Skip to main content

কলিং বেল

-কী ব্যাপার, কে আপনি? এত রাতে এমন ফ্র্যান্‌টিক্যালি কেউ কলিং বেল বাজায়?

-সরি। কিন্তু এমন বিপদে পড়েছি। কোনও উপায় না পেয়ে শেষে...। 

-ব্যাপারটা কী হয়েছে একটু খুলে বলবেন?

-আজ্ঞে আমি অরিন্দম সাহা। ইয়ে, ভীষণ নার্ভাস লাগছে। ভেতরে আসতে পারি? প্লীজ ডোন্ট ওরি। আমার কাছে কোন অস্ত্র নেই। এই দেখুন পকেট ফাঁকা।
 
-আমি অমিয় দত্ত। ভেতরে আসুন।

-থ্যাংকস।

-হয়েছেটা কী?

-আমি একজন রিয়েল এস্টেট এজেন্ট। এ পাড়ায় এসেছিলাম একটা নেগোশিয়েশনের ব্যাপারে। ওই সাব্রেওয়ালের বাড়িতে। সেখানেই এত রাত হয়ে গেল। টাফ্‌ ডিল ছিল একটা। 

-সাব্রেওয়ালের বাড়ি তো কাছেই। তাকে আমি ভালো করে চিনি। কিন্তু গণ্ডগোলের কী হল?

-আসলে নিজের গাড়ি আনিনি। এত রাত্রে পাড়ার মধ্যে তো আর ট্যাক্সি পাব না। ভেবেছিলাম মেইন রাস্তায় গিয়ে একটা কিছু ব্যবস্থা করে নেব। কিন্তু আপনার বাড়ির পাশের ওই গলিটা দিয়ে পেরোতেই ওরা এমন ভাবে অ্যাটাক করল।

-ওরা কারা? আপনাকে অ্যাটাক করল কেন? এতদিন এ পাড়ায় আছি। চুরি ডাকাতি হতে তো শুনিনি।

-না না। এরা ইউসুয়াল চোর ডাকাত নয়। রিয়েল এস্টেটের ব্যাপার। বুঝতেই পারছেন। শত্রু থাকেই।

-আপনাকে শেল্টার দিতে গিয়ে আবার আপনার শত্রুদের টেনে আনছি না তো?

-না না, ওরা এতক্ষণে ভেগেছে। 

-আই সি। কী ব্যাপার? আপনি কী কিছু খুঁজতে শুরু করলেন নাকি? অমন ছটফট করছেন কেন অরিন্দমবাবু?

-যা:, কাণ্ড দেখেছেন? রাস্তায় পড়ে রয়েছে নিশ্চয়ই। ছিঃ, ছিঃ। 

-রাস্তায় কিছু ফেলে এসেছেন নাকি? মানিব্যাগ? কাগজপত্র? 

-না না, সেসব নয়। 

-তবে কী?

-বডিটা, আমার বডিটা।

-হোয়াট ননসেন্স। যেচে বাড়িতে ঢুকে লেগ পুল করতে চাইছেন?

-লেগ পুল তো আপনি করতে চেয়েছিলেন অমিয়বাবু। সাব্রেওয়াল তো আপনাকে টেক্কা মেরেই বাইপাসের ধারের জমিটা হাতিয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্ট বিড্‌ তো আপনারই ছিল। তাই না অমিয়বাবু? আর ওদের তো বোধ হয় আপনিই লাগিয়েছিলেন আমার পিছনে,তাই না? একটু ভয় দেখিয়ে কড়কে দিতে? আপনার পোষা ছেলেরা ভয় দেখাতে গিয়ে যে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেললে অমিয়বাবু। সেই রিপোর্টটা আপনাকে দিতেই তো এত রাত্রে আপনার কলিং বেল বাজানো।

-শাট আপ। বেরিয়ে যান আপনি। আমি পুলিশ ডাকব।

-পুলিশ ডাকতে পারেন। আফটার অল দু'টো লাশ উঠিয়ে মর্গে নিয়ে যাওয়ার আছে, তাই না?

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু