Skip to main content

গাড়ি চাপা

- এটা কী হল?
- কী হল মানে? অন্ধকারে আপনি এমন হুড়মুড় করে গাড়ির সামনে চলে আসবেন তাই বলে?
- আহা না হয় একটু দু পেগ ডাউন ছিলাম। দুলকিতে হাঁটছিলাম। তাই বলে গাড়ি চাপা দিয়ে আমার মেরে দেবেন?
- হোয়াট ননসেন্স! গাড়ি দাঁড় করিয়েছি ভদ্রলোকের মত, তাই বলে আজেবাজে বকবেন?
- বোঝ কাণ্ড। স্পষ্ট ধাক্কা মারলেন। আমি চাকার তলায় গিয়ে অক্কা পেলাম। আর এখন বলছেন আজেবাজে বকছি আমি?
- বোঝ কাণ্ড। হ্যাঁ মনে হল বটে আপনাকে চাপা দিয়ে ফেলেছি। কিন্তু এই তো আপনি দিব্বি উঠে দাঁড়িয়ে আমার সাথে কথা বলছেন।
- আরে ধুর। বেরিয়ে এসে দেখুন না ড্রাইভারসাহেব। আমার লাশ পড়ে আছে। গাড়ির চাকার নিচে।
- যতসব আজে বাজে কথা।
- বেরিয়ে এসে দেখুন না মশাই। আমার লাশ আপনার চাকার তলে পড়ে। আমি তো ভূত। আপনার সাথে একটা হেস্তনেস্ত করার জন্য উঠে এসেছি।

**
উপায়ন্তর না দেখে হরিপদ ড্রাইভার আগন্তুকের কথায় গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন।
- চলুন দেখি আপনার লাশ।
- এই দেখুন। পিছনের বাঁদিকের টায়ারের নিচে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আহা রে। দেখুন। মুখটা পর্যন্ত গেছে থেঁতলে।
- সরি। সরি। এহ্‌ হে। খুব খারাপ লাগছে।
- তবেই দেখুন। আমার এ লাশের যা অবস্থা হয়েছে, ছেলে বৌ মিলে চিনতে পারলে হয়।
- ভেরি সরি। আপনার লাশের এমন থ্যাবড়ানো হাল দেখে রীতিমত খারাপ লাগছে। আমার লাশ বরং এর চেয়ে অনেক ফিটফাট অবস্থায় বসে।
- আপনার লাশ? আপনি আমায় গাড়ি চাপা দিলেন, আর লাশ পড়বে আপনার? ভূতের সাথে ইয়ার্কি করছেন স্যার? একটা স্টিয়ারিং পেয়ে মাথা কিনে নিয়েছেন?
- দেখ কাণ্ড। আরে ভূত হয়ে এমন গড়বড় আপনি কী করে করলেন। আমায় যখন আপনি গাড়ি থেকে বের হতে বললেন আপনার লাশ দেখতে, তখনই তো ভয়ের চোটে হার্ট অ্যাটাক হয়ে আমি মারা যাই। গাড়ির ভিতরে একবার চেয়ে দেখুনই না ব্যাপারটা, স্টিয়ারিঙে মাথা রেখে আমার লাশ দিব্যি শুয়ে আছে।

Comments

Anonymous said…
Dada Namaskar,

Aapnar lekha aami sudhu pori bolle bhool bola hobe. Aami apnar lekha gili!!!

I am a regular reader of your blog posts and within a very short period of time (2 months to be precise) you have won over my heart, mind and soul. You might have a long list of fans or readers but I doubt anyone waits for your posts so eagerly.

Michchiler seshe haanta supporter moto awaaz dichchi - Chaliye Jaan ami aapnar saathe aachi.

God bless you Dada.





Soutrik said…
সত্যজিৎ রায়ের একটা গল্পের কথা মনে পড়ে গেল।

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু