Skip to main content

মেজদার ডিডাকশন্

- শার্লক এমনি এমনি গুলে খাইনি রে।
- হঠাৎ এ কথা কেন মেজদা?
- হিন্ট পড়তে শিখেছি। ডিডাকশনে সিদ্ধহস্ত হয়েছি।
- এখন কোনও হিন্ট পড়তে পারলে বুঝি?
- তুই জিমে ভর্তি হয়েছিস বলিসনি তো?
- জিমে? কই না তো।
- লজ্জা পাওয়ার কী আছে? শারীরিক কসরত তো ভালো জিনিস।  তোর ভুঁড়ি কমেছে, বাইসেপ শেপে এসেছে। থলথলে থেকে নাদুসনুদুসে নেমে এসেছিস। এক মাসের মধ্যে এমন ট্রান্সফর্মেশন ভাবাই যায় না।
- দুরন্ত। আরও কিছু অবজার্ভ করলেন নাকি শার্লকদা?
- জিম ভালো জিনিস। গাঁজা নয়।
- গাঁজা?
- অমন সরল মুখ সমস্ত ক্রিমিনালের থাকে বাবু। রিসেন্টলি যখনই দেখছি তোর চোখ লাল। হাঁটার স্টাইল সন্দেহজনক ভাবে দ্রুত। অখাদ্য সব সুর গুনগুন করে চলেছিস। কন্সট্যান্ট একটা ঢুলুঢুলু ভাব।
- এবার একটা পাইপ কেনো মেজদা।
- এলেম আছে বলছিস?
- এলেম থেকে এ'টা বাদ দিতে হবে।
- হোয়াই?
- গত মাসে খোকার বয়স ছ'মাস পেরিতে সাতে পড়লো। আমার ওপর দায়িত্ব পড়েছে রাতে ঘুম পাড়ানোর। আট কিলো ওজন কোলে নিয়ে জগিং, জাগলিং আর পায়চারী রিদ্মিটিক্যালি কম্বাইন করে ঘুম পাড়াতে হয়। রামচিল্লানি থামাতে প্রথম পনেরো মিনিট জগঝম্প,  চোখে ঘুম ইনডিউস করতে সুইঙিং পায়চারী পরের কুড়ি মিনিট ধরে আর ঘুম কনসোলিডেট করতে খোকা ঘুমোলো পাড়া জুড়োলোর সুরে মুনওয়াক শেষের কুড়ি মিনিট।   ব্যাটাচ্ছেলে আবার মাঝরাতে দু'বার ওঠে। কাজেই প্রতি তিনবার আমায় এই রুটিন রিপীট করতে হয়। জিমের গ্র‍্যান্ডফাদার আর এদিকে ঘুমের দফারফা। তাই ভুঁড়ির চাপ, বাইসেপে ধার আর ঘুমচোখ রগড়ে দিন কাটানো।
- ওহ। আই সী। ওই অদ্ভুতুড়ে গুনগুনটা তাহলে "বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেব কীসে"।
- ওটা মাথায় কন্সট্যান্ট লূপে থাকে। এলিমেন্টারি শার্লকদা, এলিমেন্টারি।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু