Skip to main content

মিতা ও ঘনাদা

- হ্যাঁ রে... ।

- হুঁ।
- বল্টে।
- হুঁ।
- ঘুমোলি?
- হুঁ।
- এমন চট করে ঘুমোলি রে?
- হুঁ।
- অ্যাই বল্টে। 
- কী রে দাদা! ঘুমো না। 
- এ বয়েসে কোথায় রাত জেগে বই পড়বি তা না ঘ্যাসঘ্যাস করে ঘুমোনো শুধু। 
- হুঁ। 
- ওই দ্যাখো। ফের ঘুমোয়! ওরে ঘনাদা তোকে তাক থেকে ডাকছে। তৃতীয় সমগ্রটা তো শেষ করিসনি এখনও। 
- দাদা, উফ! ঘুমো। 
- ঘুম আসছে না তো।
- সে জন্য আমায় ঘনাদা পড়াবি?
- আমার ঘনাদা সমস্ত পড়া। নতুন করে পড়ার নেই। সে দুঃখে জেগে। আর তুই সেখানে ঘনাদা কমপ্লিট না করে ভোঁসভোঁস করে ঘুমচ্ছিস। দাদা হয়ে বরদাস্ত করব? আমি কি মুকেশ আম্বানি রে?
- উফ। কেসটা কী বলবি?
- কী কেস?
- হাঁসের ডিমের ঝোল দিয়ে দেড় কিলো ভাত খেয়েও ঘুম আসছে না বলছিস। কেস না?
- মিতা। পরের মাসে যাচ্ছে রে।
- মিতাদি? 
- ওর বাবা দুবাই যাচ্ছে। উইথ ফ্যামিলি। আজই কনফার্ম হয়েছে। 
- চাপ কীসের। হোয়াটসঅ্যাপ আছে। ফেসবুক আছে। স্কাইপ আছে। 
- মিতা থাকবে না রে। ওসব ডিজিটাল প্রেম-ফ্রেম ল্যাদের কনসেপ্ট। পার্কের বেঞ্চি নেই, এগরোল ভাগাভাগি নেই, মিতাদের ছাতের কোণ নেই...। 
- মিতাদিদের পাইপ বেয়ে ছেলে ওঠার কথাটা তাহলে সত্যি রে দাদা?
- চোপ। খালি মেয়েদের মত গসিপ গল্প খুঁজবে। ডেঁপো হয়ে যাচ্ছিস দিন দিন। 
- যাব্বাবা!
- মুশকিল রে। মিডল ইস্ট শেষে আমায় পিষে মারলে। 
- এখন উপায়?
- গ্র্যাজুয়েশনটা বাদ দিয়ে একটা জুটমিলের চাকরী। সাড়ে ছয় হাজার মাইনে। বাবা অবভিয়াসলি তাড়িয়ে দেবে বাড়ি থেকে। 
- সার্টেনলি। 
- স্টেশনের পাশের বস্তিতে একটা ছোট কিছু নিয়ে নেব। অ্যাসবেস্টসের ছাত, আধ মাইল দূরে কমন বাথরুম। 
- তার চেয়ে টিউশানি ভালো। 
- রোম্যান্স কম রে। জুটমিল। টিফিন বাক্স গুছিয়ে দেবে মিতা। স্টিলের। রুটি সবজি। হুইস্‌ল বাজবে ছুটির। মিতা চোখে কাজল দেবে সবুজ প্লাস্টিক ফ্রেমের দাড়ি কামানোর আয়নায় মুখ দেখে। 
- এটা বোধ হয় প্ল্যান বি, তাই না রে দাদা?
- রাইট। 
- প্ল্যান এ?
- প্ল্যান এ? মান্না দের ঘ্যানঘ্যানে কস্টিউম পরে ঘনাদার বাতেলার স্যুইমিং পুলে সাতদিন। এক টানা। 
- এনে দেব ঘনাদার তৃতীয় খণ্ড?
- আর দু'টো প্যাঁড়া টু গো উইথ দ্যাট প্লীজ। বাবা দেওঘর থেকে এনেছে।ফ্রিজের একদম ওপরের তাকে আছে।

Comments

Anonymous said…
ঘনাদা - প্যাঁড়া - প্লাস্টিকের আয়না -দুবাই সব মিলেমিশে জবরজং লাগল। অন্য লেখার সাথে তুলনীয় নয়।

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু