Skip to main content

প্যারালাল

- লাইফ আফটার ডেথ্‌য়ে বিশ্বাস থাকাটা বিজ্ঞান বিরোধী বলছ?

- অফ কোর্স। যার প্রমাণ নেই, তার অস্তিত্ব নেই।

- এক সময় তো আমাদের পরিচিত ভূমণ্ডলটারও কোন প্রমাণ আমাদের ল্যাবরেটরিতে ছিল না হে।

- সেটা প্রাগৈতিহাসিক সত্য। কিন্তু তার পর থেকে বিজ্ঞানের প্রোগ্রেস্‌ অভাবনীয় গতিতে হয়েছে সেটা ভুললে চলবে না। এখন অন্তত আমাদের কাছে যুক্তির জমিটুকু তৈরি আছে। থিওরি বল আর কল্পনা, সমস্ত সেই জ্ঞানের জমির ওপরেই খাড়া করতে হবে তোমায়। আর মৃত্যুর পরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে কোন থিওরি বা কল্পনা সেই যুক্তিগ্রাহ্য জমির ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। 

- কে জানে! সমস্ত সত্যই কী যুক্তির ওপর দাঁড়িয়ে? 

- আলবাত। থাকতেই হবে।

- তর্ক করতে মন চায় না বাপু। 

- তর্কের যে স্কোপ আছে বলে তোমার মনে হচ্ছে, সেটাই আমায় অবাক করছে। এ এক অদ্ভুত প্রেজুডিস্‌।

- আমার প্রেজুডিস? আর তুমি যে গোটা ব্যাপারটাকে একদম হতেই পারে না বলে উড়িয়ে দিচ্ছ, এটাও কী বিজ্ঞানভিত্তিক প্রেজুডিস নয়?

- অর্থাৎ তোমার ধারণা আমরা মারা গেলে নশ্বর দেহ ধারণ করি; এই বোগাস আইডিয়াটা বেস্‌লেস অর্বাচীন নয়?

- আপাত দৃষ্টিতে তাই।

- আপাত দৃষ্টিতে? বটে? আচ্ছা, আজ পর্যন্ত কোন ভূত প্রমাণ দিতে পেরেছে তেনাদের অস্তিত্বের? কিছু বোগাস রটানো ঘটনা ছাড়া ভূতসমাজে কোথাও কখনও মানুষ দর্শনের কোনও অকাট্য প্রমাণ দেখাতে পারা গেছে? তোমাদের মত শিক্ষিতজন যখন এসব বালখিল্যসুলভ তর্ক জুড়ে বস, তখন খারাপ লাগে। 

- কে জানে ভাই। আমরা যেমন মানুষের দেখা পাইনা বলে ভাবি তাঁদের অস্তিত্ব নেই, হয়তো তারাও আমাদের ব্যাপারে একই রকম ভাবে। হয়তো আমাদের প্যারালাল দু'টো দুনিয়া কখনও কোইনসাইড করে না! কে বলতে পারে?

- অসহ্য। তোমাদের এমন অ্যানসায়েন্টিফিক ভাবনাগুলোর জন্যেই আজ দেশের ও দশের এমন দুরবস্থা।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু