Skip to main content

ডেমো

- ইধর সে আইয়ে।
- এ দিক দিয়ে?
- হাঁ। উধর থিকে।
- আইব্বাস। কোনদিন দোকানদারের দিকে আসা হয়নি আগে।
- কেয়া?
- মানে। আমাদের বংশে কেউ কোনদিন ব্যবসা করেননি, দোকান সামলাননি। সবাই চাকরী। ক্লার্ক টু বড়বাবু। ওই রেডিয়াসে। এই প্রথম এই কাঠের পার্টিশন পেরিয়ে দোকানির দিকে এলাম। অদ্ভুত একটা ফিলিং।
- প্যাকেট দিজিয়ে।
- এই যে। গতকালই নিয়ে গেলাম। আপনারই ফার্মেসি থেকে। ঠাহর করতে পারছি না ইউসেজটা। তাই ভাবলাম...।
- হাঁ। কাল এসেছিলেন। ইয়াদ হ্যায়। স্লিভ উপর কিজিয়ে।
- গোটাবো? অ্যাই যে।
- ইয়ে হাত মে রোল কর লিজিয়ে। ফার্স্ট স্টেপ।
- এই ভাবে তো?
- হাঁ।
- এইখানটায়, হাতের ভাঁজে। তাই তো?
- হাঁ।
- টাইট করিয়ে লিন।
- খুব টাইট করব? নাকি...।
- বস্‌ ইতনা হি। ইনাফ্‌।
- বেশ। দেন?
- দেন ইয়ে বাটন অন কর দিজিয়ে।
- তারপর?
- বস। ইলেক্ট্রনিক স্ক্রিন পে আপকা প্রেশার দিখ যায়েগা। ইন থার্টি সেকেণ্ডস।
- বলেন কী মশাই। ব্যাস? ওই হাতে করে প্যাঁপো দাবানোর ঝামেলা নেই?
- ইয়ে ইলেক্ট্রনিক হ্যায়। নো ঝঞ্ঝট।
- কত প্রেশার দাঁড়ালো মশাই।
- ওয়ান ট্যুয়েন্টি বাই সেভেন্টি নাইন। পারফেক্ট। বঢিয়া হ্যায় জি আপকা ব্লাড প্রেশার লেভেল।
- ছেলে বৌ দু'জনেই রয়েছে কী না।
- হ্যাপি ফ্যামিলি?
- হ্যাপি কি না জানি না। তবে। ইয়ে, ব্যালেন্স্‌ড ফ্যামিলি তো বটেই। গিন্নী সর্বক্ষণ ছড়ি ঘুরিয়ে প্রেশারকে উপরের দিকে টানছে, ছেলে গ্রাজুয়েশন করে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে গলায় গিটার ঝুলিয়ে রামপাম্‌পম্‌ মেজাজে ঘুরে প্রেশার কে নিচের দিকে টানছে। ছেলে বাইরে গেলে বৌয়ের "হ্যান করো না, ত্যান করো না"র ধাতানিতে প্রেশার বেড়ে যায়, ওপরেরটা দেড়শ নিচেরটা নব্বুই। মিনিমাম। বৌ বাপেরবাড়ি গেলে ছেলের সেবন করা গঞ্জিকার গন্ধে প্রেশার হু হু করে নেমে আসে মশাই। ওপরেরটা একশো পাঁচের নিচে ঘুরঘুর করে। দু'জনে একসাথে থাকলে আবার নো চিন্তা, এ ওদিক থেকে দড়ি টানে, ও ওদিক থেকে। আমায় মন্থন করে প্রেশার স্টেডি করে অমৃত জেনারেট করে।
- বেওসার উসুল আছে। দুকানদারির সময় বাজে গল্প না করা। ডেমো খতম। আসুন।
- এই। এই মার্ভেলাস অ্যাটিটিউডের জন্যেই আপনারা এগিয়ে। চলি, কেমন?

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু