি নট। সেও ফুলবাগান পৌঁছল বলে। প্রত্যেক জোড়ার আলাদা আলাদা ম্যানুয়াল। রাত দু'টোর সময় যে মিস্‌ড কল আদতে এনকোডেড গোপন চুমু, ভরদুপুরে সেই মিস্‌ড কলই বিকেলের হাঁটতে যাওয়ার প্রপোজাল। মাঝেমধ্যে গোলমাল পাকিয়ে যায় বটে। এই যেমন সে'দিন। মান্তুদা বড় রাস্তার মোড়ে চিতপটাং হয়ে শুয়ে। বুকে মাঝে মধ্যেই নীল মোবাইলটা কেঁপে কেঁপে উঠছে। নীলাদির দুদ্দাড় মিস্‌ড কল, ওর টিউশন শেষ হয়ে গেছে। এ'বার ঘাটের দিকে দেখা হওয়ার কথা। এ'দিকে বেরসিক