Skip to main content

নয়া সাল মোবারক

-          নয়া সাল। মুবারক্‌।
-          মোবারোক হোক।
-          এমন স্যাড ফেসে বসে স্যার?
-          এটা ন্যাচারাল ডিসপোজিশন। ইম্যাজিন মি অ্যাজ আ জলভরা। বাইরে খসখসে। ভিতরে সুইমিং কস্টিউম ছাড়া অ্যালাউড নয়।
-          আই লাইক স্যুইমিং কস্টিউম।
-          আমি জলভরা এক্সপ্লেইন করলাম। আপনি মনে রাখলেন স্যুইমিং কস্টিউম।
-          স্যুইমিং কস্টিউম। বিকিনি। রীতিমত পছন্দ।
-          ট্র্যাক ধরে ফেলেছেন দেখছি। কিনতে চেয়েছিল কেউ, আমি বিকিনি।
-          বিকিনির ব্যাপারে কিছু বললেন নাকি?
-          মুখ পানসে করবেন না প্লীজ। সবার সব কিছু বুঝে কাজ নেই। তবে বিকিনির আমেজের কথাই যখন বললেন তখন জিজ্ঞেস করি। ঘাসের গন্ধ আর আঁচলের ফসফস মিশে যেতে অনুভব করেছেন?
-          গন্ধ আর শব্দ? মিশেল? ওমা!
-          ওবামা বলেননি ভাগ্যি।
-          ডিউড, হোয়াট আর ইউ স্মোকিং?
-          পুরনো ব্যালকনির গন্ধ। ব্যালকনির এক কোণে বেঁটে মোড়া, আরেক কোনে তুলসীর টব। মোড়ায় আমি, হাতে মুড়ি চানাচুরের বাটি। আনন্দবাজার ফরফর করে উড়ছে মেঝেময়। বাতাসে আশু জানুয়ারি। বুকে চোখের জল; স্কুলের প্রেম মনে ভাসছে। মেজাজে ফিকফিক হাসি; বউ হেঁসেলে মৌরলা ভাজছে। আই অ্যাম স্মোকিং দ্যাট সুবাস। মৌরলার সাথে থাকবে গরম ভাতে ঘি। আমি গাইব “পিরীতি না জানে সখী, সে’জন সুখী বল কেমনে? যেমন তিমিরালয় দেখ দীপ বিহনে;- প্রেমরস সুধাপান, নাহি করিল যে জন- বৃথায় তার জীবন, পশু সম গণনে”। আমি তখন সুবাস ঘিসিং। ডাইনিং টেবিল জুড়ে দার্জিলিঙের ফেল্ভার মঁ মঁ করছে।
-          ইউ আর রিয়েলি হাই।
-          হাই ব্যাপারটা ছোঁয়াচে। টেক কেয়ার।
-          তাক লাগিয়ে দেওয়া পার্টি হচ্ছে কাকা। আপনার মুখটা চেনা। তাই ভাবলাম ডাক দি। আপনি তো দেখি তার আগেই টেনে টাইট।
-          টেনে টাইট? ল্যাঙ্গুয়েজ এদিকে ফ্লো করছে নাকি ভাই?
-          ভাই! আই লাইক ইট হোয়েন ইউ কল মি ভাই। মেক্‌স মি ফিল লাইক আ হিউমান।   
-          অহ। বুঝলাম। ইয়ে। আমার বোধ হয় তাক লাগানো পার্টিতে কাজ নেই। আমি সেলফিশ ফিল করছি। আমি তাকেই থাকি।
-          বেশ। আচ্ছা, আপনার নামটা জানা হল না! আগে নিজের পরিচয় দিই। হাই, আমি “থ্রি মিসটেক্‌স অফ মেইল লাইফ”।
-          তুমিই সে? তুমি তো সেলিব্রেটি হে!
-          ঠিক তা নয়। তবে ইন্সপ্যায়ার করে বেড়ানোটা আমার হবি। বুকশেলফের ছেলে ছোকরারা একটু ইয়ে করে, সেটুকুই আর কী।
-          করবেই তো। টেনে টাইট হওয়ার যুগ। আমার কিন্তু তোমার সাথে আলাপ করে বেশ লাগল। অন্য একদিন এসো। মুড়ি মাখা খাওয়াবো। অল্প আমতেল, একটু লঙ্কাকুচি, সামান্য পেঁয়াজ কুচি। দেখবে প্রেম কাকে বলে।
-          শিওর। আজ চলি। ওহ হো! আপনার নামটা কাকা?
-          আমি? কম্বল। লোটাকম্বল।  

Comments

agniv said…
ওটা বোধহয় "থ্রি মিসটেক্‌স অফ মাই লাইফ" হবে।

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু