Skip to main content

জঁহাপনা

- বাবা। 
- জঁহাপনা। 
- সিরিয়াস কোশ্চেন।
- ওকে। বিলু। বল। 
- ক্যান্সার ইট ইজ দেন?
- ইয়েস।
- হান্ড্রেড পারসেন্ট?
- হান্ড্রেড পারসেন্ট।
- এস্কেপ রুট?
- কচু।
- থার্ড স্টেজ?
- থার্ড ওপিনিয়নে তাই বলছে।
- তবে আর কদ্দিন?
- ছয় মাস। দশ হলেও হতে পারে। 
- তুমি নার্ভাস?
- হাত পা সেঁধিয়ে যাচ্ছে। অবভিয়াসলি। 
- অবভিয়াসলি।
- দশ মাস। মানে তোর উচ্চমাধ্যমিকটা গেল। 
- তোমার চিন্তা এখন আমার উচ্চমাধ্যমিক নিয়ে?
- সবে তোর ফিজিক্সের নার্ভাসনেস্‌টা কাটিয়ে এনেছিলাম রে।
- তুমি না থাকলেও আমি ফিজিক্স নিয়ে নার্ভাস হব না। 
- টেনেটুনে জ্যানুয়ারি। ভাইটি। ড্রপ দিস না।
- বাবা, পরীক্ষা নিয়ে তোমায় আগে চিন্তা করতে তো দেখিনি।
- না মানে, মরা হাতি লাখ টাকা আর মরা বাপ লাখ চিন্তায়। 
- মরার পর চিন্তা?
- বায়প্সি রিপোর্টটা হাতে আসার পর থেকে ভূতে বিশ্বাসটা জোরালো হচ্ছে।
- ভূতে বিশ্বাস করব?
- না।
- তবে তুমি করছ কেন?
- তোর পৌষ মাস, আমার দশ মাস। 
- আমার পৌষ মাস ?
- অহ। ও হো। না না। সেভাবে মিন করিনি।
- বেশ। উচ্চমাধ্যমিক ড্রপ করব না।
- গুড। সেভিঙ্‌সয়ে যেটুকু রয়েছে চাঁদু, একেকটা বছর তোমার কাছে এখন প্রেশাস্‌। 
- প্রেশাস্‌। ড্রপ করব না। 
- তারপর দ্যাখ, ফ্র্যাঙ্কলি স্পিকিং। এই ছয় থেকে দশ মাসে হসপিট্যালে পিকনিক চলবে।
- হুঁ।
- কমলাকে দেখিস। বড় অভিমানী। এমন সেনসিটিভ বেড়াল বড় দেখা যায় না। 
- হুঁ।
- দ্যাখ। আর এক বছরে উচ্চমাধ্যমিক। তারপর ইঞ্জিনিয়ারিং?
- স্ট্যাটিস্টিক্স। মাস্টার্স তক্‌। 
- বাঘের বাচ্চা। তাহলে এক আর তিন আর দুই। ছ'বছর। চলে যাবে। দোতলাটা ভাড়া দেওয়ার ইন্তেজাম করে যাচ্ছি। চলে যাবে।
- হুঁ। সিগারেট খাচ্ছ?
- আমার ন্যাজ কেটে গেছে বস্‌। এসে যায় না। হ্যাঁ রে বিলু, মেয়েটা জানে?
- মেয়ে?
- ন্যাকারাম মল্লিক! ঈশানী। 
- ওহ। না মানে...।
- ভালো মেয়ে। কিন্তু শোন বাবু। ফাঁকা বাড়ি আর পিউবার্টির কম্বিনেশন হাতে পাচ্ছিস। বংশ মর্যাদাটা ভুলে যাস না। অবশ্য মেয়েটা ভালো। চিন্তা নেই। 
- তোমার আমায় নিয়ে চিন্তা হয়?
- ওয়ার্ন করে দেওয়াটা আমার কর্তব্য। 
- ধুস। 
- বাবু। 
- হুঁ। 
- মায়ের সাথে কথা বলিস। রোজ। ফোন করিস অন্তত একবার।
- হুঁ। 
- ইয়ে, মায়ের সাথে থাকবি?
- অনিকেতকাকুর সাথে আমার বনে না। জানো তো।
- অনিকেত ইজ আ জেন্টলম্যান রে। 
- বাবা। 
- বাবু। ওই যে। মরা বাপ, লাখ চিন্তা। 
- মা আজ কাঁদছিল। হসপিটালে। 
- ডিভোর্সে কি প্রেম ভালোবাসা উড়ে যায়? যেতে পারে বাবু? 
- না।
- ইয়ে। সরি। 
- কীসের সরি?
- ডিভোর্সটার জন্য। আই অ্যাম সরি। 
- মা চলে গেছিল। 
- আমি ম্যানেজ করতে পারিনি। তোর মায়ের মত মেয়ে হয় না।
- তোমার মত কেউ তেল কই রাঁধতে পারে না। মাও না। 
- হেহ্‌। রেসিপিতে একটু হালকা টুইস্ট আছে। তোর কবিতার ডায়েরিতে লিখে রেখে যাব। 
- বাবা। 
- জঁহাপনা।
- ইট্‌স নট গুড। 
- নট অ্যাট অল। তোর বাবা থাকবে না বাবু। আমার ছেলের বাপ থাকবে না। তোর জন্য আমার বড় দুঃখ। 
- অফ কোর্স।
- ফিজিক্সের ভয়টাকে রিল্যাপ্স করতে দিস না।
- উচ্চমাধ্যমিকও ড্রপ করব না। মাকে রোজ কল করব। ঈশানীকে বাড়িতে ডাকব না। 
- কেন ডাকবি না? আলবাত ডাকবি। লুকিয়ে ডাকবি না।
- বাবা। 
- জঁহাপনা। 
- মা আজ হাউহাউ করে কাঁদছিল। এমন ভাবে মাকে দেখিনি কখনও। 
- বাবু। 
- ইয়েস বস। 
- দশ মাস বা ছ'মাস পরে। মাকে বলিস আমারও ওর জন্য কান্না পেত। হাউহাউ লেভেলের। 
- হুঁ। ইট্‌স নট গুড। 
- নট অ্যাট অল জঁহাপনা। নট অ্যাট অল।  

Comments

You would be one of the famous writer of our time.....only if you come out of your comfort zone and write full scale novels.....if not bengali litarature will miss a genious....
Sreeja said…
bhisan bhalo laglo eta pore... winter e bideshe boshe mone holo gorom kal er chuti te 'desh'-er pata oltachchi :)
Debjit said…
chokher samne deka kichu gatonar sangey baddo mil pai.....
r apnake vallobasa eto sundor lekhar jnno.....
Palash Haque said…
I needed a bloody smoke after this
Unknown said…
Sir, apni eto bhalo lekhen... please kichu uponyash ber korun.... apnar lekha porte bhishon bhalolagey. Ami nijeo ektu tuktak likhe thaki, ashirbaad prarthi hoye roilam... :D
debalina said…
Ei comment ta tanmoy er thekeo beshi dhurjoti Babur jonno...thakuk Na keu nijer aram onchole nijer hridoy er kolom niye...Amra ei ushnota tuku peye dibbi achhi...tanmay er lekha gulo amar kachhe didar ranna khabarer moto...kono restaurant e ja paoa jabe Na r geleo tar banijyik ketay moner aram ta hariye jabe...eituku thak Na amader jonno
Swati Mukherjee said…
wish you would write dialogues for our films/ tv shows.
then there would be something worth watching.
or even audio-plays.
radio is a great medium.
Soutrik said…
কিছুদিন হল আপনার লেখা পড়ছি। কমেন্ট করিনি(ল্যাদখোরশিরোমণি!)। এই লেখাটা পড়ে করতেই হল। আপনি বেশ লেখেন! পড়ে কেন জানিনা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের লেখার কথা মনে পড়ে গেল।
Jagori Mani said…
কাঁদিয়ে দিলেন তো!😢

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু