Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2021

অ্যালিমনি

- এই যে, ট্যাক্সিটা আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে? আর ট্যাক্সি দাঁড়ালেও ট্রেন কিন্তু হার ম্যাজেস্টির জন্য নতজানু হয়ে বসে থাকবে না৷  - আহ্৷ আসছি তো৷ - মালপত্তর সব তুলে দিয়ে এসেছি।  - খুব ফুর্তি প্রাণে, তাই না? পারলে এখুনি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বিদেয় করে নাচানাচি শুরু করবি।  - চারটে বড় সুটকেস পিছনে৷  - খুব ফুর্তি?  - দু'টো সাইডব্যাগ ড্রাইভারের পাশের সীটে৷ - রাতের রান্না ফ্রিজে আছে। আজ থেকেই হুড়ুম করে বাইরে খাওয়া শুরু করিসনা৷ বাজারটাজার নিয়মিত যাস, মিতুলদি রান্নাবান্না যেমন করছিল তেমনই করবে৷  - ট্যাক্সিতে চারটে জলের বোতল রেখে দিয়েছি৷ একটা মাইল্ড ঠাণ্ডা ফর ইমিডিয়েট কনসাম্পশন। বাকিগুলো ম্যাক্সিমাম কনকনে, ঘণ্টাচারেক ওয়েট করতে হবে। ওভারনাইট জার্নি কেটে যাবে৷ তবে টনটনে টনসিলওলা মানুষদের ঠাণ্ডা জলের প্রতি এই সুইসাইডাল লোভ দেখলে গা জ্বলে যায়..।  - ডিভোর্সটা হয়েই গেল বাবু৷ কেমন চটপট, সুটসাট৷ তাই না? - নীল সাইডব্যাগের মাঝের খাপের চেনটা খুললেই..দু'টো বাক্স। একটায় ক্ষীরকদম, অন্যটায় গজা৷ এই গজা ব্যাপারটা তোর ওই অমৃতেন্দুর থেকেও খাজা। যেমন বিচ্ছিরি টেক্সচার৷ তেমনি ক্যাটক্যাটে মিষ্টি৷ যাক গে৷ হু অ্যাম আই ট

অতএব

প্রেমিকা "উত্তমকুমার" বলে ডাকায় কোনও প্রেমিক কোনওকালে লজ্জায় মাখোমাখো হয়ে পড়েননি। সুকুমার কোনওদিন রুমাল ব্যবহার করেননি বা বেড়াল প্রসঙ্গে ভাবনাচিন্তা করেননি৷ রবীন্দ্রনাথ কোনওদিন দাড়িতে হাত বুলিয়ে দেখেননি৷ নেতাজী বলতে মুলায়ম সিং ছাড়া কারুর কথা মনেই পড়েনা৷  শীর্ষেন্দুর ভূতেরা মগনলালের প্রাইভেট সার্কাসে কোরাস গেয়ে দিন গুজরান করে। রবি শাস্ত্রী মাইক হাতে "কলকত্তা কেমোন আছি" বলে চ্যাঁচামেচি না জুড়লে ইডেনে প্রাণ-প্রতিষ্ঠা হয়না৷  উচ্ছে-কোফতা ছাড়া পিকনিক টেনিদা বরদাস্ত করতে পারেনা।  আলভারেজকে প্রথমবার দেখেই শঙ্কর তাঁর পকেট কাটার ফন্দি এঁটেছিল। নিয়ম করে, দুলে দুলে, পাঁচালীর সুরে; আনন্দবাজারে প্রকাশিত জ্যোতিষী-তান্ত্রিকদের বিজ্ঞাপন না পড়লে- নিউটন কিছুতেই গ্র‍্যাভিটির বিটকেল হিসেবনিকেশ সামাল দিয়ে উঠতে পারতেন না। পলাশীতে মুখ থুবড়ে পড়ে সিরাজ ককিয়ে উঠে বলেছিলেন, "এট্ টু মিরু"?

কর্পোরেট বাউল, রামপ্রসাদ আর দিল্লীর বৃষ্টি

- এ যে ক্যাটস অ্যান্ড ডগস ভায়া৷ - ট্র‍্যাফিকে জবাই হওয়া ছাড়া গতি দেখছি না৷ - আহ্, তোমার খালি হাফ গ্লাস এম্পটি৷ ট্র‍্যাফিকের হয়রানিটাই দেখলে? বৃষ্টির পারকুইজিটগুলো অবহেলা করলে চলবে কেন৷ সাফিশিয়েন্ট মিঠে হাওয়া, গরমের হাঁসফাঁস গন, সন্ধ্যের ফুলুরি রাতের খিচুড়ি..। ফোকাস অন দ্য কন্ট্রোলেবলস, ট্র‍্যাফিক তোমার হাতে নেই৷ কিন্তু খিচুড়ির পাশের ডিমভাজার কোয়ালিটি তোমারই হাতে রয়েছে৷  - চাকরীবাকরী ছেড়ে কর্পোরেট ট্রেনিংয়ে ঢুকে পড়ুন সুদীপদা৷ এ'সব সুড়সুড়ি দিয়ে বেশ টুপাইস ইনকাম হবে৷ - আমি নিজেকে কী বলি জানো? কর্পোরেট বাউল৷ প্রমোশনে নেই, ল্যাং মারামারিতে নেই৷ দিনের কাজ দিনের মধ্যে মিটিয়ে নাও আর তারপর জীবনপুরের পথিক মোডে মানুষ কালটিভেট করে বেড়াও৷ - তা এই বৃষ্টিকে কালটিভেট করতে হলে কী করতে হবে? - জ্যামের দিকে দাঁত খিঁচিয়ে বসে না থেকে বৃষ্টির ফ্লোটা ফীল করো ব্রাদার৷ এ তো আর কলকাতা নয় যে ঘ্যানরঘ্যানর বৃষ্টি আড়াই মাস ধরে চলবে৷ দিল্লীতে এমন বৃষ্টি সহজে জোটে না৷ সো মেক দ্য মোস্ট অফ ইট৷  - কলকাতা৷ হুঁহ্৷ - ঝেড়ে কাশো৷  - কলকাতায় থাকতে কলকাতার বৃষ্টিকে কম গালাগাল দিইনি৷ অথচ এখন মনে হচ্ছে এমন দিনে গড়িয়াহাটে দাঁড়

কাগুজে বাগ

- আসুন ডক্টর চ্যাটার্জি। বসুন। আপনার অপেক্ষাতেই..। - ইয়ে, আপনার অনুচরটিকে সেই স্পেশ্যাল কফিটা আনতে বলে দিন প্লীজ৷  - আমার সঙ্গে দেখা করা চেয়েও দেখছি আপনার আগ্রহ কফিতে বেশি৷  - মাফ করবেন মিস্টার সেন, ক্যাবিনেট মিনিস্টার হিসেবে আপনাকে যে যথেষ্ট রেস্পেক্ট করিনা, সে বদনামটাটুকু অন্তত আমার প্রাপ্য নয়৷ তাছাড়া, মানুষ হিসেবেও তো আপনাকে কম ইয়ে করিনা৷ তবে আপনার অফিসের কফিটা..জাস্ট ইনক্রেডিবল।  - কৃতিত্বটা আমার আর্দালি মনোহরেরই প্রাপ্য৷ ছোকরার হাতে জাদু আছে। তবে আজ শুধু কফি খেয়ে সরে পড়বেন না যে৷ লাঞ্চটাও এখানেই বলে রেখেছি৷ পাবদা আর পমফ্রেট যে আপনার ফেভারিট, সে খবর কিন্তু আমি রাখি৷   - আমার পরম সৌভাগ্য বলতে হবে৷  - তা, প্রজক্টের ব্যাপারটা...? - সে'টার জন্যেই তো আপনার সেক্রেটারির কাছে জরুরী অ্যাপয়েন্টমেন্টটা চাইতে হল মিস্টার মিনিস্টার৷  ইট ইজ রেডি। - রেডি? - একদম৷ বিদেশী টেকনোলজি ধার করতে গিয়ে বিস্তর খরচ হয়েছে বটে, তবে মিশন হান্ড্রেড পার্সেন্ট সাকসেসফুল। বিটা টেস্টিং পেরিয়ে ফাইনাল রোল আউটের জন্য আমরা রেডি৷  এবার আপনি প্রাইম মিনিস্টারের পারমিশন আদায় করতে পারলেই...। - উনি তো এই ব্রেক-থ্রুর জন্যে

হোয়্যাটস্যাপিস্টস

পেল্লায় হোয়্যাটস্যাপ গ্রুপগুলো দাঁড়িয়ে আছে দু'ধরণের মানুষের কাঁধে ভর দিয়ে৷  প্রথম দল সর্বক্ষণ 'মডারেট' করে চলেছে৷ 'ডিসিপ্লিন' নিয়ে তারা সর্বক্ষণ শশব্যস্ত৷ তাদের ধারালো দৃষ্টি এড়িয়ে গ্রুপে হাওয়াও বইতে পারেনা। রাজ্যশাসনের ভার তাদের হাতে৷ কড়া ধমক, শ্লেষ, বিরক্তি আর নিয়মকানুন বানানোর হুজুগ; এ'সব মিলিয়েমিশিয়ে সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখছে তারা৷ তারা নিয়মিত চাবুক কষাচ্ছে; "দেখুন মিস্টার দত্ত, ফরওয়ার্ড মেসেজ পাঠাতে হলে অন্য গ্রুপে যান৷ এই গ্রুপ একটা সিরিয়াস পারপাস নিয়ে তৈরি হয়েছে, এ'সব ছেলেমানুষি যেন এ'খানে না দেখি"৷  মিস্টার দত্ত চোরাই সোনার বিস্কুট সমেত ধরা পড়লেও বোধ হয় এত ভেবড়ে যেতেন না।  "এই যে, সাহাবাবু! আপনাকে কতবার বলেছি গুড মর্নিং মেসেজ পাঠাবেন না৷ গ্রুপ মেম্বারদের মোবাইলে স্পেস নষ্ট হচ্ছে৷ আপনাকে অনুরোধ করা হচ্ছে গ্রুপ কন্সটিটিউশনটা আর একবার পড়ে দেখতে"। সাহাবাবু আজ পর্যন্ত খবরের কাগজের প্রথম পাতাখানা ছাড়া কিছু পড়ে দেখেননি৷ গ্রুপের কন্সটিটিউশন যে আছে তাই তিনি জানেন না, জানবেনও না৷ হোয়্যাটস্যাপের কড়া মেমোটিও তিনি পড়বেন না৷ পরের দিন ফের সকাল

ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স

- এই যে, সামন্ত। আগামীকাল অফিসে এসো কিন্তু।  - কাল? - কাল। - কিন্তু কাল তো শনিবার। - তা'তে কী? - না মানে স্যার...উইকেন্ডে..। - আহ, যুদ্ধে যেতে তো বলছি না। অফিসে এসো।  - এমার্জেন্সি কিছু কি? - একটা ট্রেনিং আছে। ডেভেলপমেন্টাল।  - কীসের ওপর? - ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স। হাইক্লাস একজন লাইফ কোচ আসছেন। টেড স্পীকার। গত মাসে মুম্বই টীমকে ঘ্যাম লেভেলে ইন্সপ্যায়ার করে গেছেন। কাজেই কাল তোমায় আসতেই হবে। টীমের সবাই আসছে। আর হ্যাঁ, কাল একটু সকাল সকাল এসো।  - শনিবার। তাড়াতাড়ি অফিস আসব ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্সের ট্রেনিং করতে? - উইকডেজ শুড বি অল আবাউট ওয়ার্ক ওয়ার্ক অ্যান্ড ওয়ার্ক। কালকের ব্যাপারটা তো একটা ফান এক্সারসাইজ।  - ফান? - রীতিমতো।  আই প্রমিস।  - বেশ। তা'হলে আজ বেরোই এখন স্যার।  - ও মা, এখনও তো সাড়ে সাতটাও বাজেনি। এই ভেতো বাঙালিদের এই একটা সমস্যা। অফিসে আসা মাত্রই বাড়ি যাব বাড়ি যাব বায়না। হেডঅফিস একটা জুম মিটিং রেখেছে সাড়ে আটটায়। সে'খানে তোমার থাকাটা মাস্ট।  - ওহ।  - দ্যাখ সামন্ত। নিজের মধ্যে একটু কিলার ইন্সটিঙ্কট তৈরি করো।  সব সময় অমন ন্যাতা হয়ে থাকলে কর্পোরেটে চলে না। এনার্জি চাই। ডাইনাম

ক্রিকেটের তুকতাক

নিজের মুখে নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো প্রসঙ্গে ফলাও করে কিছু বলতে চাই না, তাই বাধ্য হয়ে লিখতে হচ্ছে৷ তবে তার আগে একটা মিথকে ধ্বংস করা দরকার৷ অনেক প্রাচীনপন্থী কূপমণ্ডূক ক্রিকেট ভক্তদের ধারণা যে ক্রিকেটের যাবতীয় হিসেবনিকেশ তৈরি হয় বাইশ গজ বা তার আশেপাশে; ব্যাট, বল অথবা জিঙ্ক অক্সাইড সহযোগে৷ ব্যাপারটা যে আদৌ সে'রকম কিছু নয়৷ ক্রিকেটে তন্ত্রমন্ত্র এবং তুকতাকের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ না না, আমি খেলোয়াড়দের মাদুলি বিশ্বাসকে পাত্তা দিচ্ছি না, ব্যাট আর বল ছাড়া সত্যিই তাদের কোনও অস্তিত্ব নেই৷ কিন্তু সমর্থকদের তুকতাক যে যে কোনও ম্যাচের ভোল পালটে দিতে পারে; এ অমোঘ সত্য যে অস্বীকার করে তার মাথায় পড়ুক বাজ, বিরিয়ানিতে পড়ুক নকুলদানা, ইত্যাদি৷ কেউ এক চেয়ারে সাড়ে চার'ঘণ্টা ঠায় বসে থেকে প্রিয় দলের ফলো-অন আটকান, কেউ একটানা পেনিসিল চিবিয়ে উইকেট ফেলে দেন, কেউ টিভির সামনে থেকে উঠে গিয়ে নিজেকে শহিদ করেন রিকোয়্যারড রান রেট সামাল দিতে, কেউ আবার নিজের প্রিয় ব্যাটার অপয়া সংখ্যক রানে পৌঁছলে "সরি লেনিনদা" বলে গায়ত্রী মন্ত্র পাঠ করে থাকেন ফাঁড়া কাটানোর জন্য৷ আর আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, বেশিরভ

সাফ টেবিল

অফিসে একটা জমজমাট প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। "সাফ টেবিল প্রতিযোগিতা"। সবচেয়ে জমাটি ব্যাপার হল যে এ খেলায় আলাদা করে খেলতে নামার সুযোগ নেই, বিচারকরাই এক্ষেত্রে মাঠে নেমে দাপাদাপি করে থাকেন। বিনা নোটিশে তাঁরা ঘুরে ঘুরে সবার অফিস ডেস্ক জরীপ করে নম্বর দেবেন। কার টেবিলে জঞ্জাল কম, কে সমস্ত কাগজপত্র মনিকা-গেলার-গোছের হাড়-জ্বালানো জ্যামিতিতে সাজিয়ে রেখেছে, কে আবার বাড়তি সৌন্দর্য যোগ করেছে অনাবিল টবে বাহারে পাতার ছোট্ট গাছ সাজিয়ে রেখে। আচমকা যখন বিচারকরা হেলতেদুলতে আমার টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ালেন তখন আমার টেবিলে তখন আস্ত চিৎপুর বাজার উপুড় হয়ে রয়েছে। অন্তত খান পাঁচেক ফাইল ছড়িয়েছিটিয়ে, সবক’টাই খোলা। এ ছাড়া একটা পেন স্ট্যান্ড যে’টার মধ্যে সাতটা কলমের ঢাকনি আর একটাও পেন নেই। সতেরো রকমের তার টেবিলের নীচে ওপরে জড়াজড়ি করে পড়ে। গাছপালা নেই তবে দু’তিনটে প্রিন্টআউটের মরা বাঁশ শুয়ে পড়ে আছে অযত্নে। এ ছাড়া একটা ঢাউস টিফিনবাক্স, দু’টো জলের বোতল, একটা ব্যাকপ্যাক, দু’টো স্টেপলার আর দু’টো পিনের বাক্স (কিন্ত স্টেপলারে পিন ভরা নেই, প্রতিবার স্টেপল করার দরকার হলেই ভাবছি এইবারের মত কমন প্রিন্টারের কাছে বেঁধে

ছিদ্রান্বেষী

লোকজন বড্ড বেশি ছিদ্রান্বেষী হয়ে পড়েছে। কথায় কথায় শুধু খুঁত ধরে গপ্প ফাঁদা। গা জ্বলে যায়। ইচ্ছে করে দি কষিয়ে দু’ঘা। এই সবে একটু বাজারে বেরিয়েছি টপ কোয়ালিটি পাবদা খুঁজতে। সবেমাত্র খান-সাতেক দোকান ঘোরাঘুরি করে পাবদার পাশাপাশি সামান্য চিংড়িও তুলে নিয়েছি। সবে একটু দেশী মুর্গির খোঁজ করব কিনা ভাবতে ভাবতে একটা চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে একটা স্পেশ্যাল আদা চা অর্ডার করেছি। সবে ভাবতে শুরু করেছি ফেরার পথে সামান্য রাবড়ি আর জিলিপি নিয়ে ফিরব। এমন সময় নজরে পড়ল; কী বিশ্রী ভিড় বাজারে।  কী বিশ্রী ভীড়। দেশে আলফা বিটা গামা ল্যাম্বডা আর কত রকমের বিশ্রী করোনা ভ্যারিয়ান্ট নেচে বেড়াচ্ছে অথচ লোকে যেন সাপের পাঁচ দেখে রাস্তায় নেচে বেড়াচ্ছে। এ ওর গায়ে ঢলে পড়ছে, এ ওর সঙ্গে গপ্প জুড়েছে; যেন কল্পতরু মেলা। মাছের দোকানে ভীড়, মুর্গির দোকানে ভীড়, মাংসের দোকানে ভীড়, রাস্তায় অটো আর রিক্সার ভীড় – যাচ্ছেতাই! আরে এ’দিকে দেশে যে প্যান্ডেমিক চলছে সে’বিষয়ে কারুর কোনও হেলদোল নেই। এই ইনডিসিপ্লিনের জন্যই এ দেশের কিস্যু হল না আর হবেও না। অকারণে এত লোকের বাইরে বেরোনোর দরকারটা কী? দিব্যি ভাবলাম ফাঁকায় ফাঁকায় অল্প মাছ আর যৎসামান্য ম

মিটিংবাজ

কারণে অকারণে মিটিং ডাকাটা একটা রোগ৷ স্যাটাস্যাট কাজকর্ম ফিনিশ হচ্ছে৷ তরতর করে সবকিছু এগোচ্ছে৷ এমন সময় কারুর কারুর মিটিং-মিটিং মনকেমন শুরু হবে। অমনি চারদিকে দৌড়ঝাঁপ৷ সক্কলে সন্ত্রস্ত৷ মিটিং হবে! হাবিজাবি প্রিন্ট আউট বেরোচ্ছে, দুদ্দাড় করে কেউ এজেন্ডা দাঁড় করাচ্ছে, কেউ কফি বিস্কুটের অর্ডার দিচ্ছে, কেউ "উই মাস্ট বি অন টাইম" বলে খামোখা চেল্লামেল্লি করছে, কেউ "আমি তাহলে ভোট অফ থ্যাঙ্কসটা দেব'খন"? বলে নব্য-কফিহাউস কবি মাফিক মিউমিউ করছে;মিটিং হবে! এককথায় রথের মেলা বসে যাবে৷ অবশ্য নিউনর্ম্যাল জমানায় আবার কনফারেন্স রুম ঝেড়েপুছে সাফ করারও দরকার পড়েনা৷ সোজা জুম লিঙ্কের চাক্কুতে এফোঁড়ওফোঁড়৷ মোদ্দা কথা হল মিটিং শুনলেই পাবলিককে বুলেট-প্রুফ জ্যাকেট গায়ে চাপিয়ে ইয়ারবাড হাতে যুদ্ধ শুরু করতে হবে৷  "ওগো শুনছো" দিব্যি পাশ কাটানো যায়৷ কিন্তু মিটিংয়ে আপত্তি মহাপাপ৷ কাজকর্ম দু'চার আনা কম-বেশি হলে ক্ষতি নেই, কিন্তু মিটিং ডেকে মার্তণ্ড-মার্তণ্ড-মার্তণ্ড স্টাইলে এক্সেলেন্স-এক্সেলেন্স-এক্সেলেন্স না করলে দুনিয়াটাই জলে।  আর আউটপুট? যে কথা দিব্যি ফোন করে আড়াই মিনিটে সেরে নেওয়

বর্ষা

- বৃষ্টিফৃষ্টি না নামলে যে আর পারা যাচ্ছে না..। যা গরম, উফ! - বৃষ্টির কী দরকার? এইত্তো, দিব্যি বর্ষা এসে গেছে৷ গরম গন্। - বৃষ্টি ছাড়াই বর্ষা এসে গেছে? - টোটালি৷ আজ থেকে আমার বর্ষা শুরু৷ জমিয়ে বৃষ্টির গানটান শুনব৷ ডার্মিকুলের বদলে পন্ডস পাউডারে ফেরত যাব৷ মাথায় নবরত্নের বদলে কেয়োকার্পিন৷ - বৃষ্টি নামল না, এ'দিকে তুমি বর্ষা অ্যানাউন্স করে দিলে? নিজের মর্জিমত টেম্পারেচারকে কাঁচকলা দেখানো? গরমকে অগ্রাহ্য করা? - আজ বাড়িতে সিজনের প্রথম ইলিশ এসেছে৷ কাজেই মনসুন ইজ হিয়ার৷ ও'সব টেম্পারেচার ক্যালেন্ডার বা ওয়েদার ফোরকাস্ট দেখিয়ে এই ক্লাসি মেজাজকে বাগে আনার চেষ্টা কোরো না৷

লুচিবাজ

- বুঝলে ব্রাদার..। - ফের নেশা করে এসেছেন বিধুদা? মেসের পরিবেশ এ'ভাবে..। - আহ...নেশা নয়৷ আমায় কি তুমি মাতাল পেয়েছ? পোয়েটিক ইন্সপিরেশন। - তা কী বলছিলেন..? - বলছিলাম ব্রাদার..রাত দু'টো সময় লুচির কথা মনে পড়লেই ক্যালামিটি৷ - খিদে পেয়েছে? এক বাক্স খাজা আর এক ডিবে মুড়ি স্টকে আছে৷ চলবে? - টেস্ট ম্যাচের জন্য মন আনচান হচ্ছে বলে কি লুডোর বোর্ড পেতে বসবে ব্রাদার?  - যেহেতু খিদে পেয়েছে আপনার..। - মাঝরাত্তিরে লুচি লুচি মনকেমনের জন্য খিদের কী দরকার।  - তা বটে। - ভারী ডেঞ্জারাস সেই লুচি লুচি মনকেমন ব্রাদার৷ ভারী ডেঞ্জারাস৷ প্রেমট্রেমের ব্যথা রাতবিরেতে বুকে ধাক্কা দিলে তাও ট্রীটমেন্ট আছে৷ আফটার হল হৃদয় ইজ হাইলি ধুরন্ধর। খানিকক্ষণ কিশোরকুমার শুনে বা ছাতে পায়চারি করে প্রেমের হুহুকে বাগে আনা যায়৷ বাট দ্য বাগ অফ লুচি ইজ মার্ডারাস বিকজ নোলাকুমার হৃদয়বাবাজীর মত হিসেবি নয়৷ নোলা হলো বাউল..কখন আলুথালু হয়ে ভেসে যাবে..কেউ বলতে পারে না৷ - আপাতত তা'হলে ক্র‍্যাশ করুন৷ কাল সকালে লুচি না হোক, সুরভী সুইটসের কচুরি আর ছোলার ডালের ব্যবস্থা করা যাবে।  - তুমি ছিলে তাই এই কেঠো মেসবাড়িটাকেও সংসার মনে হয় ব্রাদার। য

লোনের ফোনে

- হ্যালো। - নমস্কার। আমি কি মিস্টার দত্তর সঙ্গে কথা বলছি? - হ্যাঁ। বলছি। আপনি? - আমি অমুক ব্যাঙ্ক থেকে দীপিকা বলছি।  - বলুন। - স্যার, আপনি আমাদের ব্যাঙ্কে একটা লোনের জন্য আবেদন করেছিলেন। - হ্যাঁ। - লোনের জন্য আমাদের ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করার জন্য ধন্যবাদ স্যার। আমি কি আপনার মূল্যবান সময় থেকে দু'মিনিট নিতে পারি? - কেমন একটা অদ্ভুত বাংলায় বললেন যেন। তবে সময়ের ব্যাপারে কোনও চিন্তা নেই। বাড়ির ওয়াইফাই ভোগে, হাতে অঢেল সময়। বলুন।  - আপনি গত মাসের বাইশ তারিখে লোনের জন্য আবেদন করেছিলেন। তাই তো? - একদম। - অমুক ব্যাঙ্কের তরফ থেকে মিস্টার মনোজ হালদার আপনার সঙ্গে কথা বলছিলেন৷  - রাইট। ভেরি ব্রাইট ফেলো, বলতেই হয়। মাত্র তিনচারটে ফর্ম কুড়ি মিনিটের মধ্যে ভরে নিয়ে সমস্ত প্রসেস করে নিল। প্রম্পটনেস একেই বলে।  - অমুক ব্যাঙ্কের বিজ্ঞাপন দেখেছেন নিশ্চয়ই। নিয়ম পরে, গ্রাহকদের সুবিধে আগে। - বিউটিফুল।  এ'টাই তো চাই। এক হপ্তার মধ্যেই লোন এলিজিবিলিটির কনফার্মেশন ইমেলও পেয়ে গেছি। আমি যাকে বলে সুপার ইম্প্রেসড। - থ্যাঙ্ক ইউ স্যার। তাহলে আপনি আমাদের সার্ভিসকে এক থেকে পাঁচের মধ্যে কত নম্বর দেবেন?  - সাড়ে পাঁচ। - মা

নতুন বই

*নতুন বইয়ের খবর পাওয়া গেল* দু'সেকেন্ডের মাথায়ঃ গুডরীডস ঘেঁটে দেখা বইটা সম্বন্ধে কে কী বলছে। আড়াই মিনিটের মাথায়ঃ গুগলে অন্যান্য রিভিউয়ের খোঁজ৷ সতেরো মিনিটের মাথায়ঃ বন্ধুকে ফোনঃ ওই বইটা পড়েছিস ভাই? কেমন বল দেখি? অমুক বইটার তুলনায় কেমন? তমুক বইটার তুলনায়? তুই নিশ্চিত ভালো? মা কালীর দিব্যি? দ্যাখ! কিনে ফেলছি কিন্তু। বাইশ মিনিটের মাথায়ঃ অন্য বন্ধুকে ফোনঃ হ্যাঁ রে ভাই, ভটকাই বলছে বইটা বেশ ভালো৷ ওর কথা বিশ্বাস করাটা ঠিক হবে কি? অন্যের বোলিংয়ে ব্যাটা একদম মন দিয়ে ফিল্ডিং করত না কিনা..তুই বলছিস বইটা ভালো? সিরিয়াসলি?  তেত্রিশ মিনিটের মাথায়ঃ আমাজনে (বা অন্য কোথাও) অর্ডার।  দু'দিনের মাথায়ঃ আমাজনের প্যাকেটটা রাক্ষুসে ভাবে ছিঁড়ে ফেলে বইটা বের করে হুড়মুড় করে চার পাতা পড়ে,  তাকে সাজিয়ে রেখে; স্নান করতে যাওয়া/হাতের জরুরী কাজ সেরে ফেলা/খেতে বসা।  আড়াই বছর পরঃ তাকে রাখা সে বইটার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস; সামনের মাসের মধ্যে বইটা পড়ে না ফেললেই নয়৷

রোব্বারের খেদ

এ'বার থেকে ঠিক করেছি রোববার রাত্রে সময়মত শুয়ে পড়ব৷ সোমবার সকালে এক্কেবারে "ফ্রেশ" মেজাজে অফিস-আলো করে না বসলেই নয়৷ যেমন ভাবা তেমনি কাজ৷  প্রথমত, চটজলদি ডিনার সেরে নেওয়া৷ রাত নটার মধ্যে৷  দ্বিতীয়ত,  দশটার মধ্যে বিছানা পরিপাটি করে শুতে আসা৷ হাতের কাছে জলের বোতল, মশলা জোয়ানের কৌটো। তৃতীয়ত, রাত পৌনে দুটোয় এসে একটানা অকারণ মোবাইলে স্টিক ক্রিকেট খেলার পাগলামোটা বন্ধ করা। (অবশ্যই এক রোববার রাতের লেখা) চতুর্থত, স্টিক ক্রিকেট বন্ধ করে স্টিক টেনিস খেলতে শুরু করা৷

সব চুকেবুকে গেলে

সব চুকেবুকে গেলে, লঞ্চে চড়ে হাওয়া খেতে বেরোনো যাবে।   সে টিকিটঘর দেশলাই বাক্সের চেয়ে সামান্য বড়।আর সেই টিকিট যেমন সরু, তেমনই পাতলা - সামান্য অসাবধান হলেই  বাবাজী ফুড়ুৎ।   দাঁড়ানো লঞ্চে হ্যাংলার মত উঠে পড়ার মানেই হয় না। ছুটির বিকেল খরচ হবে রসিয়ে রসিয়ে৷ জেটিতে এসে আগে দরকার এক ঠোঙা ঘটিগরম। সুখা মুখে জেটিতে বসে থাকা মানে ইডেনের গ্যালারিতে বসে এলসিএম জিসিএম কষা- সে অন্যায় ঘটতে না দিলেই মঙ্গল। লঞ্চ ছেড়ে চলে গেলেই জেটির ব্যাস্ততা হাওয়া। তখন একটু নজরুল আর অল্প আর ডি বর্মন গুনগুন করা যেতেই পারে। গলায় সুর না থাকলেও, মন এক্কেবারে নিয়মিত রেওয়াজ করা ওস্তাদ।  মুখে গঙ্গার মিঠে বাতাস, পকেটে পুরনো চিঠি। দু'একটা সস্তা চুটকি মনে পড়ায় হুট করে হেসে ফেলাই যাবে। রোব্বারের বিকেলের জেটির আশ্রয়ে কাউকে তো আর কৈফিয়ৎ দেওয়ার নেই৷  একসময়, ও'দিকের ঘাট ছুঁয়ে লঞ্চ ব্যাটা ফের এসে জুটবে। অমনি জেটিতে ব্যস্ততার হাওয়া। লঞ্চে ওঠার মুখেই মোবাইল বেজে উঠবে হয়ত। ফোনার ওপার থেকে অফিসের কোনও তাবড় কর্তা জিজ্ঞেস করবেন, "কোথায় আছ মুকর্জি"? ঘটিগরম আর নজরুলে পুষ্ট উত্তর যাবে তৎক্ষনাৎ, "জিমে ঢুকছিলাম যে। সানডে এই

মিটার

- মনটন বেজায় খারাপ ব্রাদার৷ - সে কী! কারণ? - ঠিক ধরতে পারছি না৷ একজন গোয়েন্দা লাগাতে হবে দেখছি সঠিক কারণ খুঁজে বের করতে। - ডিটেকটিভ? - ফেলু মিত্তিরের সঙ্গে আড্ডা জমাতে পারলে বেশ হত। - অন্য মিত্তির সাজেস্ট করতে পারি৷ সে মিত্তির কারণটারণ খুঁজে সময় নষ্ট করার বান্দা নয়৷ সোজা মনখারাপ তাক করে ঢিঁশকাও! - পি সি মিটার নয়? অন্য মিটার? - এস মিটার৷ শ্যামল মিত্তির৷

ফুটবলিষ্ঠ

- হ্যাঁ রে গুপে, টিভিতে আজকাল কোনও ফুটবল ম্যাচট্যাচ কিছু হচ্ছে নাকি? -  ফুটবল? - ফুটবল।  - ভটকাইদা, তোমার হঠাৎ ফুটবলের খবরে কী দরকার? - ফুটবল কি জাহাজ? আমি কি আদার বিজনেস করছি? - তেমনটাই তো জানি। সে'বছর পাড়ার মাঠে হঠাৎ ফুটবল খেলতে নেমে গোলকিপারের এগেন্সটে লেগ বিফোর উইকেটের অ্যাপীল করে রেফারি স্বদেশ জ্যেঠুর গাঁট্টা খেয়েছিলে মনে নেই? - আরে ওটা রিফ্লেক্সে মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেছিল। তবে ফ্র‍্যাঙ্কলি বলি গুপে, খেলতে নেমে অমন গায়ে পড়াপড়ি আমার ধাতে সয় না৷ যাকগে, আমি ফুটবল খেলতে চাইছি না৷ দেখতে চাইছি। - কিন্তু হঠাৎ ফুটবল দেখার শখ হলই বা কেন? ও'দিকে তোমার আদৌ কোনও ইন্টারেস্ট আছে কি? কোনও ফুটবলারকে চেনো? - আলবাত চিনি। পেলে। মারাদোনা। কৃশানু।  মেসি। চীমা। গোষ্ঠ পাল।  - বাহ্। তা, নিয়মিকানুন সব জানা আছে? - গোল দেওয়া আর খাওয়া। মাঝে এন্তার ধ্বস্তাধস্তি। কুস্তির আবার নিয়মফিয়ম কী? আর তোর অত কৈফিয়তেই বা কাজ কী? এ'বার থেকে ফুটবল দেখব। ব্যাস।  - ইউরো চলছে। কোপ আমেরিকা চলছে। লট অফ ফুটবল অন টেলিভিশন।  - এ তো চেনা সব টুর্নামেন্টের নাম। লাভলি। বলছি, রোনাল্ডো এখনও খেলে? - সুপারস্টার তো।  - এই বয়সেও খেল

পলাশী

তেইশে জুন ১৭৫৭, পলাশী। বাঙালা এবং ভারতের হাহাকার, কান্নাকাটি, হায়-হায়-এ-কী-হল, ইত্যাদি।   ওদিকে ব্রিটেনে ফুর্তির ঝড়।  কোম্পানির পৌষমাস।  আর রবার্ট ক্লাইভের পৌষ ম্যাক্স আল্ট্রা। আন্ডার দ্য টেবিল বেশ টু-পাইস বাগিয়ে বিলেতে ফিরলেন। সে টাকা নির্বিচারে উড়িয়ে পার্লামেন্টের সীটও  বাগালেন। আয়ার্ল্যান্ডে নিজের এস্টেটের নাম দিলেন - পলাশী (Plassey)।  ক্লাইভের সেই বিলিতি পলাশী রয়েছে লিমেরিক কাউন্টিতে। লিমেরিক নামটায় সামান্য দাঁড়াতে হল। বহু বিষয়ের মত কবিতা-টবিতার ব্যাপারেও আমার অজ্ঞতা সুগভীর। তবে লিমেরিক ব্যাপারটা ফেলুদার মুখে শুনে বেশ মুচমুচে লেগেছিল।  তাই হত্যাপুরীতে জটায়ুকে নিয়ে লেখা সেই লিমেরিক এ'দিক ও'দিক করে  দিয়ে দিলামঃ বুঝে দ্যাখো ক্লাইভের বরাতের জোর ঘুরে গেল ইতিহাস, এলো কলি ঘোর ট্রেটার যেদিকে যারা পকেটে নোটের তাড়া কোম্পানি  মসনদে, নবাবী নো-মোর। (২৬ জুন ২০২১, ফেসবুকে পোস্ট করা)

দ্য রেস অফ মাই লাইফ

গতকাল পড়লাম এই বইটা৷ এর বছরখানেক আগে লোপেজ লোমংয়ের একটা দুর্ধর্ষ আত্মজীবনী পড়েছিলাম, সে'টাও এক অদম্য অ্যাথলিটের গল্প। কিন্তু সে জীবনীতে রীতিমতো উপন্যাসের মশলা ছিল৷ গৃহযুদ্ধ,  রাজনীতি,  খিদের জ্বালা; সব মিলে টানটান৷ প্রবল মনকেমনের লেখা৷ মিলখার আত্মজীবনী ঠিক সেই ধরণের লেখা নয়৷ তবে সে'টা অভিযোগ নয়৷ সাহিত্যের উপাদান তাঁর জীবনেও কম ছিল না। দেশভাগের দাঙ্গায় পরিবার খোয়ানো কিশোর, প্রবল আর্থিক অনটন, ভেসে যাওয়ার অজস্র সম্ভাবনাকে প্রতি নিয়ত ডজ করে এগিয়ে চলা, ভালোবাসা-মায়া-মমতা-বিশ্বাসঘাতকতা, দুর্দান্ত উত্থান আর সাহেবি কেতায় যাকে বলে "মেজর হার্টব্রেক"; সবই ছিল। সবচেয়ে বড় কথা, ইতিহাসের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সযত্নে ছুঁয়ে ফেলাই যেত এই বইয়ে৷ যে'টা লোপেজ করেছেন৷ অথবা আগাসির মত সিনেম্যাটিক ভঙ্গিমায় ফ্রেম করা যেত বায়োগ্রাফিটা। মিলখা সে পথে হাঁটেননি৷ কিন্তু সহজ সরল স্টাইলে যে ন্যারেটিভটা তৈরি হয়েছে সে'টা দিব্যি ঝরঝরে৷ মিলখা নিজের কথা বলেছেন, ইতিহাস-টিতিহাস নিয়ে বিশেষ হোঁচট খাননি৷ একটা সুবৃহৎ সাক্ষাৎকার হিসেবে এ বই চমৎকার৷  গতকাল থেকে মিলখা সিংয়ের একটা 'কোটেশন' সোশ্যাল