Skip to main content

ওম


-ওম শান্তি। ওম শান্তি। ইধার আ বেটা। ইধার আ।

-প্রণাম নেবেন স্যার... থুড়ি... বাবা।

-শম্‌সান কালী মাতা তেরা মঙ্গল করে। ওম শান্তি।

-বাবা আমার নাম...।

-চোপ! 

- চোপ? নিজের নাম বলব না?

- নাম! তুই আমাকে নাম বলবি? বস কর পগলে, হসায়েগা কা? তু বতায়েগা মুঝে আপনা নাম? ত্রিলোক ভ্রমণ করিয়ে এসেছি আমি।  তু কেয়া সমঝা রে মূর্খ? আমি তোর নাম-পতা-খবর জানি না? আমি তোর নাম জানি। তোর পতা জানি। তুই রেলওয়ে অফিসের ক্লার্ক আছিস সো জানি। তুই আমার শরণে তোর পত্নীর কথায় বাধ্য হয়ে এসেছিস, আমি সো ভি জানে। তোর মানিব্যাগে কেতনা পেয়সা আছে ও ভি জানি। ওম শান্তি।

-আপনি সব জানেন বাবা? 

- সব কুছ! সূরয কে অন্দর কিতনি গর্মি। চন্দ্রমা মে ক্যায়সি কলঙ্ক। ইলেকশন কউন জিতবে। সব। 

-প্রসেসটা কী?

-বেটা, যো ওম কো জানতা হ্যায় ও সব কুছ জানতা হ্যায়। ওম শান্তি। 

-সব কুছ তো আমিও জানি বাবা। 

-চোপ! বেওকুফ! 

-মাইরি। সূর্যে টেম্পারেচার পনেরো মিলিয়ন ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত যেতে পারে। চাঁদের ক্রেটারকে কলঙ্ক বলে আমরা পোয়েট্রি লিখি।  আর ট্যুইটার ফলো করলে ইলেকশনটা তো জলবৎ। তা’ছাড়া আপনি আমার মানিব্যাগের প্রসঙ্গই যখন তুললেন বাবা, তা’হলে আমিও বলি। আপনার মুখে ছাই মাখানো, এ’দিকে হাত আর পায়ে ম্যানিকিওর পেডিকিওরের ছাপ স্পষ্ট। কৌপীনে পকেট না থাক, আপনার লিকুইড অ্যাসেট তেমন কম নেই। ওমকে আমিও গ্রিপে এনেছি, কী বলেন?   

-অরে মূর্খ! সনসার মে রেহকে, তুই ওম কা সম্‌তা পেহচানবি কী করে?

-সংসারে থেকেই যে আস্‌লি ওমকে চেনা যায় বাবা।

- কেয়া মতলব? ত্রিলোক ভ্রমণ করিয়ে, ত্রিকাল জয় করিয়ে আমি ওমকে 
চিনলাম। আর তুই, সংসারী, ব্যাটা রেল অফিসের ক্লার্ক, বঙ্গালী, তুই চিনলি ওম? বতা মুঝে ফির, কেয়া হ্যায় ওম!

-বাবা, আত্মার শান্তি, জীবনের মোক্ষ হল ওম।

-বহুত খুব। লেকিন হ্যায় ক্যা চিজ ওম? মিলেগা ক্যায়সে? খুলকে বতা! 

-বলবো?

-জরুর বলবি! 

-ডিসেম্বরের রবিবারে; বুঝলেন কিনা বাবা। খাসির মাংসের ঝোল দিয়ে চাট্টি ভাত খেয়ে; বুঝতেই পারছেন বাবা। দুপুরে সুড়ুত করে লেপের তলায় ঢুকে পড়ে যে উষ্ণতা লাভ হয়, তাকেই ওম বলে বাবা। ওমকে আমি চিনবো না তো কে চিনবে বাবা? তবে দুঃখের কথা কী আর বলব আজকাল কি আর সে সুখ বেশিদিন ভোগ করার উপায় আছে? এখন তো ফেব্রুয়ারি মানেই উইন্টার কা মউত। 

-বেটা, তু যা। চলা যা।

-চলে যাব? বৌ ভেজলে যে, আপনার কাছে জ্ঞান লেনে কে লিয়ে।

-মেরে পাস ভি ওম, তেরে পাস ভি ওম। অউর তেরা ওম কা শক্তি মেরা ওম সে জিয়াদা হ্যায় বেটা। ইধার সে চলা যা। চলা যা।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু