Thursday, January 21, 2016

যদিদং

হই হই রই রই ব্যাপার।
আনন্দযজ্ঞের আয়োজন সমাপ্ত। এবারে মিলে যাওয়ার পালা। মিশে যাওয়ার পালা। জড়িয়ে নেওয়ার পালা। টেনে নেওয়ার পালা।
আর কেউ বলবে না "ওরা তো বর-বৌ নয়"। আর কেউ জানতে চাইবে না "এই অসময়ে তোমরা দু'জনে কী করছ?"। আর কোন কৈফিয়ত নয়। এবারে একটা নিপাট সংসার। আঁচল টেনে ধরার অবাধ স্বাধীনতা। সবজি বাজারে হন্যে হওয়ার অপার দায়ভার।
শ্যামলদার ছেলের মুখেভাতে "মিস্টার অ্যান্ড মিসেস" বলে নেমন্তন্নের কার্ড পাওয়ার সময়। একে অপরের ছড়িয়ে থাকা অন্তর্বাস বেমক্কা আবিষ্কারে হাঁ হাঁ লজ্জা না পাওয়ার সময়। আয়নার কাঁচে অগোছালো টিপ লেগে থাকার সময়।
এ সময়টা বড় মায়াবী। শুভদৃষ্টির আবদার আদানপ্রদান শেষ। চারিদিকে গুঞ্জন; পুরুত মশাই কই- যদিদং হৃদয়ং টং বলতে হবে যে। লগ্ন গোধূলি।
পুরুত-মশাই এগিয়ে আসেন। দেবীর চোখে চিকচিক, দ্যাবার বুকে ধড়ফড়; আর খানিকক্ষণ। পুরুত-মশাইয়ের গলা গমগম করে দ্যাবাদেবীর গলা বেয়ে নেমে বুক জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
সমস্ত ভাসিয়ে হৃদয় সমর্পণের মন্ত্রপাঠ শুরু করেন পুরুতমশাই ;
নীল নীল আকাশের কাছে আজ যাওয়া চাই
স্বপ্নের রঙে আজ মনে রং মাখা চাই
সাড়া দাও
সাড়া দাও সাড়া দাও সাড়া দাও
উদাসীন থেকো না, সাড়া দাও।
ভাগ করে নেওয়া ইয়ারফোনে হৃদয় আদানপ্রদান সম্পন্ন হয়। পুরুতমশাই মাথার টুপি আলতো নেড়ে চুমু ছুঁড়ে দ্যাবার কানে ফিসফিস করে জানান "দেবী রবে নীরবে, হৃদয়ে তব"।
"অগলা স্টেশন যতীন দাস পার্ক, প্ল্যাটফর্ম ডাহিনা তরফ" ; সহজ ঘোষণায় বৌভাত ফুরিয়ে যায়।

No comments: