Saturday, December 5, 2015

রুম মেট

এই এক গেরো। সিগারেট ঠোঁটে ঝুলিয়ে দেশলাই খুঁজে না পাওয়ার যে কী অসোয়াস্তি।
রান্নাঘরে ঢুকে গ্যাস জ্বালিয়ে সিগারেট ধরাতে হবে শেষ পর্যন্ত। কিন্তু ওদিকে গ্যাসের লাইটারও বিকল।

শেষে বাধ্য হয়ে রুমমেট নির্মলবাবুর শরণাপন্ন হতে হল। দরজায় নক করতে নির্মলবাবু দরজা খুললেন। পরনে গামছা, সর্বাঙ্গ ভিজে; কেরোসিনে।

নির্মলবাবু দুঃখের সাথে জানালেন যে একটাই মাত্র দেশলাই বাক্স পড়ে। তাতে শেষ কাঠিটা রয়েছে মাত্র।

তাকে আশ্বাস দিলাম; এক কাঠিতেই কাজ হয়ে যাবে। কফি হাউসে এক কাঠিতে চারটে করে ধরে। নির্মিলবাবু একটু ডাউট করছিলেন, চারটে সিগারেট আর একটা সিগারেট-একটা বডির কম্বিনেশন কি এক হল? গড়বড় হলে এত রাত্রে আর দেশলাই পাওয়ার চান্স নেই। নির্মলবাবু চিন্তা করছিলেন খামোখা এতটা কেরোসিনে জলে যাবে বলে।

বললাম অ্যাট লিস্ট কাউন্টারে কাজ হয়ে যাবে। প্রশ্ন হল কে কার কাউন্টার নেবে। সিগারেটের আগুন নিয়ে মরতে তেমন আগ্রহী ছিলেন না নির্মলবাবু। আমার আবার ডেডবডি থেকে গোল্ডফ্লেক ধরাতে একটু কেমন কেমন ঠেকছিল।

কিন্তু দেশলাই যেহেতু নির্মলবাবুর আর দয়াপ্রার্থী যেহেতু আমি, সেহেতু ঠিক হল প্রথম ব্যবহার নির্মলবাবুই করবেন। নির্মলবাবু গায়ে আগুন দিতেই আমার সিগারেটটা মুচমুচ করে জ্বলে উঠলো।

গায়ে চাক চাক ফোস্কা পড়াতে সম্বিত ফিরল। হঠ যোগের এই এক ব্যারাম, দেহ থেকে নেশাগ্রস্ত মনকে তুলে নেওয়া মামুলি চিজ, কিন্তু এই রুমমেটটি যে ফল্‌স সেটা বুঝতে পাঁচটি বছর কাবার হয়ে গেল। গা জ্বালিয়ে অঙ্ক মিলল শেষ পর্যন্ত।