Skip to main content

সায়ামিজ ট্যুইন

- কাল ফিজিক্স প্র‍্যাক্টিক্যাল। বেসিকস ঝালিয়ে নেওয়া দরকার। এই বেলা।
- অবশ্যই। তবে কিচি ফোন করেনি। ফোন ধরেনি। 
- সামন্তবাবু রাগ পুষে রেখেছেন। ইন্টার স্কুল সেমিফাইনালে তোমার অকারণ লাল কার্ড দেখাটা উনি মাফ করেননি। কোচ হিসেবে সেটা স্বাভাবিক। আর ফিজিক্সের মাস্টার হিসেবে কাল তোমায় রগড়াবেন সেটাও স্বাভাবিক। পড়তে বসো চাঁদু।
- হ্যাঁ। সামন্তবাবু কাল অন ফায়ার থাকবেন। এ বেলা পড়তে বসাটা দরকারি। কিন্তু কিচি চিরকুটও পেয়েছি কিনা বোঝা যাচ্ছে না।
- ফিজিক্সে ধ্যারালে সামন্তবাবু আর কিচি দু'জনে চাবকাবে। ফিগারেটিভলি।
- অতিশয় চিন্তার ব্যাপার। এই বেলা বই খোলা উচিত। কিন্তু কিচি গতকাল বিকেলে কাটকাট উত্তর দিয়েছে।
- ফাইন্যালে নম্বর যোগ হবে বস। আর ফিজিক্সে ফোঁটা ফোঁটা নম্বর সোনা গলানো জল।
- হ্যাঁ। ক্রিটিকাল। ক্রিটিকাল। ঝপাৎ করে নোটগুলো রিভাইজ করা দরকার। কিন্তু কিচিদের ল্যান্ডলাইনেও শুধু কাকু ফোন ধরছেন। যদিও কিচি জানে এ সময় একমাত্র কল করনেওলা বান্দা কে।
- ফিজিক্স। বস। ফিজিক্স।
- অফ কোর্স। কিন্তু। বস। কিচি ফোন ধরছে না। নতুন অঙ্কের মাস্টার রেখেছে কিচির মা।
- সো?
- সো কিছু না। মানে ইঞ্জিনিয়ারিং থার্ড ইয়ার। পড়ার কত চাপ। তার অঙ্ক টিউশন পড়িয়ে কাজ কী?
- ছিঃ।
- না মানে....।
- ছিঃ ছিঃ।
- না মানে...।
- রাইট ব্রেন। তুমি একটা শুয়ার।
- তেমন ভাবে বলতে চাইনি...।
- যা বলার বলে ফেলেছ। হারামি!
- এ কী ভাষা ভাই লেফট ব্রেন!
- থামো! ভাষা শিখিও না। পেটে লাথি মেরে ফুটবল ম্যাচে রেড কার্ড দেখা কার জন্যে? তুমি ভাষা নিয়ে জ্ঞান ঝেড়ো না।
- ভাইটি। প্লীজ।
- কিচির অঙ্কের মাস্টার টেনে কথা?
- তা নয়।
- আলবাত তাই। সায়ামিজ ট্যুইন না হলে তোমার পেটে লাথি মেরে এখন লাল কার্ড দেখতাম।
- কাল ফিজিক্স লেফট ব্রেন। কাল ফিজিক্স।
- কথা ঘোরানো? কিচি ফোন ধরছে না।
- ইউ গেট দ্য পয়েন্ট।
- আই গেট দ্য পয়েন্ট।

দমাস করে ফিজিক্সের নোটের খাতা বন্ধ করে হুড়মুড় করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লে দীপু। কিচির বাবা বোধ হয় এককালে ফিজিক্স টিউশন পড়াতেন।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু