অমলবাবু লুচি বড় ভালোবাসেন। বড় ভালোবাসেন। ধবধবে ফুলকো লুচি। ধবধবে। স্টিলের থালায় এক সাথে ছ'টা। প্লেটে লুচি খাওয়া যায় না, থালায়। পাশের প্লেটে আলুর দম। আর দু'পিস বেগুন ভাজা। সুন্দর করে সোফার পাশের টি-টেবিলটিতে রাখা। আরও বাড়তি একখানা ছোট প্লেট, তাতে বুক ভরানো বোঁদের টিলা।
অমলবাবু লুচি বড় ভালোবাসেন। মুশকিল হচ্ছে এটাই যে কাঁচের দেওয়াল ভেদ করে তো আর লুচির প্লেটে খামচি মারতে পারেন না। কিছুতেই পারেন না। হাতানো যায় না।
ওদিকে কাঁচের দেওয়ালের ওপারের অমলবাবু দিব্যি এসে সোফার বসে লুচি আলুরদম সাঁটিয়ে ঢেঁকুর তোলেন।
কাঁচের এপারে বসে লুচিহীন অমল সমাদ্দারের বুকের ভিতরটা দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে।
এমন প্রাণমন ভোলানো সোয়াদ। আহা! কাঁচের ওপারের লুচিখেকো অমলকে আর সহ্য করা যায় না। কিন্তু কাঁচের এ প্রান্তের এ অসহায় প্যারালালে ডিগবাজি খাওয়া আর কহাতক বরদাস্ত হয়?
হয় না। হয় না।
কিন্তু উপায় কী! কাঁচের এপারে জাতিস্মর হওয়ার জ্বালা যে ওপারের দ্বিগুণ, সে'বেলা? আগামী জন্মের স্মৃতি এ জন্মে লালন করে চলা কি কম যন্ত্রণার?
নয়। নয়।
কবে যে কাঁচের দেওয়ালের বাইরে মালা ঝুলবে। কবে লুচিখেকো অমলবাবু চোখের সামনে থেকে দূর হয়ে এ প্যারালালে অমলকে জন্ম দেবে।
এ'সব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতেই ফ্রেমের দুনিয়ায় আবক্ষ অমল সমাদ্দারের দিন কাটিয়ে রাত আসে আর রাত পোহালে দিন হয়।
**
- হ্যাঁ রে অমু, লুচি খেতে বসলেই তোর এমন ভয়ানক হেঁচকি ওঠে কেন?
- ও কিছু নয়। বাইশটার লুচি খাওয়ার আগে পর্যন্ত এ হেঁচকি থাকে। তেইশ নম্বর থেকে গায়েব হয়ে যায়। দাও আরও খান পাঁচেক।
- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না। - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো। - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত। - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র। - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...। - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা
Comments