জানুয়ারির যে কোনও একটা ডিনারে ভাত বাদ দেন সমরবাবু।
ডালটাও বাদ যায়।
ঝোল থাকে না।
তরকারি থাকে না।
থাকে না ভাজাভুজি কোনও।
থাকে শুধু হাফ কিলো ছানার পায়েস। গায়ে থাকে হাফ সোয়েটার। কানে ইয়ারফোন, ইয়ারফোনে জগজিৎ সিংহ।
খেতে আধ ঘণ্টা মত লাগে, সে সময় মোবাইলটা থাকে এয়ারপ্লেন মোডে। আর সমরবাবু ভেসে বেড়ান। ঘুরে বেড়ান। পায়চারী করেন। দুদণ্ড পুরনো শুকতারা হাতে বসে থাকেন।
তারপর ফের ফিরে যান ছানার পায়েসে। নলেনে। স্টিলের বাটিতে।
কলেজে যখন ছিলেন, মিতুলকে অন্তত বারোটা চিঠি লিখেছিলেন; চারটে এনভেলপ, পাঁচটা ইনল্যান্ড লেটার, তিনটে পোস্টকার্ড। একটারও উত্তর আসেনি।
বড়দা বাড়িটা হাতিয়ে নিলে। মায়ের গয়নাগুলোও। আর কিছুই না, শুধু স্মৃতি বলে কিছুই রইল না; বুকে টনটন সে'টুকুই।
বার্নস অ্যান্ড নোবেলের চাকরীটা কনফার্ম হয়েও রিজেকশন লেটার এলো। বড়বাবুর পিসতুতো ভাইয়ের শালা চাকরীটা হাতিয়ে নিলে।
এমন কত রাগ। ক্যারমের গুটির মত মনের মধ্যে খটর খঠ্ করে যায়। অনবরত।
গোটা বছর জুড়ে এমন কুচিকুচি রাগ সমস্ত জড়ো হয়ে দলা পাকাতে থাকে। মেজাজ তেতো হয়ে আসে, জিভ বিস্বাদ।
আর বছর ঘোরা জানুয়ারির এক রাত্তিরে এসে সমস্ত রাগের ঝুল ছানার জিলিপির ফুলঝাড়ু দিয়ে সাফ করে দেন সমরবাবু। ডিনার শেষে মনের ভিতরটা বিলকুল সাফসুতরো। কানে রয়ে যায় গুলাম আলি আর মনে বাহাদুর বেড়ালের হোহো।
Comments