Skip to main content

Posts

Showing posts from March, 2016

কন্সটিটিউশনাল

- প্রাইম মিনিস্টার।  - ইয়েস বাবু! - ওয়েল ডান।  - ইউ আর কাইন্ড অ্যাস ইউসুয়াল। - উই উইল মিস্‌ ইউ।  - জানি। আমিও মিস্‌ করব। তোমাদের। এই অফিসটা। এই টেবিল। রোজ সন্ধ্যাবেলা বিজেন্দরের  প্যান্ট্রি থেকে আসা পকোড়া।  - এই অফিস,টেবিল,পকোড়ার বাইরেও আপনি অনেকটা জুড়ে ছিলেন প্রাইম মিনিস্টার। ইউ লেড আ কান্ট্রি।  - আই হ্যাভ নেভার বিন আ লিডার।  - দ্যাট্‌স হোয়াট হেল্প্‌ড ইউ টু লিড ওয়েল।  - আহ্‌ বাবু! আই উইল মিস ইওর পিঠ চাপড়ানি। -  নিন। পকোড়া চলে এসেছে।  - বিজেন্দরের মত যদি পাংচুয়াল হতে পারতাম বাবু।  - ইউ হ্যাভ নেভার বিন আবাউট সিস্টেম পিএম। হলে এ সাফল্য আসত না।  - সাফল্য? হবে হয়তো।  - সাফল্য নয়? দেশে মানুষ খুনের সংখ্যা কয়েক বছরের মধ্যে অর্ধেক হয়ে গেল। সে'টা সাফল্য নয়? - আহ্‌! আচ্ছা! - ল্যান্ডমাইন ব্লাস্ট। মানব বোমা। ছুরি। বন্দুক। গলায় ব্লেড। টুঁটি টিপে দেওয়া। প্রতি মিনিটে কতজন যে খুন হত...। ইউ চেঞ্জড ইট অল। ধর্মের জন্য খুন, ইডিয়লজির জন্য খুন, বদলার জন্য খুন, মজার জন্য খুন, খুনের জন্য খুন। আহ। যন্ত্রণা। আপদ চুকেছে।  - কে ভেবেছিল বল বাবু যে ক্যানিবালিজ্‌মকে কন্সটিটিউশনাল করে দেওয়ায় দেশ

এন্ড

ইয়ার এন্ড জানালাটা কচরমচর করছে। ছিটকিনি বিট্রে করল বলে। এই দুপুরেও ঘরটা আবছায়ায়। টেবিল থেকে পেপার ওয়েট নিয়ে খানিক লোফালুফিতে মন শান্ত হল না। কম্পিউটারের স্ক্রিনসেভারে একটা বেড়াল ক্রমাগত চোখ মেরে চলেছে। রিমাইন্ডার স্লিপগুলো টেবিলে ছড়িয়ে, অযত্নে। এসি আর ফ্যান মিলে ঘাম মোছাতে পারছে না। অথচ ইয়ার এন্ড প্রেশার তাঁকে স্পর্শ করেনি আদৌ, বরং পিয়ার এন্ড প্রেশার তার রক্ত চাপ দ্বিগুণ করেছে। "ইহার এন্ড দেখিয়া ছাড়ব", ওথেলো দত্তর ঝোড়া স্বগতোক্তিতে ফড়ফড়িয়ে উঠল টেবিল ক্যালেন্ডারের মার্চের পাতা। উইকেন্ড - উইকেন্ড ইজ হিয়ার। - এ কী রে! আজ মঙ্গল। - সে কী! আজ শুক্রু নয়? - সে কী! - আজ শুক্রু নয়? - কেন হবে? টিউসডে! - আজ রামের বোতল বগলে বাড়ি ফেরা নয়? - এমন ভীমরতি কেন? - আজ কাল মাটনের দোকানে লাইন নয়? - চারাপোনা। - অ্যালার্ম ঘড়ির ব্যাটারি খুলে মোবাইল স্যুইচ অফ করে ঘুমোতে যাওয়ার দরকার নেই আজ? - বিলকুল নেই। নিজের মনের বেলুনে নিজের হিসেবের ছুঁচ ফুটিয়ে রাতের ঠাণ্ডা বালিতে এলোমেলো গেলেন ক্রসোবাবু।

মনোজবাবুর তিন

“আই মিস্‌ ইউ” মার্কা মেসেজ্‌ পড়লেই গা গুলোয় মনোজ চ্যাটার্জির। “ধুর শালা” বলে রিপ্লাই করার আগে চানাচুরের বাটিটা কাছে টেনে নেওয়ায় খানিকটা সুস্থ বোধ করলেন তিনি। ** - শাড়ি চাই। একটা।  - তাঁত? সিল্ক? নাকি...। - পুরো লাল না হলেও লালচে। মিনিমাম হলুদ থাকলে বাদ। দাম পনেরোশো থেকে সাড়ে পনেরোশোর মধ্যে।   - আঠেরোশো থেকে...।   - পনেরোশো থেকে সাড়ে পনেরোশো। - প্রায় ওই রেঞ্জেই আর কী! - প্রায় নয়। ওই রেঞ্জেই।   - আসলে দোকান ভরা শাড়ি, দেখতেই পাচ্ছেন প্রচুর ভ্যারাইটি! - আচ্ছা। লাল। সবুজ বা হলুদ চলবে না কোন ভাবেই। দাম পনেরোশো থেকে পনেরশো পঁচিশের মধ্যে। স্ট্রিক্টলি।   - না মানে...।   - দোকান ভরা তেমন শাড়ি? - না। মানে অত স্ট্রিক্টলি দেখলে...। - অতটাই স্ট্রিক্টলি দেখুন। নয়তো আমি বাদ।   - পাঁচ মিনিট দিন। - ছ'মিনিট নিন। কিন্তু ছয় বলে সাত মিনিট নেবেন না। প্লীজ। *সাড়ে চার মিনিটের মাথায়* - স্যার। আপনার স্পেসিফিকেশনে মাত্র দু'টো শাড়ি। লালচে। সবুজ, হলুদ একদম নেই। দাম আপনার রেঞ্জে। একটা হচ্ছে তাঁত...। - স্টপ। কোয়ালিটি কে জানতে চেয়েছে? দু'টোর দাম কত? -

পিচকাই আর আবডাল

পাঁচ নম্বর সিঁড়িটা জলের এক ইঞ্চি নিচে, গোড়ালি ভিজিয়ে দাঁড়ানো যায়। ছয় নম্বর দেখা যায়, সাত আবছা, আটে কালচে সবুজ অস্পষ্টতা।  নয়, দশ, এগারো অন্ধকারে। পিচকাই বারো ছুঁয়ে ভেসে যেত। শ্যাওলা সবুজ জল চিরে মাঝপুকুরের টলটল। ছপছপ ছপ্পর। ওপারে পানা। পিচকাই। মায়ের মুখ বসানো, গায়ে ঘাসপুকুর গন্ধের পিচকাই। এমন একটা বিদঘুটে নাম। তবে আড়াই বছর বয়সে কী আর এমন তালেবর নাম ভাবা যায়? মৃণ্ময়ী?  অনিন্দিতা? আড়াই বছরের ছোট বোনের নাম তাই পিচকাই। পিচকাই অল্প বয়সে শাড়ি পরতে পারত। দু'টো বিনুনি ঝুলিয়ে টপাটপ অঙ্কের হিসেব সাবাড় করতে পারত; সে দাদার মত ক্যালকুলাস বেকুব নয়। অবিকল মায়ের মুখ বসানো। নরম ছায়া। নরম তোষক বালিশে পড়ন্ত দুপুরের রোদ মাখানো সুবাসের পিচকাই। "দাদা, সার্কাস দেখাতে নিয়ে যাবি?"র পিচকাই। "দাদা, তুই একটা অখাদ্য"র পিচকাই। "দাদা, আমি এখনই বিয়ে করব না"র পিচকাই। এত কিছু করতে না পারার পিচকাই। মরতে না পারার পিচকাই। জন্মাতে না পারার পিচকাই। মায়ের কান্নার পিচকাই।"সে জন্মালে আজ তার বিয়ে দিতে হত"র পিচকাই। পিচকাইয়ের না থাকার পিচকাই। মায়ের আবডালে থাকা না

দুই অনু

অনু ১ - ছাদের গন্ধ। নাকে আছে শ্যামলবাবু? - কার ছাদ? - ছোটবেলার। আপনাদের খড়দার বাড়ি।  - শ্যাওলা। নোনা ধরা ইট। জুঁই মেশানো। অল্প গঙ্গামাটি। - ক্যাপচা মিলে গেছে। পরলোকে আপনাকে স্বাগত জানাই শ্যামলবাবু। অনু ২ জানালাদের নাম দেওয়াটা ছিল তার অভ্যাস। শোয়ার ঘরে মাথার কাছের জানালার নাম আরশি, পায়ের কাছের জানালাটা কমললতা। পড়ার ঘরের একটাই জানালা; তার নাম বিধুশেখর। বসবার ঘরের উত্তরের জানালার নাম নিতাই আর পশ্চিমে রয়েছে অমলকান্তি। অন্যদিকে মিতার নাম পালটে জানালাবৌ করে নেওয়াটা তার সান্ধ্য অভ্যাস।

বাথরুমহর্ষক

বিনয় দত্ত নিজের বাথরুমটাকে বড় ভালোবাসেন। বারান্দা পেরিয়ে উঠোন, তার উত্তর কোণ। অ্যাসবেস্টসের ছাদ, টিনের দরজা। দু'টো কল; একটা কর্পোরেশনের টাইম কল, অন্যটা ছাদের সিনটেক্সের ট্যাঙ্ক থেকে সাপ্লাই পায়। এক কোণে একটা চৌবাচ্চা, কর্পোরশনের কলের মুখে লাগানো সবুজ পাইপ বেয়ে জল এসে জমা হয় সেখানে; এতে টুলু পাম্পটায় চাপ কম পড়ে, ইলেক্ট্রিক বিলে সাশ্রয় হয়। একটা লোহার বালতি, একটা প্লাস্টিকের। একটা অ্যালুমিনিয়ামের মগ। চৌবাচ্চার উলটো দিকের দেওয়ালে প্লাস্টিক ফ্রেমের আয়না ঝোলানো, তার নিচে প্লাস্টকের র‍্যাক। সে র‍্যাকে মার্গো সাবান রাখার সাদা সাবানদানি, ক্লিনিক অল ক্লিয়ার শ্যাম্পু, প্যারাশুট তেল, সাবান ঘষার খোসা আর দাড়ি কামানোর বাক্স। বিনয় দত্ত মনে মনে বাথরুমটাকে আই সি ইউ বলে ডাকেন; আদর করে। অফিস ফেরতা রোজ সপাট নিজেকে চালান করে দেন আইসিইউ'র অন্দরে। "মা মা গো, আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না মা"; অক্সিজেন চলে এক টানা। চৌবাচ্চার ঠাণ্ডা জলের স্টেরয়েড। মার্গো সাবানের মর্ফিন। ব্যথা স্তিমিত হয়ে আসে, ভয়ের দানা গুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। আধ ঘণ্টা আগের ভয়ার্ত ছোটখাটো জামরুল-নরম মানুষটা বাথরুম থেকে ইস্পাত ক

অন্তরে

- আর ইউ ড্রাঙ্ক? - নো। - তাহলে মড়ার মত পড়ে আছ কেন? - মড়া যখন, জ্যান্ত হয়ে থাকি কী করে? - ইউ আর স্যুইট। ডেড। অ্যান্ড ড্রাঙ্ক। - বাট অ্যাট লিস্ট আই অ্যাম ইনসাইড ইউ। - ইয়েস ইউ আর। স্কাউন্ড্রেল। - মুখে লাগাম দাও। - ওঝা ডাকলে পিছনের চামড়া গুটিয়ে নেবে। - ডাকো না। ডাকো। সুমনা। ওঝা ডাকো। - ডাকব। বাড়াবাড়ি আর কদ্দিন সহ্য করব। ডাকব। - তোমার কলজে নেই ডাকার। - যদি ডাকি? আমি সত্যিই ক্লান্ত। - ইউ আর আ মেনিয়াক সুমনা। মেনিয়াকদের লোভ থাকে। সাহস থাকে না। ওঝা ডাকার সৎ সাহস তোমার নেই। - মিথ্যে কথা। - তোমার সে অনেস্টি নেই। - অনেস্ট? তুমি লেকচার দেবে শুভ্র? তুমি? পনেরো বছরের বিয়ে। একদিনও নিজের বৌকে ছুঁয়ে দেখার সৎ সাহস দেখাতে পেরেছ? এখন যত অনেস্টির গল্প! -  ছুঁতে পারিনি।  সে ক্ষমতা আমার ছিল না। - সে'টা বিয়ের আগে মনে ছিল না? - রিভেঞ্জ তো যথেষ্ট হল সুমনা। লেট মি গো নাও। নিজেকে নিয়ে ছিনিমিনি এবার বন্ধ কর। ওঝাদের কাজ ভূত তাড়ানো। ডাক্তারকে দিয়ে মানুষ মারলে কি তারা ডাক্তার থাকে? - তুমি মারা যাওয়ায় অন্তত একটা কাজের কাজ তো হল। ফাইনালি ইউ আর ইনসাইড মি। - লেট মি গো। - যেও না। যেও না। আয়নার সা

ইডেন গার্ডেন্সের ব্যাপার-স্যাপার

১। আলু দেওয়া মাংসের পাতলা ঝোল দিয়ে কষে ভাত মেখে দুপুরের খাওয়াটা একটু মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেছিল। গড়িয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। সাড়ে সাতটার ম্যাচ, সাড়ে ছ’টায় সংবর্ধনা দেওয়া হবে ইমরান-শচীনদের। বালিগঞ্জ থেকে পাঁচটায় বেরোলেই যথেষ্ট। পাশবালিশ বুকে টেনে যখন লম্বা হয়েছি তখন বাইরে চড়া রোদ, জানালার পর্দা না টেনে দু’চোখের পাতা এক করার উপায় ছিল না। বাঙালির মানিব্যাগ; বাসের টিকিট আর ট্রেনের মান্থলিতেই সে’খানে লক্ষ্মীবাস।  সেই মানিব্যাগই আজ ভোল পাল্টে ফেলেছে। আজ সে স্রেফ এক পেটমোটা পকেট পোঁটলা নয়, সে আজ তিলিস্মি খাজানা। মানিব্যাগ খুলে ইডেনের সি-ওয়ান ব্লকের টিকিটটা ফের বার করলাম। দাঁতে টুথপিক চালানোর তালে তালে টিকিটটা খানিক উলটে পালটে দেখে মানিব্যাগে ওয়াপস রাখলাম। বালিশের তলায় টিকিটে ডাগর মানিব্যাগটা রেখে মাথা ঠেকাতেই ঝিমঝিমে ভাব নেমে এলো গা জুড়ে; সহজেই। তন্দ্রা কেটে গেল বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ। দম বন্ধ করা গুমোট অসোয়াস্তি। চোখ সয়ে আসতেই বাজটা পড়ল; বুকে। পর্দা সরিয়ে দেখলাম আকাশ মিশকালো। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে হুমকি। হুড়মুড় করে নেমে এলো বলে। ২। নামতে কসুর করেনি। সাড়ে পাঁচটা নাগাদ যখন ময়

মন্মথ ও অমল

চায়ের কাপটা সামনের টেবিলে নামিয়ে রাখলেন মন্মথ। এবার যাওয়ার সময়। এবার বিকেল।  অমল দরজার পাশে দাঁড়িয়ে। তার কাঁধে মন্মথের ব্যাগ। বুক পকেটে টিকিট। অনতিদূরে ট্যাক্সি। - "হাওড়া যাবিই?", অমলের দিকে তাকিয়ে ম্লান হাসলেন মন্মথ। - "আবার কবে দেখা হবে ঠিক আছে কোন?", ঢিপ করে প্রণামটা সেরে নিলে অমল। - "সাবধানে থাকিস"। - "আবার কবে আসবে মনুদা"? - "দেখি। যবে। তবে"। - "রাতে থাকলে তাও গল্প হত"। - "উপায় নেই। জানিসই তো আমার কাজের কথা। তোর মত ব্যবসায়ী হলে বরং পায়ে পা তুলে কয়েকটা দিন কাটিয়ে যেতাম কলকাতায়"। - "ভারী তো মাল সাপ্লাইয়ের কাজ, তাও তুমি সময়মত না ধরালে যে কী হত"। - "ইম্পর্ট্যান্টলি এখন সংসারটা চালিয়ে নিচ্ছিস। দিনের শেষে জি হুজুরি করে দিনক্ষয় করতে হচ্ছে না"। - " এ কাজেও কম সেলাম ঠুকতে হয় না জানো"। - " হ্যাঁ রে অমল। তোদের সেই আমগাছটা কেটে ফেলেছিস না?" - "দোতলা তোলবার সময় কেটে ফেলতে হল"। - "গাছটার আম বড় মিঠে ছিল"। - "মনুদা, কাল তৎ

নির্বাণ

- গৌতমবাবু। - *ফোঁৎ ফোঁৎ* - ও গৌতমবাবু। - *ফোঁৎ ফোঁৎ ফোঁৎ* - সেরেছে। তপস্যার ঘুম! ভয়ানক। বলি ও গৌতমবাবু। - কে? কউন? কে রে ব্যাটা? - আমি। আমি। দেখবেন, লোটা ছুঁড়ে মারবেন না প্লিজ।   - আরে! পরমেশ্বরদা। ওহ। বাঁচালেন। - আমি ভাবলাম আপনি বোধ হয় ঘুমের বড়ি খেয়ে তপস্যায় বসেছেন। - না তা নয়। আসলে ভারী মিঠে হাওয়া বইছিল কিনা। যাক। মাল কই? - মাল? - নির্বাণ। - ওহ। এই যে।   - এটা কী! লেফাফা? - ওই খামেই তো রয়েছে। - নির্বাণ? - আজ্ঞে। অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার।   - চাকরী? নির্বাণ? - এমন চাকরী যেখানে সোমবার লোকে ফুর্তিতে ড্যাং ড্যাং করতে করতে আপিস যায়। - রিয়েলি?   - মাইরি। - আপিসের নামটা কী? - শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী প্রাইভেট লিমিটেড।

কবিতার দিন

১। বিশ্ব কবিতা দিবস।   এমন দিনও যে আসে সে'টা জানা ছিল না নিমাইবাবুর। বিশ্ব কবিতা দিবস। মিনুর মাস্টার কত কিছু যে উদ্ভট খবর দেয়। বিশ্ব কবিতা দিবস। কবি জাতটাই আধ পাগলা। তাদের লেখাজোখার জন্য আবার আলদা দিন রেখে দেওয়া। আজ আর বারান্দায় বসে ধোঁয়ায় টান দিতে ইচ্ছে হল না নিমাইবাবুর। চট করে সিঁড়িতে এসে বিড়ি ধরালেন তিনি। বিশ্ব কবিতা দিবস বলে কথা। ২। - কী ব্যাপার? এখনও তৈরি হওনি? - তৈরি? কেন? কোথাও যাওয়ার আছে? - ওহ। তুমি তো আবার এদিকে নতুন। - ব্যাপারটা কী বলবে? - আজ ফ্রেম ডিঙনোর দিন। - কী? - ফ্রেম ডিঙিয়ে ওপারে যাওয়ার দিন। - ও'দিকে? - ও'দিকে। - আমরা যেতে পারব ওদিকে? আমরা? ফিরতে পারা যায়? - শুধু আজকের রাতের জন্য। কাল ভোর হওয়ার আগেই আবার ফ্রেমে ফেরত।   - শুধু আজ রাতের জন্য? - আরে আজ কবিতা দিবস যে। - তাতে কী? - সে কী! আমরা ফ্রেম না পেরোলে চাঁদিম হিম আর ঘোড়ার ডিম আর কারা গিয়ে রেখে আসবে না-কবিতার দুনিয়ায়? চলো চলো। আর বিলম্ব নয়। ৩। "এসো, এসো আমার ঘরে এসো আমার ঘরে"। সুরেলা। মিহি। আলো আলো। কানের মেঝে বেয়ে বুক ঘষটে ঘষটে তা

হাড্‌ল

১ নম্বর - মেঘলা। দু'চার ফোঁটার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।  ২ নম্বর - রাইট ক্যাপ্টেন।  ৩ নম্বর - অতএব? খিচুড়ি? ১ নম্বর  - বেগুন আছে। বেগুনী হতেই পারে।  ৪ নম্বর - ডিমের স্টেটাস? ৫ নম্বর - তেরোটা আছে।  ১ নম্বর - মিটে গেলো। সবার জন্য একটা করে। ক্যাপ্টেনের জন্য ডাবল ডিম ভাজা। ৬ নম্বর - পেঁয়াজ নেই। পেঁয়াজ নেই।  ১ নম্বর - পেঁয়াজ কুঁচি ছাড়া মামলেট কী করে হবে? মামলেট না হলে কী  করে হবে? খিচুড়িকে স্রেফ বেগুনীর হাতে ছেড়ে দেওয়া সেফ্‌ হবে? ২ নম্বর - হবে না। হবে না।  ৭ নম্বর - তাহলে উপায়? ১ নম্বর - ফাঁপরে পড়া গেল। মেঘ ইগনোর করব? ৮ নম্বর - এই আকাশে দু'চার ফোঁটা না নেমে যায় কোথায়! হাওয়ায় আমেজ পাচ্ছ না? এ মেঘকে পাত্তা না দেওয়া মানে শারজায় দাঁড়িয়ে মিয়াঁদাদকে পাত্তা না দেওয়া। ৯ নম্বর - উপায় আছে। ১ নম্বর - উপায় আছে? ২ নম্বর - উপায় আছে?  ৯ নম্বর - আলবাত আছে। ডিম সেদ্ধ। সর্ষের তেল, নুন আর কাঁচা লঙ্কা দিয়ে কষে মেখে। মামলেটের বাবা।  ১০ নম্বর -  হল না। হল না। জমল না।  ১ নম্বর - তোমার সবেতেই বাগরা। হবে না কেন? জমবে না কেন? ১০ নম্বর - বেসিক কেমিক্যাল ব্য

গুড ফ্রাইডে

- আপনিই মিত্রা? - ডু আই নো ইউ? - না। তবে আলাপে দোষ নেই। আমি মিহির। - আমার নামটা তো জানা আছে দেখছি। - আসলে 'মদির আঁখির সুধায় সাকি' নারী কণ্ঠে আগে শুনিনি। এমন ভাবে মানিয়ে যাবে ভাবতেও পারিনি।  - এ'সব পার্টিতে যে ভাবে মদক্ষয় হয়, সম্বিৎ টিকিয়ে রাখা বড় সহজ নয়। কী গাইতে যে কী গেয়ে ফেলেছি। - বেশ তো ভাসিয়ে নিলেন। - স্কচ যে'ভাবে ফোয়ারায় ছুটছে, কিছু কি আর ভাসিয়ে নেওয়ার জন্য বাকি ছিল? - নজরুলগীতির ব্যাপারে আমি অবশ্য টিটোটল্যার নই।  - যা হোক। কারুর তো কানে গেছে গানটা।  - পিলু মিশ্র। কাহারবা। মেজাজে পাতিয়ালা। কানের দোষ কোথায় মিত্রাদেবী। - কথায় তো বেশ নিট আপনি মিহিরবাবু।  - এবার বরফ মেশাই।  - মেশান।  - আপনার আসল নাম তো হান্সা। তাই না?  - মাই মাই মাই...আপনি কি গোয়েন্দা? - শেঠ ভগওয়ান দাসের এক মাত্র কন্যা। এ দেশের সবচেয়ে ধনী মানুষের একমাত্র উত্তরাধিকারিণী।  - নেশা ছুটিয়ে দিলেন। এ কথা গোপনে রেখে ঘুরতে চাই বটে, তবে কেউ জানলে ক্ষতি নেই। বাবা ভয় পায়, আমি পাই না।  - ভয় পান না? - না মিহির। - ভয় পাওয়া উচিৎ।  - জানি।  - কী জানেন? - জানি আমার প্রাণে

কবিতাগুচ্ছ

- স্যার। - হুঁ। - বলছিলাম যে...। - যে? - পাণ্ডুলিপিটা...। - কীসের? - আজ্ঞে? - কীসের পাণ্ডুলিপি? - আজ্ঞে...কবিতার।  - কার? - আজ্ঞে? - কার লেখা? - আমার। সেই যে। আপনি জমা দিতে বলেছিলেন।  - আমি? জমা দিতে বলেছি?  - আজ্ঞে।  - আমি বলেছি? - ওই মানে। অবনীবাবুর সংবর্ধনায় আপনাকে প্রণাম করে আমার লেখার কথা বলেছিলাম। গত অগস্টে। আপনি বলেছিলেন অফিসে এসে পাণ্ডুলিপি জমা দিতে। বলেছিলেন পছন্দ হলে ছাপা হবে। - ছাপা? - আজ্ঞে। - আপনার কবিতা?  - আজ্ঞে। যদি আপনার পছন্দ হয়।  - পছন্দ হয়নি। - হয়নি?  - পড়িনি। তবে পছন্দ হবে না। সে'টা বলেই দিতে পারি। - না মানে...দু'টো লেখা যদি...যদি পড়ে দেখতেন। - মাসে অন্তত সত্তরটা নতুন পাণ্ডুলিপি জমা পড়ে। ওই দিকে দেখুন। তাকে বোঝাই করে রাখা আছে। অন্তত সাড়ে পাঁচশো না পড়া পাণ্ডুলিপি রয়েছে।  - আপনার ভালো লাগত মনে হয়...। - কত কাটবে? - আজ্ঞে? - কত বিক্রি হবে? - না মানে সে'টা তো ঠিক...।  - এগজ্যাক্টলি। সে'টা যেহেতু হলফ করে বলা যাচ্ছে না, সেহেতু আপনি আসুন। - স্যার প্লিজ...। - আর ও আই। বোঝেন? - আর ও আই? -