Skip to main content

ইনসমনিয়ার ঘটনা

শাল জড়িয়ে উঠতে হল। বেশ ঠাণ্ডা। মোবাইলে সময় দেখলেন সমীরণ; রাত পৌনে দু'টো।

ইনসমনিয়ায় চানাচুরের খরচ বাড়ে। রান্নাঘরে গিয়ে বয়াম খুলে বাটি ভরে সোফায় এসে বসা। রোজকার মত। রোজকার মত আনন্দবাজার খুলে বসা। এক ঘেয়ে খুনখারাপির খবরে যদি চোখ লেগে আসে।

- ঘুম আসছে না রে?
- এটাই তো রোগ বাবা। তুমি আবার এত রাত্রে এদিকে কেন?
- তোর রোগ। আমার বয়স।
- বৌমা?
- কাদা।
- মা?
- লাইকওয়াইজ।
- বড় মুশকিল হল।
- মুশকিল কেন?
- রাতের পর রাত।  এই ভাবে ঘুম না আসা। ফ্রাস্ট্রেটিং নয়?
- সমু। হোমিওপ্যাথি ট্রাই কর।
- আনন্দবাজারে কাজ হচ্ছে না। তায় হোমিওপ্যাথি।
- ডাজ দ্য চানাচুর হেল্প?
- রিডিউসেস দ্য পেইন।
- গুড। গুড। 
- লুডো খেলবে বাবা?
- আপত্তি নেই। দাঁড়া বোর্ডটা আনি।

***

- অবিনাশ।
- বলো ডাক্তার।
- কদ্দিন চালাবে এটা? 
- যদ্দিন তদ্দিন। তোমার হোমিওপাতির ওষুধ তো..সাইড এফেক্ট যখন নেই...।
- তাই বলে সমীরণ রাতের পর রাত না ঘুমোলে...।
- ঘুমোচ্ছে। ভোরের দিকে ঘুমিয়ে পড়ে। তোমার বড়ির জবাব নেই হে ডাক্তার। ঠিক ভোর চারটে পর্যন্ত জাগিয়ে রাখে ওকে।
- না মানে...।
- অপরাধ বোধ প্লান্ট করতে চাইছ মনে? লাভ নেই। শোন। ছেলের তিন বছর বয়স পর্যন্ত নিয়ম করে রাত জেগেছি; ওর শ্বাসের অ্যাকিউট প্রবলেম ছিল। ওর স্কুল কলেজের কোনও ইম্পর্ট্যান্ট ফাংশন মিস করিনি। ক্লাস টুয়েলভ পর্যন্ত অঙ্ক ইংরেজি পড়িয়েছি। অথচ গত বছর পাঁচেক ধরে...মানে যবে থেকে ওই চাকরীতে ঢুকেছে সমু, যবে থেকে বিয়ে করেছে; উই হার্ডলি স্পীক। হার্ডলি। আই মিস হিম। ডু নট ব্লেম মি ফর মিসিং মাই সন।
- অবিনাশ। 
- ডাক্তার।
- মনে রেখ।  এক বয়াম চানাচুরে মাত্র দু'টো বড়ি গুঁড়ো করে মিশিয়ে দেওয়া। ওভারডোজ হলে কী হয় বলা যায় না।
- আরে এতদিনে মাপ বুঝে গেছি ডাক্তার। চিন্তা নেই। থ্যাঙ্ক ইউ। আজ আসি।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু