Skip to main content

চেঞ্জে যাওয়া

“এই জায়গাটা মন্দ নয়। বেশ ফুরফুরে হাওয়া। চারিদিক সবুজে সবুজ। মনোরম পরিবেশ। থেকে থেকেই হুড়মুড় করে খিদে পেয়ে যাচ্ছে। অবিশ্যি খাওয়াদাওয়ার কোনও অভাব নেই তেমন। যা খাওয়াদাওয়া চলছে তাতে রাজভোগ বললে কম বলা হয়। এই কিছু খেয়ে মনঃপ্রাণ পেট ভরল কি খানিক পরেই থরে থরে অন্য কিছু উপাদেয় খানা হাজির। চাইতেও হচ্ছে না, খাওয়ার দাওয়ার আপনি আসছে।
সবচেয়ে বড় কথা বাপ মায়ের খিটখিট থেকে মুক্তি পাওয়া গেছে। সারাক্ষণ এটা খাস না, ওটা খাবি না...উফ! তাছাড়া যে ছেলেটা মাঝে মাঝেই এসে কয়েক ঘা লাগিয়ে যেত সে ব্যাটাও এখানে নেই। বড় দুঃখে জীবন কাটছিল বাপ, মা আর সেই বিদঘুটে ছেলেটার খপ্পরে পড়ে। ভাগ্যিস এই নতুন ছেলেগুলো কাল আমায় এই নতুন জায়গায় নিয়ে এলে। ধড়ে প্রাণ এলো এতদিনে।
মুক্তি। মুক্তি। আহা। এমন জল-হাওয়া-খাওয়াদাওয়া। অমরত্ব একেই বলে। আমার এত আনন্দ হচ্ছে যে কী বলবো।
মায়াবী পরিবেশ। আর এই পরিবেশের মখমলে সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিচ্ছে সামনের ঐ স্থাপত্যটা। কী অপূর্ব গঠন, কী সাবলীল ভাবে দুই হাত তুলে দাঁড়িয়ে মাঠের মধ্যিখানে। চোখ জুড়িয়ে যায় ওটার দিকে তাকিয়ে। কাল একবার ওটার কাছে গিয়ে পড়েছিলাম; চেটে দেখলাম- বেশ সুঠাম। খুব ভালো লাগছে। কাল আরেকবার ওটাকে চেটে দেখবো ভাবছি।
দ্যাখ দেখি কাণ্ড। আবার এক থালা কাঁঠাল পাতা দিয়ে গেল কে যেন। আরে এই কচি বয়েসে আর কত খেতে পারি রে বাবা? তবে পাতাগুলো যা সরেস মনে হচ্ছে, একটু না চিবিয়ে উপায় নেই”।
**
- এই বলাই!
- হুঁ। কী ব্যাপার?
- পাঁঠাটা হাসছে।
- হাসছে মানে? ধুত্‌।
- মাইরি। তাকিয়ে দেখ। হাড়িকাঠের দিকে তাকিয়ে পাঁঠাটা হাসছে।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু