Skip to main content

Posts

Showing posts from January, 2014

শুভ ২৬ জানুয়ারি

                       প্রথম ও শেষ দৃশ্য    -    দাদা,  আমার পিছনে টিকটিকি তুই লাগিয়েছিস ? -    সে জবাব কি আমি তোকে দিতে যাব ? -    আমার পিছনে টিকটিকি লাগাবি তুই, আর জবাব দেবে কি আমাদের বাবা ? -    নিজেকে আর নিজের সংসারকে বাঁচানো তো আমারই দায়িত্ব পিকু। তুই নিজে বখে ক্ষান্ত হলি না, এখন আমার সর্বনাশ করতে চাস ? -    তোকে কাঠি করতে আমার বয়ে গেছে। উত্তরপাড়ার জমিটা আমায় লিখে দে, ল্যাঠা চুকে যাক। -    বাবার উইল’য়ে যে হিসেব স্পষ্ট আছে, তা নিয়ে আমায় উত্ত্যক্ত করার কি মানে পিকু ?

খোসা ছাড়ানোর গল্প

টকটকে লাল সূর্য। ভোরের। লালচে কালো সমুদ্র। সূর্যের গালে আঁচিলের মত একটা পাখির মেলা ডানা। দেশ লাই বাক্সের ওপর এমন হলমার্ক মার্কা ছবি খুবই কম দেখা যায়। তবে সেই টকেটকে সূর্যোদয়ের ছবি হার মানিয়ে যা চোখ টেনে নেয় তা হচ্ছে সেই মেয়েটির চোখ যার হাতে দেশলাইটা ধরা আছে। সপাট তাকিয়ে মেয়েটি। বুকের মধ্যে ছ্যাঁত যেটা লাগে সেটা দেশলাইয়ের বারুদের নয়; অন্য কিছুর।   ল্যাম্পপোস্টের কোমর আঁকড়ে ছিল দেশলাই বিজ্ঞাপনের পোস্টারটি আর পোস্টারের সেই খুনে দৃষ্টির মেয়েটা। দু একটা যৌনরোগ বিশেষজ্ঞের প্যাম্পফ্লেটের দাপটে দেশলাই মডেলটির পেটের দিকটা রহস্যময় ভাবে বাদ পড়েছে। ল্যাম্পপোস্টটা যে বেশ পুরনো তা  ফটোটা খুঁটিয়ে দেখেই মালুম হবে।  এসপ্ল্যানেডে তোলা।  ফটোগ্রাফার ধীমান দত্ত। নিউ আই ফটোগ্রাফি ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে মোমবাতির মত জ্বলজ্বল করছিল ছবিটা।  নিউ আই ফটোগ্রাফি ম্যাগাজিনের কভার দিয়ে ঝালমুড়ির ঠোঙা ? ভাবা যায় ? ভদ্রলোক মুড়ি চিবোতে চিবোতে হয়তো উদাস হয়ে এটাই ভাবছিলেন। আনন্দবাজারের প্রথম পাতায় এমন মুড়ি চিবুনো ভুঁড়ি-ওয়ালা মধ্যবিত্তের ছবি সচরাচর দেখা যায় না। আজকের কাগজেও থাকার ক

অবিচুয়ারি নয়

-       কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে আপনি হ্যাঁ বলাতে চাইছেন ? -       ঠিক তাই। -       বেশ। আমি রাজি। -       রিয়েলি ? -       সিরিয়াসলি বলছি। শুধু একটা প্রশ্ন সুখদেও বাবু। এত পোষা গুণ্ডা থাকতে, আপনি আমার মত পাতি গোয়েন্দাকে দিয়ে এই খুনটা কেন করাতে চাইছেন ? -       কারণ, নিয়মিত ওনার কাছে যাওয়ার সুযোগ আপনার রয়েছে অনিন্দ্যবাবু। -       ও, সে খবরও রাখেন দেখছি। -       আলবাত। আমি জানি যে সুনেত্রা-দেবী আমার ক্লায়েন্টের ব্যাপারে খবর আদায় করতে গোয়েন্দা লাগিয়েছেন। আর এমন গোয়েন্দা লাগিয়েছেন যার সাথে অন্য কোনও ফিল্ম অ্যাক্টর বা সেলিব্রেটির বিন্দু মাত্র যোগাযোগ নেই। পুলিশ যাকে পাত্তা দেয় না। আমরা এও জানি যে উনি আর ওনার মেয়ে ছাড়া আপনার এই নতুন তদন্তের খবর কেউ জানে না। তাই আমি ঠিক করেছি, যে ওনার ফেউ গোয়েন্দা দিয়েই ওনাকে খুন করাবো।

অন্য

বালিগঞ্জ ফাঁড়ির মুখে ছুটে ট্রামে উঠতে গিয়ে গড়বড় করলেন আশুতোষ। পা ফসকে পপাত চ। সন্ধ্যের ভিড়, বাস-ট্যাক্সিতে মাখা-মাখি রাস্তা, সাই সাই করে অটোরিকশা ছুটছে; পা ফসকে ট্রামের চাকার তলায় যাবেন না মিনিবাসের টায়ার জুটবে এসব ভাবতে ভাবতেই ধপাৎ করে পড়লেন কাঠের মেঝেতে! কি মুস্কিল। বালিগঞ্জ ফাঁড়ির পিচের রাস্তা হয়ে গেল হলদে কাঠের মেঝে ? আশেপাশে তাকিয়ে আশুতোষ দেখলেন ঘন চাপ চাপ অন্ধকার। কিছুই তেমন দেখা যায় না। এ যে ভোজবাজি। ছিলেন কলকাতায় আর এলেন এ কোথায় ? তবে কি তিনি মারা গেছেন ? পেছন থেকে বাস এসে তার মাথা চটকে দিয়ে গেছে ? কি চাপ। বেয়াল্লিশে মারা গেলে তেমন ক্ষতি ছিল না, কিন্তু এল-আই-সি’টা আগামী মাসে ম্যাচিওর করছিল। গিন্নী সব কিছু ঠিকঠাক ম্যানেজ করতে পারলে হয়।  টের পেলেন কোমরে চিনচিন ব্যথা হচ্ছে। মরে গেলে কি ব্যথা-ট্যাথা হওয়া উচিৎ ছিল ? মহা-মুশকিল।   গায়ে  রক্ত-টক্ত লেগে নেই, আত্মার গায়ে রক্ত লাগা উচিৎও নয়। কিন্তু আশুতোষবাবু অবাক হলেন এই ভেবে যে পরলোকের চেহারা এত ম্যাড়ম্যাড়ে কেন ? স্বর্গ-সুলভ জেল্লা নেই, নরক-গোছের হ্যঁচড়-প্যাঁচর নেই।   শুধু এই হলদে কাঠের মেঝে। অন্ধক

সে

প্রথম পর্ব সিদ্ধার্থ জানলা খুলে অবাক হয়ে গেলেন। আচমকা এত মেঘ এলো কোথা থেকে ? পাহাড়ি এলাকায় অবিশ্যি এটাই মজা। রিসেপশনে ফোন করে আরেক কাপ চায়ের অর্ডার দিতেই হল। দ্বিতীয় পর্ব -    সিদ্ধার্থর লাশটা অন্তত... -    না মানসবাবু, পাওয়া গেল না...গোটা সিকিম প্রায় চষে ফেলা হল। -    ইন্সপেক্টর দাসগুপ্ত, ব্যাপারটা তো নাও ঘটে থাকতে পারে ? -    সুইসাইড নোট এর আগে বহু কেসে ফাঁপা বেরিয়েছে। সেটা বিশেষ অ্যানন্যাচুরাল নয়। ইনফ্যাক্ট, আপনি সিদ্ধার্থবাবুর দাদা হিসেবে ওর চারিত্রিক ব্যাপারগুলো হয়তো বেশি আঁচ করতে পারবেন।তবে মাস খানেকেও যখন কোনও খবর পাননি... -    ও আর যাই হোক, সুইসাইডের দিকে ঝুঁকবে এটা বিশ্বাস হয় না। এনিওয়ে, আপনি যা করলেন, আপনার প্রতি এই মিত্র পরিবার চিরকৃতজ্ঞ থাকবে ইন্সপেক্টর দাসগুপ্ত। -    কিছু আর করতে পারলাম কই মানসবাবু। -    সিক্রেটটা যেন...

মিতার মৃত্যু

( oKolkata থেকে cross-posted) শনিবার, সন্ধ্যে ৮ বেজে ৩০ মিনিট পরমা ফেনায় ভেসে যাচ্ছিল। বাথ টাবটাকে একটা সুরাপাত্র মনে হচ্ছিল। অবাক লাগে ভাবতে। কোথায় তার ছোটবেলার স্যাঁতস্যাঁতে কসবার বাড়ির অন্ধকার বাথরুমের এলুমিনিয়ামের মগ আর শ্যাওলা মাখা চৌবাচ্চা। আর কোথায় অর্ণবের এই তিন হাজার স্কোয়ার ফিটের ফ্ল্যাটের পেল্লায় বাথরুম এবং সেই বাথরুমের কোনে সুসজ্জিত বাথ টাবের পাশে রাখা ওয়াইন গ্লাসে তার চুমুকের লিপস্টিক।     আরও পাঁচ মিনিট আগে দীপক কিছু বুঝে উঠবার আগেই মিতা বন্দুকের নলটা নিজের মুখে ঢুকিয়ে ট্রিগার টেনে দিলে। মিতা যে সোফায় বসেছিল তার পিছনের দেওয়ালে রক্ত আর ঘিলুর ছিটে লেগে একাকার।

বিলু, বাবা ও মা

( হ-য-ব-র-ল থেকে Cross Posted) বাবাঃ বিলু ব্যাটা দিন দিন গোল্লায় যাচ্ছে। যখন দেখি, তখনই ক্রিকেট ব্যাট হাতে ধেই ধেই করছে। তাও যদি বুঝতাম দ্রাবিড়ের মতো টেকনিক ডেভেলপ করছে। পাঁড় আনাড়ির মতো ক্রস ব্যাটে খেলে। এদিকে পড়াশোনাও জলাঞ্জলি। ক্লাস সেভেনের অঙ্কে আর ফিজিক্সে ভদ্রলোকে ফেল করে? ব্যাটাকে এ্যারেস্ট করা উচিত।  মাঃ কত করে বললাম, অঙ্কে একটা টিউশানিতে হবে না। বিপিনদার ছেলের তিনটে অঙ্ক মাস্টার ঘরে পড়িয়ে যান। একজন জ্যামিতি, একজন বীজগণিত, একজন পাটিগণিত। আমার কথা শুনলে না। বললে ছেলের ব্রেনে প্রেশার পড়বে। এখন সামলাও ঠ্যালা। দিদির ছেলে অঙ্কে মিনিমাম নব্বই পায় প্রত্যেকবার। আর আমার ছেলে... ছিঃ! লজ্জা!  বাবাঃ ঠিক বলেছ। ব্যাটার পাড়ার পুজোয় নাটক করা আমি ঘুচোচ্ছি। এইসা প্যাঁদানি দেবো না...

নব্য বঙ্গ প্রেম

( ওমনিস্কোপ থেকে cross-posted) রাত পৌনে এগারোটা বাজতেই বেবুলদা বৌদিকে ঘরে টেনে নিয়ে দরজায় খিল। - “একটা সারপ্রাইজ আছে সোনা” বৌদি তো অবাক, “এই রাত্রে আবার কিসের সারপ্রাইজ ?” বেবুলদা মিউ মিউ করে কইলে, “ একটা, মস্ত ব্যাপার বয়ে এনেছি” - “কী গো? লিলুয়া থেকে মেজপিসি বড়ি পাঠিয়েছে নাকি গো?”, বৌদি উত্‍সুক। - “দ্যুত, একটা রোমান্টিক ইয়ে তৈরি করছি, আর কোথা থেকে নিয়ে এলে লিলুয়া আর বড়ি

পৃথিবী সৃষ্টির মুলকথা ও বাঙালি

( সৃষ্টি থেকে cross-posted ) একদিন। থুড়ি। সে সময় দিন ছিল না। সংখ্যা ছিল না। সমস্ত বলতে এত্তটুকু কনা; পরমাণুর চেয়েও ছোট; মামুলি একটা ব্যাপার। সেই মামুলি ব্যাপারের মধ্যে ছিল আজকের যাবতীয় সমস্ত কিছু, আজকের যতটুকু শক্তি তার সমস্তটুকু।  গ্যালাক্সিদের দল, তারা’দের ঘুর পাক, ডায়ণোসর, পিরামিড, মহেঞ্জদাড়ো, আপনার মর্নিং ওয়াক, মিনিবাসের ঘ্যাংর-ঘোর, বসের চেল্লানি, গিন্নির শপিং, কংগ্রেস-বিজেপি, উৎপাত-তবলা; সমস্ত। ওই এত্তটূকু দানার মধ্যে ছিলো অধুনা জিন্দগির যাবতীয় উৎপাত। তার বাইরে কিস্যুটি না, স্থান-কাল-পাত্র-বাপ্পি লাহিড়ী; কিস্যুটি না। ওই দানার পেটে রইলে সমস্ত সম্ভাবনা।  সহজ ভাষায় সর্ষে বাটা ইলিশের হাতছানি বুকে নিয়ে রয়েছিলো সেই দানাটি।

পাবলিক, কবি ও কবিতা

( okolkata থেকে cross-posted) পাবলিক : কি ? কবিতার বই কিনবো ? সে কি ? কিনলেই হলো নাকি? পড়বো কি করে ? গাইড বই কই ?ভূষণবাবুর টীকা-আলোচনা কই ? সুনীল-শ্রীজাত ব্লাফ মেরে গছিয়ে দেবেন তারপর কি সে সব মাল সাজিয়ে রাখবো? এই সেদিন ড্রয়িঙ রুমের শো-কেস’টাও দিলাম বেচে, আসলে বিপিন ভালো একটা অফার দিলে,এমনিতেই ঘুণ পড়বে মনে হচ্ছিলো ;দিলাম চালান করে আর কি। কাজেই ওই কাব্যির কেতাব যে সাজিয়ে রাখবো তারও উপায় নেই। আরে মশাই, ছেলেবেলা থেকে দেখছি মাস্টার মশাই কবিতা পড়ে যান, শিরোনামের মানে খোলসা করে দেন,ভাব বুঝিয়ে দেন, বিশেষ লাইনগুলো আন্ডারলাইন করতে বলেন; এত কিছু করে তবে গিয়ে কবিতা’তে কি কাগের ঠ্যাং-বগের ঠ্যাং গপ্প আছে তা মালুম চলে। এরপরেও ছিলো সহায়িকা। এভাবেই তো কবিতা পড়তে শিখেছি, আউড়াতে শিখেছি। এ বয়সে এসে যদি বলেন এসব পদ্য পড়লেই বুঝে ফেলবো’ উঈদাউট মানবেন্দ্রবাবু বা দীপেনবাবু’স ক্লাস, তো আপনি খেপেছেন। আনন্দলোক দিন চলবে; চেতন ভগতের বাংলা অনুবাদ দিন চলবে, এমনকি সুনীল-শীর্ষেন্দুর প্রেমের গপ্প-গদ্যও চলবে, কিন্তু কবিতায় ইনভেষ্ট করতে বলবেন না প্লিজ।

Coolকাতা'র কলকাতা

(mmm dot tv থেকে cross-posted) এপার ওপার তখন ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র । কোনও এক কাজ নিয়ে ঢাকুরিয়া মোড়ে । কাজের দিনে ভর দুপুরে রাস্তা পার হওয়া চাট্টিখানি বাত নয় । রাস্তার ওপর দিয়ে অবিশ্যি ফুট - ব্রিজ চলে গিয়েছে । কিন্তু ফুটপাথ ও ফুট - ব্রিজ ; বাঙ্গালির মত চমকিলা জাতির জন্যে নয় । একটু ছিঁচকে এডভেঞ্চার না থাকলে লাইফ যে একাদশী । দেড় মিনিট দাঁড়ালে অবিশ্যি ট্র্যাফিক সিগন্যাল পালটে যাবে ; জেব্রা ক্রসিং ধরে দিব্যি হেঁটে যাওয়া যাবে । কিন্তু দেড় মিনিট কি মাগনায় আসে ? উসেইন বোল্ট ওইটুকু সময়ে গোটা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা পায়চারি করে আসতে পারেন ।   মাদুলি ছুঁয়ে রাস্তায় ঝাঁপিয়ে পড়লাম । একটা মিনিবাস ’ কে ফাঁকি দিয়ে টুক করে রাস্তার মাঝ খান পর্যন্ত এসে পড়েছি । কিন্তু তার পরেও রইলাম ফেঁসে ।   অটো - রিক্সা আর মিনিবাসের খপ্পরে আটকে রইলাম । রাস্তার মধ্যিখানে শুধু আমি আর গাড়ির সমুদ্দুর । বাস - ট্যাক্সি - অটোর ভিড়ে ফোঁকর খুঁজতে খুঁজতে হয়রান । এমন সময় কে যেন হঠ করে আমার ডান হাত