Skip to main content

সলমান



ইচ্ছে ছিল বজরঙ্গী ভাইজান দেখতে যাওয়ার। শেষ মুহূর্তে অমুদা টেনে নিয়ে গেল অন্যত্র।
অমুদা বললে "সলমানকে দেখতে চাস?"


-"অফ কোর্স, পয়সা উসুল একক্সপিরিয়েন্স", আমি বললাম, "কে না চায়?"।


-"আমি তোকে বেটার সলমান এক্সপিরেয়েন্স অফার করছি। বাইসেপ, ছাতি, হ্যান্ডসাম চেহারা, মন ভোলানো হাসি, নায়িকাদের নিয়ে অবলীলায় লোফালুফি, মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া স্টান্ট; এক কথায় যাকে বলে ভাই-লাইক প্যাকেজ। সবচেয়ে বড় কথা; এত সমস্ত ক্যারিস্মাটিক ডিসপ্লে দেখতে পাবি লাইভ। নিজের চোখের সামনে। বুক চিতিয়ে ক্যামেরার আড়াল ছাড়া হৃদয় কাঁপিয়ে যায় এই সলমান"।


-বলছ?



-কমিট করছি।


যা হোক। একরকম বাধ্য হয়ে অমুদার পিছু পিছু গেলাম নয়া সলমান দেখতে। ফেমাস সার্কাসে। সেখানে সত্যিই দর্শন হল অন্য সলমানের। অমুদা কী ভাবে যে এই সুপারস্টারের নাম জানতে পেরেছিল কে জানে। ট্র‍্যাপিজ থেকে শুরু করে জাগলিং থেকে ছুরির রোমহর্ষক খেল; এ সলমান সর্বত্র অনবদ্য। সহ-জিমনাস্টিনি নায়িকার হাত ধরে যখন কোন বেল্টের সুরক্ষা ছাড়াই সে তাঁবুর ছাতে উঠে একের পর এক রোম্যান্টিক ডিগবাজি খেয়ে চলেছে তখন উন্মত্ত গ্যালারির সাথে তাল মিলিয়ে আমিও ফ্যাস ফ্যাস শব্দে শিস দেওয়ার জবরদস্ত চেষ্টা করছি। তিন চারটে গা কাঁপানো খেলার শেষে যখন সলমান গ্যালারির দিকে চেয়ে হাত নাড়লে, তার মুখে তখন বলিউড গলানো হাসি।

সলমানের খেল শেষ হতেই আমি আর অমুদা বেরিয়ে এলাম। অমুদা কে থ্যাঙ্ক ইউ বলার আগেই অমুদা পিঠে হাত রেখে বললে, "সবচেয়ে বড় কথা কী জানিস? তোর মনে যে সলমান কে প্লেস করে দিলাম আজকে, সে কোন জঙ্গলে বা ফুটপাথে চোরাগোপ্তা শিকার করে বেড়ায় না। জেল ফাঁকি দিয়ে বক্স অফিসের ব্লেডে তোর পকেট কেটে তোর রক্তে গাঁজা ইঞ্জেক্ট করে না। ইওর মানি ফর সার্কাস টিকিট ওয়াজ ওয়েল স্পেন্ট। হিরো চিনতে শেখ। রিয়েল হিরো তৈরির প্রসেসে কন্ট্রিবিউট করতে শেখ। কাল বিকেলে আবার আসিস। সাতটার শোয়ের আগে। সলমানের সঙ্গে আলাপ সেরে রেখেছি। একটা অটোগ্রাফ ম্যানেজ করে দেব তোকে। ওকে?"

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু